বিমল ঘোষ


বনপাড়ার বুড়ো বট গাছ৷ তারই কোটরে চেঙাদের বাসা৷ সেখানে থাকে চেঙা খরগোশ, আর চেঙার মা৷
চেঙা ভারি ছটফটে৷ কেবল খেলা, কেবল ছুটোছুটি৷ দুপুর রোদেও চেঙা ছুটোছুটি করে খেলে বেড়াতে চায়৷ তাই তার মা ওকে রোজ দুপুরেই পাশে নিয়ে শোয়৷ মায়ের পাশে শুয়ে চেঙা মটকা মেরে পড়ে থাকে৷ ঘুমের ভান করে৷ আর যেই মা ঘুমিয়ে পড়ে-অমনি পা টিপে টিপে বেরিয়ে পড়ে বাড়ির বাইরে৷
একদিন অমনি মা ঘুমোতেই চেঙা বেরিয়ে পড়ল বাড়ি থেকে৷

দুপুর বেলা, খাঁ-খাঁ করছে রোদ৷ চেঙা চলল বেঙার খোঁজে৷ মাঠ পেরিয়ে, হাট ছাড়িয়ে অনেক দূরে বেঙাদের বাড়ি৷ বেঙারা খুব বড়োলোক৷ ওর বাবা-মা মারা গেছে৷ রেখে গেছে অনেক টাকাকড়ি, বড়ো বড়ো বাড়ি আর একখানা মোটর গাড়ি৷
তাই বেঙা খেয়ে-দেয়ে, নেচে-গেয়ে গাড়ি চড়ে ঘুরে বেড়ায়৷ লেখাপড়া কাজ-কারবারের বালাই তার নেই৷
চেঙা চলেছিল এই বেঙা মিতার কাছে৷ তেঁতুলতলার বাঁকটাতে মোড় ঘুরতেই চেঙা দেখে বেঙা চলেছে ছাতা মাথায় দিয়ে৷ চেঙা বলল-"কোথায় চলেছ বেঙাদাদা?"
বেঙা বলল-"হাটে যাব ডিম, পাঁউরুটি কিনতে৷"

ডিম, পাঁউরুটির নাম শুনে চেঙার জিভ দিয়ে জল গড়ায়৷ হ্যাংলা চেঙা ল্যাং ল্যাং করতে করতে চলল বেঙার পিছু পিছু৷ হাটের একপাশে হাঁদি হাঁসি আর খাঁদি মুরগির ডিমের দোকান৷ রোজ ওরা এত এত ডিম পাড়ে৷ সেগুলো বেচে পয়সা রোজগার করে৷ বেঙা ওদের দোকানে গিয়ে এককুড়ি ডিম কিনল৷
ম্যাঁও ম্যাঁও বেড়ালের দোকান থেকে চারখানা পাঁউরুটি, পায়রা ময়রার দোকান থেকে চমচম, ল্যাংচা আরও কত কী কিনল ওরা৷
বেঙার ছাতার ওপরে গা-ঢাকা দিয়ে বসেছিল নেংটি৷ সেখান থেকে সে সব দেখল, সব শুনল৷ তবে চেঙা-বেঙা টের পেল না সেটা৷

ডিম, পাঁউরুটি, চমচম এইসব কিনে-বাড়ি ফিরল চেঙা-বেঙা৷ বেতের বাক্সতে ডিম, পাঁউরুটি, ল্যাংচা, মেঠাই, চমচম, জিবেগজা গুছিয়ে নেওয়া হল৷
চেঙা তখন বুঝল-পিকনিক করতে যাবে বেঙা! তাই এত কেনাকাটা! ন্যাংলা নেংটি টেবিলের ওপর থেকে সবই দেখল! তবু ওকে চেঙা-বেঙা কেউই দেখল না৷ কেউই ডাকল না! মনে মনে তাই ন্যাংলা নেংটি বেজায় রেগে গেল৷ রাগবার কথাই তো! ছোটো বলে ন্যাংলা নেংটি অত হেলাফেলা সইবে কেন?

চেঙা-বেঙা পিকনিকের খাবারদাবার, জিনিস-টিনিস গুছিয়ে তুলল বেঙার লাল মোটর গাড়িটার পেছনের কেরিয়ারে৷ তারপর দু-জনে গাড়ি ছোটাল-পোঁক পোঁক-ভোঁক ভোঁক৷
উঁচু-নীচু পথে গাড়ি চলেছে ধোঁওয়া উড়িয়ে, গড়গড়িয়ে৷ চেঙা-বেঙা গান ধরল গলা ছেড়ে৷
বেশ খানিকটা দূরে পৌঁছেছে গাড়িটা৷ হঠাৎ তেমন সময় শুরু হল গাড়ির ভেতরে ক্যাঁচ ক্যাঁচ-কিঁচ কিঁচ আওয়াজ! চেঙা-বেঙা দু-জনেরই চোখ ছানাবড়া!

চেঙা-বেঙার গাড়ি যত না চলে, তার চেয়ে বেশি আওয়াজ হয় কিঁচ কিঁচ- ক্যাঁচ ক্যাঁচ ৷ শেষমেশ তাই ওরা ভয় পেয়ে নদীর ধারে গাড়ি থামাল৷ গাড়ি থেকে নেমে বেঙা ঢুকল গাড়ির তলায়৷ কোথায় কী বিগড়াল, তাই দেখতে৷
চেঙা এটা খুলে, ওটা তুলে খুঁজতে লাগল আওয়াজটা আসছে কোথা থেকে! খুটখাট ঠুকঠাক কত কেরামতি! কিছুতেই কিছু না! গাড়ি না চালাতেই আবার সেই আওয়াজ-কিঁচ কিঁচ-ক্যাঁচ ক্যাঁচ৷
চেঙা বলল-"বেঙা দাদা! কল বিগড়ায়নি গাড়ির ভেতরে ভূত ঢুকেছে৷"

চেঙা-বেঙা দু-জনেই বেজায় হয়রান৷ কালি-ঝুলি মেখে একশা! চেঙার মুখে ভূতের নাম শুনে ভয় পেল বেঙা৷ গাড়ির তলা থেকে বেরিয়ে এল৷ মাথা চুলকিয়ে বলল-"ঠিক বলেছিস রে চেঙা-ভূত ব্যাটা পাঁউরুটি আর ডিম খেতে এসেছে৷ আর দেরি নয়-খাবারগুলো বার কর৷"
চেঙা আর কী করে! খাবারের লোভে ভয়ে ভয়ে গাড়ির পেছনের ঢাকনাটা খুলল৷ ওমা! ভূত নয়, অদ্ভূত ব্যাপার! ন্যাংলা নেংটি উবু হয়ে বসে কিঁচ কিঁচ করছে৷ আর বলছে-"হুঁ-হুঁ বাবা! ছোটো বলে আমাকে ফাঁকি দিয়ে পিকনিক করা চলবে না!"

ন্যাংলা নেংটি চেঙা-বেঙার চেনা-জানা৷ কাজেই এরপর ফাঁকি দিয়ে চেঙা-বেঙা কী করে পিকনিক করে! তা ছাড়া ন্যাংলার মাথায় রকমারি মতলব৷ চেঙা-বেঙাকে সে কি কম হয়রান করেছে! তাই চেঙা-বেঙা নেংটিকে তাড়াল না, চটাল না৷ দিল ওকে পাঁউরুটির ছোটো একটা টুকরো-আর এতটুকু একটা ডিম৷ নিজেরা কিন্তু নিল দিব্যি পাত সাজিয়ে বড়ো বড়ো ডিম৷ বেশি বেশি পাঁউরুটি, ল্যাংচা, গজা, চমচম! শরবত!
গাছের ডালে বসে কগাই কাগা দেখছিল চেঙা-বেঙার রকম-সকম৷ ওদের একচোখামি দেখে কাকটা অবাক! বড়ো যারা, তাদের এমন ছোটো ব্যবহার!

পুঁচকে নেংটি এতটুকু একটা ডিম পেয়েই ভারি খুশি! অমন করে পাঁউরুটি আর ডিম এর আগে কক্ষনো সে তো খায়নি! ছোটো ছোটো দাঁত দিয়ে কুরে কুরে খেতে লাগল যা পেয়েছে তাই৷ চেঙা-বেঙাও বড়ো মুখ করে বড়ো ডিমে কামড় বসাল৷
ডিমে কামড় দিতেই চেঙার চোখ ট্যারা৷ বেঙার বদন বাঁকা৷ দু-জনের দুটো ডিমই পচা! ওয়াক থুঃ! চেঙা-বেঙা দু-জনেই যে-যার ডিম ছুড়ে ফেলে দিল রেগে-মেগে৷ বেঙার ছুড়ে ফেলে দেওয়া পচা ডিমটা লাগল গিয়ে কগাই কাগার কালো ঠোঁটে৷ কগাই কাগাও রেগে ওঠে৷ পচা ডিম মুখে দিয়ে চেঙা-বেঙার মুখ খারাপ৷ পেটের নাড়িভুঁড়ি সব ওলটপালট! খাবার যা পেটে ছিল-বমির চোটে তাও উঠে গেল! চেঙা-বেঙা খাবার ফেলে মুখ ধুতে ছুটল ঘাসি ডোবার ধারে৷ গিয়ে দেখে-ডোবার বাসি জল যেমন ময়লা, তেমনি পচা৷ চেঙা-বেঙা ভাবে মুখ ধুই কি, না ধুই?

ওদিকে কগাই কাগা রাগের চোটে কাকের দলকে ডেকে আনল৷ বলল, "কা-কা৷ খা-খা-খা৷" কাগেরা পাঁউরুটি চমচমের হরির লুট লাগিয়ে দিল৷
নেংটি চেঁচাতে লাগল-"চেঙা দাদা, বেঙা দাদা ঝটপট এসো, চটপট করো,-কাগেরা সব খেয়ে গেল৷"

ন্যাংলা নেংটির হাঁকডাক শুনে চেঙা-বেঙা পড়ি কি মরি দৌড়োতে দৌড়োতে ফিরে এল গাছতলাতে৷ মুখ ধোওয়া আর হল না৷ ফিরে এসে দেখে-দু-জনেরই খালি পাত! শরবতের গেলাস কুপোকাত! মাথার ওপর কাকেরা উড়ছে পাঁউরুটি নিয়ে!
কগাই কাগা হি-হি করে হাসছে আর বলছে, "কা-কা-কা চেঙা-বেঙা খাবি খা!" কাকেদের ডাকাতি দেখে চেঙা দিল গালে হাত৷ বেঙা একদম জগন্নাথ৷
ন্যাংলা নেংটি ঘাবড়াল না৷ লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে নেংটি চেঁচাতে লাগল-"হেই! হেই কালটি কাগ! ভালো চাস তো এখুনি ভাগ!"

ন্যাংলা নেংটির তাড়া খেয়ে কগাই কাগার দল ভাগল না কেউই; উলটে কাগার দল পালা করে ঠোকরাতে লাগল বেঙার টাকে৷ বেঙা বেচারা পালাতে গিয়ে পা পিছলে আলুর দম৷ পিকনিক করতে এসে কত খাবে-না আছাড় খেল৷ পা ছড়িয়ে বেঙা কাঁদতে বসল৷
চেঙা তাড়াতাড়ি রুমাল বার করল৷ বেঙার চোখের জল মুছিয়ে দিল৷ বলল-"কেঁদো না, কেঁদো না বেঙা দাদা! ঘরে গিয়ে খেয়ো ছোলা আদা৷"
নেংটি বলল-"কাছেই আমার মেঠোমামার বাড়ি৷ বল তো ওখান থেকে কিছু খাবারদাবার নিয়ে আসি৷"
বেঙা বলল-"যাঃ যাঃ এখুনি যা৷"

বেঙার হুকুম পেয়েই নেংটি ছুটল পাঁই পাঁই, সাঁই সাঁই-মামার বাড়ির দিকে৷ নেংটি যখন অনেক দূরে গেল, চেঙা তখন বেঙার আরও কাছে এল৷ বলল-"চ্যাংড়া আপদ বিদেয় হল-হাড় জুড়োল৷ চলো গিয়ে গাড়ি চড়ি-এই ফাঁকে সরে পড়ি৷ নেংটিটাকে আমরা এবার নাকাল করি৷"
বেঙা বলল-"মতলবটা তোর ভালোই কিন্তু আমার যে খিদেয় পেট কনকন-গা-গতর টনটন৷ গাড়ি চালাবার জোর কই!"
চেঙা বলল-"ডোনটু কেয়ার কানাকড়ি আমিই এবার চালাব গাড়ি৷"
চেঙা-বেঙা গাড়ি ছোটাল বাড়ির দিকে৷

মামার মাথায় খইমুড়কি-ভরতি ইয়া বড়ো এক ধামা চাপিয়ে নিয়ে নেংটি সেই গাছতলায় ফিরে এল৷ এসে দেখে গাছের গায়ে একটা কাগজে লেখা, "আমরা বাড়ি ফিরলুম৷ পা-গাড়ি চড়ে তুমি পরে এসো৷ ইতি-চেঙা-বেঙা-" লেখাটা পড়ে নেংটি অবাক৷
মেঠোমামা নেংটিকে বলল-"কোথায় রে তোর চেঙা-বেঙা?"
নেংটি দেখতে পেল-দূরে এক জায়গায় ধোঁয়া উঠছে৷ আওয়াজ আসছে মোটরের ভট ভটর ভট৷ মামাকে বলল-"হাই দেখো চেঙা-বেঙার গাড়ি৷ আবার বোধ হয় বিগড়িয়েছে৷ পা চালিয়ে চলো মামু তাড়াতাড়ি৷"
ন্যাংলার মেঠোমামা মাঠে থাকে-মোটর গাড়ি কখনো চোখে দেখেনি৷ তাই নেংটির পেছন পেছন সেও দৌড়োল ধোঁয়ার নিশানা ধরেই৷ পৌঁছোল ওরা ঠিক জায়গাতেই৷

ওখানে হাজির হয়ে নেংটি দেখল-ভীষণ ব্যাপার৷ নাক-মুখ থেবড়ে মোটর গাড়ি কুপোকাত৷ বেঙা মাটিতে চিতপাত! চেঙা হাঁউমাউ করে কাঁদছে৷ নেংটি বলল-"মামা, ধামা নামাও-ভয়ানক বিপদ! ভীষণ এ্যাকসিডেন!"
মেঠোমামা বলল-"ভাবিসনে তুই-এক্ষুনি ডেকে আনছি টুলকুকে৷" নেংটি ভাবে-'টুলকু! সে আবার-কে রে বাবা!'
টুলকু হল ঝুমরো বেদের পোষা বাঁদর৷ নেংটির মেঠোমামা খইমুড়কির ধামা নামিয়ে দৌড়োল তার কাছেই৷ কারণ মেঠোমামা জানে বেদের বাঁদর টুলকু ভারি চালাক৷ বেদের সঙ্গে সঙ্গে ছগুয়া ছাগলার পিঠে চড়ে টুলকু ইনগাঁ-ভিনগাঁ কত গাঁয়ে যায়! নাচ দেখায় পয়সা কামায়৷ বেদের ঘরে থাকে৷ তাই ওষুধ-বিষুধের খবরও রাখে৷ পাড়ার কারুর অসুখ-বিসুখ হলে মেঠোমামারা তার কাছেই যায়৷ জড়িবুটি-ঝাড়-ফুঁক দিয়ে টুলকুই তো তাদের রোগ বালাই সারায়৷ মেঠোমামা তাই বেদের বাড়ি হাজির হয়ে টুলকুকে চেঙা-বেঙার বিপদের কথা বলল৷ টুলকু সব মন দিয়ে শুনল৷

ওদের বিপদের কথা শুনে টুলকু স্থির থাকতে পারে না৷ ভাবল শহরওয়ালারা বনপাড়ায় এসে বিপদে পড়েছে৷ আর সে বিপদের বিহিত করতে, মেঠোমামা যখন ছুটে এসেছে তার কাছেই, তখন একটা কিছু উপায় তো করতেই হয়৷ টুলকু ভাবে-বেঙাকে হয়তো কোনো রকমে বাঁচানো যাবে৷ তবে বিগড়ানো মোটর চালু করার তাগ-বাগ তো তার জানা নেই৷ সেটার কী করা যায়!
হঠাৎ ওর মনে পড়ে গেল ধোবাবাড়ির গবার কথা৷ বাড়ি থেকে বেরিয়ে সটাং ধোবাবাড়ি গেল টুলকু৷ বেড়ায় বাঁধা ছিল গবা গাধা৷ গলার দড়ি খুলে টুলকু তাকে নিয়ে চলল-চেঙা-বেঙার কাছে৷

টুলকু বাঁদর আর গবা গাধাকে নিয়ে মেঠোমামা আসছে দেখে-নেংটি আর চেঙা হাঁফ ছেড়ে বাঁচল-কিন্তু বেঙা বেহুঁশ যেমনকার তেমনি৷ যাক টুলকু এসেই গেরেমভারী চালে বেঙার পেট টিপল, গায়ে চিমটি দিল৷ তবু বেঙা নড়ে না চড়ে না৷
টুলকু বলল-"ভয় ভাবনার কিছু নেই-ওনার দম ফুরিয়ে গেছে৷ এখনই একটা শালুক ডাঁটা চাই, দম দিতে হবে৷"
মেঠোমামা ঝট গিয়ে পট করে একটা শালুক ডাঁটা এনে দিল-ভালুক ডোবা থেকে৷ শালুক ডাঁটার একটা দিক বেঙার মুখে ঢুকিয়ে টুলকু খুব জোরসে ফুঁ লাগায়৷ মেঠোমামা, নেংটি আর চেঙা-ওদের সকলের তাক লেগে যায়৷

টুলকুর ফুঁয়ের চোটে বেঙার পেটে আবার দম ভরে ওঠে৷ বেঙা হাই তোলে, চোখ খোলে৷ শেষটায় আড়মোড়া ভেঙে গা-ঝাড়া দিয়ে ধড়মড়িয়ে উঠে বসে৷ চোখের সামনে অচেনা টুলকুকে দেখে বেঙার চোখ ট্যারা৷
চেঙা হেসে বলে-"ভয় পেয়ো না বেঙা দাদা৷ ইনি আমাদের নতুন মিতে টুলকু৷ উনিই তোমাকে বাঁচিয়ে তুলেছেন৷"
বেঙা বলল-"সবে তো উঠে বসলুম, বাঁচলুম কই! গাড়ি নিয়ে বাড়ি ফিরলে তবে বাঁচব৷"

টুলকু বলল-"বেঙা দাদা তাই হবে, গাড়ি নিয়েই বাড়ি যাবে৷ খইমুড়কি এনেছে মামা-এখন কি ভাই ফলার খাবে?"
ফলারের নামে বেঙা চাঙা৷ দুধ নেই, দই নেই-শুকনো ফলারই খেতে লাগল গবগবিয়ে৷ নেংটি, টুলকু, চেঙা, মেঠোমামা ওরাও দু-এক মুঠো খইমুড়কি খেল৷
তারপর সবাই কাত-হয়ে-পড়া গাড়ির কাছে হাজির হল৷ গাড়ি তো তেবড়ে-তুবড়ে একশা৷ কী করা যায়! নেংটি বলল-"ভাবনা কী, সবাই মিলে জোরসে ঠেলো, আর বলো সবাই 'হেঁইয়ো', 'হেঁইয়ো'৷"

চেঙা, টুলকু, মেঠোমামা সবাই মিলে জোরসে ঠেলতে লাগল বেঙার মোটর গাড়িটাকে৷ আর নেংটি বলতে লাগল 'হেঁইয়ো জোয়ান, মারো ঠেলা!"
ওরা বলে,-হেঁইয়ো, আউর ভি থোড়া হেঁইয়ো৷"
অনেক ঠেলাঠেলি করবার পর গাড়ি তো কোনো রকমে খাড়া হল৷ গাড়ি উঠে দাঁড়িয়েই বলল-"দেখো বাছারা-কল-টল আমার সব বিগড়ে গেছে-চলতে আমি পারব না আর নিজের জোরে৷ পার তো টেনেটুনে নিয়ে চলো৷"

টুলকু বলল-"বেশ! বেশ! তাই হবে! গবা গাধাটাকে তাইতো নিয়ে এসেছি৷" টুলকু তাড়াতাড়ি গবার লেজের গেরো দিয়ে গাড়িটাকে বেঁধে দিল৷ চেঙা গাধার পিঠে চড়ে বসল৷ বেঙাকেও টুলকু তুলে দিল গাধার ওপর উলটো দিকে মুখ করে৷ নেংটি চড়ল গিয়ে গাড়িতে৷ বেঙাকে উলটো গাধায় চড়িয়ে টুলকু আর মেঠোমামা হাত নেড়ে বলল-"টা-টা গুডবাই!"
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন