রাজার গল্প – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়

শীর্ষেন্দু মুখােপাধ্যায়

রাজার গল্প

চৈত্র সংক্রান্তির দিন রাজা তাঁর মুকুট এবং সিংহাসন ত্যাগ করবেন। সেদিন প্রজাবর্গের সামনেই তিনি তাঁর পিতৃপুরুষের বৃত্তি গ্রহণ করবেন হলকর্ষণ করে। তাঁর রাজকীয় মহিমার অবসান হবে। রাজাহীন রাজ্যে তিনি প্রজাসাধারণের সঙ্গে সমভূমিতে নেমে আসবেন। সেদিন সেনাপতি, নগরকোটাল এবং পৌরপ্রধানেরাও নিয়োজিত হবেন তাঁদের পুরাতন বৃত্তিতে। পৈতৃক কামারশালায় ফিরে যাবেন সেনাপতি, নগরকোটাল যাবেন তাঁর বিপণিতে, চিকিৎসাবিদ্যায় ফিরে যাবেন পৌরপ্রধান। কারাগার বহুকাল বন্দিশূন্য, কারাধ্যক্ষ প্রত্যাবর্তন করবেন বৈজ্ঞানিক গবেষণাকেন্দ্রে। সমাজ রাষ্ট্রশূন্য হবে। শাসনযন্ত্রের প্রয়োজন ফুরিয়েছে।

সংক্রান্তির আগের রাত্রিতে রাজা তাঁর মন্ত্রণাকক্ষে ডেকে পাঠালেন সেনাপতিকে। সহাস্যমুখে প্রশ্ন করলেন–সেনাপতি, আপনার প্রয়োজন কি এ রাজ্যের পক্ষে সত্যিই ফুরিয়েছে?

সেনাপতি অনায়াসে উত্তর দিলেন–মহারাজ, এ রাজ্যের জন্য সেনাপতির প্রয়োজন নেই। আমরা আর রাজ্য জয় করি না, রাজ্য রক্ষারও কোনও প্রয়োজন নেই। প্রতিবেশি রাষ্ট্ররা একে একে সকলেই আমাদের আদর্শ গ্রহণ করেছেন। আদর্শের দ্বারাই আমরা প্রকৃত রাজ্য জয় করেছি। তাঁরা মিত্রভাবাপন্ন হয়েছেন, সমাজতন্ত্রের মূল্য উপলব্ধি করেছেন। শীঘ্রই মানুষের মন থেকে নিজরাজ্য এবং পররাজ্যের ভেদবুদ্ধি লুপ্ত হবে। ফলে আক্রমণের কোনওই আশঙ্কা নেই। হ্যাঁ মহারাজ, আমার সেনাপতিত্বের প্রয়োজন এ রাজ্যের পক্ষে ফুরিয়েছে। আমি খুব আনন্দিত মনে কামারশালায় ফিরে যাব। সেই কামারশালায় আমি ছেলেবয়সে হাপর ঠেলতাম, আমার বাবা লোহা গলাতেন। সেই স্মৃতি আমাকে এখনও সুখবোধে আচ্ছন্ন করে। আমি এখন সেই কামারশালাকে উন্নত করেছি। নূতন যন্ত্রলাঙ্গলের নানা অংশ সেখানে তৈরি হবে–সেইভাবেই আমি নূতন করে কাজে লাগব।

তাঁকে বিদায় দিয়ে রাজা ডাকলেন নগরকোটালকে। রাজার প্রশ্নের উত্তরে কোটাল নির্দ্বিধায় বললেন মহারাজ, বহুকাল হয় আমি কোটালত্ব ভুলে গেছি। রাজ্য সুশাসিত হয় তখনই, যখন প্রতিটি মানুষ তার নিজের দ্বারা শাসিত হয়। এখন এ রাজ্যে একজন সালঙ্কারা সুন্দরী অষ্টাদশী কন্যা একাকিনী দিনে ও রাত্রে সর্বত্র ভ্রমণ করতে পারেন, তাঁর আভরণ ও সতীত্ব অক্ষুণ্ণ থাকবে, গৃহস্থা দ্বার উন্মোচিত রেখে শয়ন করতে পারেন, ঘরে কেউ প্রবেশ করবে না। মহারাজ, আমাকে আর এ রাজ্যের প্রয়োজন নেই। আমার ঠাকুরদার মুদিখানায় আমি ফিরে যাব। যদিও সে দোকান এখন রাষ্ট্রায়ত্ত। সব দোকানই তাই। তবে সেখানে আমার ছেলেবেলার স্মৃতি আছে। সেই দোকানটিকে এখনও আমি ভালোবাসি।

এরপর পৌরপ্রধান। প্রশ্নের উত্তরে বললেন–মানুষের কর্তব্যবোধ জেগেছে। এ নগরকে পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব সব নাগরিকই বহন করছেন। আমার আর প্রয়োজন কী? প্রধানের প্রয়োজন তখনই যখন অধস্তনরা নাবালকের মতো দায়িত্বজ্ঞানহীন হয়। চিকিৎসক হিসেবে এক সময়ে আমি দেখেছি যে রুগি আরোগ্যলাভ করলে তাকে চিকিৎসামুক্ত করতে হয়। এখন পৌরকার্যও চিকিৎসামুক্ত হোক। নাগরিকরা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী, সংক্রামক ব্যাধি কিছু নেই, নদীর জল জীবাণুমুক্ত, মানুষের জন্মহার নিয়ন্ত্রিত, বৃদ্ধ ছাড়া আর কোনও বয়সেই কোনও মৃত্যুহার পরিলক্ষিত হয় না। মহারাজ, আমার পুরোনো বৃত্তি যদিও আর খুব একটা কাজে লাগবে না, তবু সেই বৃত্তিতেই আমাকে ফিরে যেতে দিন।

এলেন কারাধ্যক্ষ। বললেন–প্রজারা আর নিয়ম ভাঙে না। বড় অপরাধ দূরের কথা, তারা পরস্পরকে কথাচ্ছলে অপমানও করে না আর। প্রত্যেকেই বিনয়ী এবং ভদ্র, কর্তব্যে সজাগ। ফলে প্রধান এবং তাঁর সহকারী বিচারকেরা কেবল আইনতত্ব গবেষণা করে সময় কাটান, প্রয়োগের সুযোগ ঘটে না। মানুষ নিজের মহামূল্যবান জীবনকে উপলব্ধি করেছে, ফলে নরহত্যা ঘটে না। মানুষ তার প্রয়োজনীয় সব কিছুই অনায়াসে পাচ্ছে, ফলে চৌর্যবৃত্তি বন্ধ। পূর্ব অভিজ্ঞাতাবলে প্রতিটি মানুষই জানে যে তার কর্তব্যে অবহেলা অন্যের সাতিশয় অসুবিধার কারণ ঘটাতে পারে, ফলে বিনা উৎকোচে সমস্ত কার্য যথাসময়ে সিদ্ধ হয়। ফলে কারাগার জনশূন্য। এত জনশূন্য যে প্রহরীরা সে দৃশ্য সহ্য করতে না পেরে বিষণ্ণ থাকে। মহারাজ, আপনি আমাকে বিদায় দিন, কারাভবনকে অন্য কোনও ভবনে রূপান্তরিত করুন, প্রহরীদেরও ভিন্ন বৃত্তিতে নিয়োগ করুন।

এইভাবে একে–একে সব রাজকর্মচারীকেই জিজ্ঞাসা করলেন রাজা। বুঝতে পারলেন, বাস্তবিকই রাষ্ট্রের প্রয়োজন ফুরিয়েছে।

তবু নিশ্চিত হওয়ার জন্য তিনি এবার একে–একে কিছু-কিছু প্রজাকে ডেকে পাঠাতে লাগলেন।

প্রথমেই এলেন রাজ্যের সবচেয়ে বৃদ্ধ মানুষটি, যার বয়স একশো ষাট বৎসর, যিনি এখনও সরকাণ্ড বিশিষ্ট গাছের মতো দাঁড়ান, যিনি নিয়োজিত আছেন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রে, বিশ্রাম জানেন না। রাজ্যের নিয়ম অনুযায়ী নামমাত্র অভিবাদন করলেন রাজাকে, সমান আসনে বসলেন। রাজা তাঁকে অভ্যর্থনা করে বিনীত মুখে জিগ্যেস করলেন–আপনি সবচেয়ে প্রাচীন মানুষ। এ রাজ্যের পূর্ণ অবস্থাও জানেন। এখন বলুন এ রাজ্যে রাজা বা রাষ্ট্রীয় শাসনের প্রয়োজন। আছে কি না।

বৃদ্ধ ক্ষণেক চিন্তা করে বললেন, মহারাজ, আপনি নিজে এ রাজ্যের প্রজা ছিলেন। আপনার পিতা ছিলেন আমার প্রতিবেশি। এ রাজ্যের অরাজক অবস্থায় আপনি রাজদণ্ডের ভয় না রেখে দুর্বল ভীরু পীড়িত জনসাধারণকে জোটবদ্ধ করে বিপুল এক মনুষ্যশক্তির জন্ম দিয়েছিলেন। শক্তি মাত্রই নিরপেক্ষ–শুভ বা অশুভ যে-কোনও কাজেই তাকে লাগানো যায়। আপনি সেই শক্তিকে মঙ্গলাভিমুখী করেছিলেন। ফলে আমরা এক অদ্ভুত রাষ্ট্রের জন্ম হতে দেখেছি। এ রাজ্যে যখন প্রথম খাদ্য ও শস্য বিনামূল্য হয়ে গেল তখন এটাকে সত্য বলে মনে হয়নি। সেদিন আমি নগরের বিভিন্ন আহারগৃহে গিয়ে আহার করেছি। যদৃচ্ছা যা প্রাণে চায় তাই খেয়েছি, এবং বেরোনোর সময়ে কেউ দাম চাইছে না দেখে ভীষণ অস্বস্তি বোধ করেছি, নিজেকে চোরের মতন। মনে হয়েছে। আমার মতো বহু মানুষই সেদিন ওইরকম করেছে, তারা দেখছে সত্যিই সব বিনামূল্যে, তবু তাদের বিশ্বাস হচ্ছিল না। এই বিনামূল্যে খাদ্য পাওয়ার ব্যাপারটা বেশি দিন স্থায়ী হবে না ভেবে কয়েকদিন আমি খুব খেয়েছিলাম। ফলে আমার পেট খারাপ হয়। আমার নাতি আমার এই কাণ্ড দেখে খুব হেসেছিল। তারপর মহারাজ, এক সময়ে এই রাজ্যে পরিধেয় বস্ত্র, তৈজস, আসবাব সবকিছুই মূল্যহীন হয়ে গেল। আমি বিস্তর দোকানে ঘুরে হাজার জিনিস নিয়ে এসে বাসা ভরতি করলাম। কিন্তু কেউ সেগুলো কেড়ে নিতে এল না। জিনিসগুলো আমারই রয়ে গেল। ক্রমে বুঝতে পারলাম আমি খামোখা এত জিনিস সংগ্রহ করেছি। আমরা আগে দুর্দিনের জন্য সুদিনের সঞ্চয় রাখতাম। কিন্তু এখন দুর্দিন নিঃশেষিত হয়েছে, ফলে এই সঞ্চয়। ঘরকে অরণ্যে পর্যবসিত করছে। আমি তাই সব জিনিস ফিরিয়ে দিয়ে এলাম। তারপর আগের মতোই অপ্রচুর জিনিসের ঘরগৃহস্থালিতে সুখী বোধ করতে লাগলাম আবার আগের মতো। আমি মিতাহারী। মহারাজ, যখন সেদিন আমার কানে এল যে আপনি সিংহাসন ত্যাগ করে সাধারণ জীবন গ্রহণ করবেন সেদিনও আমার মনে শঙ্কা এসেছিল যে, রাজা না থাকলে আবার অরাজকতা দেখা দেবে হয়তো, আবার পাপ আসবে। কিন্তু মহারাজ, একটু ভেবে দেখলাম। ঠিক যেভাবে আপনি আপনার পূর্বসিদ্ধান্তগুলোতে সাফল্যলাভ করেছেন, ঠিক সেভাবে এতেও আপনি সফল হবেন। না মহারাজ, সম্ভবত এ রাজ্যে আর রাজার প্রয়োজন নেই।

আর একজন প্রজা এসে পূর্ববৎ অভিবাদন করে আসন গ্রহণ করলেন এবং বললেন–মহারাজ, আপনার শাসনবিধির তুলনা নেই। খাদ্য, পানীয়, বসতগৃহ, চিকিৎসা, যানবাহন ইত্যাদির জন্য আমাদের কোনও ব্যয় নেই। এ রাজ্যের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত পর্যন্ত আমি যে কোনও যানে ভ্রমণ করতে পারি, যে কোনও চিকিৎসককে ডেকে চিকিৎসা করাতে পারি। তার জন্য আমাকে কিছুই ব্যয় করতে হবে না। মহারাজ, আমার পিতামহের দানশীলতার খ্যাতি ছিল কিন্তু তিনি যদি আপনার রাজ্যে বাস করার অভিজ্ঞতা লাভ করতেন তবে অবশ্যই খ্যাতিলাপের ভয়ে রাজ্য ছেড়ে পালাতেন। কারণ, তাঁর দান গ্রহণ করার মতো একজনও দুঃখী বা অভাবী লোক এখানে নেই। মহারাজ, আমরা এখন আর মানুষের দয়াধর্মকে মহৎ গুণ বলে অভিহিত করি না, কারণ দয়াগ্রহণ মনুষ্যত্বের অবমাননাস্বরূপ। মহারাজ, আমরা আমাদের যৌথ দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ সম্পর্কে সজাগ। কাজেই রাজকীয় শাসনও দয়াধর্মের মতোই অপ্রচলিত হয়ে গেছে।

পরবর্তী প্রজা এক মধ্যবয়স্ক চিত্রকর। তিনি বললেন–মহারাজ, আমার পিতা ছিলেন যোদ্ধা। তিনি এক সময়ে এ রাজ্যের হয়ে বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে অনেক যুদ্ধ করেছেন। তিনি মহাবীর খ্যাতি লাভ করেছিলেন। তাঁর গায়ে নানা অস্ত্রাঘাতের চিহ্ন ছিল। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত ওই চিহ্নগুলিকে তিনি পদকের মতো ভালোবাসতেন। এই যুদ্ধপ্রিয় লোকটি নরহত্যার অপ্রয়োজনীয়তাকে কখনও বুঝতে চাইতেন না। যুদ্ধ না থাকলে মানুষ হীন ও নির্বীর্য হয়ে যাবে বলে তাঁর বিশ্বাস ছিল। ছেলেবেলায় তাই আমি যুদ্ধবাজ মনোভাবাপন্ন ছিলাম। আমি প্রথমে ফড়িং, পাখি, তারপর কুকুর, বেড়াল, বাঁদর এইসব হত্যা করতে শুরু করি। বাবার মতো হওয়ার জন্য শীঘ্রই আমি কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী বালককে দ্বন্দ্বযুদ্ধে হত্যা করব এরকম অভিলাষও আমার ছিল। ঠিক সেই সময়েই আমি আপনার বিপ্লবে অংশীদার হই যুদ্ধের আশায়। এবং কালক্রমে আপনার আদর্শকে বুঝতে পারি, এবং আমার হৃদয় শান্ত হয়, যুদ্ধস্পৃহা জ্বরের মতো সেরে যায়। নিরীহ পশুপাখি হত্যা করে যে পাপ আমি করেছিলাম এখন তার …গোলন করি এই হাতে তাদেরই ছবি এঁকে। মহারাজ, এ সমাজব্যবস্থায় হয়তো যুদ্ধের এবং বীরত্বের প্রয়োজন ছিল, এখন তা ফুরিয়েছে মহারাজ, হয়তো সেরকম রাষ্ট্রযন্ত্রেরও প্রয়োজন ফুরিয়েছে। আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা এতটাই আত্মবিশ্বাসী যে ঈশ্বরও আমাদের কাছে কিংবদন্তি মাত্র।

সংক্রান্তির দিন সকালে রাজা স্নান করলেন। পুরোহিতকে বললেন–কেউ যখন রাজা হয় তখন তার অভিষেকের ব্যবস্থা আছে, কিন্তু রাজা যদি যে কেউ একজন হতে চায় তখন কি তার কোনও অভিষেক আছে?

পুরোহিত মাথা নাড়লেন–না, মহারাজ।

প্রাকারের পাশে সুসজ্জিত বেদিতে সাজানো সিংহাসন। রাজা সেখানে এসে বসলেন। হাতে তুলে নিলেন রাজদণ্ড, মাথায় পরলেন মুকুট। শেষবারের মতো। সামনের আম্রকাননে হাজার হাজার কৌতূহলী প্রজা সমবেত। এক পাশে শূন্য একটু জমিতে চাষার পোশাক এবং বলদযুক্ত একখানা হাল রয়েছে। রাজা আজ আনুষ্ঠানিকভাবে সিংহাসন, মুকুট ও দণ্ড ত্যাগ করে হলকর্ষণ করবেন। রাজাকে আজ বেশ আনন্দিত ও তৃপ্ত দেখাচ্ছিল।

রাজা আস্তে-আস্তে উঠে দাঁড়ালেন। চারিদিক নিস্তব্ধ হয়ে গেল। তিনি গম্ভীর গলায় গতকাল রাত্রে যাদের সঙ্গে কথা হয়েছিল তাদের সাক্ষ্যপ্রমাণ উল্লেখ করে বললেন যে, তাঁর শাসনের প্রয়োজন সত্যিই ফুরিয়েছে। এবার সমাজ হবে রাষ্ট্রহীন। মনুষ্যত্বই হবে প্রকৃত শাসক।

রাজা মুকুট খুললেন, রাজপোশাক উন্মোচন করলেন, সিংহাসন ত্যাগ করে সিঁড়ি দিয়ে ধীর পদক্ষেপে নামতে লাগলেন।

নিস্তব্ধতার মধ্যে হঠাৎ কে যেন চেঁচিয়ে বলে উঠল–মহারাজ, কাল রাত্রিতে আমার ঘরে চোর ঢুকেছিল…

সবাই চকিত হয়ে চারপাশে তাকাতে লাগল। সেনাপতি কোমরবন্ধ তলোয়ারসুষ্ঠু খুলে রাখতে যাচ্ছিলেন। এই কথা শুনে কোমরবন্ধ আবার আঁটলেন। কারাধ্যক্ষ চকিত হয়ে হাতে ধরা ইস্তফাপত্রটি লুকিয়ে ফেললেন।

আর একটি কণ্ঠ চেঁচিয়ে বলল –মহারাজ, আজকের অনুষ্ঠানে সমুখবর্তী এই আসনটি পাওয়ার জন্য আমাকে বিশ মুদ্রা উৎকোচ দিতে হয়েছে…

আর একটি কণ্ঠও আর্তনাদ করল–মহারাজ, কিন্তু তার অভিযোগ গোলমালে, পালটা চিৎকারে শোনা গেল না। বহু কণ্ঠের আর্তনাদ উঠতে লাগল মহারাজ, মহারাজ, মহারাজ…

মাঝর্সিড়িতে থেমে দাঁড়ালেন রাজা। বিস্মিত, ব্যথিত। কুটি করলেন। তারপর হতাশ ক্লান্ত দৃষ্টিতে চেয়ে রইলেন সামনের উদ্বেলিত জনসাধারণের দিকে।

তারপর ধীর ক্লান্ত পায়ে আবার সিঁড়ি বেয়ে উঠে যেতে লাগলেন পরিত্যক্ত সিংহাসনের দিকে।

সকল অধ্যায়

১. মুনিয়ার চারদিক – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২. আশ্চর্য প্রদীপ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৩. হারানো জিনিস – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৪. অনুভব – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৫. ঘণ্টাধ্বনি – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৬. মশা – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৭. একটা দুটো বেড়াল – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৮. বনমালীর বিষয় – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৯. ক্রিকেট – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
১০. খানাতল্লাশ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
১১. চিড়িয়াখানা – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
১২. শুক্লপক্ষ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
১৩. পুনশ্চ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
১৪. সূত্রসন্ধান – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
১৫. হরীতকী – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
১৬. ঘরের পথ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
১৭. ট্যাংকি সাফ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
১৮. দৈত্যের বাগানে শিশু – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
১৯. লুলু – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২০. জমা খরচ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২১. ক্রীড়াভূমি – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২২. সুখের দিন – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২৩. গর্ভনগরের কথা – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২৪. দেখা হবে – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২৫. ভাগের অংশ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২৬. সাঁঝের বেলা – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২৭. সংবাদ : ১৯৭৬ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২৮. খেলা – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২৯. বৃষ্টিতে নিশিকান্ত – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৩০. চিঠি – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৩১. জ্যোৎস্নায় – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৩২. মাসি – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৩৩. মৃণালকান্তির আত্মচরিত – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৩৪. চারুলালের আত্মহত্যা – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৩৫. পটুয়া নিবারণ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৩৬. প্রতীক্ষার ঘর – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৩৭. হলুদ আলোটি – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৩৮. সাপ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৩৯. আমাকে দেখুন – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৪০. ভুল – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৪১. সেই আমি, সেই আমি – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৪২. অবেলায় – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৪৩. সাদা ঘুড়ি – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৪৪. উড়োজাহাজ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৪৫. রাজার গল্প – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৪৬. আমার মেয়ের পুতুল – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৪৭. সোনার ঘোড়া – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৪৮. ডুবুরি – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৪৯. সুখদুঃখ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৫০. শেষ বেলায় – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৫১. পুরোনো দেওয়াল – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৫২. বন্ধুর অসুখ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৫৩. ছবি – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৫৪. সাধুর ঘর – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৫৫. ঝুমকোলতার স্নানের দৃশ্য ও লম্বোদরের ঘাটখরচ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৫৬. আমেরিকা – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৫৭. আরোগ্য – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৫৮. সম্পর্ক – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৫৯. পোকা – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৬০. বাবা – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৬১. দোলা – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৬২. ছেলেটা কাঁদছে – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৬৩. লামডিঙের আশ্চর্য লোকেরা – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৬৪. গণ্ডগোল – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৬৫. স্বপ্নের ভিতরে মৃত্যু – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন