স্পর্ধা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সে আসি কহিল, ‘প্রিয়ে, মুখ তুলি চাও।’
দূষিয়া তাহারে রুষিয়া কহিনু, ‘যাও!’
সখী, ওলো সখী, সত্য করিয়া বলি—
      তবু সে গেল না চলি।
 
দাঁড়ালো সমুখে, কহিনু তাহারে, ‘সরো।’
ধরিল দু হাত, কহিনু, ‘আহা, কী কর!’
সখী, ওলো সখী, মিছে না কহিব তোরে—
      তবু ছাড়িল না মোরে।

শ্রুতিমূলে মুখ আনিল সে মিছিমিছি—
নয়ন বাঁকায়ে কহিনু তাহারে, ‘ছি ছি!’
সখী, ওলো সখী, কহিনু শপথ ক’রে—
      তবু সে গেল না স’রে।

অধরে কপোল পরশ করিল তবু—
কাঁপিয়া কহিনু, ‘এমন দেখি নি কভু!’
সখী, ওলো সখী, একি তার বিবেচনা―
      তবু মুখ ফিরালো না।

আপন মালাটি আমারে পরায়ে দিল—
কহিনু তাহারে, ‘মালায় কী কাজ ছিল!’
সখী, ওলো সখী, নাহি তার লাজ ভয়—
      মিছে তারে অনুনয়।

আমার মালাটি চলিল গলায় লয়ে,
চাহি তার পানে রহিনু অবাক হয়ে।
সখী, ওলো সখী, ভাসিতেছি আঁখিনীরে—
      কেন সে এল না ফিরে!


১৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৩০৪

সকল অধ্যায়

১. দুঃসময়
২. বর্ষামঙ্গল
৩. চৌরপঞ্চাশিকা
৪. স্বপ্ন
৫. মদনভস্মের পূর্বে
৬. মদনভস্মের পর
৭. মার্জনা
৮. চৈত্ররজনী
৯. স্পর্ধা
১০. পিয়াসী
১১. পসারিনী
১২. ভ্রষ্ট লগ্ন
১৩. প্রণয়প্রশ্ন
১৪. আশা
১৫. বঙ্গলক্ষ্মী
১৬. শরত্‍‌
১৭. মাতার আহ্বান
১৮. ভিক্ষায়াং নৈব নৈব চ
১৯. হতভাগ্যের গান
২০. জুতা-আবিষ্কার
২১. সে আমার জননী রে
২২. জগদীশচন্দ্র বসু
২৩. ভিখারি
২৪. যাচনা
২৫. বিদায়
২৬. লীলা
২৭. নববিরহ
২৮. লজ্জিতা
২৯. কাল্পনিক
৩০. মানসপ্রতিমা
৩১. সংকোচ
৩২. প্রার্থী
৩৩. সকরুণা
৩৪. বিবাহমঙ্গল
৩৫. ভারতলক্ষ্মী
৩৬. প্রকাশ
৩৭. উন্নতিলক্ষণ
৩৮. অশেষ
৩৯. বিদায়
৪০. বর্ষশেষ
৪১. ঝড়ের দিনে
৪২. অসময়
৪৩. বসন্ত
৪৪. ভগ্ন মন্দির
৪৫. বৈশাখ
৪৬. রাত্রি
৪৭. অনবচ্ছিন্ন আমি
৪৮. জন্মদিনের গান
৪৯. পূর্ণকাম
৫০. পরিণাম
৫১. কৃতঘ্ন শোক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন