উতঙ্ক

বেদের শিষ্য। বেদ যখন যাজন কর্মের জন্য বিদেশে ছিলেন, তখন একবার আশ্রমের নারীরা উতঙ্ককে বলেন গুরুপত্নীর সঙ্গে মিলিত হয়ে তাঁর ঋতুরক্ষা করতে। কিন্তু উতঙ্ক এই অকার্য করতে রাজি হন না। বেদ ফিরে এসে সব শুনে প্রীত হয়ে উতঙ্ককে স্বগৃহে যাবার অনুমতি দেন। উতঙ্ক বারবার গুরুদক্ষিণা দিতে চাইলে, বেদ তাঁকে পত্নীর কাছে পাঠান। গুরুপত্নী উতঙ্ককে পৌষ্যরাজ-মহিষীর দুটি কুণ্ডল নিয়ে আসতে বলেন। কুণ্ডল নিয়ে উতঙ্ক যখন ফিরছেন, তখন এক তক্ষক পথে সেটি অপহরণ করে। উতঙ্ক তার পেছন পেছন নাগলোকে গিয়ে নাগগণ ও দেব-দেবতাকে সন্তুষ্ট করে – সেই কুণ্ডল উদ্ধার করে গুরুপত্নীকে দেন। এই উতঙ্কই পরীক্ষিতের পুত্র জনমেজয়কে পরে উদ্বুদ্ধ করেন জনমেজয়ের পিতৃহন্তা তক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবার জন্য।
উতঙ্কের কঠোর তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে বিষ্ণু একবার বর দিতে চাইলে উতঙ্ক বলেছিলেন যে, জগতপ্রভু হরিকে দেখতে পেয়েছেন – এটাই তাঁর পক্ষে যথেষ্ঠ। বিষ্ণু যখন আবার বর দিতে চাইলেন, তখন উতঙ্ক বললেন যে, তিনি যেন ধর্ম, সত্য ও ইন্দ্রিয়-সংযম পালন করতে পারেন এবং বিষ্ণুর সান্নিধ্য পান। বিষ্ণু ওঁকে অশীর্বাদ করে বলেন যে, উতঙ্ক যোগসিদ্ধ মহৎ কার্য করবেন এবং ওঁর যোগবল আশ্রয় করে রাজা কুবুলাশ্ব ধুন্ধু নামে এক মহাসুরকে বধ করবেন। (আশ্বমেধিক পর্বে আছে যে,উতঙ্ক মহর্ষি গৌতমের শিষ্য ছিলেন। একশত বছর তিনি গুরুগৃহে থেকে গুরুসেবা করেন। শিক্ষা সমাপ্ত হলে গৌতম বৃদ্ধ উতঙ্ককে পুনর্যৌবন দিয়ে নিজের কন্যাকে উতঙ্কের হাতে সমর্পণ করেন। উতঙ্ক গুরুদক্ষিণা দিতে চাইলে, গৌতম তাঁকে পত্নী অহল্যার কাছে পাঠান। অহল্যা উতঙ্ককে সৌদাসরাজমহিষীর কর্ণে যে মণিময় কুন্দলদ্বয় আছে – সেটি আনতে বলেন। সৌদাসরাজ যে রাক্ষসত্ব প্রাপ্ত হয়েছিলেন – তা অহল্যা জানতেন না। কিন্তু গুরুর আশীর্বাদে উতঙ্ক সেই রাক্ষস রাজা ও তাঁর মহিষীকে সন্তুষ্ট করে কুন্দলদ্বয় সংগ্রহ করলেন। তবে ফেরার পথে এক তক্ষক ওটিকে চুরি করল। তখন ইন্দ্রের সাহায্য নিয়ে উতঙ্ক নাগলোকে গিয়ে কুন্দলদ্বয় উদ্ধার করে গুরুপত্নীকে তাঁর গুরুদক্ষিণা দেন।)
কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের শেষে যখন কৃষ্ণ দ্বারকায় ফিরছিলেন তখন মরুধণ্ব প্রদেশে ওঁর সঙ্গে উতঙ্কের দেখা হয়। উতঙ্ক যখন শুনলেন কৌরবরা সবাই নিহত হয়েছেন তখন তিনি ক্রুদ্ধ হলেন। কৃষ্ণ চাইলেই এই লোকক্ষয় বন্ধ করতে পারতেন,কিন্তু করেন নি! ত্রুÝদ্ধ উতঙ্ক কৃষ্ণকে শাপ দিতে উদ্যত হলে, কৃষ্ণ তাঁকে শাপদান থেকে বিরত হতে বলে আত্মপরিচয় দেন। তারপর উতঙ্কের অনুরোধে তাঁকে ওঁর বিশ্বরূপ প্রদর্শন করেন। ভক্তি-আপ্লুত উতঙ্ককে কৃষ্ণ বর দিতে চাইলে উতঙ্ক বলেন যে, মরুভূমিতে জল পাওয়া কঠিন। কৃষ্ণ যদি বর দিতে চান, তাহলে এই বর দিন যাতে উতঙ্ক সেই মরুভূমিতেও অনায়াসে জল লাভ করতে পারেন।

সকল অধ্যায়

১. হৃষিকেশ
২. অক্রুর
৩. অগ্নি
৪. অগ্নিবেশ
৫. অগ্নিহোত্র
৬. অচ্যুত
৭. অঙ্গ
৮. অঙ্গদেশ
৯. অঙ্গারপর্ণ
১০. অঙ্গিরা
১১. অজাতশত্রু
১২. অজৈকপাদ
১৩. অতিরথ
১৪. অত্রি (১)
১৫. অত্রি (২)
১৬. অদিতি
১৭. অদ্রিকা
১৮. অধর
১৯. অধর্ম
২০. অধিরথ
২১. অনন্তনাগ
২২. অনবদ্যা
২৩. অনল
২৪. অনসূয়া
২৫. অনিল
২৬. অনু
২৭. অনুহলাদ
২৮. অনূপা
২৯. অন্ধ্রদেশ
৩০. অপ্সরা
৩১. অবন্তী
৩২. অবিজণাতগতি
৩৩. অভিমন্যু
৩৪. অমৃত
৩৫. অম্বা
৩৬. অম্বালিকা
৩৭. অম্বিকা
৩৮. অর্ক
৩৯. অরণি
৪০. অরিষ্টনেমা
৪১. অরুণ
৪২. অরুণা
৪৩. অরুন্ধতী
৪৪. অর্জ্জন্য
৪৫. অর্থ
৪৬. অর্য্যমা
৪৭. অলম্বুষ
৪৮. অলম্বুষা
৪৯. অশ্ব
৫০. অশ্বতীর্ণ
৫১. অশ্বমেধ-যজ্ঞ
৫২. অশ্বত্থমা
৫৩. অশ্বিনী
৫৪. অশ্বিনীকুমার
৫৫. অশ্মক
৫৬. অষ্টক
৫৭. অষ্টবসু
৫৮. অষ্টাবক্র
৫৯. অসুরা
৬০. অহঃ
৬১. অহির্বুধন্য
৬২. আদিত্য
৬৩. আরুণি (১)
৬৪. আরুণি (২)
৬৫. আরুষী
৬৬. আস্তিক
৬৭. ইক্ষাকু-বংশ
৬৮. ইন্দ্র
৬৯. ইন্দ্রজিত
৭০. ইন্দ্রকিল
৭১. ইরাবন
৭২. ইল্বল
৭৩. উগ্রশ্রবাঃ
৭৪. উতঙ্ক
৭৫. উতত্থ্য
৭৬. উত্তর
৭৭. উত্তরা
৭৮. উদ্দালক
৭৯. উপমন্যু
৮০. উপপ্লব্য
৮১. উপরিচর বসু
৮২. উমা
৮৩. উর্বশী
৮৪. উরুক্রম
৮৫. নৈর্ঋত
৮৬. পঞ্চচূড়া
৮৭. পরন্তপ
৮৮. পরশুরাম
৮৯. পরাশর
৯০. পুত্র বা কন্যাদের বৈচিত্র্য
৯১. পুত্র
৯২. পুলহ
৯৩. পুলোমা (১)
৯৪. পুলোমা (২)
৯৫. পুণ্ডরিকাক্ষ
৯৬. পুরোচন
৯৭. পুরুমিত্র
৯৮. পুরূরবা
৯৯. পুরুষোত্তম
১০০. পুলস্ত্য
১০১. পুষ্টি
১০২. পূর্ণ
১০৩. পুর্ণায়ু
১০৪. পূষাঃ
১০৫. পৃথু
১০৬. পৌলম/কালকেয়
১০৭. পৌষ্য
১০৮. পৌলস্ত্য
১০৯. প্রভাস
১১০. প্রচন্দ্র
১১১. প্রতর্দন
১১২. প্রধা
১১৩. প্রদ্যুম্ন
১১৪. প্রহ্লাদ
১১৫. উলুপী
১১৬. সহদেব (১)
১১৭. সহদেব (২)
১১৮. সহস্রপাদ
১১৯. সাত্যকি
১২০. সাবিত্রী
১২১. সিদ্ধ
১২২. সিংহচন্দ্র
১২৩. সিংহিকা
১২৪. সুতসোম
১২৫. সুতেজন
১২৬. সুজাতা
১২৭. সুদক্ষিণ
১২৮. সুদর্শন
১২৯. সুদর্শনা
১৩০. সুদেষ্ণা
১৩১. সুন্দ ও উপসুন্দ
১৩২. প্রজাপতি
১৩৩. সুপর্ণ

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন