মিচিও কাকু
পুরানে, দেবতারা স্বর্গীয় ঐশ্বর্য্য নিয়ে বাস করতেন, নিছক মৃত্যুর মতো তুচ্ছ ঘটনা অতিক্রম করে। গ্রিক দেবতারা মাউন্ট অলিম্পাসের স্বর্গীয় অঞ্চলে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো তখন নর্স দেবতারা যারা সম্মান এবং চিরন্তন গৌরব অর্জনের জন্য লড়াই করেছিলেন তারা বালাল্গার পর্বতে বা মৃত যোদ্ধাদের আত্মার স্মরণে ভোজের আয়োজন করতেন। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য এই শতাব্দীর শেষে, যদি দেবতাদের মতো শক্তি অর্জন করি তাহলে ২১০০ সালে আমাদের সভ্যতার চেহারা কেমন হবে? এসব নতুন প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন আমাদের সভ্যতাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে?
এসব তথ্যপ্রযুক্তিগত বিপ্লব একটিমাত্র বিষয়কে মুখ্য করে ব্যাখ্যা করে : একটি গ্রহকেন্দ্রিক সভ্যতার সৃষ্টি। মানব ইতিহাসে এটিই সম্ভবত বড় রূপান্তর হবে। প্রকৃতপক্ষে, বর্তমান যুগের মানুষই গুরুত্ব নির্ধারণ করবে আমরা গ্রহের পৃষ্ঠে চলাফেরা করতে পারব কিনা বা সেহেতু তারা নির্ধারণ করবে আমরা লক্ষ্য পৌছাতে পারব নাকি। বিশৃঙ্খল পরিবেশের দিকে নিম্নগমন করব। সম্ভবত ৫০০০ মানুষের প্রজন্ম পৃথিবীর পৃষ্ঠে চলাফেরা করেছে সেই ১০০০০০ বছর বা তারও আগে যখন আমরা আফ্রিকাতে প্রথম যাত্রা শুরু করেছিলাম এবং তাদের মধ্যে মাত্র একটি প্রজন্ম এই শতাব্দীতে বাস করছে যারাই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।
যদি কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা কোনো ভুলের দুর্বিপাক না ঘটে, এটি উপেক্ষা করার সুযোগ নেই আমরা একটি সমন্বিত ইতিহাসে অধ্যায়ে প্রবেশ করব। শক্তির ইতিহাস বিশ্লেষণ করে এটি আমরা স্পষ্ট দেখতে পারি।
যখন অভিজ্ঞ ইতিহাসবিদ ইতিহাস রচনা করেন তারা মানুষের অভিজ্ঞতা এবং ত্রুটির আলোকে দেখেন, তা হলো-রাজা বা রানিদের বিশ্লেষণ, সামাজিক আন্দোলনের উত্থান এবং ধারণাসমূহের বিস্তার। অপরপক্ষে, পদার্থবিদরা ইতিহাসকে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে দেখেন
পদার্থবিদরা সবকিছুকে এমনকি সভ্যতাকেও র্যাংকিং করে কী পরিমাণ শক্তি এটি ব্যবহার করে তার উপর ভিত্তি করে। যখন এটি মানব ইতিহাসের উপরে প্রয়োগ করা হয় দেখা যায় শত বছরের পরে আমাদের মোট ব্যবহৃত শক্তি ১/৫ হর্স পাওয়ার এর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো, আমাদের খালি হাতের শক্তি এবং ক্ষুদ্রা যাযাবর জীবন অতিবাহিত করেছি, উপজাতিদের মতো ঘুরে বেড়িয়েছি, খাদ্যের জন্য কঠিন কর্ম সাধন করেছি, শত্রুতার পরিবেশে। ঐ সময়ের জন্য আমরা নেকড়ে থেকে অভিন্ন ছিলাম।
কোনো লিখিত দলিল ছিল না। শুধু নিঃসঙ্গ তাঁবুর আলোতেই সঞ্চালিত হয়েছে গল্পগুলো এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মের কাছে। জীবন সংক্ষিপ্ত এবং রুক্ষ ছিলো, কাঙ্ক্ষিত গড় আয়ু ছিলো আঠারো থেকে বিশ বছর। তখন তোমার সমস্ত সম্পদ এতটুকুই ছিলো যা তুমি নিজের কাঁধে করে বহন করতে পারতে। তোমার জীবনের বেশিরভাগ সময় ছিলো ক্ষুধা এবং বেদনায় পরিপূর্ণ। তোমার মৃত্যুর পর কোনো চিহ্ন থাকত না যে তুমি এক সময় এখানে বাস করতে।
কিন্তু ১০০০০ বছর আগে, এটি অভিনব ঘটনা ঘটে যা সভ্যতাকে একটি গতিতে নিয়ে আসে। বরফ যুগের অবসান।
যে কারণে আমরা এখনো বুঝি না হাজার হাজার বছর আগে বরফযুগের শেষটি। এটি কৃষিকাজের পথকে ‘সূচনা করেছিলো। ঘোড়া এবং গরু দ্রুত গৃহপালিত প্রাণীতে রূপান্তরিত হলো যার কারণে হর্স পাওয়ার শক্তিতে উন্নতি হয়। এখন একজন ব্যক্তির কয়েক একর জমি চাষাবাদের শক্তি আছে, দ্রুত বর্ধনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির আধিক্য বিদ্যমান। প্রাণীদের গৃহপালনের মাধ্যমে মানুষের আর প্রাণী শিকার করার প্রয়োজন পড়ে না খাদ্যের জন্য এবং প্রথম স্থির গ্রাম ও শহর সৃষ্টি হয় যা জঙ্গল থেকে সমতলে বিস্তার লাভ করে।
কৃষি বিপ্লব থেকে প্রাপ্ত অতিরিক্ত সম্পদ নতুন এবং বুদ্ধিদীপ্ত পথ তৈরি করে তাদের সম্পদ সংরক্ষণ এবং বৃদ্ধি করার জন্য। গণিত এবং লিখন প্রক্রিয়া সম্পদ গণনার জন্য সৃষ্টি হয়। ক্যালেন্ডারের প্রয়োজন পড়ে ফসল রোপণ এবং কাটার জন্য এবং অনুলেখক ও হিসাব রক্ষকের প্রয়োজন হয় অতিরিক্ত সম্পদের খোঁজ রাখার এবং ট্যাক্স দেওয়ার জন্য। এটি অতিরিক্ত সম্পদই মূলত সেনাবাহিনী, রাজ্য, রাজসভা, দাসপ্রথা এবং আদিম সভ্যতার উত্থানে ভূমিকা রাখে।
তার পরবর্তী বিপ্লবটি ঘটে ৩০০০ বছর আগে যা হলো-শিল্প বিপ্লব। হঠাৎ করে, একজনের মোট সম্পদ তার হাত এবং ঘোড়ার মাধ্যমে উৎপাদিত সম্পদ নয় বরং যান্ত্রিক শক্তির মাধ্যমে উৎপাদিত যা প্রচুর সম্পদ এবং উৎপাদন সৃষ্টি করে।
স্টিম ইঞ্জিন শক্তিশালী যন্ত্রপাতি এবং পরিবহন সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে যাতে করে ফ্যাক্টরি, কলকারখানা থেকে ও খনি থেকে সম্পদ সৃষ্টি করা হয় শুধু জমি থেকে নয়। কৃষকেরা পর্যায়ক্রমিক দুর্ভিক্ষ এবং জমিতে মেরুদণ্ড ক্ষয়ে যাওয়া পরিশ্রম থেকে মুক্তি পায়।
শহরের দিকে উড়াল দেয়। শ্রমিক শ্রেণি তৈরি করে কামারের এবং জায়গা অটোমেটিক শ্রমিক দ্বারা দখল নেয়। অভ্যন্তরীণ জ্বালানি মেশিন আসার পরে একজন মানুষ শত শত হর্স পাওয়ারের কাজ একটি নির্দেশে সম্পন্ন করতে পারে। কাঙ্ক্ষিত আয়ু বাড়তে থাকে। ১৯০০ সালের দিকে তা চুরানব্বই বছর পর্যন্ত স্পর্শ করেছে।
পরিশেষে, আমরা এখন তৃতীয় তরঙ্গে আছি। যেখানে তথ্যের ব্যবহারের মাধ্যমে সম্পদ সৃষ্টি হচ্ছে। এখন একটি জাতির সম্পদ ফাইবার অপটিক ক্যাবল এবং স্যাটেলাইটের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ইলেকট্রন দ্বারা পরিমাপ করা হয় যা মূলত ওয়াল স্ট্রিট এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক রাজধানীর কম্পিউটার স্ক্রিমগুলোতে নৃত্যরত। বিজ্ঞান, বাণিজ্য এবং প্রমোদ ভ্রমন আলোর গতিতে সম্পন্ন হয়, যা আমাদের যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গায় সীমাহীন তথ্যের যোগান দেয়।
কীভাবে এই শতাব্দি পর্যন্ত বা সহস্রাব্দ পর্যন্ত শক্তির জ্যামিতিক বৃদ্ধি হলো? যখন পদার্থবিদরা সভ্যতাসমূহকে বিশ্লেষণ করেন, শক্তির ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে র্যাংকিং করা হয়। এই র্যাংকিং ১৯৬৪ সালে প্রথম শুরু করেন রাশিয়ান মহাকাশবিদ নিকোলাই কার্দাশেভ। যিনি রাতের আকাশ থেকে কোন উন্নত সভ্যতার সিগন্যাল পাওয়া যায় কিনা তা নিয়ে আগ্রহী গবেষক ছিলেন।
তিনি ঝাপসা এবং দুর্বলভাবে সংজ্ঞায়িত ‘বুদ্ধিমান এলিয়েন সভ্যতা’ নিয়ে স্পষ্ট ছিলেন না তাই তিনি একটি পরিমাণগত মাপকাঠির সূচনা করেন নভোচারীদের জন্য। তিনি বুঝতে পারেন এলিয়েন সভ্যতা সম্ভবত তাদের সংস্কৃতি, সমাজ, সরকার ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে পার্থক্য নির্ধারণ করে কিন্তু এখানে একটি বিষয় আছে যা তাদের অবশ্যই মানতে হবে। তা হলো পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র এবং পৃথিবী থেকে, একটি মাত্র বিষয় আছে। যেটি পর্যবেক্ষণ করে এসব সভ্যতাকে বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায় তাদের ব্যবহৃত শক্তির পরিমাণ।
তাই তিনি তিনটি তাত্ত্বিক সভ্যতার প্রস্তাব পেশ করেন : টাইপ I সভ্যতা যেটি তাদের গৃহের পৃষ্ঠে পতিত সূর্যালোকের লম্বা ফালি ব্যবহার করে অথবা ১০^১৭ ওয়াট শক্তি। টাইপ II সভ্যতা হলো নাক্ষত্রিক সভ্যতা যা তাদের সূর্যের বিকিরণ শক্তি ব্যবহার করে বা ১০^২৭ ওয়াট শক্তি, টাইপ III সভ্যতা হলো ছায়াপথ সভ্যতা যা বিলিয়ন বিলিয়ন তারকার শক্তি ব্যবহার করে বা ১০^৩৭ ওয়াট শক্তি
এই শ্রেণি বিন্যাসের সুবিধা হলো আমরা প্রতিটি সভ্যতাকে একটি মানদণ্ডে ফেলতে পারি ঝাপসা ও অগোছালো সাধারণীকরণ না করে তাদের প্রতিটি সভ্যতার শক্তির উপর ভিত্তি করে। সেহেতু আমরা এসব স্বর্গীয় বস্তুসমূহের শক্তির বহিঃনির্গমন জানি তাই আমরা একটি বিশেষ সংখ্যাতাত্ত্বিক সীমাবদ্ধতা নির্ণয় করতে পারি যার মাধ্যমে আমরা আকাশকে স্ক্যান করতে পারি।
প্রতিটি সভ্যতাকে একটি ধ্রুবক ১০ বিলিয়ন দ্বারা পার্থক্য নির্ধারণ করা যায় : টাইপ III সভ্যতা ১০ বিলিয়ন গুণ বেশি শক্তি ব্যবহার করে টাইপ II সভ্যতার থেকে (কারণ মোটামুটিভাবে একটি ছায়াপথে ১০ বিলিয়ন বা তার বেশি তারা থাকে) যেটি টাইপ I সভ্যতার থেকে ১০ বিলিয়ন শক্তি ব্যবহার করে।
এই শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী আমাদের বর্তমান সভ্যতা টাইপ O সভ্যতা। আমরা এই স্কেলে এখনো র্যাংকিং করতে পারিনি কারণ আমরা মৃত গাছ, তেল এবং কয়লা থেকে শক্তি পাই। (কার্ল সাগান এই শ্রেণিবিন্যাসকে সাধারণীকরণ করতে চেষ্টা করেছেন একটি সংক্ষিপ্ত পরিমাপ নির্ধারণ করতে যেখানে আমরা এই মহাজাগতিক স্কেলে র্যাংকিং করতে পারি। তার হিসাবায়ন অনুসারে আমরা মূলত একটি ০.৭ টাইপ সভ্যতা।)
এই স্কেলে, আমরা বিভিন্ন বিজ্ঞান কল্পকাহিনিতে যেসব সভ্যতা দেখি সেটা থেকে র্যাংকিং করতে পারি। একটি সাধারণ টাইপ I সভ্যতা হলো বাক রজার্স বা ফ্ল্যাক্স গর্ডন যেখানে গ্রহের সব শক্তির উন্নত ব্যবহার হয়েছে। তারা শক্তির গ্রহকেন্দ্রিক সব উৎসকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তাই তারা তাদের আবহাওয়াকে তাদের ইচ্ছানুযায়ী পরিবর্তন করতে পারে। হ্যারিকেনের আর্দ্রতা কমাতে পারে বা তাদের সমুদ্রের তলদেশে শহর আছে। যদিও তারা রকেটের মধ্যেই স্বর্গ নির্মাণ করে, তবে তাদের শক্তির বহিঃনির্গমন এখনো একটি গ্রহের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
একটি টাইপ II সভ্যতা হলো স্টার ট্রেক্স, যা কয়েকটি গ্রহের ফেডারেশন (কোনো খসড়া উদ্যোগ ছাড়া)। ১০০টির মতো গ্রহের কলোনি তৈরি করতে পেরেছে। তাদের প্রযুক্তি একটি গ্রহের শক্তির বহির্গমনকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ইচ্ছে মতো।
একটি টাইপ III সভ্যতা হবে সম্ভবত স্টার ওয়ার কাহিনির সাম্রাজের মতো বা স্টার ট্রেকস-এর দ্য বোর্গ, উভয়েরই একটি গ্যালাক্সির বিশাল অংশের কলোনি আছে। যা বিলিয়ন বিলিয়ন তারকা জগৎকে আবদ্ধ করে। তারা ইচ্ছে করে ছায়াপথ লেন তৈরি করতে পারে মহাকাশে।
যদিও কার্দাশেভ গ্রহ, নক্ষত্র, ছায়াপথের উপর ভিত্তি করে তার শ্রেণিবিন্যাস করেন। আমাদের উচিত টাইপ IV সভ্যতার সম্ভাব্যতা খুঁজে দেখা। যার শক্তির উৎস হবে বহিঃছায়াপথের কোনো উৎস। আমাদের ছায়াপথের বাইরে জানা একমাত্র শক্তির উৎস হলো ডার্ক এনার্জি যা ৭৩% বস্তু ও শক্তির মাধ্যমে সৃষ্টি আমাদের জানা এই মহাবিশ্বের যেখানে নক্ষত্র ও ছায়াপথ মিলে মাত্র মহাবিশ্বের ৪% সৃষ্টি হয়। একটি টাইপ IV সভ্যতার প্রার্থী হতে পরে ঈশ্বরের মতো Q যা স্টার ট্রেক সিরিজে দেখানো হয়েছে যার শক্তির উৎস হলো বহিঃ ছায়াপথ।
আমরা এই শ্রেণিবিন্যাস ব্যবহার করতে পারব যখন আমরা এর যেকোনো একটি টাইপের সভ্যতায় প্রবেশ করব। ধরা হয় ১ শতাংশ হারে বিশ্বের সভ্যতার বিকাশ ঘটে এটি মোট জিডিপি ভিত্তিতে। এটি একটি যৌক্তিক ধারণা কতটি শতকের চেয়ে আমাদের গড় বেশি। এই ধারণা অনুসারে প্রায় ২৫০০ বছর লাগে একটি সভ্যতা থেকে অন্য সভ্যতায় প্রবেশ করতে। ২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেলে এই রূপান্তরে সময় লাগে ১২০০ বছরের মত। কিন্তু এছাড়াও আমরা এটি হিসাব করতে পারি টাইপ ও সভ্যতায় পৌঁছাতে কত সময় লাগবে। অর্থনৈতিক মন্দা বা প্রবৃদ্ধি, অগ্রগতি কম অথবা বেশি এর পরিবর্তে আমরা গাণিতিকভাবে নির্ধারণ করতে পারি ১০০ বছরের মধ্যে আমরা টাইপ I স্টাটাস পাব যা আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গড় হিসাব অনুযায়ী।
যখন পত্রিকার পৃষ্ঠাগুলোতে আমরা প্রতিনিয়ত টাইপ O থেকে টাইপ I সভ্যতায় প্রবেশের পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রমাণ পাই। অনেক শিরোনামই টাইপ I সভ্যতার জন্মের চিহ্ন প্রকাশ করে আমাদের চোখের সামনে।
একটি গোষ্ঠী আছে যারা টাইপ I গ্রহকেন্দ্রিক সভ্যতার পথে স্পষ্ট বাধা, কারণ তারা জানে এটি একটি প্রগতিশীল, মুক্ত, বিজ্ঞানসম্মত, উন্নত এবং শিক্ষিত সভ্যতা। এই গোষ্ঠী বা শক্তিগুলো হয়তো সচেতন নয় এই বাস্তবতা নিয়ে বা এটিকে সমন্বিত করতে পারে না কিন্তু তারা টাইপ I সভ্যতার বিপক্ষে লড়ে যেতে ভূমিকা রাখছে। এগুলো হলো :
যখন সমাজ টাইপ II সভ্যতায় পৌঁছাবে হাজার হাজার বছর চলে যাবে-এটি অমর সভ্যতার মতো। বিজ্ঞানের কিছুই জানা নেই টাইপ || সভ্যতাকে ধ্বংস করার। যেহেতু এটির থাকবে দীর্ঘকালীন দক্ষ সম্পদশালীতা, বরফ যুগ এড়িয়ে যাওয়া বা পরিবর্তন করার ক্ষমতা। উল্কা বা ধূমকেতুর পথকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। এমনকি যদি তাদের সূর্য সুপার নোভায় পরিণত হয়, তখন তাদের জনগণ অন্য সৌরজগতে প্রবেশ করবে এবং সম্ভবত তাদের গ্রহকে বিস্ফোরণ প্রতিহত করবে। (উদাহরণস্বরূপ যদি তাদের সূর্য রক্তিম দৈত্যে পরিণত হয় তারা এস্টেরয়েড ঘুরিয়ে দেবে তাদের গ্রহের চারপাশে একটি নিক্ষেপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে সূর্য থেকে তাদের গ্রহকে দূরে সরিয়ে রাখবে।
এই উপায়ে টাইপ II সভ্যতা তাদের প্রয়োজনীয় শক্তি যোগ্যতা একটি তারার বহিঃনির্গমন শক্তি ব্যবহার করে এক দৈত্যাকার গোলক বানিয়ে নিয়ে সব সূর্যালোক শোষণ করার জন্য। এটিকে বলা হয় ডাইসন গোলক।
একটি টাইপ II সভ্যতা সম্ভবত নিজেই শক্তিময় হবে। যেহেতু মহাশূন্য ভ্রমণ কঠিন কাজ, এটি টাইপ I সভ্যতায় থাকবে কয়েক শতাব্দী ধরে। প্রচুর সময় থাকবে তাদের সভ্যতাকে সমাজে বিভক্ত করতে। এই সময়ের মধ্যে টাইপ I সভ্যতা টাইপ II সভ্যতায় পৌঁছে যাবে তারা তাদের নিজস্ব সৌরজগতের কলোনিই থাকবে না বরং পাশের গ্রহসমূহে, সম্ভবত যার দূরত্ব হবে কয়েকশত আলোকবর্ষ কিন্তু তার বেশি নয়। তারা আলোর বেগকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
যখন একটি সভ্যতা টাইপ III সভ্যতায় পৌঁছাবে, তখন গ্যালাক্সির বেশিরভাগই জানা থাকবে। শত শত বিলিয়ন গ্রহে ভ্রমণ করা সম্ভব হবে স্বপ্রতিবিম্ব রোবট পাঠানোর মাধ্যমে যা পুরো গ্যালাক্সিটিকে খুঁজে দেখবে। একটি ভন নিউম্যান প্রোব একটি রোবট যেটি নিজেই অসংখ্য প্রতিলিপি তৈরি করতে সক্ষম। এটি চন্দ্রে অবস্থান করবে (যেহেতু রোবটটি মরিচা বা ক্ষয় হওয়া থেকে মুক্ত) এবং এটি চাঁদের ময়লা দিয়ে একটি ফ্যাক্টরি তৈরি করবে যা এটি নিজেই হাজার হাজার কপি করবে। প্রতি কপি রকেট দূরের অন্য তারকা জগতে প্রবেশ করবে এবং আরও হাজার হাজার কপি সৃষ্টি করবে। এমন একটি প্রোব শুরু করার মাধ্যমে, আমরা দ্রুত ট্রিলিয়ন গোলকের তৈরি করতে পারব এই স্বপ্রতিলিপি যেগুলো আলোর গতির কাছাকাছি হবে। পুরো মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিকে ১,০০,০০০ বছরে নকশা করে ফেলবে। যেহেতু মহাবিশ্ব ১৩.৭ বিলিয়ন বছরের পুরনো তাই এই সভ্যতায় প্রচুর সময় থাকবে তার উত্থানের বা পতনের। (এই দ্রুত, জ্যামিতিক বৃদ্ধি তেমন কলাকৌশল যেমন করে আমাদের শরীরে ভাইরাসগুলো ছড়িয়ে পড়ে।)
এখানে অন্য একটি সম্ভাবনা আছে, যাহোক, যে সময়টিতে একটি সভ্যতা টাইপ III তে পৌঁছে যাবে। তাদের জনগণের প্রচুর শক্তির উৎস থাকবে- যেমন “প্ল্যাংক শক্তি” অথবা ১০১৯ বিলিয়ন ইলেকট্রন ভোল্ট, যা সেই পরিমাণ শক্তি যাতে স্থান-কাল অনিমেই অস্থিতিশীল হয়ে যায়। (প্ল্যাংক শক্তি হলো জেনেভার নিকটে অবস্থিত আমাদের সর্ববৃহৎ পারমাণবিক চুল্লি থেকে উৎপাদিত শক্তির চেয়ে এক কোয়াড্রিলিয়ন গুণ বেশি। এটি ঐ পরিমাণ শক্তি যে কারণে আইনস্টাইনের মহাকর্ষ সূত্র ভেঙ্গে পড়ে। এই শক্তিতে তত্ত্বগতভাবে স্থান-কাল ধ্বংস হয়ে যায় খুব ক্ষুদ্র পোর্টাল তৈরি করে যা অন্য মহাবিশ্বের স্থানান্তরের কারণ বা স্থান-কালের অন্য কোনো জায়গায়।) এই শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে মহাকার যন্ত্রের দরকার যা অকল্পনীয় স্কেলের কিন্তু যদি সফল হওয়া যায় তবে তারা সম্ভাব্য শর্টকাট তৈরি করবে স্থান-কালের, হয় স্থানকে সংকুচিত করে বা ওয়ার্ম হোলের ভিতর দিয়ে গমন করে। ধারণা করা হয়, তার একগুচ্ছ ঔধ্বত্যপূর্ণ তত্ত্বগত ও বাস্তব বাধা অতিক্রম করবে (যেমন যথেষ্ট পরিমাণ ধনাত্বক এবং ঋণাত্বক শক্তি বশ করা এবং অস্থিতিশীলতা দূর করা) এটি ধারণা করা হয় যে তারা পুরো গ্যালাক্সি জুড়ে তাদের কলোনি স্থাপন করতে সক্ষম হবে।
এটি মানুষের মধ্যে প্রশ্ন জাগায় তারা কেন আমাদের গ্রহে ভিজিট করতে আসল। তারা কোথায়? সমালোচকের জিজ্ঞেস করে থাকেন।
একটি উত্তর হতে পারে- তারা ইতোমধ্যে বিদ্যমান তবে আমরা দেখতে অসমর্থ। স্বপ্রতিলিপি কারক ভন নিউমান প্রোব সম্ভবত সবচেয়ে ভালো বাস্তব উপায় গ্যালাক্সির সন্ধান করতে। এবং তারা খুব বেশি পরিমাণ নেই। তারা সম্ভবত কয়েক ইঞ্চি হবে দৈর্ঘ্যে ন্যানো টেনলজির অগ্রগতির কারণে। তার সম্ভব সমতল আকারের হবে কিন্তু আমরা শনাক্ত করতে সক্ষম নই কারণ আমরা ভুল জিনিস খুঁজে বেড়াচ্ছি। আশা করছি একটি বিশাল স্পেস শিপ নিয়ে এলিয়েন চলাফেরা করে দূর আকাশে। এছাড়াও এমনও হতে পারে, প্রোবটি পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয়, আংশিক জৈবিক এবং আংশিক ইলেকট্রনিক এবং আদৌ কোন এলিয়েন ধারণ করে না। এবং যখন আমরা মহাকাশের এলিয়েনের সাথে সাক্ষাৎ করব আমরা আশ্চর্য হয়ে যাব কারণ তারা পূর্বেই তাদের জৈবিক অবস্থা পরিবর্তন করে ফেলেছে রোবোটিস ন্যানোটেকনোলজি বা বায়োটেকনোলজির মাধ্যমে।
অন্য সম্ভাবনাটি হলো— তারা নিজেরাই আত্মবিনাশী। যেভাবে আমরা উল্লেখ করেছি টাইপ O থেকে টাইপ I সভ্যাতায় পৌঁছানো বেশ ভয়ঙ্কর ব্যাপার। যেহেতু আমাদের এখনও বর্বরতা, মৌলবাদ, বর্ণবাদ এবং ইত্যাদি আছে যেমন অতীতে ছিলো। এটি একদিন সম্ভব যখন আমরা বিভিন্ন গ্রহে ভ্রমণ করব। আমরা টাইপ O থেকে টাইপ I সভ্যতায় পৌছানোর ব্যর্থতার কারণ বা প্রমাণ খুঁজে পাব উদাহরণস্বরূপ, তাদের আবহাওয়ায় সম্ভব খুব উত্তপ্ত হবে না খুবই তেজস্ক্রিয়তা সম্পন্ন হবে যা জীবনকে সমর্থন করে।
বর্তমান সময়ে পৃথিবীর মানুষ টাইপ I সভ্যতার যাত্রা করা সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে সচেতন নয়। এখানে কোনো সমন্বিত ব্যক্তিক সচেতনতা নেই এই পরিবর্তনের ইতিহাস সম্পর্কে। যদি তুমি জরিপ করো কিছু মানুষ বর্তমান বিশ্বায়ন নিয়ে হয়তো সচেতন কিন্তু এর বাইরে কোনো ধারণা নেই যে নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে আমরা অগ্রসর হচ্ছি তা নিয়ে।
এসবই হঠাৎ পরিবর্তন হয়ে যাবে যদি আমরা আমাদের বাইরে কোথাও বুদ্ধিমান প্রাণীর খোঁজ পাই। আর আমরা তাৎক্ষণিক প্রযুক্তিগত স্তর নিয়ে সচেতন হয়ে পড়ব এলিয়েনদের সভ্যতার সাথে তুলনা করে। কিছু বিজ্ঞানী অবশ্য বেশ আগ্রহী এলিয়েনারা কোন ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের সভ্যতাকে আয়ত্তে নিয়েছে। যদিও কেউ নিশ্চিত করে জানাত না, সম্ভবত এই শতাব্দীতে আমরা মহাকাশে এমন একটি উন্নত সভ্যতার সন্ধান পেতে পারি, যা আমাদের প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির কারণে।
দুটি ট্রেন্ড এটিকে সম্ভব করতে পারে। প্রথমটি হলো এমন বিশেষ স্যাটেলাইট তৈরি করা যা ক্ষুদ্র, সৌরজগতের বাইরের গ্রহ, করোট এবং কেপনার স্যাটেলাইট খুঁজবে। কেপলার ধারণা করেছেন ৬০০ ছোট, পৃথিবীর মতো গ্রহ শনাক্ত করা সম্ভব এই মহাকাশে। এক সময় এই গ্রহগুলো শনাক্তকরণ করা হবে, তার পরবর্তী ধাপ হবে এগুলোর মধ্যে কোনো বুদ্ধিমান বিকিরণ হয় কিনা এই গ্রহগুলো থেকে।
২০০১ সালে, মাইক্রোসফট এর বিলিয়নিয়ার পল এলেন একটি অনুদান প্রদান শুরু করেন যা বর্তমানে ৩০ মিলিয়ন ডলারের বেশি, SETI প্রোগ্রাম চালু করার জন্য। এটি সান ফ্রানসিসকো শহরের একটু দূরে (হাই ক্রিক ইনসটালেশান) যা প্রচুর তেজস্ক্রিয় টেলিস্কোপ বৃদ্ধি করেছে। এলেন টেলিস্কোপ অ্যারে যাখন পুরোপুরি কাজ করতে শুরু করবে তখন ৩৫০টি তেজস্ক্রিয় টেলিস্কোপ থাকবে। এই বিশ্বে বেশ উন্নত রেডিও টেলিস্কোপ তৈরি করাকে সহজ করে দেবে। যেমন অতীতে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা ১০০০ থেকে কয়েক মিলিয়ন গুণ গ্রহকে স্ক্যান করতে পারবেন।
যদিও বিজ্ঞানীরা প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে উন্নত সভ্যতার সিগনালব্যস অনুসন্ধান করেছেন, সম্প্রতি মাত্র দুটি অগ্রগতি যা SETI প্রোগ্রামকে ত্বরান্বিত করতে প্রয়োজন হবে। অনেক মহাকাশ বিজ্ঞানী মনে করেন এই গ্রহটির জন্য খুব কমই শক্তি ব্যয় করা হয় বা খুব কম তথ্য-উপাত্ত রয়েছে। এই নতুন তথ্য উপাত্ত এবং নতুন সামর্থ্য SETI প্রোগ্রামকে একটি সিরিয়াস বৈজ্ঞানিক প্রজেক্টে রূপ দেবে।
এটি বোঝা যায়, এই শতাব্দীতে আমরা মহাকাশে অন্য গ্রহ থেকে কোনো বুদ্ধিমান সভ্যতার সিগন্যাল খুঁজে পাব। (সিথ শোসটাক, যিনি SETI এর যে এরিয়ার পরিচালক, আমাকে বলেছিলেন বিশ বছরের মধ্যে তিনি এমন একটি সভ্যতার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হবেন। এটি খুবই আশাবাদী চিন্তা, কিন্তু এটি বলা নিরাপদ এই শতাব্দীতে যদি আমরা বহিঃ আকাশে কোনো বুদ্ধিমান সভ্যতা খুঁজে না পাই তা বেশ অদ্ভুত মনে হবে।)
যদি সিগনাল খুঁজে পাওয়া যায় কোনো উন্নত সভ্যতা থেকে। এটি মানব ইতিহাসের অন্যতম মাইলফলক হবে। হলিউডের মুভিগুলো এই ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা প্রদর্শন করতে পছন্দ করে এই বলে যে এই ঘটনা বা প্ৰকল্প কখনো শেষ হবে না। ভবিষ্যদ্বাণী করে এর শেষ কাছেই আছে। বিভিন্ন উগ্র ধর্মীয় গোত্রের সময় শেষ, ইত্যাদি, ইত্যাদি।
যাহোক, বাস্তবতা কিন্তু খুবই সাধারণ। এত তাড়াতাড়ি আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই যেহেতু এই ধরনের সভ্যতা এখনো জানে না যে আমরা তাদের কথোপকথন শোনার জন্য কান পেতে আছি। এবং যদি তা হয় তবে তাদের এবং আমাদের সরাসরি কথোপকথন বেশ কঠিন হবে। তাদের থেকে আমাদের বিশাল দূরত্ব রয়েছে। প্রথমত, এটি সম্ভবত কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর লাগবে পুরোপুরি তাদের বার্তার মানে উদ্ধার করতে। এবং তারপর তাদের সভ্যতার প্রযুক্তিগত র্যাংকিং করতে হবে। এটি কার্দশেভ এর শ্রেণিবিন্যাসের সাথে খাপ খায় কিনা? দ্বিতীয়ত, তাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ সম্ভবত সহজ হবে না, যেহেতু তাদের এই সভ্যতা কয়েক আলোকবর্ষ দূরে। এতটাই দূরে সরাসরি কোনো কথোপকথন সম্ভব নয়। সুতরাং আমরা কেবল তাদের সভ্যতাকে পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হব তাদের সাথে কোনো কথোপকখন ছাড়া। এখানে একটি কাজ করা যেতে পারে বিশাল একটি রেডিও ট্রান্সমিটার স্থাপন করে যা এলিয়েনদের কাছে ফেরত বার্তা পাঠাবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, এটি কয়েক শতাব্দী সময় নেবে এই ধরনের সভ্যতার সাথে দ্বিমাত্রিক মুখোমুখি যোগাযোগ স্থাপন করতে।
১৯৬০ এর দিকে কার্দাশেভ এর শ্রেণিবিন্যাসের সূচনা হয়। যখন পদার্থ বিজ্ঞানীরা শক্তির উৎপাদন নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলেন। যা হোক, কম্পিউটার শক্তির উত্থান তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লবের দিকে নজর চলে যায়, যখন সভ্যতার প্রয়োগকৃত বিশেষ সংখ্যার সাথে তার শক্তি উৎপাদন সম্পর্কিত।
উদাহরণস্বরূপ একজন কল্পনা করতে পারেন- একটি এলিয়েন সভ্যতায় একটি গ্রহের যেখানে কম্পিউটার কার্যকর থাকা অসম্ভব কারণ তাদের আবহাওয়া মণ্ডল তড়িৎবাহী। এই ক্ষেত্রে, যেকোনো একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস সহজে শর্ট সার্কিটে পরিণত হতে পারে, স্পার্ক সৃষ্টি করতে পারে তাই একমাত্র আদিম ইলেকট্রনিক প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার সম্ভব।
একটি বৃহৎ আকারে ডাইনামো বা কম্পিউটার দ্রুত পুড়ে যাবে। আমরা এমন একটি সভ্যতা কল্পনা করতে পারি যারা জীবাশ্ম জ্বালানি বা আণবিক শক্তি ব্যবহার করতে শিখেছে কিন্তু তাদের সমাজ বিশাল তথ্য প্রক্রিয়াজাত করতে অক্ষম। এটি তাদের জন্য কঠিন-ইন্টারনেট তৈরি বা একটি গ্রহকেন্দ্রিক তথ্যযোগাযোগ ব্যবস্থা। তাই তাদের অর্থনীতি বা বিজ্ঞানের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে। যদিও তারা কার্দাশেভ এর স্কেলে পৌঁছাতে পারে, কম্পিউটার ছাড়া এটি ধীর গতি ও কষ্টকর হবে।
তাই কার্ল সাগান অন্য একটি স্কেল সূচনা করেন যার ভিত্তি হলো তথ্য প্রক্রিয়াকরণ। তিনি একটি সিস্টেম উদ্ভাবন করেন যা কিছু অক্ষর দিয়ে সাজানো এ থেকে জেড পর্যন্ত তথ্যপ্রযুক্তির সাথে সম্পর্কিত। একটি এ টাইপ সভ্যতা হলো- যা এক মিলিয়ন তথ্যকে প্রক্রিয়া করতে পারে যা এমন এটি সভ্যতাকে উপস্থাপন করে যার মৌখিক ভাষা আছে কিন্তু কোনো লিখিত ভাষা নেই। যদি আমরা আদিম গ্রিক থেকে বেঁচে থাকা সব তথ্যকে সংকলিত করতে পারি যা একটি লিখিত ভাষাকে এবং সাহিত্যকে জন্ম দিয়েছে— এটি তথ্যের এক বিলিয়ন বিট হবে—যা একটি টাইপ সি সভ্যতা। এই স্কেলের উপরের দিকে পৌঁছে আমরা আমাদের সভ্যতার দ্বারা প্রক্রিয়াজাত তথ্যের পরিমাণ জানতে পারি। একজন শিক্ষিত মানুষ আমাদেরকে টাইপ এইচ সভ্যতায় অনুমান করতে পারেন। তাই, শক্তি এবং তথ্যপ্রযুক্তি মিলে আমাদের সভ্যতার র্যাংকিং ০.৭ এইচ সভ্যতা।
সম্প্রতি বছরগুলোতে আরেকটি চিন্তার উদ্রেক করেছে- দূষণ এবং বর্জ্য। শক্তি এবং তথ্যপ্রযুক্তি একটি সভ্যতার র্যাংকিংয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। প্রকৃতপক্ষে, একটি সভ্যতা যত বেশি শক্তি ব্যবহার করে এবং যত বেশি তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে-তা তত বেশি দূষণ এবং আবর্জনা সৃষ্টি করে। এটি কোনো অ্যাকাডেমিক প্রশ্ন নয়, যেহেতু টাইপ। অথবা টাইপ। সভ্যতা থেকে সৃষ্ট আবর্জনা যথেষ্ট এটিকে ধ্বংস করে দিতে।
একটি টাইপ। সভ্যতা, উদাহরণস্বরূপ, একটি তারা থেকে উৎপাদিত সমস্ত শক্তি ব্যবহার করে। বলা যেতে পারে যদি এটির ব্যবহৃত যন্ত্ৰসমূহ ৫০ শতাংশ দক্ষ হয়, এর মানে হলো এর অর্ধেক বর্জ্য তাপ হিসেবে নির্গত হবে। এটি একটি সম্ভাব্য বিপর্যয়, কারণ এর মানে হলো গ্রহটির তাপমাত্রা বাড়তেই থাকবে যতক্ষণ না গ্রহটির গলিত রূপ নেয়। বিলিয়ন বিলিয়ন কয়লা তাপ বিদ্যুৎ উৎপন্ন কেন্দ্র চিন্তা করা যেতে পারে এখন একটি গ্রহে, যা প্রচুর পরিমাণে তাপ ও গ্যাস নির্গমন করে যা গ্রহটিতে কোনো জীবন বেঁচে থাকাকে অসম্ভব করে তোলে।
ফ্রিমান ডাইসন, প্রকৃতপক্ষে, এক সময় মহাকাশে একটি টাইপ। সভ্যতা সন্ধান করতে গিয়ে প্রথমত অবলোহিত রশ্মির বিকিরণ অনুসন্ধান করেন, এক্সরে বা দৃশ্যমান আলো অনুসন্ধান করার পরিবর্তে। এর কারণ হলো টাইপ সভ্যতা যদি তাদের উপস্থিতিকে তার সন্ধানকারী লোকজনের থেকে লুকাতে চায় তবে তারা তাদের চারপাশে একটি গোলক বৃত্ত সৃষ্টি করতে পারে— যা তাদের তাপ বর্জ্য যথেষ্ট উৎপাদনের কারণ হতে পারে এবং অবলোহিত রশ্মির বিকিরণ সৃষ্টি হতে পারে। তাই তিনি মহাকাশ বিজ্ঞানীদেরকে গ্রহগুলো সন্ধানে অবলোহিত বিকিরণ খুঁজতে পরামর্শ দিয়েছেন (যা হোক, এমন কোনো কিছু পাওয়া যায়নি
এটি যেকোনো সভ্যতার আশঙ্কার উদ্রেক ঘটায় যদি এটি অনিয়ন্ত্রিত শক্তি উৎপাদন করে যা আত্মহত্যার শামিল। তাই আমরা দেখি, শক্তি এবং তথ্য একটি সভ্যতার টিকে থাকা বা উচ্চতর স্কেলে পৌঁছানো নিশ্চিত করে না। আমাদের নতুন স্কেল দরকার যা- যান্ত্রিক কর্মদক্ষতা, তাপ বর্জ্য ও দূষণকে আমলে নেবে। একটি নতুন স্কেল আছে যা এনট্রপি ধারণার উপর প্রতিষ্ঠিত।
আদর্শগতভাবে, আমরা এমন একটি সভ্যতা চাই যেখানে তার শক্তির উৎপাদন বাড়বে, তথ্যপ্রবাহ বাড়বে কিন্তু তা বেশ বুদ্ধির সাথেই সম্পাদিত হবে যাতে করে গ্রহটি অসহনীয় তাপ বা বর্জ্য পরিপূর্ণ হবে না।
এটি ডিজনে মুভির ‘ওয়াল-ই’-তে চিত্রগতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে দূর ভবিষ্যতে আমাদের এতই দূষিত ও নিম্নমানের পৃথিবী থাকবে যা আমাদের এই ধ্বংসস্তূপ ছেড়ে একটি নিজস্ব জীবনযাপনের জন্য মহাকাশে অভিজাত ক্রুশীপ ব্যবহার করতে হবে।
এখন তাপগতি বিদ্যার সূত্র বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাপগতি বিদ্যায় প্রথম সূত্র সাধারণভাবে বোঝায় তুমি কোনো কিছু ছাড়া কোনো কিছুই পেতে পার না। মানে হলো-ফ্রি দুপুরের খাবার বলে কিছুই নেই। অন্যভাবে মহাবিশ্বের মোট বস্তু এবং শক্তি ধ্রুবক বা অপরিবর্তিত।
কিন্তু তৃতীয় অধ্যায় দেখেছি, তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্রটি বেশ কৌতূহলপূর্ণ এবং প্রকৃতপক্ষে, এটিই সম্ভবত একটি উন্নত সভ্যতার ভাগ্য নির্ধারণ করবে। সাধারণত, তাপ গতির দ্বিতীয় সূত্র বলে এনট্রপির (বিশৃঙ্খলা বা নৈরাজ্য) পরিমাণ সর্বদা বেড়ে চলে। এটির মানে হলো সব বস্তু এক সময় নষ্ট হয়, ক্ষয় হয়, মরিচা ধরে, বয়স বাড়ে অথবা ভেঙ্গে পড়ে। (আমরা কখনো এনট্রপির হ্রাস দেখিনি। উদাহরণস্বরূপ, আমরা কখনো ফ্রাইপ্যানের ভাজা ডিমকে কখনো তাকে ফেরত যেতে দেখিনি। আমরা কখনো দেখিনি চিনির দ্রাবণ কফির কাপে হঠাৎ মিশ্রণ থেকে চিনির দানায় পরিণত হবে এবং চামচে ফিরে আসতে। অবিমিশ্রত এই শব্দটি খুবই কম শোনা যায়— তাই এই শব্দটি ইংরেজি কিংবা অন্য ভাষায় কোনো ডিকশনারিতে নেই।)
সুতরাং, যদি সভ্যতাসমূহ ভবিষ্যতে অন্ধভাবে শক্তি উৎপাদন শুরু করে টাইপ। সভ্যতা থেকে টাইপ। সভ্যতায় প্রবেশ করার জন্য, তবে তারা প্রচুর পরিমাণ বর্জ্য ও তাপ উৎপাদন করবে যা প্রকৃতপক্ষে তা তাদের গ্রহকে বসবাস অযোগ্য করে ফেলবে।
এনট্রপি যখন তাপবর্জ্য, বিশৃঙ্খলা এবং দূষণ রূপে বিস্তার লাভ করবে তখন তা সঙ্গত কারণেই তাদের সভ্যতাকে ধ্বংস করে দিবে। একইভাবে, যদি তারা তাদের বনাঞ্চল কেটে এবং পাহাড়সম বর্জ্য কাগজ উৎপাদনের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি সৃষ্টি করে তবে তা তাদের সভ্যতার কবর রচনা করবে।
সুতরাং, আমাদের আরও একটি স্কেল প্রয়োজন সভ্যতার র্যাংকিং করতে। আমাদের দুটো সভ্যতার সূচনা করতে হবে। প্রথমটি হলো— “এনট্রপি সংরক্ষণশীলতা” সভ্যতা যা এমন একটি সভ্যতা যেকোনোভাবে এটি তাদের অতিরিক্ত বর্জ্য ও তাপ ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ করে। যেহেতু এটির শক্তি উৎপাদন দ্রুত জ্যামিতিকভাবে বৃদ্ধির প্রয়োজন। তবে এটি অনুধাবন করে তাদের শক্তির ব্যবহার গ্রহের পরিবেশ পরিবর্তন করতে পারে, জীবনের বাঁচার জন্য অসম্ভব করে তুলতে পারে। একটি উন্নত সভ্যতার থেকে মোট উৎপাদিত এনট্রপি বা বিশৃঙ্খলা বেড়ে চলবে এটা এড়ানো অসম্ভব।
কিন্তু স্থানীয় এনট্রপি কমাতে পারে যদি তারা ন্যানো টেকনোলোজি এবং নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করে তাদের বর্জ্য ও অদক্ষতা দূর করতে।
দ্বিতীয় সভ্যতাকে বলা হয় “এনট্রপি ওয়েস্ট ফুল” সভ্যতা। যা শক্তির উৎপাদন বাড়িয়ে চলে কোনো সীমানা ছাড়া। এভাবে যদি তাদের নিজস্ব গ্রহ বসবাস অযোগ্য হয় এই সভ্যতাটি তখন অন্য গ্রহে বসতি স্থাপন করে। কিন্তু মহাকাশের অন্য কোথাও কলোনি স্থাপনের পরিশ্রম তাদের প্রসারকে সীমাবদ্ধ করে দেবে। যদি এটির এনট্রপি এর অন্য গ্রহে বসতি স্থাপনের সামর্থ্যের চেয়ে বেশি হারে বাড়ে তখন তারা বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে।
আমরা পূর্বেই উল্লেখ করেছি, আদিম যুগে, আমরা প্রকৃতির খেলার নীরব দর্শক ছিলাম, আমাদের চারপাশে রহস্যময়তা দেখে অবাক হতাম। আজ, আমরা প্রকৃতির সেই নিচে কোরিওগ্রাফার। বলসমূহকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করতে পারি। এবং ২১০০ সালের দিকে, আমরা প্রকৃতির প্রভু হবো, বস্তু সমূহকে আমাদের মনের ইচ্ছে অনুযায়ী স্থানান্তরিত করতে পারব। জীবন ও মৃত্যুকে নিয়ন্ত্রণ করব এবং তারা ছোঁয়ার জন্য যাত্রা করব।
কিন্তু যদি আমরা প্রকৃতির প্রভু হই সাথে সাথে আমাদের প্রকৃতির রক্ষকও হতে হবে। যদি আমরা এনট্রপিকে সীমানাহীন ভাবে বৃদ্ধি করতে দিই আমরা তাপগতি বিদ্যায় দ্বিতীয় সূত্র অনুসারে শক্তি পাব— যা এড়ানো অসম্ভব। এটি টাইপ। সভ্যতা। সংজ্ঞানুসারে, একটি তারার মোট শক্তির চেয়ে বেশি শক্তি ব্যবহার করে এবং এভাবে গ্রহের ভূ-পৃষ্ঠে তাপমাত্রা বেড়ে যায় উষ্ণতা বেড়ে যায় যদি এটি এনট্রপিকে নিয়ন্ত্রণ না করে বৃদ্ধি করে। কিন্তু এখানে এনট্রপিকে নিয়ন্ত্রণের নানা উপায় আছে।
উদাহরণস্বরূপ, যখন আমরা জাদুঘরে ভ্রমণে যাই এবং আমরা দেখি প্রচুর পরিমাণ উনিশ শতকের স্টিম ইঞ্জিন যা বড় বয়লার কয়লার পাত্র। আমরা দেখি কতটা অদক্ষ ছিলো এসব। শক্তির অপচয় করত প্রচুর তাপ ও দূষণ সৃষ্টি করত। যদি এগুলো আমরা নীরব, ইলেকট্রিক ট্রেনের সাথে তুলনা করি আমরা দেখি কত দক্ষতার সাথে শক্তি ব্যবহার করছি আমরা। একটি তাপ শক্তি কেন্দ্রের জন্য বিশাল পাত্র দরকার, প্রচুর পরিমাণে তাপবর্জ্য সৃষ্টি হয় এবং বায়ুকে দূষিত করে— এসব কমিয়ে আনা যায় যদি মানুষের ব্যবহার্য শক্তি নবায়নযোগ্য শক্তি দ্বারা এবং ক্ষুদ্রকায় করে দেখা যায়। ন্যানো টেকনোলজি আমাদের সেই সুযোগ দেয়- তাপবর্জ্য কমাতে এবং যন্ত্রপাতিগুলোকে পারমাণবিক স্কেলে ক্ষুদ্রকায় প্রদান করতে।
এছাড়া যদি রুমের তাপমাত্রার অর্ধ-পরিবাহী পাওয়া যায় এই শতাব্দীতে, এর মানে একটি পুরোপুরি সক্ষমতা আমাদের শক্তির প্রয়োজনীয়তার ক্ষেত্রে তাপবর্জ্য, যা ঘর্ষণের কারণে সৃষ্টি হয় তা বেশ কমানো যায় আমাদের যন্ত্রপাতির দক্ষতা বৃদ্ধি করে। যেভাবে আমরা উল্লেখ করেছি, আমাদের বেশিরভাগ শক্তির ব্যবহার হলো পরিবহন সেক্টরে যা ঘর্ষণ বলকে হ্রাস করতে যাচ্ছে। যে কারণে আমরা গ্যাসোলিন ব্যবহার করি আমাদের গ্যাস ট্যাংকিতে, এমনকি এটি ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নিউইয়র্ক পর্যন্ত পৌঁছাতে তেমন শক্তির ব্যয় করে না কারণ ঘর্ষণের বাধা যদি না থাকে। একজন অবশ্য কল্পনা করতে পারেন আগামী উন্নত সভ্যতায় এটি আরও কম শক্তি ব্যয় কার্য সম্পাদন করা সম্ভব হবে যে পরিমাণ শক্তি এখন আমরা ব্যবহার করি তার চেয়ে। এর মানে হলো আমরা এনট্রপি উৎপাদনের ক্ষেত্রে সংখ্যাগত সীমানা স্থাপন করতে পারব একটি উন্নত অগ্রগামী সভ্যতায়।
আমাদের বর্তমান টাইপ O সভ্যতাকে ভবিষ্যৎ টাইপ। সভ্যতায় রূপান্তর সম্ভব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় রূপান্তর। এটি নির্ধারণ করবে আমরা বেঁচে থাকব বা উন্নত হব নাকি আমাদের ভুলের কারণে ধ্বংস হয়ে যাব। এই রূপান্তরটি বেশ ভয়ঙ্কর কারণ আমাদের মধ্যে এখনও বর্বরতা আছে আমাদের জলাভূমি থেকে কষ্টকর উন্নয়ন ম্লান করে দিতে পারে। সভ্যতার পাতলা আবরণের খোসায় ফিরে আসবে এবং আমরা এখনো মৌলবাদী, গোষ্ঠীতান্ত্রিকতা, বর্ণবাদ, অসহিষ্ণুতা ইত্যাদি দেখছি কার্যকর আছে। ১০০০০০ বছরেও মানুষের প্রকৃতির পরিবর্তন হয়নি যদিও এখন আমাদের নিউক্লিয়ার, রাসায়নিক এবং জৈব অস্ত্র আছে যা পিছনে নিয়ে যাওয়ার কারণ।
যাহোক, যদি আমরা একবার টাইপ। সভ্যতায় রূপান্তরিত হই, আমাদের হাতে কয়েক শতাব্দী সময় থাকবে এই পার্থক্য নিরসন করতে।
আমরা আগের অধ্যায়গুলোতে দেখেছি, মহাকাশে কলোনি স্থাপন বেশ ব্যয়বহুল হবে ভবিষ্যতে। সুতরাং এটি বিশ্বের জনগণের মধ্যে শ্রেণি বৈষম্য সৃষ্টি করবে যারা মঙ্গল অথবা অন্য কোনো উল্কার বন্ধনীতে বাস করবে তাদের মাঝে। যদি খুব দ্রুত নতুন ধরনের রকেট তৈরি করার মাধ্যমে ব্যয় কমানো যায় অথবা স্পেস এলিভেটর না তৈরি হয়, মহাকাশ ভ্রমণ তখন সরকারসমূহের ও ধনীদের অঙ্গরাজ্য পরিণত হবে। এর মানে হলো তারা এই গ্রহেই থাকবে যদিও আমরা টাইপ I স্ট্যাটাসে পৌঁছাই। এটির আরেকটি অর্থ হলো আমাদের কয়েক শতাব্দী কাজ করতে হবে টাইপ I সভ্যতায় পৌঁছানোর কারণে সৃষ্ট বৈষম্য নিরসন করতে।
আমরা বেশ উদ্দীপ্ত সময়ে বাস করছি। বিজ্ঞান প্রযুক্তির কারণে আমাদের সামনে এক সময় যেমন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখতাম তা প্রমাণিত হচ্ছে। ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানের দিকে তাকালে আমাদের চ্যালেঞ্জ এবং ভয় দুটোই আছে।
তবুও আমি সত্যিকার আশা দেখতে পাই। আমরা পৃথিবীর অনেক কিছু আবিষ্কার করব আসছে দশকগুলোতে অতীতের দীর্ঘ সময়কালের মানবের সকল ইতিহাসের চেয়ে বেশি।
কিন্তু এটি সবসময় ঐভাবে নয়-
ধরো, বৈজ্ঞানিক ফ্রাঙ্কলিনের কথাগুলো, যখন তিনি আমেরিকার শেষ বড় বিজ্ঞানী বা ভবিষ্যদ্বাণী দাতা তিনি পরবর্তী শতাব্দীই শুধু নয় পরবর্তী সহস্রাব্দের অনুমানে করেছিলেন। ১৭৮০ সালে, তিনি দুঃখের সাথে উল্লেখ করেছিলেন মানুষ প্রায়ই নেকড়ের মতো ব্যবহৃত করে অন্য মানুষের সাথে এর মূল কারণ কঠিন পৃথিবীতে বেঁচে থাকার বোঝার কারণে হয়রান হয়ে থাকে।
তিনি লেখেন :
এটি কল্পনা করা অসম্ভব কতটা উচ্চতায় পৌঁছানো সম্ভব, এক হাজার বছরে, বস্তুর উপরে মানুষের প্রভুত্ব কায়েম করতে। আমরা সম্ভবত শিখব বড় বস্তুসমূহের মহাকর্ষ টান থেকে মুক্ত করতে, তাদের পুরোপুরি শূন্যতা বা মুক্ত দিয়ে ভাসাতে, সহজ পরিবহন ব্যবহার জন্য। কৃষিকাজে দৈহিক শ্রম কমবে বা এর উৎপাদন দ্বিগুণ হবে, সমস্ত রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকার করা সম্ভব হবে, শুধু এই নয় বার্ধক্য ঠেকানো যাবে এবং আমাদের জীবন কাল দীর্ঘ হবে, আনন্দময় হবে—অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে।
তিনি এমন সময় এসব লিখেছেন যখন কৃষকের একটি বিরক্তিকর কষ্ট করত মাঠে, গরু গাড়ি দিয়ে পঁচা জিনিসপত্র বাজারে নিয়ে আসত, তখন প্লেগ এবং দারিদ্র্য ছিলো জীবনের বাস্তবতা এবং চল্লিশ বছরের বেশি বাঁচা ছিলো ভাগ্যের ব্যাপার। (১৭৫০ সালে লন্ডনে, দুই-তৃতীয়াংশ শিশু যার পাঁচ বছর বয়সের আগেই মারা গিয়েছিলো।) ফ্রাঙ্কলিন ঐ সময়ের মানুষ যখন বার্ধক্যজনিত সমস্যাগুলো সমাধান ছিলো আশাতীত। অথবা থমাস হবস্ ১৬৫১ সালে যেমন লিখেছিলেন জীবন হলো ‘একাকী, দারিদ্র, খারাপ, রূঢ় এবং সংক্ষিপ্ত।”
কিন্তু আজ, ফ্রাঙ্কলিনের হাজার বছরের চিন্তা, তার ধারণা সত্য হয়ে অতীত হতে চলেছে।
এই বিশ্বাস এই কারণে, বিজ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা একদিন আমাদের অতীতের নিঃগৃহ থেকে মুক্তি দেবে-যা প্রতিধ্বনিত হয়েছে ১৭৯৫ সালে মারকুইস ডা কনডোর্সেট এর লেখা” স্কেচ সমর এ হিস্টোরিকাল পিকচার অব দি প্রগ্রেস অব দি মাইন্ড” যেখানে লেখা হয়েছে ভবিষ্যৎ নিয়ে যা পূর্ব ধারণা তার প্রায়ই ইতোমধ্যে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। তিনি অনেক বৈচিত্র্যময় পূর্ব ধারণাসমূহ লিপিবদ্ধ করেছেন, যার বেশির ভাগ মনে হয়েছিলো প্রথা বিরোধী কিন্তু বেশির ভাগ সত্য হয়েছে। তিনি ধারণা করেছিলেন তৎকালীন বর্তমান নতুন বিশ্বে ইউরোপের কলোনিসমূহ মুক্ত হবে এবং দ্রুত অগ্রগতির পথে হাঁটবে ইউরোপের প্রযুক্তির কল্যাণে। তিনি ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন পৃথিবীর সবজায়গা থেকে দাস প্রথা বিলুপ্ত হবে। তিনি ধারণা করেছিলেন- কৃষি ফার্মগুলো প্রতি একরে উন্নত মানের মোট পরিমাণে ফসল উৎপাদন করবে। তিনি পূর্ব ধারণা করেছিলেন বিজ্ঞানের দ্রুত অগ্রগতি হবে এবং তাতে মানুষের কল্যাণ হবে। তিনি ধারণা করেছিলেন সারা দিন কর্মব্যস্ত থাকতে হবে না আমাদের এবং আমাদের আরও বেশি অবসর সময় থাকবে। তিনি ধারণা করেছিলেন জন্ম নিয়ন্ত্রণ একদিন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে।
১৭৯৫ সালে যা ছিলো আশাতীত, অথচ আজ অনেক পূর্ব ধারণাই বাস্তবায়িত হয়েছে।
বৈজ্ঞানিক ফ্রাংকলিন এবং মারকুইস ডা কনডোর্সট এমন একটি সময়ে বাস করতেন যখন জীবন খুব ছোট ও রূঢ় ছিলো এবং বিজ্ঞান এখনো কল্পনাময়ী। এই সব পূর্বানুমান দেখে, আমরা বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও প্রযুক্তির উন্নয়কে পুরোপুরি অভিবাদন জানাতে পারি অতীতের অসংখ্য নিষ্ঠুরতা বর্বরতা থেকে মুক্তি দিয়ে প্রচুর সম্পদ এবং সুযোগ সৃষ্টি করার মাধ্যমে। ফ্রাংকলিন এবং কনডোসার্ট এর পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে দেখা যায়, আমরা বলতে পারি বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারগুলোই মানবতার জন্য ভালো আবিষ্কার। বিজ্ঞান আমাদের গভীর জলাশয় থেকে তারা ছোঁয়ার শিখরে নিয়ে গেছে। কিন্তু বিজ্ঞান থেমে থাকেনি। আমরা পূর্বে উল্লেখ করেছি, ২১০০ সালে, মিথের ঈশ্বরদের মতো আমাদের শক্তি থাকবে যাদের একসময় আমরা পূজা ও ভয় করতাম।
বিশেষকরে, কম্পিউটার বিপ্লবের কারণে মনের ইচ্ছামতো বস্তুগুলোকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব, বায়োটেকনোলজির বিপ্লব আমাদের জীবন সৃষ্টি করতে এবং জীবনের আয়ুও বাড়তে সাহায্য করবে এবং ন্যানোটেকনোলজির বিপ্লব আমাদের বস্তুর রূপের পরিবর্তন করতে দিবে এবং এমনকি শূন্য থেকে বস্তু সৃষ্টি করতে দেবে। এইসব বিষয় আমাদেরকে টাইপ | সভ্যতায় পৌঁছাতে সহায়তা করবে। সুতরাং বর্তমান প্রজন্ম যারা পৃথিবীতে আছে যারা পৃথিবীর বুকে হেঁটে বেড়াচ্ছে তারা নির্ধারণ করবে আমরা টাইপ। সভ্যতা পৌঁছাব নাকি গভীর খাদে পড়ে যাব।
কিন্তু বিজ্ঞান নিজেই নিরপেক্ষ। বিজ্ঞান দুপাশে ধারালো তরবারির মতো। এক পাশের অংশ দারিদ্র্য, রোগ এবং অজ্ঞতা কেটে দূর করে। কিন্তু অন্য পাশ মানুষের বিপরীতে কাজ করে। এটি কীভাবে কোন পাশ শক্তিশালী হবে তা ব্যবহারকারীর বুদ্ধিমত্তার উপর নির্ভর করে।
একদা আইনস্টাইন বলেছিলেন- বিজ্ঞান কেবল কী সেটাকে চিনিয়ে দেয়। কিন্তু কী উচিত বা অনুচিত তা নয়। এবং এটির রাজত্ব, মূল্যমান বিচার অনির্ধারিত থেকে যায়।” বিজ্ঞান সমস্যার সমাধান করে শুধু অন্য সমস্যা সৃষ্টির জন্য এবং সেগুলো হয় আরও উচ্চমাত্রার সমস্যা।
আমরা প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বিজ্ঞানের খারাপ দিকটি দেখেছিল যা ছিলো ধ্বংসাত্মক। বিশ্ব অবাক হয়েছে বিজ্ঞান কীভাবে ধ্বংস ও বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে যা পূর্বে দেখা যায়নি, যেমন- বিষাক্ত গ্যাস, মেশিনগান, পুরো শহর জুড়ে বোমা নিক্ষেপ, এবং পারমাণবিক বোমা। বিশ শতকের বর্বরতার মতো অনিয়ন্ত্রিত সহিংসতা যা অনুধাবনেরও বাইরে হতে পারে বিজ্ঞানের কারণে।
কিন্তু বিজ্ঞান মানবতাকে পুনর্গঠিত করে যুদ্ধের ধ্বংসকে অতিক্রম করে, বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধি সৃষ্টি করে। সুতরাং, বিজ্ঞানের প্রকৃত শক্তি যা আমাদের সক্ষমতা বাড়ায়, ক্ষমতায়ন বাড়ায় আমাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে। বিজ্ঞান উদ্ভবনতা, সৃষ্টিশীলতা এবং মানবতার চিন্তাকে প্রবর্ধিত করে এবং আমাদের অভাবকে চিহ্নিত করে।
জ্ঞান তাই, এই চাবিকাঠির জন্য, এখানের অনুসন্ধান জরুরি যা বিজ্ঞানের তরবারিকে শাসন করবে। ইমানুয়েলকেই একদা বলেছিলেন, “বিজ্ঞান জ্ঞানকে সংগঠিত করছে, জ্ঞান জীবনকে সংগঠিত করছে।” আমার মতে জ্ঞানের সমতা আছে আমাদের এই সময়ের রূঢ় ইস্যুগুলো শনাক্ত করার বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা আছে, এবং যার মাধ্যমে একজন নতুন লক্ষ্য ও নীতি নির্ধারণ করতে পারে।
আমাদের সমাজে জ্ঞানের খুব অভাব। একদা আইজাক এসি মন্ড বলেছিলেন, “বর্তমানে সমাজের দুঃখজনক অভিজ্ঞতা হলো বিজ্ঞান দ্রুত তথ্য সমন্বিত করছে সমাজের জ্ঞান সমন্বয়ের চেয়ে। তথ্যের মতো ইন্টারনেট বা ব্লগের মাধ্যমে জ্ঞানকে ছড়িয়ে দেওয়া যায় না। যেহেতু আমরা একটি তথ্যের সাগর নির্মাণ করেছি, সবচেয়ে আধুনিক সমাজে মূল্যবান পণ্য হলো জ্ঞান। জ্ঞান ও উপলব্ধি ছাড়া, আমরা লক্ষ্যহীন ও উদ্দেশ্যহীনভাবে সাগরে ভাসমান বস্তুর মতো, শূন্যতায় ভরা, ফাঁকা অনুভূতি সম্পন্ন যদিও প্রচুর তথ্য সীমাহীন জানাশোনা আছে আমাদের।
কিন্তু জ্ঞান কোথা থেকে আসে? কিছু অংশ জ্ঞান আসে যৌক্তিক তথ্যবহুল গণতান্ত্রিক বিতর্ক থেকে ভিন্নমতের সাথে আলোচনায়। এই বিতর্ক অনেক সময় প্রায়ই নোংরা, অসুন্দর এবং ককর্ষ কিন্তু বজ্রপাত ও ধোয়া এসবের পরে সত্যিকার অন্তর্দৃষ্টির সন্ধান মেলে। আমাদের সমাজে এই বিতর্ক হয় গণতান্ত্রিক। উইনস্টন চার্চিল একদা পর্যবেক্ষণ করেছিলেন, বলেছিলেন “গণতন্ত্র হলো সবচেয়ে খারাপ শাসন ব্যবস্থা, অন্যসব থেকে এক সময়ে সময়ে এটি পুনগঠিত বা সিদ্ধান্ত নিতে হয়।” সুতরাং, গণতন্ত্র খুব সহজ বিষয় নয়। এটি নিয়ে তোমাকে কাজ করতে হবে। জর্জ বার্নাড শ একসময় বলেছিলেন, “গণতন্ত্র এমন একটি ডিভাইস যা আমাদের নিশ্চিত করে আমরা যতটুকু ডিজার্ভ করি ততটুকুর বেশি নয়।”
আজ, ইন্টারনেটের দোষ বা সুবিধাসহ এটি গণতান্ত্রিক স্বাধীনতায় অভিভাবক হিসেবে কাজ করে। দরজা বন্ধ করে এক সময় যেসব ইস্যু আলোচিত হতো এখন তা হাজার হাজার ওয়েব সাইটের মাধ্যমে ব্যবচ্ছেদ ও বিশ্লেষণ করা হয়।
একনায়কেরা ইন্টারনেটের ভয়ে থাকে, আতঙ্কিত থাকে যখন তাদের জনগণ তাদের বিরুদ্ধে থেকে উঠবে। তাই আজকাল, ১৯৮৪ সালের দুঃস্বপ্ন বিদায় হয়েছে, ইন্টারনেট সন্ত্রাসীদের যন্ত্রে থেকে গণতান্ত্রিক যন্ত্রে পরিবর্তিত হয়েছে।
বির্তকের কর্ষতা থেকে জ্ঞানের উদ্ভব হয়। কিন্তু শক্তিশালী ও গণতান্ত্রিক বিতর্ক নিশ্চিত করে শিক্ষা। একমাত্র শিক্ষিত জনপ্রতিনিধি প্রযুক্তিগত সিদ্ধান্ত নিতে পারে যা আমাদের সভ্যতার ভাগ্য নির্ধারণ করে। সত্যিকার অর্থে, জনগণ তাদের নিজের জন্য নির্ধারণ করবে এই প্রযুক্তি কত দূর যাবে এবং কীভাবে এটি উন্নত হবে কিন্তু শুধু একটি সচেতন, শিক্ষিত জনপ্রতিনিধি সিদ্ধান্তসমূহ বিজ্ঞতার সাথে নিতে পারে।
দুর্ভাগজনক, আমাদের অনেকেই অজ্ঞ ভবিষ্যতে আমাদের কী কী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। আমরা কীভাবে নতুন শিল্প কারখানা স্থাপন করব পুরাতনগুলো প্রতিস্থাপন করে। আমরা কীভাবে আমাদের তরুণদের চাকরির বাজারের জন্য প্রস্তুত করব? কত দূর পর্যন্ত জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংকে মানুষের জন্য আমরা মেনে নিব?
কীভাবে, একটি নিম্নমুখী, অকার্যকর শিক্ষাব্যবস্থাকে পুনরুজীবিত করব? বৈশ্বিক উষ্ণতা এবং তার মানবিক দূষণকে কীভাবে সমন্বিত করব?
গণতন্ত্রের চাবিকাঠি হলো, তথ্য সচেতন জনপ্রতিনিধি যিনি যৌক্তিক এবং আবেগহীনভাবে বর্তমান ইস্যুগুলো আলোচনা করবে। এই বইটির উদ্দেশ্য হলো সেই সব বিতর্ককে গুরু করে দেওয়া যা বর্তমান শতাব্দীকে উন্মোচিত করবে।
সারাংশে বলা যায়— ভবিষ্যৎ আমাদের সৃষ্টি করতে হবে। কোনো কিছু পাথরে খোদাই করে লেখা নেই। শেক্সপিয়র ‘জুলিয়াস সিজার’ বইটিতে লিখেছিলেন-”ভুলটি হলো, প্রিয় ব্রুটস, আমাদের তারকাদের নয় বরং আমাদের।” অথবা হেনরি ফোর্ড বলেছিলেন, সম্ভবত কম শ্রুত “ইতিহাস কমবেশি পালাতে চায়। এটির ঐতিহ্য হলো আমরা কোনো ঐতিহ্য চাই না, আমরা শুধু বর্তমানে ব্যক্ত করতে চাই এবং একমাত্র ইতিহাস যা একজন চিন্তাবিদের বাধা হলো-যে ইতিহাসটি আজ আমরা সৃষ্টি করছি।”
সুতরাং, ভবিষ্যৎ একটি বিশাল পণ্যবাহী ট্রেন যা আমাদের দিকে আসছে পথের ট্রাকসমূহ ভেঙ্গে। এই ট্রেনের পিছনে মিষ্টি এবং হাজার হাজার বিজ্ঞানী যারা ল্যাবে ভবিষ্যৎ তৈরি করছেন। তুমি ট্রেনটির হুইসেল শুনতে পাচ্ছ। এটি বলছে— বায়োটেকনোলজি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ন্যানো টেকনোলজি, যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কে। যাহোক, কিছু মানুষ এর প্রতিক্রিয়ায় বলছে “আমি খুবই বৃদ্ধ। আমি কি এসব শিখতে পারব, আমি শুধু শুয়ে থাকতে পারবো এবং ট্রেনের সাথে যেতে পারব।” তরুণের যারা শক্তি সম্পন্ন, উচ্চাকাঙ্ক্ষী তারা প্রতিক্রিয়ায় বলতে আমাকে ট্রেনে উঠতে দাও। এই ট্রেনটি আমার ভবিষ্যৎ প্রদর্শক করছে। এটি আমার লক্ষ্য। আমাকে ড্রাইভারের আসনে বসতে দাও।”
আমরা আশা করতে পারি এই শতাব্দীতে বিজ্ঞানের গাড়িটি বিজ্ঞতার সাথে এবং দরদ দিয়ে পরিচালনা করবে।
কিন্তু সম্ভবত ভালো ধারণা হবে কীভাবে আমরা একটি গ্রহকেন্দ্ৰিক সভ্যতায় বাস করব, এটি ২১০০ সালের একজন মানুষের জীবন আলোচনার মাধ্যমে ধারণা পাওয়া যাবে যে কীভাবে এইসব প্রযুক্তি ব্যবহার এবং প্রতিক্রিয়া আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ও আমাদের ক্যারিয়ারে এবং আমাদের আশা ও স্বপ্নকে উপস্থাপন করে।
.
“এরিস্টটল থেকে থমাস একুইনাস পর্যন্ত, পরিপূর্ণতা মানে হলো জ্ঞান যখন অভিজ্ঞতার ও বন্ধনের মাধ্যমে নৈতিক জীবনের উদাহরণসমূহসহ জানা যায়। আমাদের পরিপূর্ণতা জিনের বর্ধন এর সাথে নিহিত নয় বরং আমাদের চরিত্রের বর্ধনের উপর নির্ভর করে।”
– স্টিভেন পোস্ট।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন