১৯৭৪ 

ভাস্কর চক্রবর্তী

১৯৭৪ 


সত্যি, ইদানিং আত্মহত্যার কথাও ভাবি! নোংরা মশারির নীচে
কাণ্ডজ্ঞানহীন শুয়ে আছি দু’মাস তিন মাস। সন্ধে হ’লেই ঘরের ভেতর
প্রতিদিন হলুদ একটা আলো জ্বলে ওঠে, আর জানায় যে, বেঁচে আছে
আমি। ঠোঁট দু’টো বোধহয় ফুলতে শুরু করেছে। তবে, মাথাটা ঠিক
আছে এখনও। বিছানা থেকে উঠে বারবার আমি নিজের মুখ দেখি
আয়নায়। আজকাল একটুও আর কষ্ট পাই না। —একটি মেয়ে, ট্যাক্সির
ভেতর গতকাল একা-একা কাঁদছিল।


ওগো নীল আকাশ, তুমি আর কীরকম দেখতে চাও আমাকে? অচল
দু’টো হাত-পা নিয়ে আমি ঘোরাফেরা করি। আমার গোঁফ নেই, গোঁফ
রাখার বিন্দুমাত্র ইচ্ছেও নেই আমার। আজকাল ভাবি শুধুই, চামড়ার
ভেতর দিয়ে ছুরি কীভাবে এগিয়ে যায় হাড়ের দিকে—অথবা একটা
কার্তুজ, বুকের ভেতর থেকে কীভাবে পথ খোঁজে বেরিয়ে যাওয়ার…।
আমার বাবা-মা, আমাকে আর পয়সা-কড়ি দ্যায় না—ওগো কলকাতা,
তুমিও কি আমাকে আর চিনতে পারো না এখন?


আশেপাশে আছে, কিছু-কিছু প্লাস্‌টিকের মানুষ। প্লাস্‌টিকের বৌ নিয়ে
অনবরতই তারা ঢুকে পড়ছে সিনেমায়। রাত্রিবেলার খাবারের জন্যে
আমি কাকে ধন্যবাদ জানাবো? রাত্রিবেলায় জেগে-থাকার জন্যে আমি
কাকে অভিশাপ জানাবো? রাস্তায়, কুকুরে-কুকুরে যুদ্ধ হচ্ছে এখন—
আর দূরে, মিটমিট করছে দু’একটা নক্ষত্র। যদি ভালো থাকি, আবার
ফোন করবো কাল বিকেলবেলা—তুমি এখন ঘুরে বেড়াও স্বপ্নের ভেতর,
আর আনন্দ করো।

সকল অধ্যায়

১. শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা 
২. ২০০২ 
৩. ১৯৭৪ 
৪. জিরাফের ভাষা ৪৮ 
৫. জিরাফের ভাষা ২৩ 
৬. চৌ-রাস্তায় দাঁড়িয়ে আমরা চারজন 
৭. কবিতা ১৩৪ 
৮. স্মৃতি 
৯. মুখ 
১০. শুধুমাত্র তোমাকে-৩ 
১১. তাপমাত্রা 
১২. ভিখারি 
১৩. মৃতসঞ্জীবনী 
১৪. মানুষ 
১৫. যে কবিতাটা আমি রাস্তা থেকে কুড়িয়ে পেয়েছিলাম 
১৬. আরেকটি প্রেমের কবিতা 
১৭. দূরের টেবিল 
১৮. প্রতিবহন 
১৯. সোনার চাঁদ 
২০. প্রার্থনা ১ 
২১. আঁধার বিষয়ে 
২২. উৎস
২৩. জিজি 
২৪. আমার কবিতা
২৫. তবু কোনোদিন
২৬. প্রেমিকেরা প্রেমিকারা
২৭. নীল সাপের মতো
২৮. শীত
২৯. শিরোনামহীন
৩০. আনন্দ
৩১. প্রেম
৩২. বাদামী রঙের কবিতা
৩৩. ভূমিকাহীন
৩৪. যদি ভালোবাসা থাকে
৩৫. আঠাশে মে, আমার জীবনের
৩৬. মুহূর্তমালা
৩৭. বন্ধুত্ব

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন