পর্দাবিরোধীদের তিনটি দলিল এবং তার জবাব

পর্দাবিরোধীদের তিনটি দলিল এবং তার জবাব

প্রথম দলিল

হযরত জাবের রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিস। যা ইমাম মুসলিম রাহিমাহুল্লাহ তার কিতাব সহিহ মুসলিম শরীফে উল্লেখ করেছেন। হাদিসটি হলো–

عن جابر رضي الله تعالى عنه أن التي صلى الله عليه وسلم وجه في آخر خطبة العيد للنساء .. ثم أمر النساء بالصدقة .. قال جابر : فقامت امرأة من يطة يا رسول الله ؟ .. إلى آخر الحديث … عاۓ اين فقال: الاء

হযরত জাবের রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের খোতবা শেষে নারীদের দিকে মনোযোগি হলেন। তিনি তাদেরকে সদকা করার হুকুম দিলেন। তখন নারীদের মধ্য হতে মলিন চেহারার অধিকারীণী এক নারী দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল হে আল্লাহর রাসূল! কেন? (মুসলিম শরিফ, হাদিস নং-৮৮৫)

হাদিসটিতে হযরত জাবের রাযিয়াল্লাহু আনহু প্রশ্নকারী নারীটির বর্ণনায় ‘মলিন চেহারার অধিকারীণী’ শব্দটি বলেছেন। বোঝা যায় সেই নারীর চেহারা তখন অনাবৃত ছিল।

জবাব

প্রথম কথা হলো এই ঘটনাটি হযরত জাবের রাযিয়াল্লাহু আনহু ছাড়াও আরো কয়েকজন সাহাবী বর্ণনা করেছেন। যারা সবাই ঈদের নামাযে শরিক ছিলেন এবং মেয়েটিকে দেখেছেন। হযরত জাবের রাযিয়াল্লাহু আনহু ব্যতিত হযরত আবু হুরায়রা, ইবনে মাসউদ, ইবনে আব্বাস, ইবনে ওমর, আবু সাঈদ খুদরী রাযিয়াল্লাহু আনহু-দের থেকে হাদিসটির বর্ণনা পাওয়া যায়।

কিন্তু হযরত জাবের রাযিয়াল্লাহু আনহু ছাড়া অন্য কেউ সেই নারীর চেহারার বর্ণনা দেননি। সম্ভবত হযরত জাবের রাযিয়াল্লাহু আনহু সেই নারীটিকে পূর্ব থেকেই চিনতেন এবং পর্দার বিধান অবতীর্ণ হওয়ার আগে তাকে দেখেছিলেন। এটাও হতে পারে যে, ‘মলিন চেহারার অধিকারীণী’– তার উপাধী ছিল। আর হযরত জাবের ব্যতিত অপরাপর সাহাবীদের সেকথা জানা ছিল না।

হযরত ইবনে মাসউদ রাযিয়াল্লাহু আনহু এর বর্ণনায় ‘এক মহিলা’ শব্দটির উল্লেখ রয়েছে। যাকে সম্ভান্ত্র নারীদের মধ্যে গণ্য করা হতো না। (আল-মুসতাদরাক লিল হাকিম, ২/১৯০ ও মুসনাদে আহমদ, ১/৩৭৬)

ইবনে ওমর রাযিয়াল্লাহু আনহু এর বর্ণনায় এসেছে– এক সুঠাম দেহসৌষ্ঠববিশিষ্টা নারী বলল’। (মুসলিম শরিফ, হাদিস নং-৭৯)

ইবনে ওমর রাযিয়াল্লাহু আনহু দূর থেকে দেখেই তাকে সুঠাম দেহসৌষ্ঠববিশিষ্টা বলে আখ্যা দিয়েছে। কিন্তু তার চেহারার কোনো বর্ণনা দেননি।

ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু এর বর্ণনায় কেবল ‘এক মহিলা বলল’ এরূপ এসেছে। (বুখারী শরিফ, হাদিস নং-৯৭৯)

হযরত আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহুও ‘এক মহিলা বলল’– বলে রেওয়ায়াত করেছেন। (মুসলিম শরিফ, হাদিস নং-৮০)

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা পাওয়া যায় মহিলাগণ বলল, হে আল্লাহর রাসূল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)’ (বুখারী শরিফ, হাদিস নং-৩০৪)

হযরত জাবের রাযিয়াল্লাহু আনহু ব্যতিত সেখানে আরো পাঁচজন সাহাবী উপস্থিত ছিলেন। যাদের কারো বর্ণনায় মহিলাটির চেহারার কথা উল্লেখ নেই। সম্ভবত হযরত জাবের রাযিয়াল্লাহু আনহু তাকে আগে থেকেই জানতেন। হতে পারে মহিলাটি দাঁড়ানোর সময় তার চেহারা থেকে উড়না সরে গিয়েছিল আর ইত্যবসরে হযরত জাবের রাযিয়াল্লাহু আনহু তাকে দেখে ফেলেছিলেন। আর ফিকাহ শাস্ত্রের একটি সর্বস্বীকৃত মূলনীতি হলো কোনো রেওয়ায়েতের ব্যাখ্যায় সন্দেহ-সম্ভাবনার উপস্থিতি থাকলে, হয়তো এটা নয়তো ওটা– এরূপ সংশয় হলে সেই রেওয়ায়াতকে দলিল হিসেবে পেশ করণ ও গ্রহণ কোনোটিই বৈধ নয়।

দ্বিতীয়ত যদি মেনেও নেয়া হয় যে, সেই নারীটির চেহারা খোলা ছিল, তাহলে এমনও হতে পারে যে, সেই নারীটি ছিল বয়োবৃদ্ধা। যার ওপর পর্দার আবশ্যিকতা ছিল না। আর এরূপ হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। কারণ, কোনো যুবতী নারী ভরা মজলিশে এতো পুরুষের সামনে দাঁড়িয়ে এমন নির্ভয়ে কথা বলতে পারে না। হয়তো সে নিজেকে বয়োজেষ্ঠ্য ভেবে দাঁড়িয়ে ছিল।

তৃতীয়ত সেই মহিলাটি কোনো সম্ভ্রান্ত বংশীয় ছিল না। তদুপরি তার ‘মলিন চেহারার অধিকারীণী’ হওয়াটা সে বাঁদী হওয়ার প্রতি ইঙ্গিতবাহী। কারণ, সে যুগের দাসী-বাঁদীদের চেহারা এরূপই হতো আর ইসলামি শরিয়তে দাসী-বাঁদীদের জন্য চেহারার পর্দা ওয়াজিব নয়।

চতুর্থত এটা পর্দার বিধান অবতীর্ণের পূর্বের ঘটনা হতে পারে। কারণ, ঈদের নামায ২য় হিজরীতে ওয়াজিব হয়েছিল। আর পর্দার বিধান অবতীর্ণ হয়েছিল ৫ম অথবা ৬ষ্ট হিজরীতে।

দ্বিতীয় দলিল: খুসআমি মহিলার ঘটনা

নারীদের চেহারা খোলা রাখার পক্ষে যারা বলেন– তাদের দ্বিতীয় দলিল হলো বুখারী শরীফে উল্লেখিত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত একটি হাদিস।

হাদিসটি হলো–

اع: عبد الله بن عباس رضي الله عنما قال : أردف النبي -صلى الله عليه وسلم- الفضل بن الثي -صلى الله عليه وسلم – للناس يفتيهم فأقيلي اعام وكان الفضل الحلا وضيئا فوق -صلى الله عليه وسلم- فطفق األفضل ير وأحبه امرأة من خثعم وطبيئة تشتت ال الحها فالتفت النبي -صلى الله عليه وسلم – إلى الفضل وهو ينظر إليها فأخذ يذقن الفضل قعدل وځيه عن النظر إليها. متفق عليه.

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, একদা ঈদুল আযহার দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফযল ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু কে স্বীয় সাওয়ারীর পেছনে বসিয়ে নিলেন। ফযল ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু সুন্দর-সুপুরুষ ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের প্রশ্নের জবাব দিতে থামলেন। ইত্যবসরে খাসআম গোত্রের এক সুশ্রী নারী রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট কিছু জিজ্ঞেস করল। হযরত ফযল রাযিয়াল্লাহু আনহু তার দিকে তাকিয়ে রইলেন এবং তার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হলেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেছনে তাকিয়ে দেখলেন ফযল সেই নারীটির দিকে তাকিয়ে আছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চিবুক ধরে চেহারাকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিলেন’ (বুখারী শরিফ, হাদিস নং-৬২২৮)

জবাব

প্রথম কথা হলো আলোচ্য হাদিসে একথা সুস্পষ্টরূপে বর্ণিত হয়নি যে, মহিলাটির চেহারা অনাবৃত ছিল। মহিলাটিকে সুশ্রী বলা হয়েছে। আর কোনো মহিলার সৌন্দর্য সম্পর্কে অবগতি লাভের জন্য তার চেহারা দেখা জরুরী নয়। হাত-পায়ের সৌন্দর্য দেখেও ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ও রূপ-লাবণ্যের সজীবতা অনুমান করা যায়। যদি বাস্তবিকই মহিলাটির চেহারা খোলা থাকত তাহলে বর্ণনাকারী তাকে وضيئة (সুশ্রী) শব্দ না বলে جميلة (সুন্দরী) বলত।

দ্বিতীয়ত হাদিসের বর্ণনায় উল্লেখ রয়েছে যে, হযরত ফযল রাযিয়াল্লাহু আনহু তাকে দেখার পর তার (حسن) সৌন্দর্যে মুগ্ধ হলেন। এখানে বলা হয়নি যে, তার (جمال) রূপ-লাবণ্যে মুগ্ধ হলেন। আরবী ভাষায় حسن এবং جمال শব্দদুটির মাঝে কিছুটা পার্থক্য আছে। جمال শব্দটিকে চেহারার রূপ-মাধুরী বোঝাতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আসলে মহিলাটির মার্জিত চাল-চলন হযরত ফযল রাযিয়াল্লাহু আনহু কে প্রভাবিত করেছিল। তাই বর্ণনাকারী এখানে حسن শব্দটি ব্যবহার করেছেন। চেহারার কমনীয়তার বর্ণনা করতে চাইলে তিনি অবশ্যই جمال শব্দটি ব্যবহার করতেন।

তৃতীয়ত ধরে নিলাম যে, মহিলাটির চেহারা তখন অনাবৃত ছিল। তাহলে হজ ইত্যাদিতে নারীদের জন্য চেহারা খোলা রাখা জায়েয হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত ফযল রাযিয়াল্লাহু আনহু-এর মুখ অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতেন না। কারণ, তিনি তো কোনো হারাম কাজে লিপ্ত ছিলেন না।

চতুর্থত হযরত আলী ইবনে আবি তালিব রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা রয়েছে, হযরত আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আপনার চাচাত ভাইয়ের ঘাড় অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিলেন কেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি একজন যুবক পুরুষ ও যুবতী নারীকে দেখলাম এবং তাদের দুজনের ব্যাপারে শয়তানের (প্রতারণার) আশঙ্কা করছিলাম। (মুসনাদে আহমদ, ১/৭৫)

অতএব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত ফযল রাযিয়াল্লাহু আনহু এর ঘাড় শুধু এই ভেবেই ঘুরিয়ে দেননি যে, তিনি যেন এক সুন্দরী নারীর অপরূপ দেহের দিকে তাকান এবং তার সুমিষ্ট কণ্ঠের মনোহরী বচন শুনতে না পান। বরং নেপথ্য কারণ এটাও ছিল যে, হযরত ফযল রাযিয়াল্লাহু আনহুও একজন সুদর্শন যুবক ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আশঙ্কা হচ্ছিল যে, তাকে দেখে সেই মহিলাটিও ফেতনায় পড়ে যাবে। তিনি উভয়ের দিকে উভয়ের দৃষ্টিপাত না হওয়াটা কামনা করছিলেন। আর এভাবেই তিনি দুজনের জন্যেই ফেতনার দ্বার রুদ্ধ করে দিলেন।

আলোচ্য হাদিসটির কোথাও ওই মহিলাটির চেহারা খোলা থাকার কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই। বরং হাদিসটি চেহারার পর্দার আবশ্যিকতার ব্যাপারে আরেকটি মজবুত দলিল।

তৃতীয় দলিল

ইমাম আবু দাউদ রাহিমাহুল্লাহ তার কিতাবে একটি হাদিস উল্লেখ করেছেন–

عائشة أن أسماء بنت أبي بكر دخلت على رسول الله صلى الله عليه اعر خالد بن دريك ع يصله وسلم عليها ثياب رقاق فأعرض عنها وقال : يا أسماء إن المرأة إذا بلغت المحيض خدا ان یری منها إلا هذا وهذا ، وأشار إلى وجهه وكفيه.

হযরত খালিদ বিন দুরাইক উম্মুল মুমেনিন হযরত আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন– একদা আসমা বিনতে আবু বকর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এখানে আসলেন। তার গায়ের কাপড়টি পাতলা ছিল। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলেন এবং বললেন, আসমা! প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর মেয়েদের চেহারা ও হস্তদ্বয় ব্যতিত শরীরের অন্য কোনো অঙ্গ দৃশ্যমান হওয়া উচিত নয়। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৪১০৪)

জবাব

এই হাদিসটি যঈফ (দূর্বল)। এটিকে প্রমাণ হিসেবে পেশ করা যাবে না।

কারণ :

* হাদিসটি বর্ণনা করার পর ইমাম আবু দাউদ রাহিমাহুল্লাহ নিজেই লিখেছেন যে, এটি খালেদ ইবনে দুরাইকের পক্ষ থেকে একটি মুরসাল রেওয়ায়াত। খালেদ ইবনে দুরাইক হযরত আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা এর যুগের ছিলেন না।

* এই হাদিসের সনদে সাঈদ বিন বশীর আবু আব্দুর রহমান বসরী নামের এক রাবী আছেন। মুহাদ্দিসীনে কেরাম যাকে যঈফ বলেছেন। যার বর্ণিত হাদিসকে প্রমাণ হিসেবে পেশ করা হতো না।

* হাদিসের সনদে কাতাদাহ এবং ওলিদ বিন মুসলিম নামী আরো দুজন রাবী আছেন, যারা হাদিস বর্ণনায় ‘তাদলিস’ করে থাকেন। তাই তাদের থেকে বর্ণিত হাদিস প্রমাণ হিসেবে পেশযোগ্য নয়।

উপরিউক্ত তিনটি দোষের কারণে হাদিসটি যঈফের স্তরে পড়ে। সুতরাং এটিকে দলিল হিসেবে উপস্থাপন করা ঠিক নয়।

এতটুকু পড়ার পর সারা কিতাব থেকে মাথা তুলল। মিহার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলল, আমার কাছে এ ব্যাপারে চতুর্থ আরেকটি জবাব আছে। যা থেকে প্রমাণিত হয় যে, এই হাদিসকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দিকে সম্বোন্ধ করা ঠিক নয়। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রী হযরত আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা এর সাথে বসে আছেন। আর ওনার শালিকা আসমা– যিনি হযরত আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে দশ বছরের বড় ছিলেন, পাতলা কাপড়ের পোষাক পরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে এসে যাবেন! বিষয়টি কিছুতেই বোধগম্য হবার নয়।

কেননা অজ্ঞতার যুগের আরব নারীরাও যথাযথ পর্দা করত। সে যুগের এক নারীর ঘটনা। একবার রাস্তা দিয়ে চলার সময় হঠাৎ বেখেয়ালে তার মাথা থেকে উড়না খসে পড়ল। সে তৎক্ষণাৎ এক হাতে উড়না ধরল আর অন্য হাতে দ্রুত চেহারা ঢেকে নিলো। এ দৃশ্য দেখে এক কবি একটি কবিতা আবৃতি করল–

سقط الصيف و ترد إسقاطه *

فتناولته واقتنا باليد

উড়নাটি তার পড়ে গেছে খসে, স্বেচ্ছায় নয় ভুলে

এক হাতে সে মুখটি ঢেকেছে অন্য হাতে উড়না তুলে

(দিওয়ানুন নুবাগা জিবয়ানী ১: ২৪)

একবার ভাবো, প্রাক-ইসলাম যুগের নারীরাই যদি পর্দার ব্যাপারে এতটা সচেতন থাকে, তাহলে ইসলাম-যুগের নারীরা কেমন হবে?

বেশ, এবার বেপর্দার সূচনা কিভাবে হলো, সেই ঘটনাটি বলো।

সারা ঘড়ির দিকে তাকাল। হায় আল্লাহ! আমার আব্বা আমাকে নিতে আসার সময় হয়ে গেছে।

না, সারা! ওই ঘটনা না শুনে আমরা তোমাকে ছাড়ছি না। মিহা ও উরাইয জিদ ধরল।

আচ্ছা, শোনো তাহলে।

সকল অধ্যায়

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন