আমি আর আসবো না বলে

আল মাহমুদ

আমি আর আসবো না বলে

আর আসবো না বলে দুধের ওপরে ভাসা সর
চামোচে নিংড়ে নিয়ে চেয়ে আছি। বাইরে বৃষ্টির ধোঁয়া
যেন শাদা স্বপ্নের চাদর
বিছিয়েছে পৃথিবীতে।
কেন এতো বুক দোলে? আমি আর আসবো না বলে?
যদিও কাঁপছে হাত তবু ঠিক অভ্যেসের বশে
লিখছি অসংখ্য নাম চেনাজানা
সমস্ত কিছুর।

প্রতিটি নামের শেষে, আসবো না।
পাখি, আমি আসবো না।
নদী, আমি আসবো না।
নারী, আর আসবো না, বোন।

আর আসবো না বলে মিছিলের প্রথম পতাকা
তুলে নিই হাতে।
আর আসবো না বলে
সংগঠিত করে তুলি মানুষের ভিতরে মানুষ।
কথার ভেতরে কথা গেঁথে দেওয়া, কেন?
আসবো না বলেই।
বুকের মধ্যে বুক ধরে রাখা, কেন?
আসবো না বলেই।

অথচ স্মৃতির মধ্যে পরতে পরতে জমে আছে
দুঃখের অস্পষ্ট জল। মনে হয় যে নদীকে চিনি
সেও ঠিক নদী নয়, আভাসে ইঙ্গিতে কিছু জল।
যে নারী দিয়েছে খুলে নীবিবন্ধ, লেহনে পেষণে
আমি কি দেখেছি তার পরিপূর্ণ পিঠের নগ্নতা?
হয়তো জংঘার পাশে ছিল তার খয়েরী জরুল
লেহনলীলায় মত্ত যা আমার লেলিহান জিহ্বারও জানে না।

আজ অতৃপ্তির পাশে বিদায়ের বিষণ্ণ রুমালে
কে তুলে অক্ষর কালো, ‘আসবো না’
সুখ, আমি আসবো না।
দুঃখ, আমি আসবো না।
প্রেম, হে কাম, হে কবিতা আমার
তোমরা কি মাইল পোস্ট না ফেরার পথের ওপর?

সকল অধ্যায়

১. প্রকৃতি
২. সোনালী কাবিন
৩. বাতাসের ফেনা
৪. কবিতা এমন
৫. প্রত্যাবর্তনের লজ্জা
৬. দায়ভাগ
৭. আসে না আর
৮. অবগাহনের শব্দ
৯. তোমার হাতে
১০. এই সম্মোহনে
১১. নতুন অব্দে
১২. পলাতক
১৩. অন্তরভেদী অবলোকন
১৪. আভূমি আনত হয়ে
১৫. স্বপ্নের সানুদেশে
১৬. পালক ভাঙার প্রতিবাদে
১৭. যার স্মরণে
১৮. কেবল আমার পদতলে
১৯. এক নদী
২০. জাতিস্মর
২১. চোখ যখন অতীতাশ্রয়ী হয়
২২. আত্মীয়ের মুখ
২৩. তোমার আড়ালে
২৪. ভাগ্যরেখা
২৫. শোণিতে সৌরভ
২৬. সাহসের সমাচার
২৭. চোখ
২৮. স্বব্ধতার মধ্যে তার ঠোঁট নড়ে
২৯. উল্টানো চোখ
৩০. আমি আর আসবো না বলে
৩১. নদী তুমি
৩২. বোধের উৎস কই, কোন দিকে?
৩৩. সত্যের দাপটে
৩৪. আমার চোখের তলদেশে
৩৫. ক্যামোফ্লাজ
৩৬. খড়ের গম্বুজ
৩৭. আঘ্রাণে
৩৮. আমার প্রাতরাশে
৩৯. আমিও রাস্তায়
৪০. তরঙ্গিত প্রলোভন

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন