আশাপূর্ণা দেবী
তখনি রাষ্ট্র হলো বৃন্দে লোক ঠকাতে নিজে ‘মন্দ’ করে তবে ‘ভালো’ করাতি দেখায়। রাষ্ট্র হলো—মুখুয্যেদের সেই বাচ্চা খোকাটাকে ঘরে বসে ‘বিষবাণ’ মেরে তারপর তাকে বাঁচাবার ভান করতে গেছিল বৃন্দে। … অতোদিন আগের কথা, তবু লোকে টগরের কথাই বিশ্বাস করে ফেলল। … তারা অবশ্য আর গ্রামে নেই। সেই বছরই পূজোটি সমাধা করে মুখুয্যেরা গ্রামের বাস তুলে দিয়ে কলকাতায় পাকাপাকি বাস করতে চলে গিয়েছিল। এমনিতে তো বেশীরভাগই থাকত, তবে পালে পার্বিনে, ছেলেমেয়ের বিয়ে দিতে আর ওই দুর্গোৎসবে আসতো।… দুর্গোৎসব উঠিয়ে দিল, নিজেদের আসা বন্ধ করে দিল। কেন কে জানে। ছেলে বেঁচে ওঠা সত্ত্বেও এই ডিসিশনে, কি জানি হৃদয় রহস্যের এ কোন রহস্য।
কিন্তু মুখুয্যেরা না থাকলেও গ্রামে ছিল তো অনেকেই। আর দীর্ঘকাল যাবৎ বৃন্দের প্রতি সমীহ আর কৃতজ্ঞতা নিয়েই ছিল। চিড় খেল সেই মনোভাবে। তারপর ভাঙন।….
তোমার আগুনলাগা ঘরে জল ঢেলে আগুন নিভিয়ে তোমায় বাঁচিয়েছে বলে, যে পড়শীর প্রতি তুমি কৃতজ্ঞতায় বিগলিত ছিলে, হঠাৎ যদি টের পেয়ে যাও আগুনলাগানোটা সেই পড়শীরই অবদান, মন যেভাবে ওলট পালট হয়ে যায়, সেইভাবেই ওলট পালট খেলো সাগরপুকুর গ্রামের মন।
ক্রমশঃই সবাই অতীতের খাতা উল্টে উল্টে টগরের কথার ‘সমর্থন’ আবিষ্কার করতে লাগলো, আর ওই একটা মুখ্যু অছ্যুৎ জাতের মেয়ে এতাবৎ এইসব বুদ্ধি রাগমান লোককে ঠেকিয়ে খেয়ে এসেছে বলে, আক্রোশে আর অপমানে বিকৃত হয়ে উঠল।…..
বৃন্দের কপাল তখন তার নিজের দেহতেও ভাঙ্গন ধরেছে।… বুকের বল চলে গিয়ে বুক গেছে ধ্বসে, যত্নের অভাবে শরীর যেতে বসেছে গুঁড়ো হয়ে। গ্রাম গ্রামান্তরের লোকেরও উৎসাহে ভাঁটা পড়ে এসেছে।…
চারিদিকেই তো নতুন উৎসাহের আবির্ভাব।
তখন ‘রামদেবপুরের ফকিরের’ বাড়বাড়ন্ত জাহির হচ্ছে।
অতএব বৃন্দে তলিয়ে যাবে, স্বাভাবিক।
দুলোর বাপ যে সাহায্য সহায়তা করতো—
তাড়িখোর দুলো তার সিকির সিকিতো করলই না। বরং একদিন টগরের প্ররোচনায় মত্ত অবস্থায় মাকে ভিটে ছাড়া করে ঢিবি জমির ওপর বানানো সেই ‘চণ্ডীর কুটিরে’ বসিয়ে রেখে এলো। শাসিয়ে এল খবরদার যদি আমার বেটিগুলানের ওপর নজর দেতে ও ভিটেয় উঁকি দিবি তো, তোকে ওই শ্যাওলা পুকুরে ডুইবে রেকে আসবো।
বৃন্দে রেগে কী বলল, আমায় এই শূন্যিঘরে একেথুলি, আমার জিনিষ পত্তর?
দুলো বলল, উসব তো আমার বাপের। তোর বাপের?
তোর বাপেরটা হোলো কমনে? আমার ওজগার না?
দুলো বলল, মানে দুলোর মাথায় ওটা নেশার রং বলল, তবে থানা পুলিশ করগা যা।…
কে করবে থানা পুলিশ?
কে লড়বে বৃন্দের হয়ে? কে বলতে আসবে ন্যায় কথা? কার দায় পড়েছে তাড়িখোর গোয়ারের সঙ্গে কথা কইতে আসতে?
বৃন্দে তো গ্রামের সকলের কাছে কেঁদে গিয়ে পড়েছিল।
কিন্তু একটা ‘শক্তির পতন’ মানুষকে বড় বেশী সহানুভূতিহীন করে ফেলে। … যেন সেই শক্তিকে বিশ্বাস করে এসে যে বোকামী করে এসেছে, তার প্রায়শ্চিত্ত করে।
মাটির খোলটায় পরিণত হয়ে আঁস্তাকুঁড়ে পড়ে রইল।
শুধু সত্য চরণ।
একটা ব্যতিক্রমের মত, নীরবে এসে বৃন্দের ভাঙা চালার নীচে মেটে দাওয়ার ওপর নামিয়ে দেয়। নিত্যদিনের সিধে।… একটু চাল, এতটুকু ডাল, একফোঁটা নুন, একছিটে তেল, দুটো ছাতু, দুটো চাল ভাজা, দু’তিনটে গুলি গুলি আলু। একদা বৃন্দেকে যা খাওয়া অভ্যাস করিয়েছিল ভুজঙ্গ সেই অভ্যাসটার জন্যে অনেকদিন কষ্ট পেয়েছে বৃন্দে। এমন কি মান খুইয়ে ওদের গিয়ে বলেছে, ভাত দিস না দিস, অ্যাকটুক চা তো আমারে দিতি পারিস? নিজেদের অ্যাতো চায়ের র্যালা।
তখন টগর হেসে হেসে বলেছে, বসতি পেলেই মানষে শুতি চায়। আজ তোরে অ্যাকটুক চা দিই, কাল তুই ‘ভাত দে’ বলে জুলুম কর। হুঁঃ। ক্যাঙালকে শাগের ক্ষেত দ্যাকাতে অ্যাচে।
টগর কেন এতো এমন করে ভেবে পায় না।
মনুষ্য চরিত্রে চির অভিজ্ঞ বৃন্দেও যে দিশেহারা হয়ে যায়। বুঝতে পারে না। বৃন্দের শক্তিকে ভয় করে বলেই টগর এমনভাবে তাকে দাবিয়ে রাখতে চেষ্টা করে। বিয়ে হয়ে এসে পর্যন্ত ওই শক্তিকে ভয় করে এসেছে, আর তাকে দাবাতে চেষ্টা করে এসেছে, এতোটুকু শিথিলতা দেখালেই যদি আপদ শক্তির বিকাশ ঘটিয়ে টগরকে বিপদজনক অবস্থায় ফেলে।
কৈ—মাগুর মাছ কুটতে বৃন্দে নিজেই যেমন, তার চোখে মুখে নুন লাগিয়ে, মাথাটা ছেঁচে ছেঁচে নিস্তেজ করে ফেলে, তবে বঁটিতে দু টুকরো করে।
জিনিস কটা নামিয়ে রেখে সত্যচরণ বললো, মাসি, অসময়ে শুয়ে যে?
বৃন্দে উঠে বসে বলল, শরীলডে ভাল নাই। তা’ তোমার আজ বিলম্বো?
আসলে বৃন্দে খিদেয় শুয়ে পড়েছিল। চালকটা না এলে তো ভাত রাঁধার উপায় নেই।
সত্য এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল, শাক—টাক কিছু তোলোনি?
নাঃ। আজ আর মন নাই।
সত্য দাওয়া থেকে নেমে এদিক ওদিক ঘুরে একগাছা কাঁকুড় শাক, আর অ্যাতোটুকু একটু জালি কাঁকুড় তুলে এনে বলল, ন্যাও, উঠে রাঁধো। না খেলে শরীর ধুঁকবে।… আমার বাড়ি কাছে হলে, তোমার দুটো ভাতের ব্যবস্থা আমিই করতাম। সেই তো—নিজের জন্যে হয়। তো তুমিতো আর অতটা হেঁটে যেতে আসতে পারবে না।
বৃন্দে উঠে বসলো।
আহা! ভগমান আচে তালে অ্যাখনো।
তারপর বললো, না বাবা চলতে নারি।
ওই তো। নচেৎ দেখতে যেতে পারতে মুখুয্যে বাড়িটার এবার আবার কত জৌলুস ফিরেছে। ওদের বাড়ির পাশেই তো আমার ঘর।
বৃন্দে আবেগের গলায় বলল, কোন মুকুয্যে বাড়ি?
আহা মুখুয্যে বাড়ি আর কটা গো মাসি? ওই বাবুদের বাড়িই। তেনারা যে এবার আবার পূজো করছেন।
পূজো করচে!
বৃন্দের চোখের সামনে যেন একটা রং—মশাল জ্বলে ওঠে। অ্যাতোকাল বন্দো দে’ আবার পূজো করতেচে?
সত্যচরণের আজ রান্না করতে হবে না।
মুখুয্যে বাড়ির যে কেয়ারটেকার এযাৎকাল বাড়ি দেখাশুনো করে আসছে, সত্যচরণের সে বন্ধুলোক। সেও নিঃসঙ্গ। সত্যও তাই। তা আজ সে অফার দিয়েছে—আজ থেকে রান্নার লোক লেগেছে, রাঁধবে বাড়বে, বাবুরা এসে পড়বার আগে একটু পুরনো হতে, কেয়ারটেকার নিজে, আর কিছু ‘লোকজন’ খাবে। অতএব সত্যও যেন এসে বসে যায়।
সত্যর তাই আজ অনেক সময়।
দোকান বন্ধ করে এসে গল্প করতে বসেছে।
হয়তো বা বৃন্দের এই নিস্তেজ শিথিল ভঙ্গী, এই বলীরেখাঙ্কিত মুখ, নিভে যাওয়া কয়লার আঙারের মত চোখ আর হেরে যাওয়া চেহারাটা দেখে মুদির দোকানওয়ালা সত্যচরণের মায়া হল।
তাই বললো, বুঝলে মাসি, আজ আর আমায় হাত পুড়িয়ে খেতে হবে না। আজ নেমন্তন্ন।
‘নেমন্তন্ন’ শব্দটা শুনেই বুড়ি বিন্দের বুকটা যেন উথাল পাথাল করে উঠল। কত বাড়িতে কত নেমন্তন্ন খেয়েছে বৃন্দে। যত জানা ঘর, তাদের ইষ্টপূরণ বাবদ খাইয়েছে, আবার কাজ—কর্মেও নেমন্তন্ন করেছে। তখন আবার বলেছে—ছেলেকে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে এসো মা।
এসব ক্ষেত্রে বড় একটা তা আনতো না বৃন্দে।
তার স্পেশাল খাতির থাকলেও, জাতের বিচারটাতো সমাজ সামাজিকতায় উড়িয়ে দেওয়া যায় না? খেতে বসাবে নিশ্চয় অচ্ছ্যুৎদের সঙ্গে। বৃন্দে বলতো, অ্যাকটা লোক দিও মা, খাবার সঙ্গে নে যাব। ওরা আসতে চাইবেনি।
বাড়িতে এনে তিনজনে একসঙ্গে খেতো। আর বাবুদের বাড়ির রান্নার তারিফ করতো। বিশেষ করে দুলো। বলতো, মাচ—মানসো তো তুইও আঁছিস মা অ্যামন খোসবো হয় না ক্যান বলতো?
ওনারা কতো তরিবৎ করে। আঁদুনী ঠাকুরে আঁদে।
বলে বৃন্দে নিজের ভাগের সবটা ছেলের পাতে তুলে দিতো।
যতক্ষণ সে ওই ক্রিয়াকলাপে আছে, ততক্ষণ যেন অন্য আর এক বৃন্দে। কিন্তু সংসার জীবনে বৃন্দে নামের মেয়েমানুষটা তো একেবারেই সাধারণ ছিল। স্বামী পুত্তরের প্রতি স্নেহশীল, সংসারে টান।
আর গাল মন্দ?
কেউ কোনোদিন শোনেনি তার মুখে। এক ভূতছাড়ানো মন্তরের মধ্যে ছাড়া।
জীবন্তেই কি প্রেতাত্মা হয়ে যেতে পারে মানুষ?
কিন্তু একটা সহজ মানুষ বৃন্দের সঙ্গে সহজভাবে গল্প করতে বসেছে দেখে বৃন্দে যেন অনেকগুলো বছর পিছিয়ে যায়। উৎসাহের গলায় বলে ওঠে, বসলে গো?
ওই তো মুখুয্যে বাড়ি। পর্শু আসবেন তেনারা আজ থেকেই রাঁধুনী ঠাকুর।
আসবেন তাঁরা।
এ দীর্ঘ পাঁচিশটা বছর পরে তারা আসবে। কিন্তু কারা কারা?
সত্যচরণ হাসে, সেই বুড়ো কর্তা—গিন্নী কখনো এখনো বেঁচে থাকে? এখন ছেলে বৌ। যেনাদের ছেলেকে তুমি জীবন দিয়েছিলে।
হঠাৎ বৃন্দের চোখে একঝলক জল এসে পড়ে। চোখ মুছে কষ্টে বলে, আমি কে? যা করেচে মা। তো তুই অ্যাখনো সে কথা স্মরোণে রেখেচিস বাবা? আর কোন্নো মানুষডা আকেনি। তো সেই ছেলেডা? আসে নাই।
আরে এসেচে বৈ কি।
সত্যচরণ জানায়, তার জন্যই না কি আসা।
এ বছরের এই দুর্গোৎসব তো তার নামেরই মানতি।
বুড়ো কর্তা—গিন্নী যে কী ভেবে এখানের পূজো তুলে দিয়েছিলেন তাঁরাই জানেন।
….কলকাতার বাড়িতে না কি ঘটে পটে পূজো করতেন, কর্তা মারা যাওয়ার পর তাও উঠে যায়।
অথচ পয়সার অবধি নেই।
বিরাট ব্যবসা তো।
দালানের প্রতিমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেবার চেষ্টায় মায়ের নাকি দশহাতের একখানা হাত খুঁতো হয়ে গিয়েছিল, কে জানে সেই অপরাধ বোধই কর্তাকে ওইভাবে চালিত করেছিল কিনা।
যাক সে তো অনেক দিনের কথা।
বর্তমানের ঘটনা—সেই মরেবাঁচা ছেলে বিলেতে পড়াশুনো করে ফিরেছে, এবং বিশেষ ঘটা সহকারে বিয়েও হয়ে গেছে। দেশে এই যে হবার প্রশ্ন ছিল না। কিন্তু সেই বাবদ ছেলের মার এই মানত।
দেশে এসে একটা ঘটা করবেন, নতুন বৌকে দেশের পূজো দেখাবেন।
নিজের সেই বধূজীবনের আনন্দের স্মৃতির গল্প করেছেন, দেখাতে সাধ।
বলেছেন নাকি। গ্রামের লোক ত কেউ কোনো দোষ করেনি ছেলের নেমন্তন্ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। পূজোয় তার শোধ হোক। আমার নিজের বিয়ের সময় দেখেছি গ্রামসুদ্ধু লোক পাঁচদিন ধরে নেমন্তন্ন খাচ্ছে।
এখন অবশ্য খরচের হার অনেক বেড়ে গেছে কিন্তু ব্যবসার আয়ও ত অনেক বেড়েছে। তাছাড়া বাপবেটা দুজনেই কৃতী।
এ সমস্ত গল্প শুনে এসেছে সত্যচরণ তার সেই বন্ধুজনের কাছে। কাজকর্মের অবসরে সে লোকটা গল্প করতে সত্যচরণকে ডাকে। জমিদার বাড়ির নীচের তলায় কত ঘর কত দালান। এতোদিন পোড়া হয়ে পড়েছিল, এখন নতুন রং মেরামত হয়ে আবার পুরনো বাহার খুলেছে।
আমারে কেউ কয়না। আজ এই তুমি কইলে, তাই টের পেলাম।
বৃন্দে নিঃশ্বাস ফেলে বলে, কেমন দেখতে হয়েছে সেই খোকাডা, কত বড় হয়েছে দেখতে মন যাচ্ছে।
সত্যচরণ দুঃখের গলায় বলে, তুমি তো হাঁটতে পারোনা। তা একটা রিক্সা গাড়ি চেপে যাবে ক্ষ্যাপা?
বৃন্দে বলে, আমারে চেনবে? এডা আবার কেডা এলো, বলে দৌরানে গলাধাক্কিয়ে তাইড়ে দিবে।
সত্য জিভ কাটে।
ছি ছি। এ কী বলছো মাসি। তাঁরা সভ্য ভদ্দর শহরের মানুষ। এই সাগরপুকুরের লোকের মতন বেইমান নয়। পরিচয় দিলে, দেখো কত মান্য সম্মান করবে। কী বল? আজ এই এতো আহ্লাদ কোথায় থাকতো, যদি সেদিন—মরা ছেলে না ফিরে পেতো।
বৃন্দের বুকটা দুলে ওঠে।
বৃন্দে তবু নিজেকে সামলে বলে, আর বাচ্চা—কাচ্চা নাই?
নাঃ। ওই একটাই। সাধে বলছি—কী থাকতো তাহলে? কখন বিলেত ফেরৎ ছেলে, পরীর মতন বৌ, গ্রামের লোকেদের দেখিয়ে মুখটা বড় হবে কতো! তা তুমি বেঁচে আছো জানলে, নিশ্চয় তোমাকেও পূজোয় নেমন্তন্ন করবে।
বৃন্দে নিঃশ্বাস ফেলে বলে, অ্যাকডা পেরানী ত এই বৃন্দেবুড়ির ছায়া মাড়ায় না। যাই তুমি ছেলে—তাই এখনো পেরানটা আছে।
সত্যচরণ ভাবে, ওনাদের কানে তুলতে হবে—সেই গুণীন মা এখনো বেঁচে আছে। তবে স্বামীপুত্তুর হারিয়ে আর ছেলের বৌয়ের দুর্ব্যবহার বড় দুঃখে কষ্টে আছে। তাঁদের তো হাত ঝাড়লে পর্বত, যদি বুড়ির ‘শেষ কালে’ একটু সুব্যবস্থা করে দিয়ে যান।
সত্যচরণ এর মধ্যে কোনো অযৌক্তিক দেখতে পায় না। ভদ্র মানুষের মধ্যে তো কৃতজ্ঞতা থাকবেই।
এই যাঃ। তোমার দেরী করে দিলাম মাসি। নাও নাও রাঁধো।
বলে সত্যচরণ চলে যায়।
কিন্তু বৃন্দের আর উনুন জ্বালতে গা ওঠে না। বৃন্দে ভাবে, সেজের কালে ভাত এঁদে খাবো অখন।
অতএব বৃন্দে সেই ছাতু কটাই জলে গুলে গুড় দিয়ে খেয়ে নিয়ে ঢকঢক করে এক ঘটি জল খেয়ে ছেঁড়া মাদুরটা বিছিয়ে শুয়ে পড়ে।
কিন্তু রাতে ঘুম আসে না বৃন্দের তা দুপুরে।
অন্যদিন যদিবা একছিটে ‘ভাত ঘুম’ হয়, আজ তো তাও নয়। বৃন্দে সেই বাবুদের বাড়ির উঠোনে গিয়ে বসে।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন