রাজপাট – ৩৬

তিলোত্তমা মজুমদার

৩৬ 

দেখিলাম দেহ তার বিমর্ষ পাখির রঙে ভরা; 
সন্ধ্যার আঁধারে ভিজে শিরীষের ডালে যেই পাখি দেয় ধরা—
বাঁকা চাঁদ থাকে যার মাথার উপর, 
শিঙের মতন বাঁকা নীল চাঁদ শোনে যার স্বর। 

.

সামান্য আয়োজন। পেতনির চর থেকে নাড়ু আর তারু এসেছে কেবল। গায়ে নতুন জামা-প্যান্ট। জড়সড় তারা। রেজাউল এসেছে। খুশি সে। এসেছে মোহনলাল, সিদ্ধার্থ। অসিত এবং মৌসুমিসহ এই সাতজন মাত্র বরপক্ষ। আর কনেপক্ষীয় আরও কম। পাত্রীর মামা-মামি, নিখিলেশ ও তাঁর স্ত্রী বর্ণালী। 

এ-বাড়িতেই নিবন্ধ হবে। পঞ্জিকা দেখেই স্থির হয়েছে ফাল্গুনের এই লগ্ন। আজই বাসর। ফুলশয্যাও আজই। বন্ধুরা সারা দুপুর ধরে ফুলে সাজিয়েছে শয্যা। শহর বহরমপুরের যতেক কোকিল—তাদের এনেছে ডেকে, এ বাড়ির কোনায় কোনায় সব বসে আছে হুলুধ্বনির সঙ্গে কুহুরব মিশিয়ে দেবে বলে। কারণ হারাধনের সঙ্গে বিবাহ হচ্ছে মৌসুমির। হারাধনের সঙ্গে মৌসুমির। হারাধন-মৌসুমি। বিবাহ হয়ে গেলে হারাধন সিঁদুর পরিয়ে দেবে মৌসুমিকে। তাকে দেখাচ্ছে লাবণ্যময়ী। একটি সমুদ্রনীল বেনারসিতে তাকে সাজিয়েছেন মা- মৌসুমি। তাঁকে দেখাচ্ছে উল্লসিত। পুত্রবধূ ঘরে এলে স্বাভাবিক মায়ের উল্লাস। কিন্তু হারাধন মাকে এড়িয়ে যাচ্ছে। কেন সে জানে না। সকল অন্তর সঙ্কুচিত হয়ে আছে তার। সিদ্ধার্থ বসির খানকেই নিয়ে এসেছে রান্না করার জন্য। পদ সে-ই স্থির করেছে। বিরিয়ানি আর পাঁঠার মাংস। বসির খান নিজেকে একজন দক্ষ রাঁধুনি হিসেবে দাবি করেছে। যদিও সে আমিষ-ভক্ষণ করে না। এ পর্যন্ত রান্নার ঘ্রাণ লোভনীয়। বাড়ি জুড়ে এক উৎসব। 

রাত্রি আটটার লগ্নে যখন স্ত্রীকে সিঁদুর পরাচ্ছে হারাধন, তখন ভিড়ের থেকে চলে গেলেন মৌসুমি। নিখিলেশ ছবি তুলছিলেন। ডাকলেন— এ কী, বউদি, চলে যাচ্ছেন? আসুন এখানে! 

মৌসুমি হাসলেন ছেলের সিঁদুরদান মাকে দেখতে নেই। 

সরে যাচ্ছেন তিনি। চলে যাচ্ছেন। দাঁড়াচ্ছেন ফুলে ঢাকা শয্যাটির কাছে। প্রদক্ষিণ করছেন। কী সুন্দর সাজিয়েছে! ফুলগুলি সুন্দর! কী সুন্দর লাগছে হারাধনকে ধুতি আর পাঞ্জাবিতে! কী সুন্দর! মৌকে খুব মানিয়েছে তার সঙ্গে। খুব মানিয়েছে। এখন তিনি কী করবেন? দেওয়ালে মিশে যাবেন? মেঝেতে মিশে যাবেন? হাওয়া হয়ে মিলিয়ে যাবেন বসন্ত ঋতুতে? কষ্ট! বড় কষ্ট! এত কষ্ট হওয়ার-ই কি কথা ছিল? 

–মা! 

–আমি তোর সামনে যাব না হারাধন। যদি আমার নজর লেগে যায়। আমার যে বড্ড হিংসে হচ্ছে তোর বউকে। হিংসেয় জ্বলে যাচ্ছে বুক। এই দ্যাখ। দ্যাখ না। আয়। মুখ রাখ আমার বুকে। আমার জ্বলন নিভিয়ে দে হারাধন। 

–মা। 

— আমার কাছে আসবি তো তুই? বউ পেয়ে আমাকে ভুলে যাবি না তো? নিটোল শ্রীময়ী বউটা তোর। টান-টান ত্বক। কোমল কিন্তু দৃঢ় পেশি। আমার দ্যাখ, হারাধন, আমার ত্বকে টান লেগেছে! গলায় বাড়তি ভাঁজ! কেন এরকম হয়? কেন হয়? আমার যে পাওয়া হল না। হল না। কিছুই হল না। 

–মা। 

–আজকে আর আমার আদর চাই না বল? কী রে? 

–মা। দাঁড়াও। প্রণাম করি। 

তিনি চমকে ফিরছেন। হারাধন দাঁড়িয়ে আছে সামনে। পাশে বউটি হাসছে। যার দিকে তাকাচ্ছেন, সে-ই হাসছে। হারাধন তাকিয়ে আছে সোজা। সটান। তিনি তাকাচ্ছেন না। হারাধনের চোখে রাখছেন না চোখ। হারাধন নিচু হয়ে প্রণাম করছে তাঁকে। বউ প্রণাম করছে। তিনি বললেন— সুখী হও। 

গলার কাছে দলা পাকিয়ে উঠছে কান্না। শরীর বিবশ হয়ে আসছে। তিনি জোর করছেন। সকল শক্তি দিয়ে দৃঢ় রাখছেন নিজেকে। বলছেন— শোনো মৌ, হারাধন আমার সরল ছেলে। তাকে কষ্ট দেবে না। একদম কষ্ট দেবে না। 

পরিণীতা মেয়েটি মুখ নিচু করে আছে। বলতে পারছে না, আজ, এই দিনে, কষ্ট দেবার কথা কেন? সে তো এমনিই বহু কষ্টে জর্জরিত হয়ে আছে। তার বাবা অসুস্থ। শয্যাশায়ী। এমনই বলা হয়েছে। যদি কোনওদিন ওঁরা যান তাদের বাড়ি? যদি জানতে পারেন তার বাবা…? 

উৎসবে আহারের তাড়া লাগল এবার। এবং আহারান্তে যার যার বাড়ি ফেরার আয়োজন। নিখিলেশ ও বর্ণালীর সঙ্গে তাঁদের বাড়িতেই চলে যাবেন মৌসুমির মামা ও মামি। রেজাউল সিদ্ধার্থর সঙ্গে যাবে। কেবল নাড়ু ও তারু থেকে যাবে এ বাড়িতে আজকের রাতটুকু। 

মৌকে এখন দেখাচ্ছে কিছু-বা দিশেহারা। কান্নার ভেতর সে জড়িয়ে ধরছে মাসিকে। মামিকে। তার বাবা মাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন— সেই বেদনা আর্জ শতগুণ হয়ে বাজছে তার বুকে। এবং ভয় করছে। বড়ই অনিশ্চিত এই দাম্পত্য সম্পর্ক। এই বন্ধন। এই শাঁখা-সিঁদুরের ভরসা বড়ই ভঙ্গুর। তার বিপদ এই সম্পর্কের ওপর সে আস্থা হারিয়ে বসে আছে আগেই। কী করতে পারত সে! এই তার অভিজ্ঞতা। একটিমাত্র মানুষের জন্য সে আর তার মা এক অনুগ্রহের জীবন কাটিয়ে এসেছে এতকাল। সে তার আশঙ্কার কথা মায়ের কাছে ব্যক্ত করলে তার মা বলেছিল এক আমাকে দেখেই সবাইকে খারাপ ভাবা ঠিক নয়। আমার অন্য ভাই-বোন সব সংসার করছে না? সব পুরুষই স্ত্রীকে ঠকিয়ে চলে যায় না মৌ। 

হয়তো। সে তার বিশ্বাস দৃঢ় করার চেষ্টা করছে প্রাণপণ। ঈশ্বরকে ডাকছে প্রাণপণ— ঠাকুর! আমাকে বিশ্বাস দাও। 

বর্ণালী বলছেন— কাঁদিস না। কালকেই তো আমরা আসব। 

তাঁরা হাত ধরে তাকে নিয়ে যাচ্ছেন শয্যায়— যা। বোস। আমরা হারাধনকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।

এবং ফুলশয্যা ঘিরে বন্ধুদের হাসির সময় শেষ হল। ফুরিয়ে গেল মোহনলালের আনা ক্যামেরার রিল। নিখিলেশের ক্যামেরা অপেক্ষা করে রইল আগামীকাল আবার কিছু ছবি তুলবে বলে। বন্ধুদের বিদায় দিয়ে নাডু ও তারুর শয়নের ব্যবস্থা করে হারাধন শোবার ঘরে এল। আশ্চর্য! ফুলের ওপর বসে থাকা মেয়েটিকে দেখে কোনও বাসনা জাগল না তার। হৃদয় জুড়ে মৌসুমি-মায়ের মুখ, সরাতে পারছে না সে। তার ইচ্ছে করছে চলে যায় ও বাড়ি। ইচ্ছে করছে, মায়ের কোলে মুখ গুঁজে বলে—মা, খেতে দাও! ইচ্ছে করছে, সেই নরম পরিচিত বুকের গন্ধে ডুবে যায় আর বুক ভরে নেয় নিজের। মনে হতে থাকে তার—এই মেয়ে, এই ফুলসাজানো শয্যা, এসব তার নয়। চেনা নয়। কাম্য নয়। সে চাইলেই এগুলি মিলিয়ে যাবে এখনই। আর সে, সন্ধ্যায় বাজাবে মৌসুমি মায়ের সাগ্রহ ডোরবেল! 

সে এই রাত্রে বিবাহিত পুরুষ হতে চাইল এবং চাইল না। সমাজের এ বিধান, ধড় থেকে মুণ্ডচ্ছেদ করার মতোই, আর জোড়া যায় না পূর্বেকার নিটোল শ্রীরূপে। সেই জ্ঞানে, সেই সচেতনতায়, সে অতএব দু’-চারটি মামুলি কথার মধ্যে মৌ নামে মেয়েটির স্বামী হওয়ার চেষ্টা করল। আপ্রাণ চেষ্টা তাকে বলে না। শুয়ে পড়ল সে। হাত বাড়িয়ে নিভিয়ে দিল আলো। বেনারসি মেয়ে বসে আছে তখনও। একভাবে। সে বলল— শুয়ে পড়ো। 

মেয়ে নীরব। 

–শুয়ে পড়ো। ক্লান্ত লাগছে না? 

–হুঁ। 

–আমার মাকে দেখলে? 

–তোমার মা? 

–উনি আমার সব। আমার আরেক মা। 

–হ্যাঁ। জানি তো। 

–ভাল না? 

— ভাল। 

–শুয়ে পড়ো। 

–তোমার মা, আমার শাশুড়ি, তাঁর আশীর্বাদ আজকের দিনে পেলাম না। 

–পাবে। এই মায়ের আশীর্বাদ তার চেয়ে কম নয়। 

–হয়তো। 

— হয়তো নয়। এটাই সত্যি। আমার মা মৌসুমি। এ ব্যাপারে আমার কথাই তোমার মেনে নেওয়া উচিত। মাকে তোমার ভাল লাগেনি? বলো? লাগেনি? 

–খারাপ লাগবে কেন? 

–এটা জবাব হল না। মা-র কোনও তুলনা নেই। মা আমার দেখা শ্রেষ্ঠ মানুষ। এসো। শুয়ে পড়ো। কী হল? সারা রাত বসে থাকবে নাকি? এসো? 

এই প্রথম স্পর্শ করল সে। স্ত্রীকে। হাত ধরল। এবং, ধরা মাত্র, লকলকে শিখা জ্বলে উঠল শরীরে। জ্বলন্ত হাতে সে যত বেশি করে খুঁজল এক শরীর, ততই বেড়ে উঠল দেহের দীপনমাত্রা। মেয়েটির ঠোঁটের সংকোচ পোড়াল সে। দেহের লজ্জা ছাই করে দিল। বড় দ্রুত বড় অস্থিরতায় সে ঝাঁপ দিল আর কুমারীবৃত্তকে দংশন করল। দুই পায়ের খাঁজে উন্মত্ত পুরুষকে স্থাপনের অভিপ্রায়ে দাপিয়ে বেড়াল সে আর মেয়েটি তীব্র যন্ত্রণায় খামচে ধরল বিছনার চাদর। চোখে জল আসছে তার কিন্তু স্বামীকে দু’হাতে জড়িয়ে ধরতে পারছে না সে। বিয়ে হওয়া- মাত্রই যে পুরুষ স্বামী হয়ে ওঠে না তা উপলব্ধি করছে সে। এমন অপরিচয়ে দেহদান বড় কঠিন। বড় লজ্জা ও অপমানের। অবু, সে বলতে পারছে না ছেড়ে দাও। সমাজ যে-অধিকার দিয়েছে তার স্বামীকে, সংস্কারবশত তার দায় নিতে বাধ্য থাকছে সে। ভাবছে না, এ তো ধর্ষণ প্রকারান্তরে। ভাবছে না। শুধু সইছে। তীব্র যন্ত্রণা! তীব্র, তীব্র, তীব্র যন্ত্রণা! এত কঠিন এই যৌনকাজ? এমন মর্মবিদারক? ভাবছে নবপরিণীতা স্ত্রী। আর স্বামীটি চূড়ান্ত ধাক্কায় তাকে ভেদ করতে করতে স্খলিত হচ্ছে, মুখ ঘষছে বুকে, আর বলছে— মা, মা, মাগো! তুমি কি আমার মা? আমার মা? 

সকল অধ্যায়

১. রাজপাট – ১
২. রাজপাট – ২
৩. রাজপাট – ৩
৪. রাজপাট – ৪
৫. রাজপাট – ৫
৬. রাজপাট – ৬
৭. রাজপাট – ৭
৮. রাজপাট – ৮
৯. রাজপাট – ৯
১০. রাজপাট – ১০
১১. রাজপাট – ১১
১২. রাজপাট – ১২
১৩. রাজপাট – ১৩
১৪. রাজপাট – ১৪
১৫. রাজপাট – ১৫
১৬. রাজপাট – ১৬
১৭. রাজপাট – ১৭
১৮. রাজপাট – ১৮
১৯. রাজপাট – ১৯
২০. রাজপাট – ২০
২১. রাজপাট – ২১
২২. রাজপাট – ২২
২৩. রাজপাট – ২৩
২৪. রাজপাট – ২৪
২৫. রাজপাট – ২৫
২৬. রাজপাট – ২৬
২৭. রাজপাট – ২৭
২৮. রাজপাট – ২৮
২৯. রাজপাট – ২৯
৩০. রাজপাট – ৩০
৩১. রাজপাট – ৩১
৩২. রাজপাট – ৩২
৩৩. রাজপাট – ৩৩
৩৪. রাজপাট – ৩৪
৩৫. রাজপাট – ৩৫
৩৬. রাজপাট – ৩৬
৩৭. রাজপাট – ৩৭
৩৮. রাজপাট – ৩৮
৩৯. রাজপাট – ৩৯
৪০. রাজপাট – ৪০
৪১. রাজপাট – ৪১
৪২. রাজপাট – ৪২
৪৩. রাজপাট – ৪৩
৪৪. রাজপাট – ৪৪
৪৫. রাজপাট – ৪৫
৪৬. রাজপাট – ৪৬
৪৭. রাজপাট – ৪৭
৪৮. রাজপাট – ৪৮
৪৯. রাজপাট – ৪৯
৫০. রাজপাট – ৫০
৫১. রাজপাট – ৫১
৫২. রাজপাট – ৫২
৫৩. রাজপাট – ৫৩
৫৪. রাজপাট – ৫৪
৫৫. রাজপাট – ৫৫
৫৬. রাজপাট – ৫৬
৫৭. রাজপাট – ৫৭
৫৮. রাজপাট – ৫৮
৫৯. রাজপাট – ৫৯
৬০. রাজপাট – ৬০
৬১. রাজপাট – ৬১
৬২. রাজপাট – ৬২
৬৩. রাজপাট – ৬৩
৬৪. রাজপাট – ৬৪
৬৫. রাজপাট – ৬৫
৬৬. রাজপাট – ৬৬
৬৭. রাজপাট – ৬৭
৬৮. রাজপাট – ৬৮
৬৯. রাজপাট – ৬৯
৭০. রাজপাট – ৭০
৭১. রাজপাট – ৭১
৭২. রাজপাট – ৭২
৭৩. রাজপাট – ৭৩
৭৪. রাজপাট – ৭৪
৭৫. রাজপাট – ৭৫
৭৬. রাজপাট – ৭৬
৭৭. রাজপাট – ৭৭
৭৮. রাজপাট – ৭৮
৭৯. রাজপাট – ৭৯
৮০. রাজপাট – ৮০
৮১. রাজপাট – ৮১
৮২. রাজপাট – ৮২
৮৩. রাজপাট – ৮৩
৮৪. রাজপাট – ৮৪
৮৫. রাজপাট – ৮৫
৮৬. রাজপাট – ৮৬
৮৭. রাজপাট – ৮৭
৮৮. রাজপাট – ৮৮
৮৯. রাজপাট – ৮৯
৯০. রাজপাট – ৯০
৯১. রাজপাট – ৯১
৯২. রাজপাট – ৯২
৯৩. রাজপাট – ৯৩
৯৪. রাজপাট – ৯৪
৯৫. রাজপাট – ৯৫
৯৬. রাজপাট – ৯৬
৯৭. রাজপাট – ৯৭
৯৮. রাজপাট – ৯৮
৯৯. রাজপাট – ৯৯
১০০. রাজপাট – ১০০
১০১. রাজপাট – ১০১
১০২. রাজপাট – ১০২
১০৩. রাজপাট – ১০৩
১০৪. রাজপাট – ১০৪
১০৫. রাজপাট – ১০৫
১০৬. রাজপাট – ১০৬
১০৭. রাজপাট – ১০৭
১০৮. রাজপাট – ১০৮
১০৯. রাজপাট – ১০৯
১১০. রাজপাট – ১১০
১১১. রাজপাট – ১১১
১১২. রাজপাট – ১১২
১১৩. রাজপাট – ১১৩
১১৪. রাজপাট – ১১৪
১১৫. রাজপাট – ১১৫
১১৬. রাজপাট – ১১৬
১১৭. রাজপাট – ১১৭
১১৮. রাজপাট – ১১৮ (শেষ)

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন