খড়ের গম্বুজ

আল মাহমুদ

খড়ের গম্বুজ

কে জানে ফিরলো কেননা, তাকে দেখে কিষাণেরা অবাক সবাই
তাড়াতাড়ি নিড়ানির স্তুপাকার জঞ্জাল সরিয়ে
শস্যের শিল্পীরা এসে আলের ওপরে কড়া তামাক সাজালে।
একগাদা বিচালি বিছিয়ে দিতে দিতে
কে যেনো ডাকলো তাকে; সস্নেহে বললো, বসে যাও,
লজ্জার কি আছে বাপু, তুমি তো গাঁয়েরই ছেলে বটে,
আমাদেরই লোক তুমি। তোমার বাপের
মারফতির টান শুনে বাতাস বেহুঁশ হয়ে যেতো।
পুরনো সে কথা উঠলে এখনও দহলিজে
সমস্ত গায়ের লোক নরম নীরব হয়ে শোনে।

সোনালি খড়ের স্তুপে বসতে গিয়ে প্রত্যাগত পুরুষ সে-জন
কী মুস্কিল দেখলো যে নগরের নিভাঁজ পোশাক
খামচে ধরেছে হাঁটু। উরতের পেশী থেকে সোজা
অতদূর কোমর অবধি
সম্পূর্ণ যুবক যেনো বন্দী হয়ে আছে এক নির্মম সেলাইয়ে।
যা কিনা এখন তাকে স্বজনের সাহচর্য, আর
দেশের মাটির বুকে, অনায়াসে
বসতেই দেবে না।

তোমাকে বসতে হবে এখানেই,
এই ঠাণ্ডা ধানের বাতাসে।
আদরে এগিয়ে দেওয়া হুঁকোটাতে সুখটান মেরে
তাদের জানাতে হবে কুহলি পাখির পিছু পিছু
কতদূর গিয়েছিলে পার হয়ে পানের বরোজ!

এখন কোথায় পাখি? একাকী তুমিই সারাদিন
বিহঙ্গ বলে অবিকল পাখির মতোন চঞ্চুর
সবুজ লতা রাজপথে হারিয়ে এসেছে।
অথচ পাওনি কিছু না ছায়া না পল্লবের ঘ্রাণ
কেবল দেখেছো শুধু কোকিলের ছদ্মবেশে সেজে
পাতার প্রতীক আঁকা কাইয়ুমের প্রচ্ছদের নীচে
নোংরা পালক ফেলে পৌর-ভাগাড়ে ওড়ে নগর শকুন।

সকল অধ্যায়

১. প্রকৃতি
২. সোনালী কাবিন
৩. বাতাসের ফেনা
৪. কবিতা এমন
৫. প্রত্যাবর্তনের লজ্জা
৬. দায়ভাগ
৭. আসে না আর
৮. অবগাহনের শব্দ
৯. তোমার হাতে
১০. এই সম্মোহনে
১১. নতুন অব্দে
১২. পলাতক
১৩. অন্তরভেদী অবলোকন
১৪. আভূমি আনত হয়ে
১৫. স্বপ্নের সানুদেশে
১৬. পালক ভাঙার প্রতিবাদে
১৭. যার স্মরণে
১৮. কেবল আমার পদতলে
১৯. এক নদী
২০. জাতিস্মর
২১. চোখ যখন অতীতাশ্রয়ী হয়
২২. আত্মীয়ের মুখ
২৩. তোমার আড়ালে
২৪. ভাগ্যরেখা
২৫. শোণিতে সৌরভ
২৬. সাহসের সমাচার
২৭. চোখ
২৮. স্বব্ধতার মধ্যে তার ঠোঁট নড়ে
২৯. উল্টানো চোখ
৩০. আমি আর আসবো না বলে
৩১. নদী তুমি
৩২. বোধের উৎস কই, কোন দিকে?
৩৩. সত্যের দাপটে
৩৪. আমার চোখের তলদেশে
৩৫. ক্যামোফ্লাজ
৩৬. খড়ের গম্বুজ
৩৭. আঘ্রাণে
৩৮. আমার প্রাতরাশে
৩৯. আমিও রাস্তায়
৪০. তরঙ্গিত প্রলোভন

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন