ভূত-পেত্নীর ডেরায় – সমুদ্র পাল

হরিহরপুরের বাসুদেব চক্রবর্তীর নাম উচ্চারিত হয় প্রতিটি ঘরে লোকজনদের মুখে একেবারে অমৃতের মতোই। আর হবে নাই-ই বা কেন। বাসুদেব যদি না থাকতো তবে এই গ্রাম একদিন শ্মশান হয়ে যেতো। এখানে শুধু ভূত-পেত্নীই চরে বেড়াতো। মানুষজন একটাও থাকতো না।

কতো লোকের কতো রকমের অসুখ বিসুখ হয়। আর বাসুদেব চক্রবর্তী তাদের সারিয়ে তোলে। কার বসন্ত, কার ওলাওঠা, —দিনে দুপুরে, রাতে যখনই তাকে ডাকা হয় তখনই ছুটে যায় বাসুদেব। রোগী বা রোগীর বাড়ির লোক প্রথমে তার ব্যবহারে একটু আশ্চর্য হয়ে যায়। কিন্তু পরে তারা বাসুদেবের প্রকৃত অবস্থাটা ধরে ফেলে। এখন আর কেউই তেমন কিছু মনে করে না। ডাক্তারটা ছিলো খুবই গরীব। আর গরীব হবে না? ই বা কেন? কখনো কারো কাছ থেকে ফুটো পয়সাটাও চাইতো না, চাইলেই বা দেবে কে? আর কোত্থেকেই বা দেবে? গ্রামের নামটা যদি দুঃখী গ্রাম হতো তো নামটা মন্দ হতো না।

পঁয়ত্রিশ বছর ধরে ডাক্তারী করছে বাসুদেব। ছোটবেলা থেকেই তার ইচ্ছা ছিলো মস্ত বড় ডাক্তার হবে। ডাক্তার হয়ে সে মানুষের সেবা করবে। তাই আজ অবধি সে মানুষের সেবা করেই চলেছে।

গ্রামের লোকজন অবশ্য ডাক্তারী ফি বাবদ পয়সা কড়ি দিতে পারতো না। ঠিকই কিন্তু তাকে দেবতার মতো সম্মান ও শ্রদ্ধা করতো। গ্রামের কোনো লোক তার মুখের ওপর কথাটি পর্যন্ত বলতে বিশেষ সাহস পেতো না।

এই তো সেদিনের কথা। রাত তখন প্রায় দু’টো হবে।

অনুকূলের মায়ের প্রায় যায় যায় অবস্থা। চার মাস ধরে বুড়িটা ভুগছে। যমদূত তার ঘরের চৌকাঠ ছাড়ছে না। কিন্তু চৌকাঠের ওপারে ঢুকতে দিচ্ছে না ঐ হরিহর ডাক্তার। কি যেন একটা বুকের অসুখে ভুগছে ঐ বুড়ি।

বুড়িকে দেখে ডাক্তার সমস্ত ওষুধ-পত্র দিয়ে বেরিয়ে গেলো। রাত তখন প্রায় পৌনে তিনটে। বুড়ি দিব্যি নাক ডাকিয়ে ঘুমোতে লাগলো।

বাড়ির বাইরে এসে অনুকূল ডাক্তারবাবুকে এগিয়ে দিয়ে আসতে চাইলো। কিন্তু ডাক্তার নিষেধ করাতে সে আর এগোলো না। কারণ সে কেন, গ্রামের কেউই বাসুদেবের মুখের ওপর রা কাড়তে সাহস পেতো না।

আসার সময় বাসুদেব অনুকূলের সঙ্গে ডান দিকের পথ ধরে এসেছিলো। অবশ্য একটু বেশী পথ হাঁটতে হয়েছিলো কিন্তু বাঁদিকের পথ ধরে গেলে বাসুদেব ডাক্তারের বাড়ি একটু কাছে হয়।

কিন্তু প্রচলিত সংস্কার আছে যে, বাঁদিকের পথটা নাকি খুবই বিপদজনক। বিশেষতঃ রাতের বেলায়। ওদিকে তাই নাকি সন্ধ্যের পর কোনো মানুষ-জন যায় না। ঐ পথ ধরে গেলে একটা পোড়ো বাড়ি পড়ে। দিনের বেলায় অবশ্য সেই বাড়িতে গ্রামের ছোট ছোট ছেলেরা খেলাধূলা করে, কিন্তু সন্ধ্যের অনেক আগেই ওখান থেকে সরে পড়ে।

এই বাড়িটার অবশ্য একটা ইতিহাস আছে। আজ থেকে বেশ কয়েকবছর আগে — এই বাড়িতে বাস করতো গ্রামের জমিদার। জমিদারের কোনো পুত্র-সন্তান ছিলো না। জমিদার তার স্ত্রীকে খুবই ভালোবাসতো।

একদিন জমিদারের স্ত্রীর প্রচণ্ড পেটের অসুখ হলো। কিন্তু তখনকার নিয়ম ছিলো, কোনো স্ত্রীলোকের ঘরে বা অন্দর মহলে কোনো পুরুষ মানুষ ঢুকতে পারবে না। তাই জমিদারের স্ত্রীর যে সেবিকা ছিলো, সে যা পারতো তাই দিয়ে সেবা-শুশ্রূষা করেছিলো। কিন্তু কোনাভাবেই তাকে বাঁচাতে পারে নি।

জমিদার স্ত্রীকে এতোই ভালোবাসতো যে স্ত্রীর মৃতদেহের ওপর মাথা রেখে অজ্ঞান হয়ে গেল। আর কোনো দিন তার জ্ঞান ফেরেনি। সেই থেকে বাড়ি খালি। সবাই বলে রাতে ওখানে ‘ভূত-পেত্নীর আড্ডা।’

ডাক্তারবাবু সুবিধের জন্যে বাঁদিকের রাস্তা ধরেই হাঁটতে শুরু করলো। দূর থেকে অনুকূলের নজরে পড়লো, সে ডাক্তারবাবু ডাক্তারবাবু বলে চেঁচাতে চেচাতে বাসুদেবের সামনে এসে বললো এই পথ দিয়ে যাবেন না গো ডাক্তারবাবু।

—কেন, কি হয়েছে?

—রাতের বেলায় এই পথ দিয়ে কেউ যায় না। এই পথ দিয়ে গেলে আপনার বিপদ হতে পারে।

ডাক্তার ধমক দিয়ে বললো। দূর, আমার আবার বিপদ? আমার আবার বিপদে কি রে? তুই যা ও আমি ঠিক চলে যাবো’খন। এই পথ দিয়ে গেলে আমি একটু তাড়াতাড়ি যেতে পারবো। ওদিকে আবার আমার বাড়িতে বৌ আমার অপেক্ষা করছে আমার জন্যে। যা যা, আমি ঠিক পৌঁছে যাবো।

অনুকূল আর বিশেষ কিছু বলতে সাহস পেলো না। শুধু মনে মনে দুর্গানাম, আর রামনাম জপ করতে লাগলো। তারপর ভাবলো — দেবতার কোনো ক্ষতি হতে পারে না।

সামনে ধু ধু প্রান্তর, চাঁদের আলোয় সবুজ প্রান্তর কেমন যেন কালচে রূপ ধারণ করেছে।

কিছুটা পথ যেতেই কে যেন চেঁচিয়ে উঠলো —ডাক্তারবাবু, ও ডাক্তারবাবু, আমার সঙ্গে শিগগির একবার চলুন।

ডাক্তারবাবু দেখলেন, ধুতি পাঞ্জাবী পরা একটা মাঝ বয়সী ভদ্রলোক তাঁকে ডাকছে।

ডাক্তার জিজ্ঞসা করলেন —কি ব্যাপার? কি হয়েছে?

—আমার স্ত্রীর ভীষণ শরীর খারাপ। আপনি একবার চলুন।

—আপনি কি করে জানলেন, এতো রাতে আমি এই পথ দিয়ে যাবো?

—আমি খবর পেলাম যে, আপনি রাতে এ গ্রামে রুগী দেখতে এসেছেন। আপনি শিগগির চলুন। নইলে ওকে বাঁচানো যাবে না। বেচারী অনেক দিন ধরে ভুগছে।

—আপনাকে তো আমি কোনোদিন দেখিনি।

—আপনি আমাকে না চিনলেও, আমি আপনাকে ভালোভাবেই চিনি ডাক্তারবাবু। আর দেরী করবেন না। পরে কথা হবে। এখন শিগগির চলুন। আপনাকে যেভাবেই হোক আমার স্ত্রীকে ভালো করে তুলতেই হবে। যতো টাকা লাগে আমি দেবো। আমার যথাসর্বস্ব দিয়ে দেবো।

—আরে বাবা, আগে তো গিয়ে দেখি কি রোগ।

লোকটা ডাক্তারের ব্যাগটা হাতে নিয়ে ডাক্তারের আগে আগে যেতে লাগলো।

লোকটা গিয়ে ঢুকলো ঐ পোড়ো বাড়িটায়। ঘরের মধ্যে ঢুকতে যাবে ঠিক সেই সময় একটা কালো বেড়াল তার পায়ের সামনে দিয়ে চলে গেল। ডাক্তারবাবু অবশ্য প্রথমটায় একটু আঁৎকে উঠেছিলেন। পরে নিজেকে সামলে নিয়ে লোকটার পেছন পেছন রুগীর ঘরে ঢুকলেন।

রুগীর ঘরটা একেবারে ঘুটঘুটে অন্ধাকার। ঘরের ভেতরে কিছুই দেখা যাচ্ছে না।

ডাক্তারবাবু বললেন –কি গো, আপনাদের ঘরে কি কোনো বাতি নেই। আমি রুগী দেখবো কি করে?

লোকটা এবার খোনা স্বরে বললো –না ডাক্তারবাবু, আলো-টালো জ্বালা আমার বৌ আবার সহ্য করতে পারে না। আর ওসব অভ্যেস আমাদের অনেকদিন আগেই চলে গেছে।

লোকটার কথা বলার স্বরের এই পরিবর্তন শুনে কেমন একটা খটকা লাগলো ডাক্তারের।

ডাক্তারবাবু বললো –আলো-টালো না হলে রুগীকে দেখবো কি করে?

লোকটা আবার খোনা-স্বরেই উত্তর দিলো ঠিক আছে, চাঁদের আলো আছে। আমি জানলাগুলো সব খুলে দিচ্ছি। আপনি রোগী দেখুন।

ডাক্তারবাবুর মনে ভয়ের সঞ্চার হলো। ডাক্তারবাবু অবশ্য ভূত-পেত্নী বিশ্বাস করেন। তাই ধরেই নিলেন, এটা একটা ভুতুড়ে বাড়ী। আর এখানে ভূত-প্রেতের সব আড্ডা!

এবার ডাক্তারবাবুর প্রচণ্ড রকমের ভয় করতে লাগলো।

জানলা খুলতেই ডাক্তারবাবু দেখতে পেলেন যে মানুষটা তাকে পথ দেখিয়ে তার স্ত্রীকে দেখাবার নাম করে নিয়ে এসেছে সে মানুষ নয়, একটা কঙ্কাল মাত্র। তার সারা শরীরের হাড়গোড় সব ঠক্‌ঠক করছে। চোখ দু’টো যেন জ্বলছে।

ডাক্তারবাবু এতোই ভয় পেয়ে গেছিলেন যে, তিনি বাচ্চা ছেলের মতোই বলতে লাগলেন এ আমাকে কোথায় নিয়ে এসেছেন? আমি বাড়ি যাবো। আমায় ছেড়ে দিন।

একথা শুনে কঙ্কালটা বললো —বললাম তো, যতো টাকা লাগে আমি দেবো। আগে আমার স্ত্রীকে ভালো করে দিন, তারপর যাবেন।

এই বলে লোকটা তার স্ত্রী শরীরের চাদরটা তুলতেই দেখা গেল তার সারা শরীরটা কঙ্কালের মতো। চোখ দিয়ে তার আগুনের ছটা বেরোচ্ছিলো।

ডাক্তারবাবু ভয়ে থর থর করে কাঁপছিলেন। তার মুখ থেকে কথা সরছিলো না।

এই অবস্থা দেখে কঙ্কাল লোকটা বললো – ডাক্তারবাবু ভয় পাবেন না, আমরা আপনার কোনো ক্ষতি বা অনিষ্ট করবো না। শুধু আমার বড় আদরের বৌকে ভালো করে দিন।

কঙ্কালটা খাটের তলা থেকে একটা বড় পুঁটলি বার করে ডাক্তারবাবুর ব্যাগে ঢুকিয়ে দিয়ে বললো -এই নিন, আপনার যতো খরচ হয় করবেন। শুধু আমার বৌকে সারিয়ে দিন আপনি।

কঙ্কাল লোকটা ডাক্তারবাবুর মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলছিলো আর ক্রমশঃ তার দিকে এগিয়ে আসছিল। ডাক্তারবাবুও ততো বেশী ভয় পেতে লাগলেন। শেষ পর্যন্ত যখন ডাক্তারের একেবারে কাছে চলে আসলো তখন ডাক্তারবাবু জ্ঞান হারালেন।

পরদিন সকাল। সূর্য তখন সবে উঠছে। ডাক্তার বাসুদেব চক্রবর্তীর জ্ঞান ফিরলো। জ্ঞান ফিরতেই তিনি দেখতে পেলেন কোনো এক ভাগাড়ে তিনি শুয়ে আছেন। চারপাশে নোংরা আবর্জনা। কয়েকটা কুকুর নোংরা আবর্জনা গিলছে। তার মনে হলো যে সে কাল রাত থেকে বাড়ির বাইরে। তার বৌ ঘরে একা সারারাত দুশ্চিন্তায় কাটিয়েছে। তার সারা গায়ে নোংরা লেপ্টে গেছে। তাড়াতাড়ি করে সে উঠে পড়ে বাড়ির দিকে রওনা হলো। সঙ্গে নিলেন সেই পুটলী ভরা থলিটা।

সারারাত তার বৌ অপেক্ষা করে বসেছিলো। দু’চোখের পাতা কিছুতেই এক করতে পারেনি সে। স্বামী ঘরে ঢুকতেই জিজ্ঞাসা করলো তুমি কোথায় গেছিলে? তোমার এমন অবস্থা কে করলো? তােমার জামা কাপড়ে এতো নোংরা, এতো ময়লা লাগলো কি করে? সারাটা রাত কোথায় পড়েছিলো? নেশা টেশা করেছো নাকি পাল্লায় পড়ে? আর তোমার চোখ মুখের অবস্থাই বা এরকম হলো কেন?

বাসুদেব বৌকে কোনোমতে বললেন —আমাকে এক গ্লাস জল দাও। জল খেয়ে বাসুদেব কিছুক্ষণ চুপ মেরে বসে রইলেন। তারপর গতকালের সমস্ত ঘটনা একে একে তার মনে পড়লো।

স্ত্রীকে সে সবিস্তারে সব ঘটনাই বললেন। কিন্তু ডাক্তার বাসুদেব চক্রবর্তী কিছুতেই চিন্তা করতে পারছিলেন না যে কি করে সে ঐ ময়লা আবর্জনার মধ্যে পড়লেন! কেই-ই বা তাকে ঐ আবর্জনার মধ্যে এনে ফেললো।

বৌ বললো – এখনও বুঝতে পারলে না ঐ ভূত-পেত্নীগুলোই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।

কথা বলতে বলতে হঠাৎ ডাক্তারের মনে পড়লো সেই পুঁটলিটার কথা। সে বৌকে বললেন –দেখো তো বৌ, ঐ ব্যাগটার মধ্যে কোনো পুঁটলি আছে কিনা?

বৌ পুঁটলি খুলে দেখে হাজার হাজার মোহর ঝকঝক করছে। মনে মনে ভাবতে লাগলো এবার তারা অনেক অনেক বড়লোক হয় যাবে। এতো দিনের দারিদ্র্য তাদের দূর হয়ে যাবে। ঈশ্বর তাদের দয়া করেছে।

বেলা হতেই গ্রামের অন্যান্য বিশিষ্ট লোকদের সমস্ত ঘটনা খুলে বলতে তারা সেই জমিদারের আর জমিদারের স্ত্রীর পুরোনো ইতিহাস বললো। গ্রামের ঘটেশ্বর ওঝাকে ডাকানো হলো। তাকে সব ব্যাপারটা গুছিয়ে বলতেই, সে বললো জমিদার বংশের কেউ ছিলো না। তাই তাদের কোনো শ্রাদ্ধ শান্তি করা হয়নি। তাই তাদের আত্মারও শান্তি হয়নি। ওদের আত্মার মুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

ডাক্তারবাবু তখন ওঝাকে সকলের সামনেই বললো – কাল রাতে জমিদার ভূত আর তার পেত্নী স্ত্রী আমায় প্রচুর মোহর দিয়েছে। আমার বড়লোক হওয়ার ইচ্ছা নেই। তোমাদের সেবা করতে পারলেই আমার আনন্দ। আমার বৌ বলছিলো যে জমিদারের ঐ স্বর্ণ মোহরগুলি দিয়ে ঐ পোড়ো বাড়িটায় যদি একটা হাসপাতাল করি তবে গ্রামের মানুষের খুবই উপকার হবে। আর হ্যাঁ, ঐ হাসপাতাল জমিদার ও জমিদার গিন্নীর নামেই হবে।

গ্রামের লোকজন ভয়ে ভয়ে বললো —ভূত-পেত্নীরা কি আমাদের এই কাজ করতে দেবে? একে ওদের পূর্বপুরুষের ভিটে, পরন্তু বর্তমানে যে ওরা ওখানেই থাকে।

সব কিছু শুনে ওঝা বললো –ওসব দোষ কাটিয়ে দেওয়া যাবে। অবশ্য এতে কিছু খরচ হবে।

ডাক্তারবাবু বললেন —কতো টাকা লাগবে?

এমন কিছু বেশি নয়। ভূত-পেত্নীর দোষ কাটাতে আমার যা যা জিনিষ-পত্তর দরকার সেগুলো কিনে দিতে হবে আর তারপরে গ্রামের কেউ গয়াতে গিয়ে জমিদার ভূত আর তার বৌ পেত্নীর জন্যে পিন্ড দিয়ে এলেই হবে। অবশ্য আমায় একটু খাটতে হবে এই যা। অনেকদিনের ভূত-পেত্নীর বসতি। তারপর আবার এতো প্রেম! এক সঙ্গে দু’জনের দোষ কাটাতে হবে।

গ্রামের লোকজনেরা সব যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো এই কথা শুনে। তারা সমস্বরে বললো, ওসব যা কিছু করতে হয়, তুমি করবে। আমরা ও সবের কিছু বুঝি না। যাতে যা ভালো হবে তুমি তাই-ই করো। তুমিও তো আমাদের গ্রামেরই লোক। আর গ্রামে যদি হাসপাতাল হয় তাতে সকলের সঙ্গে তোমারও তো উপকারে আসবে।

ওঝা বললো –ঠিক আছে, আমি যা যা বলছি সেই সেই মতো সব কিছুর ব্যবস্থা করে দাও। তার পরের সব ব্যবস্থা আমি করে দিচ্ছি।

তারপর ওঝা পোড়োবাড়ীর ভূত-পেত্নীকে চিরকালের মতো তাড়িয়ে দিয়ে বাড়িটাকে দোষ মুক্ত করে দিলো।

কিছুদিন পরে গয়াতে পিণ্ডি দিয়ে আসা হলো।

তারপর হাসপাতালের জন্যে বাড়ী ভাঙা শুরু হলো। ক্রমশঃ হাসপাতাল তৈরী হলো। গ্রামের লোকেরা বাসুদেব চক্রবর্তীকে বাসুদেব দেবতা বলে সম্মান জানালো। বাসুদেব ডাক্তারও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করতে পেরে খুব খুশি হলো।

সকল অধ্যায়

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন