কবিতা : পত্র

সুকান্ত ভট্টাচার্য

পত্র

কাশী গিয়ে হু হু ক’রে কাটলো কয়েক মাস তো,
কেমন আছে মেজাজ ও মন, কেমন আছে স্বাস্থ্য?
বেজায় রকম ঠাণ্ডা সবাই করছে তো বরদাস্ত?
খাচ্ছে সবাই সস্তা জিনিস, খাচ্ছে পাঁঠা আস্ত?

সেলাই কলের কথাটুকু মেজদার দু’কান
স্পর্শ ক’রে গেছে বলেই আমার অনুমান৷
ব্যবস্থাটা হবেই, করি অভয় বর দান;
আশা করি, শুনে হবে উল্লসিত প্রাণ৷
এতটা কাল ঠাকুর ও ঝি লোভ সামলে আসতো,
এবার বুঝি লোভের দায়ে হয় তারা বরখাস্ত৷

চারুটাও হয়ে গেছে বেজায় বেয়াড়া,
মাথার ওপরে ঝোলে যা খুশির খাঁড়া৷
নতেদা’র বেড়ে গেছে অঙ্গুলি হাড়া,
ঘেলুর পরীক্ষাও হয়ে গেছে সারা;
এবার খরচ ক’রে কিছু রেল-ভাড়া
মাতিয়ে তুলতে বলি রামধন পাড়া৷

এবার বোধহয় ছাড়তে হল কাশী,
ছাড়তে হল শৈলর মা, ইন্দু ও ন’মাসি৷
দুঃখ কিসের, কেউ কি সেথায় থাকে বারোমাসই?
কাশী থাকতে চাইবে তারা যারা স্বর্গবাসী,
আমি কিন্তু কলকাতাতেই থাকতে ভালবাসি৷
আমার যুক্তি শুনতে গিয়ে পাচ্ছে কি খুব হাসি?
লেখা বন্ধ হোক তা হলে, এবার আমি আসি॥

১৯৪৫ সালে সুকান্ত মেজবৌদি রেণু দেবীর সঙ্গে কাশী বেড়াতে যান৷ সুকান্ত ফিরে এসে শ্যামবাজারের বাড়ি থেকে এই চিঠিটি তাঁকে লিখেছিলেন৷ চিঠিটি রাখাল ভট্টাচার্য স্মৃতি থেকে উদ্ধার করে দিয়েছেন৷

সকল অধ্যায়

১. কবিতা : আজিকার দিন কেটে যায়
২. কবিতা : চরমপত্র
৩. কবিতা : চৈত্রদিনের গান
৪. কবিতা : জবাব
৫. কবিতা : দেবদারু গাছে রোদের ঝলক
৬. কবিতা : নব জ্যামিতির ছড়া
৭. কবিতা : পটভূমি
৮. কবিতা : পত্র
৯. কবিতা : পরিচয়
১০. কবিতা : ব্যর্থতা
১১. কবিতা : ভবিষ্যতে
১২. কবিতা : ভারতীয় জীবনত্রাণ-সমাজের মহাপ্রয়াণ উপলক্ষে শোকোচ্ছ্বাস
১৩. কবিতা : মার্শাল তিতোর প্রতি
১৪. কবিতা : মেজদাকে : মুক্তির অভিনন্দন
১৫. কবিতা : সুচিকিৎসা
১৬. কবিতা : সুহৃদবরেষু
১৭. গল্প : ক্ষুধা
১৮. গান : বর্ষ-বাণী
১৯. গান : যেমন ক’রে তপন টানে জল
২০. গান : জনযুদ্ধের গান
২১. গান : আমরা জেগেছি আমরা লেগেছি কাজে
২২. গান : শৃঙ্খল ভাঙা সুর বাজে পায়ে
২৩. প্রবন্ধ : ছন্দ ও আবৃত্তি
২৪. গল্প : দুর্বোধ্য
২৫. গল্প : ভদ্ৰলোক
২৬. গল্প : দরদী কিশোর
২৭. গল্প : কিশোরের স্বপ্ন

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন