৩০. চীনের শ্যাং রাজবংশের রাজধানীগুলো

ইশতিয়াক খান

অধ্যায় ৩০ – চীনের শ্যাং রাজবংশের রাজধানীগুলো

চীনে খ্রিস্টপূর্ব ১৭৫৩ থেকে ১৪০০ সালের মধ্যে শ্যাং রাজারা তাদের রাজধানী শহরকে ৫টি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় স্থানান্তর করে অবশেষে ইইনের বিষয়ে মনস্থির করতে সমর্থ হন।

পৃথিবীর একদম পূর্বপ্রান্তে, এককালে জিয়া রাজবংশের দখলে থাকা অঞ্চলের শাসনভার ছিল শ্যাং রাজবংশের হাতে এবং তারা বেশ শানশওকতের সঙ্গে এই দায়িত্ব পালন করেছেন বলেই আমরা ইতিহাস থেকে জানতে পারি।

তবে শ্যাং রাজবংশের প্রথমদিকের বছরগুলো সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। বিভিন্ন শহরের ধ্বংসাবশেষের বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, শাসনামলের প্রথমদিকের বছরগুলোতে (খ্রিস্টপূর্ব ১৭৬৬ থেকে ১৪০০) শ্যাংদের একটি নয়, বরং বেশ কয়েকটি রাজধানী শহর ছিল।

সুনির্দিষ্টভাবে জায়গাগুলোকে চিহ্নিত করতে না-পারলেও প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা, ৩৫০ বছরে ৫টি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় রাজধানী শহর স্থানান্তরিত হয়েছে। তাদের মতে, ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায়, ৫টি শহরকে অদৃশ্য রেখা দিয়ে জুড়ে দিলে একটি গোলক তৈরি করা যায়। এ গোলাকার জায়গাটি সম্ভবত জিয়া রাজবংশের রাজধানীর পূর্বদিকে, ট্যাংদের আদি নিবাসের কাছাকাছি ছিল।

বারবার রাজধানী স্থানান্তরের এই প্রবণতা থেকে আমরা ধারনা করতে পারি, শ্যাং রাজবংশ নিজেদের মধ্যে মসনদের দখল রাখতে পারলেও রাজ্যশাসনের ক্ষেত্রে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল না তাদের। ট্যাংদের উত্তরাধিকারীদের রাজত্বের সময় এবং জিয়া রাজবংশের শেষ কয়েক বছরে যে গোলযোগ দেখা দিয়েছিল, সেটি নতুন এই রাজবংশের সময়কালেও পুরোপুরি স্তিমিত হয়নি।

ট্যাংদের সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তির নাম ছিল ই ইন। তার ব্যাপারে মহান ইতিহাসবিদ সিমা কিয়ান দুই ধরনের তথ্য জানিয়েছেন। প্রথমত, তার প্রজ্ঞা ও জ্ঞানের সুনাম এত বেশি ছিল যে, রাজধানী পো থেকে বেশ দূরে কৃষক হিসেবে জীবনযাপন করা সত্ত্বেও ট্যাং তাকে হাতেপায়ে ধরে রাজি করান রাজসভায় যোগ দেওয়ার জন্য। আবার কেউ কেউ বলেছেন তিনি ট্যাং রাজার পাচকের পদে যোগ দেন এবং অসাধারণ সব খাবার রান্না করেন।

আসল গল্প যেটাই হোক না কেন, এটুকু নিশ্চিত যে, ই ইন একজন যোগ্য প্রশাসক ছিলেন এবং তিনি ট্যাং-রাজসভায় একজন বহিরাগত ব্যক্তি হিসেবে প্রবেশ করেছিলেন। আরও একটি গল্পে জানা যায় তিনি সাময়িকভাবে শত্রুপক্ষে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি কিছুদিন জিয়া রাজবংশের পক্ষে কাজ করে পরে আবারও ট্যাং-এর পতাকার নিচে চলে আসেন।

প্রায় ৩০ বছর সম্মানজনকভাবে রাজ্যশাসনের পর ট্যাং দেহত্যাগ করলেন। সেসময় ই ইন রাজসভার প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ট্যাং তার বড়ছেলেকে উত্তরসূরি হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন, কিন্তু তিনি ‘মসনদে বসার আগেই’ মৃত্যুবরণ করেন। বয়সে অনেক ছোট এবং নমনীয় স্বভাবের ২য় পুত্রের অভিষেক হল তার বড়ভাইয়ের পরিবর্তে। কিন্তু তিনিও ২ বছরের মাথায় মৃত্যুবরণ করেন এবং ফলশ্রুতিতে ৩য় সন্তান রাজার পদে বসেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, তিনিও ৪ বছর পর মারা যান। অল্প সময়ের মধ্যে ট্যাং-এর ৩ ছেলেই মারা গেলেন, কিন্তু তারা কেউই হিমোফিলিয়ার মতো কোনো দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হননি, বা তারা কেউ আত্মহত্যাও করেনি। মৃত্যুর ঘটনাগুলো নিঃসন্দেহে অস্বাভাবিক ছিল।

তবে সিমা কিয়ান এই মৃত্যুগুলোর জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ, কোনোভাবেই ইইনকে দোষারোপ করেননি। সিমা কিয়ানের বর্ণনা অনুযায়ী, রাজা ট্যাং-এর ৩য় পুত্র মারা যাওয়ার পরেও ই ইন ক্ষমতা-দখলের কোনো চেষ্টাই চালাননি, যেটা সে-যুগে রাজার ঘনিষ্ঠ সহচরদের খুবই স্বাভাবিক প্রবণতা ছিল। তিনি বরং ট্যাং-এর নাতি টাই জিয়ার অভিষেক অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। টাই জিয়া ছিলেন ৬ বছর আগে মারা যাওয়া ট্যাং-এর বড়ছেলের সন্তান।

তবে সার্বিকভাবে, ই ইনের এ ভূমিকা কতটুকু আনুগত্য থেকে আর কতটুকু কৌশলগত কারণে, তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। ই ইন জানতেন যে চীনের সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিরা একজন সাবেক পাচক অথবা কৃষককে মসনদে দেখতে চাইবেন না। কারো কারো মতে তিনি সরাসরি মসনদ দখলের পরিবর্তে, ধীরে ধীরে সিংহাসন দখলের দিকে আগাচ্ছিলেন।

ট্যাং-এর সব সন্তান একে একে মারা গেলেন এবং ই ইনের দিকনির্দেশনায় একজন শিশু দেশটির পরিচালনার দায়িত্ব পেলেন।

সিমা কিয়ানের বয়ান অনুযায়ী, টাই জিয়ার শাসনামলের ১ম বছরে তরুণ রাজার জন্য ইইন বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা লেখেন। তবে তার নির্দেশনাগুলো প্রায়ই অনুসরণ করা হতো না। সিমা কিয়ান আরও জানান, অভিষেকের ৩ বছরের মাথায় টাই জিয়া ‘নিস্তেজ ও অত্যাচারী হয়ে ওঠেন এবং ট্যাং বংশের পূর্বে প্রতিষ্ঠিত শাসনব্যবস্থা বর্জন করেন। তার আচরণ ট্যাং ঐতিহ্যের জন্য অবমাননাকর হয়ে দাঁড়ায়।’

যেহেতু তিনি তখনো অনেক কমবয়সি ছিলেন, ঠিক কতখানি অত্যাচারী বা একনায়কসুলভ হতে পেরেছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। ই ইন তরুণ রাজাকে হাতের পুতুলের মতো ব্যবহার করতেন। এমনও হতে পারে ই ইনের এই স্বৈরাচারী মনোভাব মেনে নিতে পারেননি টাই জিয়া। হারালেন ধৈর্য। বিপদ বুঝতে পেরে ই ইন শিগগির ঘোষণা করলেন, সিংহাসনের গৌরব বিপদগ্রস্ত। এ অজুহাত দেখিয়ে তিনি শহর থেকে ২৫ মাইল দূরের একটি প্রাসাদে তরুণ রাজা টাই জিয়াকে অন্তরিন করে রাখলেন।

পরবর্তী ৩ বছর ই ইন সম্রাটের প্রতিনিধি হিসেবে সার্বিকভাবে প্রশাসনের দায়িত্বে ছিলেন এবং তার কাছেই গ্রামের সর্দাররা এসে নজরানা দিয়ে যেতেন।

সিমা কিয়ান এই গল্পের একটি সুখী সমাপ্তি টানেন। তিনি বর্ণনা করেন, ৩ বছর নির্বাসনে থাকার পর তরুণ সম্রাট তার ভুল বুঝতে পেরে অনুশোচনায় দগ্ধ হন এবং ফিরে এসে সদাচরণ দেখান। অর্থাৎ ই ইন অন্তরিন অবস্থা থেকে ফিরে আসা রাজাকে দুহাত বাড়িয়ে স্বাগত জানান এবং সসম্মানে রাজ্যশাসনের ভার তার হাতে তুলে দেন। সিমা কিয়ান বলেন, ‘ই ইন তাকে অসাধারণ মনে করতেন।’

তবে এ গল্পের একটি বিকল্প বর্ণনা আছে যেটি অন্যান্য বেশকিছু সূত্র থেকে জানা যায়। খুব সম্ভবত সেটাই সত্যবচন। বিকল্প বর্ণনা অনুযায়ী টাই জিয়াকে যে- প্রাসাদে অন্তরিন করে রাখা হয়েছিল, সেখান থেকে তিনি পালিয়ে যান এবং রাজধানীতে ফিরে আসেন। এরপর তিনি ই ইনকে নিজহাতে হত্যা করেন।

পরবর্তী ১৪ শ্যাং রাজাদের রাজত্বের কোনো বিস্তারিত বর্ণনা ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পায়নি। তবে আমরা জানি ১০ম শ্যাং রাজা চুং টিং ক্ষমতায় থাকার সময় দেশের নাগরিকরা বিদ্রোহ করেন এবং রাজধানী শহরের পতন হয়। চুং টিং হিসিয়াওতে রাজধানী সরিয়ে নেন।

যে জায়গাটিকে ভূতাত্ত্বিকরা হিসিয়াও বলে ধারণা করেন, সেখানে খননকাজ চালিয়ে একটি শহর পাওয়া গেছে। এ শহরের চারপাশে একটি বড় আকারের প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছিল। নির্মাণ-উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয় মাটি। প্রাচীরের উচ্চতা প্রায় ৩০ ফুটের মতো এবং কিছু কিছু জায়গায় এটি ৯০ ফুট প্রশস্ত। ধারণা করা হয়, ১০ হাজার শ্রমিক প্রায় ১৮ বছর কাজ করে এই প্রাচীর তৈরি করেছিলেন। শ্যাং রাজা মিশরীয় ফারাওদের মতো প্রভাব-প্রতিপত্তি দেখাতে না পারলেও অসংখ্য শ্রমিককে বছরের পর বছর কায়িক শ্রমে নিয়োজিত করার মতো ক্ষমতা তাদের ছিল, যার নিদর্শন এই প্রাচীর।

এই প্রাচীরের পেছনে বিপুল পরিমাণ শ্রম ও সম্পদ বিনিয়োগ করা হলেও, দুই প্রজন্ম পরেই ১২তম শ্যাং রাজা আবারো রাজধানী পরিবর্তন করেন। এবার হিসিয়াও শহরে নতুন রাজধানীর গোড়াপত্তন হয়। তার উত্তরাধিকারী, ১৩তম শ্যাং রাজা সু ই ক্ষমতায় এসে সবকিছু গুছিয়ে কেং শহরে নতুন রাজধানী তৈরি করেন এবং এর মধ্যদিয়ে ইতিহাসের পাতায় ৪র্থ শ্যাং রাজধানী হিসেবে এ শহরের নাম উঠে যায়। কিন্তু শিগগির বন্যায় কেং শহর ধ্বংস হয়ে যায় এবং সু ই ৫ম রাজধানী হিসেবে ইয়েন শহরকে নির্বাচন করেন। এ ঘটনার মাধ্যমে তিনি এক অনন্য রেকর্ড সৃষ্টি করেন। তিনি পরিণত হন একমাত্র শ্যাং রাজা যার রাজত্বকালে ৩টি ভিন্ন শহরকে রাজধানী হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল। বস্তুত, পৃথিবীর ইতিহাসে এরকম রাজা আর রাজত্ব আর এসেছে কি না, সন্দেহ!

শ্যাংদের বারবার রাজধানী পরিবর্তন করার ব্যাপারটি বেশ রহস্যজনক। অন্য সব প্রাচীন রাজত্বে (যতদূর জানা গেছে) একটি সুনির্দিষ্ট শহরকে রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জোরদার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে এবং শুধুমাত্র শত্রুপক্ষের প্রবল আক্রমণ কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়েই প্রতিষ্ঠিত রাজধানীকে পরিত্যাগের ঘটনা ঘটেছে। তবে শ্যাংদের বারবার রাজধানী পরিবর্তনের পেছনে ইয়েলো নদীর বন্যার কোনো ভূমিকা থাকতে পারে। শ্যাংদের চীন কয়েক শতাব্দী আগের মিশরের চেয়েও অনেক বেশি বিচ্ছিন্ন ছিল। তাদের অন্য কোনো দেশের সঙ্গে জলপথে বাণিজ্যসম্পর্ক ছিল না। এমনকি বাইরের কোনো দেশের সঙ্গে তাদের সড়কের মাধ্যমেও সংযুক্তি ছিল না। সুতরাং এ যুক্তিও ধোপে টেকে না।

শ্যাংদের রাজত্বে বহিঃশত্রুর আক্রমণের ঘটনা সেভাবে না-থাকলেও গ্রামের সর্দারদের আক্রমণ ও বিদ্রোহ থেমে থাকেনি। ইতিহাসবিদ সিমা কিয়ান জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে বারবার ক্ষমতার উত্থানপতন হয়েছে। কয়েকজন রাজার আমলে এই সর্দাররা ‘উপঢৌকন’ সহ দেখা করতে আসতেন। কিন্তু অন্য রাজারা লক্ষ করলেন এই গ্রাম্য সর্দাররা তাদেরকে এড়িয়ে যাচ্ছেন এবং রাজধানীতে এসে নজরানা দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন। তবে এ ঘটনায় শ্যাং রাজারা খুব একটা ‘মাইন্ড’ করতেন না। নজরানা না পেলেও তারা উঁচু প্রাচীরের পেছনে বসে দিন পার করেছেন। তারা এই প্রাচীরগুলো সম্ভবত নিজের দেশের মানুষদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যই বানিয়েছিলেন।

খ্রিস্টপূর্ব ১৪০০ সালের আশেপাশে, ১৯তম শ্যাং রাজা প্যান কেং রাজধানী শহরকে ইয়েলো নদীর অপরপ্রান্তে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। স্বভাবতই, রাজসভার সদস্যরা এর প্রতিবাদ জানালেন। এমনকি তারা বিদ্রোহ করার হুমকি ও দিলেন। তবে প্যান কেং তার সিদ্ধান্তে অবিচল রইলেন।

প্যান কেং-এর শাসনামলের একটি গল্প থেকে আমরা জানতে পারি, শ্যাং-এর রাজসভায় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কৌশলগত নমনীয়তা বজায় রাখা হতো, এমনকি বিদ্রোহ আসন্ন, সেটি জেনেও। প্যান কেং তার সভাসদদের প্রতি কী ঘোষণা দিয়েছিলেন, সে-ব্যাপারে ৩টি ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনা খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রথম বর্ণনায় প্যান কেং জানান, আমি ভবিষ্যদ্বক্তা ওরাকলের সঙ্গে আলোচনা করে উত্তর পেয়েছি, ‘এ জায়গা আমাদের উপযুক্ত নয়।’

তিনি আরও জানান, আমাদের পূর্বসূরি রাজারা এ-ধরনের সমস্যায় পড়লে স্বর্গ থেকে উপদেশ পেতেন। এরকম পরিস্থিতিতে তারা কখনো ঘুমিয়ে থাকতেন না, তারা একই শহরে বসেও থাকতেন না। বিশেষ পরিস্থিতিতে ৫টি ভিন্ন অঞ্চলে রাজধানী স্থানান্তরিত হয়েছে। এবারও ব্যতিক্রম নয়। আমাদেরকে সেসব প্রাচীন সময়ের উদাহরণ মেনে চলতে হবে। সাবেক রাজাদের ঋদ্ধ পথ অবলম্বন করতে হবে।

এ গল্পে প্যান কেং এক বিশেষ কৌশল অবলম্বন করেছেন। তিনি বারবার রাজধানী-পরিবর্তনের দুর্বলতার ইতিহাসকে চমকপ্রদভাবে ইতিবাচক আলোয় দেখিয়েছেন। এর সঙ্গে স্বর্গীয় আদেশের স্বাদও জুড়ে দিয়েছেন। অতীতের দুর্বলতাকে শক্তিমত্তার পরিচায়ক হিসেবে দেখান তিনি।

তার এই কৌশল কাজে লাগে এবং ইন শহরে নতুন করে আবারও রাজসভা জমে ওঠে। সিমা কিয়ান বর্ণনা করেছেন, “ইন শহরে দেশের সরকার উন্নয়নের পথে ফিরে আসে এবং গ্রাম্য সর্দাররা আবারও নজরানা দেওয়া শুরু করেন, কেননা তিনি (প্যান কেং) ট্যাং-এর মহিমান্বিত কার্যধারা অনুসরণ করছিলেন।

বস্তুত অনেক মানুষকে জোরপূর্বক অভিবাসী হতে বাধ্য করা সত্ত্বেও প্যান কেং-এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। চীনের কিছু অভিজাত পরিবারের সদস্য রাজধানী স্থানান্তরের পক্ষে ছিলেন না। কিন্তু তারাও প্যান কেং-এর ভক্তে পরিণত হন।

ক্ষমতা দখলের লোভে হিটিট রাজারা শ্যাং-রাজত্বে আক্রমণ চালানো অব্যাহত রাখে। অস্ত্র ধারণ না করে চীনের প্রাচীন শাসকরা অভিনব পন্থায় এই আগ্রাসনের মোকাবিলা করেন। বিন্দুমাত্রও রক্তপাত না ঘটিয়ে তারা শুধু রাজধানী স্থানান্তর করেই কয়েক শতক চীনের মসনদ ধরে রাখতে পেরেছিলেন।

অধ্যায় ১ / ৫৬

সকল অধ্যায়

১. ৩০. চীনের শ্যাং রাজবংশের রাজধানীগুলো
২. ৩১. গ্রিসের মাইসেনীয় জাতি
৩. ৩২. দেবতাদের সংঘর্ষ
৪. ৩৩. যুদ্ধ ও বৈবাহিক সম্পর্ক
৫. ৩৪. অতি প্রাচীনকালের সর্বশ্রেষ্ঠ যুদ্ধ
৬. ৩৫. ট্রয়ের যুদ্ধ
৭. ৩৬. চীনের প্রথম ঐতিহাসিক রাজা
৮. ৩৭. ঋগ্বেদ
৯. ৩৮. যখন আবারো ইতিহাসের চাকা ঘুরল
১০. ৩৯. নতুন রাজত্বের অবসান
১১. ৪০. গ্রিসের অন্ধকার যুগ
১২. ৪১. মেসোপটেমিয়ার অন্ধকার যুগ
১৩. ৪২. শ্যাংদের পতন
১৪. ৪৩. স্বর্গ থেকে আসা আদেশ
১৫. ৪৪. ভারতের যুদ্ধ
১৬. ৪৫. ডেভিডের পুত্র
১৭. ৪৬. আবারও পশ্চিম থেকে পূর্বে গেল ঝৌরা
১৮. ৪৭. অ্যাসিরীয়ার রেনেসাঁ
১৯. ৪৮. নতুন জনগোষ্ঠী
২০. ৪৯. বাণিজ্যিক কেন্দ্র ও উপনিবেশ
২১. ৫০. পুরনো শত্রুরা
২২. ৫১. অ্যাসিরীয়া ও ব্যাবিলনের রাজারা
২৩. ৫২. চমকপ্রদ পরাজয়
২৪. ৫৩. চীনের ক্ষয়িষ্ণু রাজা
২৫. ৫৪. মিশরের অ্যাসিরীয়রা
২৬. ৫৫. মেদেস ও পারস্যবাসীরা
২৭. ৫৬. বিজয় ও স্বৈরাচার
২৮. ৫৭. একটি রাজত্বের শুরু ও শেষ
২৯. ৫৮. একটি সংক্ষিপ্ত সাম্রাজ্য
৩০. ৫৯. সাইরাস দ্য গ্রেট
৩১. ৬০. রোম প্রজাতন্ত্র
৩২. ৬১. রাজত্ব ও সংস্কারকামীরা
৩৩. ৬২. দায়িত্ববোধ, ক্ষমতা ও ‘আর্ট অব ওয়ার’
৩৪. ৬৩ – পারস্য সাম্রাজ্যের আধিপত্য বিস্তার
৩৫. ৬৪. দ্য পার্শিয়ান ওয়ারস : পারস্যের যুদ্ধ
৩৬. ৬৫. পেলোপোনেশীয় যুদ্ধ
৩৭. ৬৬. রোমে প্রথম লুটপাট
৩৮. ৬৭. চি’ইনের জাগরণ
৩৯. ৬৮. মেসিডোনিয়ার বিজেতারা
৪০. ৬৯. রোমের বজ্রআঁটুনি
৪১. ৭০. আলেকজান্ডার ও উত্তরাধিকারীদের যুদ্ধ
৪২. ৭১. মৌর্য সভ্যতার পরিণতি
৪৩. ৭২. প্রথম সম্রাট, দ্বিতীয় রাজবংশ
৪৪. ৭৩. পুত্রদের যুদ্ধ
৪৫. ৭৪. রোমান স্বাধীনতাকামী ও সেলেউসিদ দখলদার
৪৬. ৭৫. পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝে
৪৭. ৭৬. প্রচলিত ব্যবস্থার বিনির্মাণ
৪৮. ৭৭. উন্নয়নের সমস্যাগুলো
৪৯. ৭৮. নতুন মানুষ
৫০. ৭৯. সাম্রাজ্য
৫১. ৮০. অমাবস্যা ও পুনর্জাগরণ
৫২. ৮১. উত্তরাধিকারের সমস্যা
৫৩. ৮২. রোমান সাম্রাজ্যের কিনারায়
৫৪. ৮৩. সিংহাসনে শিশুরা
৫৫. ৮৪. উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া ক্ষমতার ভ্রান্তি
৫৬. ৮৫. সাম্রাজ্যের রক্ষাকর্তা

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন