বিজনকৃষ্ণ চৌধুরী
গীতিসংগ্রহ – দৌত্য
৫৭৪
আর তো নিশি নাই গো সখী আর তো নিশি নাই
 আইলায় না আইলায় না বন্ধু রঙ্গিয়া কানাই।।ধু।।
 শ্যাম তো লম্পট সই গো কেবা না জানয়
 যার প্ৰেমে মজে নিষ্ঠুর তার কথা কয়।
 চম্পাকলি চন্দ্রাবাসী পাইয়া রসময়
 প্ৰেমে বিভোর করিয়া তারে রাখতে মনে লয়।
 জানি গো জানি গো সই শ্যাম তো পরের নয়
 ফাঁকি দিয়া প্ৰাণের পাখী রাখছে মনে কয়।
 ত্বরা করি যাওগো বৃন্দে প্ৰাণে আর না সয়
 শ্যাম আনিতে যায় বৃন্দে রাধারমণ কয়।
গো (২৬৫)
৫৭৫
চন্দ্রার কুঞ্জে বৃন্দাদুতী শ্যাম চান্দের উদ্দেশে যায়।
 কও গো চন্দ্ৰা সত্য করি রাধার বন্ধু রহিল কোথায়।।
 সোনা না হয় রূপা না হয় অঞ্চলে বান্ধিয়া রাখতাম।
 পরান বন্ধু চুরি করি কতদিন সামলাই থাকতাম।
 ভাইবে রাধারমণ বলে ইহা চন্দ্ৰার উচিত নয়।
 ডিগ্রি জারীর আসামীরে ধরিয়া নিব রাই কোথায়।।
করু/ ১, ২
৫৭৬
চিঠি দিয়া শ্রীরাধিকায় পাঠাইছইন মোরে
 শোন শ্যাম গুণধাম নিতে রে তোমারে
 প্ৰেম ডুরি দি বান্ধিয়া নিতে এতে নিষেধ নাই
 শ্ৰীরাধিকার দোহাই যদি মান রে কানাই।
 মন্দিরের সামনে গিয়া জিকাইন দুতিরে–
 আজিকার রজনী রাধার পোষাইল কেমনে।
 সুখের নিদ্রা যাও তুমি চন্দ্রার কুঞ্জেতে
 আমি নারী অভাগিনী জাগি নিশি কাটিরে।
 ভাইবে রাধারমণ বলে বলি গো ধনি তোরে
 পুরুষ সমান নিষ্ঠুর নাই জগৎ সংসারে।।
গো (১১৮), হা (৫)
পাঠান্তর : হা/: চিঠি > আরো চিঠি; জিকাইন > জিজ্ঞাসাইন; আজিকার … কেমনে > আজিকার নিশিরাত পোষাইলে কেমনে/ আরো যেমনে তেমনে নিশি পোষাইছইন রাধা; আমি নারী… কাটিরে > × × তোরে > রাই; পুরুষ… সংসারে > পুরুষ পাষাণ নয় গো মাইয়া পাষাণ।
৫৭৭
দূতী কইও গো বন্ধু রে।
 এগো কাইল নিশিতে এক কুঞ্জে রইয়াছি বাসরে।।
 এক কুঞ্জে রই গো সখী দুসর নাই মোর সাথে
 এগো কি দুযেতে শ্যামনগরে ছাড়িয়া গেলা মোরে।।
 ভাইবে রাধারমণ বলে বালিশ লই কোলে
 দারুণ তুলার বালিশ, বুলাইলে না বোলে।।
সর্ব/৪
৫৭৮
বৃন্দে তুই সে প্রাণের ধন
 আমায় নি করাবে বন্ধু কৃষ্ণ দরশন।
 এপারে বন্ধুয়ার বাড়ি মধ্যে ক্ষীরোদ নদী
 উড়িয়া যাইবার সাধ করে পাখা না দেয় বিধি।
 আর আঙুল কাটিয়া কলম দোয়াত করলাম আঁখি
 আমার হৃৎপদ্ম কাগজের মধ্যে বন্ধুর সংবাদ লিখি।।
 কার কুঞ্জেতে শুনা যায় তার মুরলী বাজনা।।
 আর ভাইবে রাধারমণ বলে শুন বদনী রাই
 আসবে গো তোর প্রাণবন্ধু নাগর কানাই।।
করু/১৩
২৮১
শ্যামের প্ৰেয়সী           বিনোদী রাই
 হৃদয় বিদারে             তোর মুখ চাই।।
 কাননে কি বনে          যেখানে যাই
 সাধিয়া আনিব           নাগর কানাই।।
 আনিয়া মিলাব           ভাবনা নাই।
 কিশোরী কিশোর         দুই এক ঠাঁই।।
 নিশীথে গহন কাননে যাই–
 রাধারমণ বাসনা          যুগল মিলাই।
য/১২০
৫৮০
সখী যাও গো মথুরায় আমার খবর কইও গিয়া
 রসিক বন্ধু কালিয়ায়।।ধু।।
 নেওগো প্রেমের মালাখানি প্ৰেমফুল গাথছি তায়–
 আমার কথা কইয়া মালা রাখিয়া দিও বন্ধের পায়।
 বন্ধে যদি না চিনে গো কইও কইও আমার দায়
 তোমার প্রেমের প্ৰেমিক একজন প্ৰেম জ্বরে মারা যায়।
 বিনয় করি কইও বন্ধে ওগো প্ৰভু শ্যামরায়
 রাধা নামে তোমার প্রেমিক সদায় কন্দে উভরায়
 মরার আগে একবার তোমায় দুই নয়নে দেখতে চায়।
 কইও কইও বন্ধের কাছে যদি বন্ধের মন চায়
 জীবনে না পাইলে দেখা মইলে রাধারমণ চায়।।
গো (১৭৭)
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন