মৃত্যুঘণ্টা – ৪৪

আনোয়ার হোসেন

চুয়াল্লিশ

চুপ করে চেয়ারে বসে আছেন এনআরআই চিফ জেমস ব্রায়ান। গলা থেকে খুলে ফেলেছেন টাই। যখন-তখন আসবে নতুন সব তথ্য, অথচ মানসিকভাবে তিনি তৈরি নন। দেয়াল ঘড়ির ওপর চোখ স্থির তাঁর। মাত্র আধঘণ্টা পর ওই দ্বীপে এয়ার স্ট্রাইক করবে আমেরিকান নেভি। একেকটা সেকেণ্ড যেন চিরকাল চমকে গেলেন ফোনের রিং শুনে। কিপ্যাডের সংখ্যা দেখে বুঝলেন, ফোন করেছে এলেনা রবার্টসন। স্পিকার বাটন টিপে দিলেন তিনি।

‘আমরা এখন দ্বীপ থেকে মাত্র এক মাইল দূরে,’ রিপোর্ট করল এলেনা। ‘কোথাও কোনও অ্যাকটিভিটি নেই।’

সামনে ঝুঁকে বসলেন ব্রায়ান। ‘তোমরা ওখানে কী করছ?’

‘সরি, চিফ,’ বলল এলেনা। ‘আমরা হামলা করছি।’

নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারলেন না ব্রায়ান। ‘কিন্তু…’

‘বড়জোর এক মিনিট, তারপর পৌঁছব,’ বলল এলেনা, ‘আপনাকে জানিয়ে রাখলাম।

‘ও, গড!’ গলা চড়ে গেল ব্রায়ানের। ‘তুমি পাগল নাকি! আত্মহত্যা করবে কেন? আমাদের সংস্থার আইন অনুযায়ী…’

‘সবসময় আইন মেনে চললে আপনি নিজেও এত দিনে খুন হয়ে যেতেন, চিফ,’ দৃঢ় কণ্ঠে বলল এলেনা। ‘অতীতের কথা ভাবুন। আমাকে বাঁচাতে ওপরওয়ালার নির্দেশ উপেক্ষা করে  মাসুদ রানার দ্বারস্থ হননি আপনি? নিজের কথা না ভেবে জীবনের মস্ত ঝুঁকি নিয়ে সেদিন উদ্ধার করেছিল ও আমাকে। আমার কি কিছুই করণীয় নেই, স্যর? আপনিই বলেছেন: কখনও কখনও নিজের মন বুঝে চলতে হয়। তাই করছি। আমাদের সঙ্গে অস্ত্র আছে। গোপনে হামলা করব। তারপর…’

‘তারপর কী করবে?’

‘রানার কাছ থেকে শুনে নিন,’ বলল এলেনা, ‘ওর হাতে মোবাইল ফোন দিচ্ছি।’

‘মিস্টার রানা…

‘প্রতিটা পদক্ষেপে ওর চেয়ে পিছিয়ে ছিলাম, বলল রানা, এবার তা না-ও হতে পারে। যাক গে, যে কারণে এলেনাকে ফোন করতে বলেছি— আমরা যা-ই করি, দেরি করবেন না, সঠিক সময়ে উড়িয়ে দেবেন ওই দ্বীপ। এর বেশি কিছু বলার নেই আমাদের।’

আরও বিষণ্ন হয়ে গেলেন এনআরআই চিফ। কয়েক বছর ধরে চেনেন এলেনাকে। একসময় এত দৃঢ়চিত্ত ছিল না মেয়েটা। মাসুদ রানার সঙ্গে মিশে হয়ে উঠেছে দুর্ধর্ষ আর সত্যবাদী। ওকে ঠেকাতে পারবেন না, যে পুরুষকে ভালবাসে, তাকে কিছুতেই ত্যাগ করবে না এলেনা। ব্রায়ান ঠিক করলেন, ওকে ফিরতে বলবেন না। কয়েক সেকেণ্ড পর জানালেন, ‘মিস্টার রানা, এলেনাকে দিন।’ চাপা বাতাসের আওয়াজ শুনলেন। ফোন দেয়া হয়েছে এলেনার হাতে। ‘তোমরা পাবে আটাশ মিনিট, এলেনা। গুডলাক!’

ওদিক থেকে কেটে দেয়া হলো কল।

খুব ক্লান্ত বোধ করলেন ব্রায়ান। চুপ করে চেয়ে রইলেন দেয়াল ঘড়ির দিকে। কিছুক্ষণ পর টোকার আওয়াজ শুনে সোজা হয়ে বসলেন। খুলে গেছে কবাট, তাঁর ডেস্কের সামনে এসে দাঁড়াল বিজ্ঞানী লাউ আন।

‘এখন বিরক্ত কোরো না, আন,’ বিমর্ষ মুখে বললেন ব্রায়ান। ‘জরুরি তথ্য, স্যর,’ বলল লাউ আন। ‘ওটা ওই ভাইরাসের ব্যাপারে।’

সকল অধ্যায়

১. মৃত্যুঘণ্টা – ১
২. মৃত্যুঘণ্টা – ২
৩. মৃত্যুঘণ্টা – ৩
৪. মৃত্যুঘণ্টা – ৪
৫. মৃত্যুঘণ্টা – ৫
৬. মৃত্যুঘণ্টা – ৬
৭. মৃত্যুঘণ্টা – ৭
৮. মৃত্যুঘণ্টা – ৮
৯. মৃত্যুঘণ্টা – ৯
১০. মৃত্যুঘণ্টা – ১০
১১. মৃত্যুঘণ্টা – ১১
১২. মৃত্যুঘণ্টা – ১২
১৩. মৃত্যুঘণ্টা – ১৩
১৪. মৃত্যুঘণ্টা – ১৪
১৫. মৃত্যুঘণ্টা – ১৫
১৬. মৃত্যুঘণ্টা – ১৬
১৭. মৃত্যুঘণ্টা – ১৭
১৮. মৃত্যুঘণ্টা – ১৮
১৯. মৃত্যুঘণ্টা – ১৯
২০. মৃত্যুঘণ্টা – ২০
২১. মৃত্যুঘণ্টা – ২১
২২. মৃত্যুঘণ্টা – ২২
২৩. মৃত্যুঘণ্টা – ২৩
২৪. মৃত্যুঘণ্টা – ২৪
২৫. মৃত্যুঘণ্টা – ২৫
২৬. মৃত্যুঘণ্টা – ২৬
২৭. মৃত্যুঘণ্টা – ২৭
২৮. মৃত্যুঘণ্টা – ২৮
২৯. মৃত্যুঘণ্টা – ২৯
৩০. মৃত্যুঘণ্টা – ৩০
৩১. মৃত্যুঘণ্টা – ৩১
৩২. মৃত্যুঘণ্টা – ৩২
৩৩. মৃত্যুঘণ্টা – ৩৩
৩৪. মৃত্যুঘণ্টা – ৩৪
৩৫. মৃত্যুঘণ্টা – ৩৫
৩৬. মৃত্যুঘণ্টা – ৩৬
৩৭. মৃত্যুঘণ্টা – ৩৭
৩৮. মৃত্যুঘণ্টা – ৩৮
৩৯. মৃত্যুঘণ্টা – ৩৯
৪০. মৃত্যুঘণ্টা – ৪০
৪১. মৃত্যুঘণ্টা – ৪১
৪২. মৃত্যুঘণ্টা – ৪২
৪৩. মৃত্যুঘণ্টা – ৪৩
৪৪. মৃত্যুঘণ্টা – ৪৪
৪৫. মৃত্যুঘণ্টা – ৪৫
৪৬. মৃত্যুঘণ্টা – ৪৬
৪৭. মৃত্যুঘণ্টা – ৪৭
৪৮. মৃত্যুঘণ্টা – ৪৮
৪৯. মৃত্যুঘণ্টা – ৪৯
৫০. মৃত্যুঘণ্টা – ৫০

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন