এমন যদি হত – র‍্যালফ মিলনে ফারলে

রণেন ঘোষ

এমন যদি হত – র‍্যাল মিলনে ফারলে

[এই রূপক কাহিনির দুটো বিকল্প সমাপ্তি আছে। পাঠকরা তাদের রুচি অনুযায়ী যে কোনওটি বেছে নিতে পারেন।]

কোনও এক ভদ্রলোকের অদ্ভুত ক্ষমতা ছিল। যখনই তিনি ভুল করতেন, তখনই ঘড়ির কাঁটা পিছনে ঘুরিয়ে দিতেন এবং পূর্ব অভিজ্ঞতায় অভিজ্ঞ হয়ে সেই কাজটি আবার করতেন। একদিন ঝমঝমিয়ে এক বৃষ্টির সময়ে ভদ্রলোক গোয়ালঘরে আশ্রয় নিলেন। না একলা নয়, সঙ্গে ছিল অতি সুন্দরী এক লাস্যময়ী তরুণী।

বাড়ি ফিরে তিনি স্ত্রীকে সব বললেন। সব শোনার পর স্ত্রীর মনে সন্দেহের দানা বাঁধল। সন্দেহের সুরেই স্ত্রী প্রশ্ন করলেন, মেয়েটির সঙ্গে তুমি কেমন ব্যবহার করেছিলে?

একটু অবাক হয়ে ভদ্রলোক দুঃখিত মনে বললেন, হঠাৎ এ প্রশ্ন কেন? কেমন ব্যবহার করা উচিত? দেখ অন্য কোনও ভাবনাচিন্তা তখন আমার মাথায় আসেনি।

এই শুনে শিকারি বেড়ালের মতো স্ত্রী স্বামীর দিকে তাকালেন কিছুক্ষণ। একরাশ বিরক্তি নিয়ে বলে উঠলেন, দেখ যে প্রলোভন তোমার আসেনি সে প্রলোভন দমন করার ভান করার কোনও অর্থ হয় না। ভদ্রলোকের বোধদয় হল। বুঝতে পারলেন তিনি এক সূক্ষ্ম ভুল করেছেন। যুদ্ধাস্ত্র স্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ঘড়ির কাঁটা কয়েক মিনিট পিছিয়ে দিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে পুনরায় কথোপকথন শুরু করলেন।

এবার স্ত্রী সন্দেহ প্রকাশ করায় ভদ্রলোক স্বীকার করলেন, দেখ আমি অনেক কষ্টে নিজেকে দমন করেছিলাম। জানো, তোমার প্রতি আমার ঐকান্তিক গভীর ভালোবাসাই আমার প্রলোভন দমনে-শক্তি জুগিয়েছিল।

স্ত্রীর প্রতি অকৃত্রিম আনুগত্যের কথা শুনে আত্মসন্তুষ্টিলাভ করা দূরে থাক, প্রচণ্ডরকম ক্রুদ্ধ হয়ে উঠে স্ত্রী বললেন–ছিঃ ছিঃ। তোমার কৃতিত্ব কোথায়? আসঙ্গলিপ্সার প্রলোভনই বা আসবে কেন? সত্যি সত্যি অপরিচিত নারীসঙ্গ করা যেমন অনৈতিক কাজ, ঠিক তেমনি অনৈতিক কাজ হল সেই নারীকে মনে মনে কামনা করা! বুঝলে?

এরপর ভদ্রলোক বহু সময় চিন্তা করলেন। ভাবলেন স্ত্রীলোককে সন্তুষ্ট করার নিশ্চয় কোন উপায় আছে।

অবশেষে সমাধানও খুঁজে পেলেন। যথারীতি ঘড়ির কাটা আবার পিছিয়ে দিলেন। পুনরায় স্ত্রী প্রশ্ন করলেন সুন্দরী রমণীর সঙ্গে কেমন ব্যবহার করেছিলে। এবার রীতিমতো ক্ষুণ্ণ মনে উত্তর দিলেন কেন? কী ভাবছ বলত? আমার রুচিকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত।

ভদ্রলোকের স্ত্রী সৌন্দৰ্য্য ওই যুবতীর কাছে কিছুই নয়। সুতরাং সোহাগে গদগদ হয়ে স্ত্রী স্বামীর কণ্ঠ বেষ্টন করে বললেন… সেই জন্যই তো আমি তোমাকে এত ভালোবাসি। এর অর্থ হল যে, আপনি যদি একটু বাস্তব বুদ্ধিসম্পন্ন হন তাহলে সহজেই স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে পারবেন।

অতএব ভদ্রলোকের ঘড়ির কাঁটা ঘুরিয়ে সময়কে পিছিয়ে দেওয়ার অত্যাশ্চর্য ক্ষমতায় কোনও কাজ হল না। অবশ্য একটা শিক্ষালাভ হল যে, স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করা অসম্ভব… ভালোমন্দ আপনি যাই করুন না কেন।

এই আপ্তবাক্য ওর পূর্বেই জানা উচিত ছিল।

যাই হোক, এবার ভদ্রলোকের সত্যিকারের জ্ঞানদয় হল। আর তিনি ভুল করলেন না। ঘড়ির কাঁটা ঘুরিয়ে সময়কে আরও কিছু পেছনে নিয়ে গেলেন। ঠিক যেখানে গোয়ালঘরের মধ্যে কেবল লাস্যময়ী সুন্দরী যুবতী আর ভদ্রলোক… নির্জন… কেউ কথাও নেই… বাইরে ঝড় বৃষ্টির ধারা…

সকল অধ্যায়

১. রাখে হরি মারে কে – আইজাক আসিমভ
২. ভবিষ্যৎ – ডব্লিউ হিল্টন ইয়ং
৩. মানুষ এক ভিন্ন জীব – এলান ব্লচ
৪. গণিতজ্ঞ – আর্থার ফেল্ডম্যান
৫. ব্যাবসা – ম্যাক রেনল্ড
৬. চিড়িয়াখানা – এডোয়ার্ড ডি. হচ
৭. ডক্টর – হেনরি সেলসার
৮. অভিজ্ঞ – রবার্ট টি, কুরোসাকা
৯. আবিষ্কার – জর্জ আর আর. মার্টিন
১০. দেশপ্রেমিক – অ্যামব্রোস বিয়ার্স
১১. বাছাই – হেনরি সেলসার
১২. বিষের পেয়ালা – লি. কিলাও
১৩. শিকারিরা – ওয়াল্ট সেন্ডন
১৪. ক্রিকেট বল – অ্যাভ্রো ম্যানহাটান
১৫. অ্যাপয়েন্টমেন্ট – এরিক ফ্র্যাঙ্ক রাসল
১৬. রমণী – রবার্ট শেকলে
১৭. পুনরুজ্জীবন – ডান্নি প্লাচটা
১৮. অস্ত্র – ফ্রেডরিক ব্রাউন
১৯. বিজ্ঞানী – জিরাল্ড অ্যাটকিন্স
২০. ব্যবসায়ী – হেনরি সেলসার
২১. জেদি – স্টিফেন গোল্ডিন
২২. ওঁ – মার্টিন গার্ডনার
২৩. কে ভালো – রে রাসেল
২৪. চুলকানি দিয়ে শুরু – রবার্ট শেকলে
২৫. নিয়ম – বেন বোভা
২৬. প্রাগৈতিহাসিক এক ভোরের গল্প – জন, পি. ম্যাকনাইট
২৭. কিউব রহস্য – নেলসন বন্ড
২৮. অমনোনীত – কে. ডব্লিউ. ম্যাকান
২৯. এমন যদি হত – র‍্যালফ মিলনে ফারলে
৩০. হারানো সেই দিনের কথা – আইজাক আসিমভ
৩১. উত্তর – ফ্রেডরিক ব্রাউন
৩২. মানুষ ক্রীতদাস হবে – সিদ্ধার্থ নারলেকার
৩৩. প্রহরী – লরেন্স এস. জ্যানিফার
৩৪. একটি মর্মান্তিক মৃত্যু – সমরজিৎ কর
৩৫. আমি কে – অমিতানন্দ দাস
৩৬. এস্প – এইচ. জি. ওয়েলস
৩৭. নেপথ্যে – আর্থার সি. ক্লার্ক
৩৮. কিন্ডারগার্টেন – জেমস-ই-গান
৩৯. অমৃত – আর্থার সি. ক্লার্ক
৪০. পলাতক তুফান – জগদীশচন্দ্র বসু
৪১. টেলিপ্যাথদের জন্য সায়েন্স ফিকশন – ই. মাইকেল ব্লেক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন