চক্ষুস্থির

জীবনানন্দ দাশ

ক্লান্ত জনসাধারণ আমি আজ–চিরকাল; আমার হৃদয়ে
পৃথিবীর দণ্ডীদের মত পরিমিত ভাষা নেই।
রাত্রিবেলা বহুক্ষণ মোমের আলোর দিকে চেয়ে,
তারপর ভোরবেলা যদি আমি হাত পেতে দিই
সূর্যের আলো দিকে–তবুও আমার সেই একটি ভাবনা
অতীব সহজ ভাষা খুঁজে নিতে গিয়ে
হৃদয়ঙ্গম করে সব আড়ষ্ট, কঠিন দেবতারা
অপরূপ মদ খেয়ে মুখ মুছে নিয়ে
পুনরায় তুলে নেয় অপূর্ব গেলাস;
উত্তেজিত না হয়েই অনায়াসে ব’লে যায় তারা;
হেমন্তের ক্ষেতে কবে হলুদ ফসল ফলেছিলো,
অথবা কোথায় কালো হ্রদ ঘিরে ফুটে আছে সবুজ সিঙাড়া।
রক্তাতিপাতের দেশে ব’সেও তাদের সেই প্রাঞ্জলতায়
দেখে যাই সেই সোনালি ফসল, হ্রদ, সিঙাড়ার ছবি;
আমার প্রেমিক সেই জলের কিনারে ঘাসে–দক্ষ প্রজাপতি;
মানুষ-ও-ছাগমুণ্ড কেটে তাকে শুদ্ধ ক’রে দিয়ে যাবে অনাগত সবই,
একদিন হয়তো বা–আজ সব উত্তমর্ণ দেবতাকে আমার হৃদয়
যে সব পবিত্র মদ দিয়েছিলো–যে সব মদির
আলোর রঙের মতো ম্লান মদ দিয়ে গিয়েছিলো–
যখনই চুমুক দিই হয়ে থাকি চর্মচক্ষুস্থির!

সকল অধ্যায়

১. সপ্তক
২. স্বভাব
৩. সূর্যতামসী
৪. ফিরে এসো
৫. আকাশলীনা
৬. ঘোড়া
৭. সমারূঢ়
৮. নিরঙ্কুশ
৯. রিস্টওয়াচ
১০. গোধূলিসন্ধির নৃত্য
১১. যেই সব শেয়ালেরা
১২. একটি কবিতা
১৩. অভিভাবিকা
১৪. কবিতা
১৫. মনোসরণি
১৬. নাবিক
১৭. রাত্রি
১৮. লঘু মুহূর্ত
১৯. হাঁস
২০. উন্মেষ
২১. চক্ষুস্থির
২২. ক্ষেতে প্রান্তরে
২৩. বিভিন্ন কোরাস
২৪. স্বভাব
২৫. প্রতীতি
২৬. ভাষিত
২৭. সৃষ্টির তীরে
২৮. জুহু
২৯. সোনালি সিংহের গল্প
৩০. অনুসূর্যের গান
৩১. তিমির হননের গান
৩২. বিস্ময়
৩৩. সৌরকরোজ্জ্বল
৩৪. রাত্রির কোরাস
৩৫. নাবিকী
৩৬. সময়ের কাছে
৩৭. লোকসামান্য
৩৮. জনান্তিকে
৩৯. মকরসংক্রান্তির রাতে
৪০. উত্তরপ্রবেশ
৪১. দীপ্তি
৪২. সূর্যপ্রতিম
৪৩. যাত্রী

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন