অনেক নদীর জল

জীবনানন্দ দাশ

অনেক নদীর জল উবে গেছে —
ঘরবাড়ি সাঁকো ভেঙে গেল;
সে সব সময় ভেদ করে ফেলে আজ
কারা তবু কাছে চলে এল
যে সুর্য অয়নে নেই কোনো দিন,
— মনে তাকে দেখা যেত যদি —
যে নারী দেখে নি কেউ — ছ-সাতটি তারার তিমিরে
হৃদয়ে এসেছে সেই নদী।
তুমি কথা বল — আমি জীবন-মৃত্যুর শব্দ শুনি:
সকালে শিশির কণা যে-রকম ঘাসে
অচিরে মরণশীল হয়ে তবু সূর্যে আবার
মৃত্যু মুখে নিয়ে পরদিন ফিরে আসে।
জন্মতারকার ডাকে বার বার পৃথিবীতে ফিরে এসে আমি
দেখেছি তোমার চোখে একই ছায়া পড়ে:
সে কি প্রেম? অন্ধকার? — ঘাস ঘুম মৃত্যু প্রকৃতির
অন্ধ চলাচলের ভিতরে।
স্থির হয়ে আছে মন; মনে হয় তবু
সে ধ্রুব গতির বেগে চলে,
মহা-মহা রজনীর ব্রহ্মান্ডকে ধরে;
সৃষ্টির গভীর গভীর হংসী প্রেম
নেমেছে — এসেছে আজ রক্তের ভিতরে।

‘এখানে পৃথিবী আর নেই–‘
ব’লে তারা পৃথিবরি জনকল্যাণেই
বিদায় নিয়েছে হিংসা ক্লান্তির পানে;
কল্যাণ, কল্যাণ; এই রাত্রির গবীরতর মানে।
শান্তি এই আজ;
এইখানে স্মৃতি;
এখানে বিস্মৃতি তবু; প্রেম
ক্রমায়াত আঁধারকে আলোকিত করার প্রমিতি।

সকল অধ্যায়

১. আমাকে একটি কথা দাও
২. তোমাকে
৩. মাঘসংক্রান্তির রাতে
৪. সময়সেতুপথে
৫. যতিহীন
৬. অনেক নদীর জল
৭. শতাব্দী
৮. সূর্য নক্ষত্র নারী
৯. চারিদিকে প্রকৃতির
১০. মহিলা
১১. সামান্য মানুষ
১২. প্রিয়দের প্রাণে
১৩. তার স্থির প্রেমিকের নিকট
১৪. অবরোধ
১৫. পৃথিবীর রৌদ্রে
১৬. সূর্য রাত্রি নক্ষত্র
১৭. জয়জয়ন্তী সূর্য
১৮. প্রয়াণপটভূমি
১৯. হেমন্তের রাতে
২০. নারীসবিতা
২১. উত্তরসাময়িকী
২২. বিস্ময়
২৩. ইতিহাসযান
২৪. মৃত্যু স্বপ্ন সংকল্প
২৫. পৃথিবী সূর্যকে ঘিরে
২৬. পটভূমির
২৭. অন্ধকার থেকে
২৮. একটি কবিতা
২৯. সারাৎসার
৩০. সময়ের তীরে
৩১. যতদিন পৃথিবীতে
৩২. মহাত্মা গান্ধী
৩৩. যদিও দিন
৩৪. দেশ কাল সন্ততি
৩৫. মহাগোধূলি
৩৬. মানুষ যা চেয়েছিল
৩৭. আজকে রাতে
৩৮. হে হৃদয়
৩৯. গভীর এরিয়েলে

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন