১৮. দ্য লাইফ এন্ড লাইস অব অ্যালবাস ডাম্বলডোর

জে. কে. রাওলিং

১৮. দ্য লাইফ এন্ড লাইস অব অ্যালবাস ডাম্বলডোর

সূর্য ধীরে ধীরে আরো উপরে উঠে আসছে। মাথার উপর পরিস্কার বর্ণহীন বিস্তৃত আকাশ। তার কাছে এবং তার সমস্যাগুলোর কাছে এখন এসবের কোনো বিশেষ গুরুত্ব নেই। হ্যারি তাবুর প্রবেশ পথে এসে বসল এবং বুক ভরে বিশুদ্ধ বাতাস নিল। সুর্যের উদয় এবং পাহাড়ের চূড়ায় বরফের উপর তার প্রতিফলনে যে অপূর্ব সৌন্দর্যময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে, পৃথিবীর এক অমূল্য সম্পদ বলে মনে করার কথা। কিন্তু হ্যারির সেদিকে মনযোগ নাই। যাদুদণ্ডটি খোয়ানো তাকে খোচাচ্ছে। সে বাইরে উপত্যকার দিকে তাকালো। পুরো এলাকা যেন বরফের কম্বল গায়ে দিয়ে আছে। এই নিঃস্তব্ধতার ভেতর দূর থেকে চার্চের ঘণ্টার শব্দ বাজছে ঢং ঢং।

হ্যারির এ দিকেও নজর নেই, সে আঙুল দিয়ে হাতের মাংসপেশি খামচে ধরছে, যেন ব্যথা প্রশমন করতে চাচ্ছে। কতবার যে সে নিজের ওই ক্ষত থেকে রক্ত বের করেছে তার ইয়ত্তা নেই। এক সময় সে তার ডান হাতের সবগুলো হাড় খুইয়েছিল। এবারের অভিযানে ইতিমধ্যেই কপালের এবং হাতের পাশাপাশি বুকের উপর এবং হাতে আরো দুটি স্কার জুটেছে। কিন্তু কখনই, অন্তত এ পর্যন্ত কখনোই নিজে ভয়ানক দুর্বল হয়ে পড়েনি, যদিও ম্যাজিক্যাল পাওয়ারের সবচেয়ে ভাল দিকটা এখন আর নেই। সে ভাল করেই জানে এ কথা বললে হারমিয়ন কি উত্তর দেবে। বলবে, যাদুদণ্ডটিও একজন উইজার্ডের, যেমন থাকার কথা তেমনিই তো আছে। কিন্তু হারমিয়নের এ ধারণা ভুল। তার বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। হারমিয়ন বুঝতে পারেনি যে তার যাদুদণ্ডটির সরু কম্পাসের মত অগ্রভাগ ঘোরে এবং শক্রদের উদ্দেশে সোনালী ধোয়ার কার্স ছুঁড়তে পারে। সে টুইন কোর্স প্রোটেকশন পুরোপুরি হারিয়েছে। এখন এটি চলে যাবার পর সে বুঝতে পারছে এটি কত কাজে লেগেছে।

সে পকেট থেকে যাদুদণ্ডের ভাঙা অংশটি বের করে সেটির দিকে না তাকিয়ে গলায় ঝোলানো হ্যাগ্রিডের দেয়া ছোট ব্যাগটার ভেতরে রেখে দিল। ব্যাগটা ভাঙা জিনিসপত্রে এমনভাবে ভরে গেছে যে আর কিছু আটবে না। হ্যারি ভেতরে হাত দিতেই হাতে ঠেকল পুরাতন স্নিচ। এক মুহূর্তের জন্য হ্যারির ইচ্ছা হল ওগুলো টেনে বার করে ছুঁড়ে ফেলে দিতে। এগুলো কোনো কাজেই আসবে না। এগুলো সব ডাম্বলডোরের রেখে যাওয়া অকেজো জিনিসের মত . ডাম্বলডোরের প্রতি তার ক্রোধ এখন লাভার মত রুপ ধারণ করেছে। তার ভেতরটা পুড়ছে। সব ধরনের অনুভূতি নষ্ট হয়ে গেছে। পুরোপুরি হতাশ হয়ে ওরা নিজেদের মধ্যে আলাপ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছল যে, গোড্রিচ হলোতেই একমাত্র উত্তর আছে। নিজেদেরকে এটা বোঝালো যে গোড্রিচ হলোতেই ফিরে যেতে হবে। ডাম্বলডোর সেখানেই ওদের জন্য গোপন পথটি রেখে গেছেন। কিন্তু কোনো ম্যাপ নেই, কোনো পরিকল্পনা নেই। ডাম্বলডোর ওদেরকে পুরোপুরি অন্ধকারে রেখে গেছেন। এখন লড়তে হবে অজানা, অচেনা শক্তির সঙ্গে। কোনো কিছুই ব্যাখ্যা করা হয়নি, তাদের হাতে কোনো তরবারি নেই, এখন তো হ্যারির যাদুদণ্ডটিও নেই। অধিকন্তু হ্যারি সেই চোরের ছবিটি হাত থেকে ফেলে দিয়েছে। এখন ভল্টেমর্টের জন্য খুজে বের করা আরো সহজ হবে যে চোরটি কে…ভল্টেমর্টের হাতে এখন সব ইনফরমেশন আছে…

হ্যারি?

হারমিয়নের মুখটা আতঙ্কিত হয়ে আছে, যেন তার নিজের যাদুদণ্ড দিয়েই হ্যারি তার দিকে কার্স ছুঁড়ে দিয়েছে। হারমিয়নের চোখের জলে মুখটা জলছাপ পড়ে গেছে। সে নিচু হয়ে হ্যারির পাশে বসল। তার কাঁপা হাতে দু কাপ চা। বাহুর নিচে মোটা ধরণের কিছু একটা।

ধন্যবাদ, হাতে এক কাপ চা তুলে নিয়ে হ্যারি বলল।

 আমি তোমার পাশে বসে কথা বললে রাগ করবে?

না, হ্যারি বলল। কারণ সে হারমিয়নের অনুভূতিতে আঘাত দিতে চায় না।

হ্যারি, তুমি জানতে চাচ্ছিলে যে ছবির লোকটি কে। ওয়েল…আমার কাছে একটি বই আছে।

আলতো করে সে বইটি হ্যারির কোলে ঠেলে দিল। ঝকঝকে এক কপি বই দ্য লাইফ এণ্ড লাইস অব অ্যালবাস ডাম্বলডোর।

কোথায়…কীভাবে…?

বইটি বাথিলডার বসার ঘরে ছিল। জাস্ট পড়েছিল…বইটির উপরে এই নোটটি লাগানো ছিল।

হারমিয়ন প্রথম কয়েক লাইন উচ্চস্বরে পড়ে শোনালো।

ডিয়ার ব্যাটি, তোমার সাহায্যের জন্য ধন্যবাদ। এটি সেই বইয়ের একটি কপি। আশা করি তোমার ভালো লাগবে। তুমি যে সব কথা বলেছিলে, তোমার তা মনে নাও থাকতে পারে। রিটা। আমার ধারণা এই বইটি অবশ্যই প্রকৃত বাথিলডা বেঁচে থাকতে তার কাছে এসেছিল। কিন্তু তিনি হয়তো বইটি পড়ার মত অবস্থায় ছিলেন না।

না, সম্ভবত তিনি ছিলেন না।

হ্যারি নিচের দিকে তাকিয়ে ডাম্বলডোরের ছবিটি দেখল এবং একটি নিষ্ঠুর আনন্দ তার ভেতর বয়ে গেল। এখন সে নিশ্চিতভাবে জানে যে ডাম্বলডোর তাকে বলতে চেয়ে থাকুক আর না থাকুক, তিনি হ্যারির কাছে বলাটাকে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে মনে করেননি।

তুমি এখনো আমার উপর রাগ করে আছো, তাই না? হারমিয়ন বলল। হ্যারি মুখ তুলে তাকিয়ে দেখল তার চোখ দিয়ে আবারো পানি গড়িয়ে পড়ছে। হ্যারি জানে তার ভেতরের ক্রোধটি মুখের ছবিতে উঠে আসায় হারমিয়ন সেটা দেখতে পেয়েছে।

না, সে শান্তভাবে বলল। না হারমিয়ন, আমি ভাল করেই জানি এটি ছিল একটি দুর্ঘটনা। তুমি আমাদেরকে জীবিত বের করে আনতে চেষ্টা করেছিলে। এবং কঠিন কাজ করেছ। তুমি এগিয়ে না এলে আমাকে মরতে হতো।

সে হারমিয়নের মুখে সরল হাসি ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করল। তারপর বইটির দিকে মনোযোগ দিল। বইয়ের মলাটের অংশগুলো একেবারে আনকোরা নতুন রয়েছে। এটা পরিস্কার যে এর আগে এই বইটি খোলা হয়নি। সে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা উল্টে গেল ফটোগ্রাফ দেখার জন্য। যে ছবিগুলো সে আশা করছিল তারই একটা সে প্রথমেই দেখতে পেল। ডাম্বলডোর এবং তার সঙ্গীরা অট্টহাসিতে ফেটে পড়েছে কোনো একটি তামাশার কারণে। হ্যারি ছবির ক্যাপশনের দিকে তাকালো;

অ্যালবাস ডাম্বলডোর, তার মায়ের মৃত্যুর অল্প কিছুদিন পরেই
বন্ধু গেলার্ট গ্রিনডেলভান্ডের সঙ্গে।

হ্যারি বেশ খানিকক্ষণ শেষ বাক্যটির দিকে হা করে তাকিয়ে রইল। তার বন্ধু গ্রিনডেলভাল্ড। সে পাশ ফিরে হারমিয়নের দিকে তাকালো। সেও এমনভাবে নামটির দিকে তাকিয়ে আছে যেন তার চোখ দুটো বিশ্বাস করতে পারছে না। মন্থর গতিতে সে মুখ তুলে হ্যারির দিকে তাকালো।

গ্রিনডেলভান্ড?

ফটোগ্রাফির কথা বাদ দিয়ে হ্যারি অন্যান্য পাতায় আরো কোথায় এই ভয়ানক নাম আছে তা দেখতে থাকল। এবং সে অল্পতেই পেয়ে গেল। এবং গোগ্রাসে পড়তে শুরু করল। কিন্তু অল্পতেই খেই হারিয়ে ফেলল। আর বেশিদূর পড়ে কোনো লাভ নেই, যা পড়ার তা পড়ে ফেলেছে। এরপর হ্যারি ঘটনাক্রমে দেখল সে ভিন্ন একটি অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। অধ্যায়টির নাম দ্য গ্রেটার গুড। একসঙ্গে হ্যারি এবং হারমিয়ন পড়তে শুরু করল :

এখন তার ১৮তম জন্মদিন আসছে। ডাম্বলডোর হোগার্টকে উজ্জ্বলতায় পরিপূর্ণ করে রেখে গেছেন–হেড বয়, উইনার অব দি বারনাবুস ফিঙ্কলে প্রাইজ ফর একসেপশনাল স্পেল-কাস্টিং, ব্রিটিশ ইয়থ রিপ্রেজেনটেটিভ টু দ্য উইজেনগামোট, গোল্ড মেডেল উইনার ফর গ্রাউন্ড ব্রেকিং কনট্রিবিউশন টু দ্য ইন্টারন্যাশনাল অ্যালকেমিক্যাল কনফারেন্স ইন কায়রো। ডাম্বলডোর আশা করেছিলেন পরবর্তীতে এলফিয়াস ডোজে কে নিয়ে একটি গ্রান্ড ট্যুর করবেন। কিন্তু পরে স্কুল থেকে তার অধিনস্ত একজনকে পছন্দ করেছিলেন।
দুজন তরুণ অপেক্ষা করছিল লন্ডনের লিকি কোলড্রনে। পরের সকালে গ্রিসের উদ্দেশে যাত্রা করতে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ঠিক তখনই একটি পেঁচা ডাম্বলডোরের মায়ের মৃত্যুর খবর নিয়ে আসে। ডগব্রেথ ডোজে তার বইয়ের জন্য ইন্টারভিউ দিতে অস্বীকার করেন। যার ফলে পরবর্তীতে কী ঘটতে যাচ্ছে সে ব্যাপারে তার চিন্তাটা জনগণের কাছে পরিস্কার হয়ে উঠেছে। তিনি কেন্দ্রার মৃত্যুকে নিদারুন এক আঘাত বলে গ্রহণ করেছেন। আর ডাম্বলডোর তার অভিযান ত্যাগ করেছেন আত্মত্যাগ হিসাবে।
সঙ্গে সঙ্গেই ডাম্বলডোর গোড্রিচ হলোতে ফিরে এসেছিলেন। দৃশ্যত তার ভাইবোনের দেখাশোনার জন্য। কিন্তু কতটা দেখাশোনা তিনি প্রকৃতপক্ষে করেছেন?
 ওই আবারফোর্থ ছিলেন একজন বিকারগ্রস্থ লোক, বলেছেন এনিড স্মিক। তার পরিবার তখন গোড্রিচ হলোর আশেপাশে বাস করতো। বন্য ধরনের লোক। অবশ্যই তার বাবা এবং মা মারা গেছে, সে কারণে তার জন্য দুঃখ করা উচিত। কিন্তু সমস্যা হল সে আমার মাথার ভেতর ছাগলের নাদা ছুঁড়ে দেয়। আমার মনে হয় না ডাম্বলডোর তার ব্যাপারে কখনো অস্থির। হয়েছে। আমি কিন্তু তাদেরকে কখনো একত্রে দেখিনি।
সুতরাং, যদি বন্য ভাইটির শাস্তির ব্যবস্থা নাই করতে পারে তাহলে ডাম্বলডোর কি করেছেন? দেখে শুনে মনে হয় এর উত্তর হল তার বোনকে দিনের পর দিন তালাবদ্ধ করে রাখা। যে কারণে তার প্রথম বন্দীকারীর মৃত্যু হলেও অরিয়ানার দুঃখজনক অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। তার অস্তিত্বের কথা ডগব্রেথ ডোজের মত অল্প কিছু লোক জানতো, যারা বিশ্বাস করতো যে সে অসুস্থ।
এরকম আরেকজন বিশ্বাস করা পারিবারিক বন্ধু ছিলেন বাথিলা ব্যাগশট। তিনি যাদু বিষয়ক নন্দিত ইতিহাসবিদ। তিনি অনেক বছর গোড্রিচ হলোতে বাস করেছেন। গ্রামে প্রথম যখন পরিবারটি গিয়েছিল তখন বাথিলডা পরিবারটিকে স্বাগত জানিয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রা তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। কিন্তু কয়েক বছর পর লেখক বাথিলডা হগোয়ার্টে অ্যালবাসের কাছে একটি পেঁচা পাঠিয়েছিলেন ডাম্বলডোরের ট্রান্স স্পেসিস ট্রান্সমিটার লেখার প্রতি মুগ্ধ হয়ে। আজ ওই ট্রান্স স্পেসিসের কারণেই ট্রান্সফিগার সম্ভব হচ্ছে। এই পরিচয়ের থেকে পুরো ডাম্বলডোর পরিবারের সঙ্গে তার জানাশোনা হয়ে ওঠে। কেন্দ্রার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পুরো গোড্রিচ হলোতে বাথিলডাই ছিলেন একমাত্র মানুষ যিনি ডাম্বলডোরের মায়ের সঙ্গে কথা বলতেন।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাথিলডা জীবনের প্রথমভাগে যে পারঙ্গমতা প্রদর্শন করেছেন তা এখন স্তিমিত হয়ে গেছে। ইভর ডিলসনবাই তার কথা আমাকে বলেছে, আগুন জ্বলছে, কিন্তু পাতিল খালি। আবার একটুখানি ঘুরিয়ে বলে, সে হল বেজির শুকনো গুর মত নাদা। তা সত্ত্বেও রিপোর্ট কৌশলের প্রচেষ্টা এবং পরীক্ষা আমাকে পুরো কলঙ্গজনক ঘটনা একে একে সাজিয়ে নিতে সামর্থ করেছে।
উইজার্ডিং জগতের অন্যদের মতই বাথিলডা কেন্দ্রার অপরিণত বয়সের মৃত্যুকে ব্যাকফায়ারিং চার্ম বলে অভিহিত করেছেন। পরবর্তী বছরগুলোতে অ্যালবাস এবং আবারফোর্থ একই কথা রিপিট করেছেন মাত্র। বাথিলডাও একই পথ অনুসরণ করে অরিয়ানাকে দুর্বল ও ক্ষীণ বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু একটি বিষয়ে বাথিলডার মূল্য রয়েছে তাহল তিনি, একমাত্র তিনি ডাম্বলডোরের পুরো জীবনের গোপন বিষয় সম্পর্কে জানেন। এবার এই প্রথমবারের মত সব কথা বেরিয়ে এসেছে। ডাম্বলডোরকে যারা বিশ্বাস করে এবং যারা তার শুভাকাক্ষি তাদের সব প্রশ্নের উত্তর রয়েছে: ডার্ক আর্টের প্রতি তার ঘৃণা, নাগলদের দমনে তার বিরোধিতা এমনকি তার পরিবারের প্রতি অবদান নিয়েও।
এতিম হয়ে এবং পরিবারের প্রধান হয়ে ডাম্বলডোর যে গ্রীষ্মে গোড্রিচ হোর বাড়িতে গিয়েছিলেন সেই একই গ্রীষ্মে বাথিলডা তার ভাগ্নে গেলার্ট গ্রিনডেলভান্ডকে আশ্রয় দিতে রাজি হয়েছিলেন।
যথাযথভাবেই গ্রিনডেল ছিলেন বিখ্যাত। সর্বকালের অন্যতম বিপদজনক ডার্ক উইজার্ড হিসাবে তার নাম ছিল তালিকার শীর্ষে। কিন্তু এক প্রজন্ম পর তার মুকুটটি চুরি করে নিতে ইউ-নো-হু আবির্ভূত হলে তার নাম তালিকা থেকে নেমে যায়। কিন্তু গ্রিনডেলভান্ড ব্রিটেনে তার সন্ত্রাসকে বিস্তৃত করেননি। তার ক্ষমতার উচ্চাসনে বসার ইতিহাসটি খুব একটা জানা নেই।
পড়াশোনা করেছেন ডার্মস্ট্যাঙে। এই স্কুলটি ডার্ক আর্টের কারণে বিখ্যাত। গ্রিনডেলভান্ডও ডাম্বলডোরের মত নিজেকে মেধাবী বলে প্রমাণ করেছেন। তার নিজের যোগ্যতাকে অ্যাওয়ার্ড এবং প্রাইজের দিকে না নিয়ে নিজে অন্য দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। ১৬ বছর বয়সে ডার্মস্ট্যাঙ তার ব্যাপারে আর চুপ থাকতে পারেনি। তখন তিনি সেখান থেকে বরখাস্ত হন।
তারপর থেকে গ্রিনডেলভান্ড সম্পর্কে যা জানা যায় তাহল, কয়েক মাসের জন্য দেশের বাইরে ভ্রমণে গিয়েছেন। এখন এটা বলা যেতে পারে যে গ্রিনডেলভান্ড তার গ্রেট আন্টের কাছে যাওয়া মনস্থ করেছিলেন এবং তিনি আর। কেউ নন, খোদ ডাম্বলডোরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের ঘটনাটি ঘটিয়েছিলেন।
তাকে আমার কাছে চার্মিং বয় বলে মনে হয়েছিল, বাথিলডা বলেন। পরে সে যাই হয়ে থাকুক না কেন। স্বভাবতই আমি তাকে বেচারাডাম্বলডোরের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম। ডাম্বলডোরের তখন কোনো সমবয়সী বন্ধু ছিল না। ওরা দুজন দ্রুত একজন আরেকজনকে গ্রহণ। করে নিয়েছিল।
অবশ্যই তারা তাই করেছিল। বাথিলডা আমাকে একটি চিঠি দেখান। চিঠিটি তার কাছেই ছিল। সেটি মৃত্যুর রাতে ডাম্বলডোর গ্রিনডেলভান্ডকে পাঠিয়েছিল।
হ্যাঁ, তারা সারাদিন একসঙ্গে আলোচনা করার পরও একজন আরেকজনের কাছে চুলার উপরের পাতিলের মত ছিল। আমি প্রায়শই গ্রিনডেলভান্ডের বেডরুমের জানালা দিয়ে একটি পেঁচার শব্দ শুনতে পেতাম। সেটি ডাম্বলডোরের চিঠি নিয়ে আসতো। তার ধারণা ছিল তার উপর আঘাত আসতে পারে। এবং সঙ্গে সঙ্গে সেটা সে গ্রিনডেলভান্ডকে জানাতো।
সে ধারণাগুলো কেমন ছিল। ডাম্বলডোরের ভক্তরা গভীরভাবে আঘাত পাবে। তাদের ১৬ বছর বয়সের হিরোর চিন্তাগুলো তুলে দেয়া হল, যা সে তার প্রিয় বন্ধুর কাছে রিলে করেছে (অরিজিনাল চিঠির একটি কপি ৪৬৩ পৃষ্ঠায় পাওয়া যাবে) :

গেলার্ট,
মাগলদের ভালোর জন্য উইজার্ডদের প্রভাব নিয়ে তোমার যুক্তি সম্পর্কে আমি মনে করি, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। হ্যাঁ, আমাদেরকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এবং সে ক্ষমতার বলে আমরা শাসন করতে পারি। কিন্তু সে সঙ্গে এই ক্ষমতা আমাদেরকে দায়িত্বও বর্তে দিয়েছে। এই বিষয়ে অবশ্যই আমরা গুরুত্ব দেব। আমরা যা নির্মাণ করবে তার ভিত্তি প্রস্তর হবে এটাই। আমরা সে ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হলে (অবশ্যই হতে হবে। এই ভিত্তিই হবে আমাদের যুক্তির মূল উৎস। আমরা নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করি FOR THE GREATER GOOD. এটা আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আমরা যেখানে বাধার সম্মুখীন হবো সেখানে ততটুকু শক্তিই প্রয়োগ করবো, যতটা প্রয়োজন। তার বেশি নয়। (ডার্মস্ট্যাঙে এই ভুলটি তুমি করেছিলে। কিন্তু আমি অভিযোগ করছি না, কারণ তুমি যদি বরখাস্ত না হতে তাহলে আমাদের মধ্যে দেখা হতো না।) অ্যালবাম

তার অনেক শুভাকাঙ্খি বিস্মিত এবং অবাক হবে। এই চিঠিই প্রমাণ করেছে যে, ডাম্বলডোর এক সময় স্বপ্ন দেখেছেন গোপন আইন ভেঙ্গে ফেলার। এবং মাগলদের উপর উইজার্ডদের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন। যারা সব সময় ডাম্বলডোরকে মাগলদের মহান রক্ষাকারী বলে জাহির করতে চেয়েছে তাদের জন্য এটি যে কতবড় ধাক্কা তা ভাবাই যায় না। এই নতুন প্রমাণের আলোকে মাগলদের অধিকার রক্ষার বক্তব্য কতটা ফাঁপা তা বোঝা যায়। যখন তার মায়ের জন্য শোক করার কথা, ভাইবোনদের দেখাশোনা করার কথা তখন তিনি ক্ষমতা দখলের পরিকল্পনা আটছিলেন। এটাই তাকে ঘৃণার পাত্র বলে প্রমাণ করেছে।
কোনো সন্দেহ নেই যারা তাকে সমর্থন জানাতে দৃঢ় হয়ে আছে তারা হয়তো হৈ হৈ করে বলবে যে তার মধ্যে পরিবর্তন হয়েছে, তিনি চেতনায় ফিরে এসেছেন। কিন্তু বাস্তব সত্যটা আরো আঘাত পাওয়ার মত বলে মনে হয়।
তাদের বন্ধুত্বের দুমাসের মধ্যেই ডাম্বলডোর এবং গ্রিনডেলভা আলাদা হয়ে যায়। তাদের দুজনের বিখ্যাত জুয়েল (বিস্তারিত দেখুন অধ্যায়-২২) এর আগ পর্যন্ত আর কখনোই তাদের মধ্যে দেখা হয়নি। হঠাৎ করে এই পরম আগ্রহের কারণ কি? ডাম্বলডোর কি তার চেতনায় ফিরে এসেছেন সেটাই? তিনি কি গ্রিনডেলভাকে বলেছিলেন যে তিনি তার পরিকল্পনার অংশ হতে চান না? হায়, সেটাও নয়।
বাথিলডা বলেছেন, আমার মনে হয় অরিয়ানার মৃত্যু, সেটাই কারণ। তার মৃত্যু একটি আঘাত হয়ে আসে। ঘটনার সময় গোট সেখানে উপস্থিত ছিল। এবং সে আমার বাড়িতেও এসেছিল। সে আমাকে বলেছিল পরের দিন। তার বাড়িতে ফিরে যেতে চায়। সুতরাং আমি একটি পোর্টকির ব্যবস্থা করি। সেটাই ছিল তার সাথে আমার শেষ দেখা।
আরিয়ানার মৃত্যুর সময় অ্যালবাস তার শয্যার কাছেই ছিলেন। দুভাইয়ের জন্য সময়টা ছিল ভীষণ খারাপ। দুজনই তাদেরকে ছাড়া আর সবাইকে খুইয়েছেন। কোনো বিস্ময়ের ব্যাপার নয় যে দুজনেরই মানসিক অবস্থা ছিল চড়া। আবারফোর্থ অ্যালবাসকে দোষারোপ করছিলেন। মানুষ বিপদজনক পরিস্থিতিতে এমনই করে থাকে। কিন্তু আবারফোর্থ বেচারা কথা বলছিলেন পাগলের মত। একইভাবে শেষকৃত্যানুষ্ঠানের দিন অ্যালবাসের নাক। ভেঙ্গে যাওয়াও কোনো শুভ লক্ষণ নয়। মেয়ের লাশ ঘিরে দুই ছেলেকে লড়াই করতে দেখলে নিজে নিঃশেষিত হয়ে যেতেন। লজ্জায় গেলার্ট সেখানে থাকতে পারেনি। অবশ্য গেলার্ট থাকলে অ্যালবাস অন্তত কিছুটা স্বস্তি বোধ করতেন …
লাশের পাশে এই ঝগড়া সামান্য কিছু লোক দেখছিল। যারা শেষ কৃত্যানুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল। এই ঘটনা বেশ কয়েকটি প্রশ্নের জন্ম দিয়েছিল। কেন বোনের মৃত্যুতে আবারফোর্থ ডাম্বলডোর অ্যালবাসকে দায়ি করেছিলেন? সেকি শুধুই দুঃখ বোধ থেকে জেগে ওঠা ক্রোধের কারণে? নাকি এমন ক্ষেপে যাওয়ার পেছনে বিশেষ কোনো কারণ আছে? সে গ্রিনডেলভাল্ড ডার্মস্ট্যাঙে বন্ধুদের উপর ভয়ানক আক্রমণ করার জন্য স্কুল থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন, সেই গ্রিনডেলভান্ড মেয়েটির মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার ভেতরে দেশ থেকে পালিয়ে যায়। এবং অ্যালবাসের সঙ্গে তার আর কখনো দেখা হয়নি (লজ্জায় নাকি। ভয়ে?) উইজার্ডিং ওয়ার্ল্ডের জোর করার আগ পর্যন্ত তাদের মধ্যে দেখা হয়নি।
পরবর্তী জীবনে ডাম্বলডোর বা গ্রিনডেলভান্ড কেউই তাদের অল্পবয়সের বন্ধুত্ব নিয়ে কোনো কথা বলেননি। কিন্তু কোনো সন্দেহ নেই যে ডাম্বলডোর গ্রিনডেলভান্ডের উপর আক্রমণ করতে দেরি করেছিলেন। তার কারণ কি লোকটিকে ভাল লাগা? নাকি এক সময়ের বন্ধুকে আক্রমণ করলে সবকিছু ফাঁস হয়ে যাবে সে ভয়েই তিনি আক্রমণ করতে দ্বিধা করেছিলেন? একসময় যার বন্ধুত্ব আগ্রহের বিষয় ছিল তাকে ধরতে কি অনিচ্ছাকৃতভাবে চেষ্টা করেছিলেন?
অরিয়ানার কী করে রহস্যজনক মৃত্যু হল? সে কি কোনো ডার্ক রীতির অনিয়মের শিকার হয়েছে? সে কি এমন কিছু অতিক্রম করেছিল যা তার করার কথা না, যেখানে দুজন তরুণ লোক তাদের প্রভাব বলয় বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল? এমন কি হতে পারে যে ফর দি গ্রেটার গুডর জন্য অরিয়ানা প্রথম আত্মোৎসর্গ করেছে?

এখানেই অধ্যায়ের শেষ। এবং হ্যারি মুখ তুলে তাকালো। হারমিয়ন তার আগেই শেষ লাইনগুলো পড়ে ফেলেছিল। সে হ্যারির হাত থেকে ছোঁ মেরে বইটা নিল। হ্যারির অভিব্যক্তি দেখে একটু সতর্ক হল এবং বইটির দিকে না তাকিয়েই সেটি ভাঁজ করল। এমনভাবে ভঁজ করল যেন অসঙ্গত কোনো কিছু লুকাচ্ছে।

হ্যারি,

কিন্তু হ্যারি মাথা দোলালো। তার ভেতরে কিছু একটা ঝড় তুলেছে। ঠিক এমনটা বোধ করেছিল রন চলে যাওয়ার পর। সে ডাম্বলডোরকে বিশ্বাস করেছিল, মনে করতো যে তিনি জ্ঞান এবং ভালো মানুষির প্রতিক। কিন্তু তার সে ধারণা ধুলিসাৎ হয়ে গেছে। আর কতো তাকে হারাতে হবে? রন, ডাম্বলডোর, ফিনিক্সের যাদুদণ্ডটি…

হ্যারি, হারমিয়ন যেন হ্যারির চিন্তাটা ধরতে পেরেছে। আমার কথা শোনেনা। এটা…এটা কোনো ভাল লেখা নয়….

 হ্যাঁ,তুমি তা বলতে পারো…

..কিন্তু হ্যারি ভুলে যেও না যে এটা রিটা স্কিটারের লেখা।

তুমি কী গ্রিনডেলভান্ডের চিঠিটা পড়নি?

হ্যাঁ, আমি পড়েছি, হারমিয়ন ইতস্তত করে বলল। সে তার চায়ের কাপটি ঠাণ্ডা দুহাত দিয়ে পেচিয়ে ধরল। আমার ধারণা সেটাই একটি খারাপ বিষয়। আমি জানি বাথিলডা মনে করেছিলেন এগুলো শুধু আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। কিন্তু ফর দ্য গ্রেটার গুড গ্রিনডেলভান্ডের জন্য একটি শ্লোগান হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে সে যত নিষ্ঠুরতা করেছে তার যুক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এবং…তখন থেকে….মনে হয়েছে যেন সে ডাম্বলডোরের কাছ থেকে এই ধারণা পেয়েছিল। ওদের মতে, এমনকি নুরমেনগার্ডের প্রবেশ পথেও বাকা করে নামটি লিখে রাখা ছিল।

নুরমেনগার্ড কি?

গ্রিনডেলভাল্ড তার বিরোধীদেরকে আটকে রাখার জন্য এটি তৈরি করেছিলেন। সে নিজে এটি পরিত্যাগ করেছে ডাম্বলডোর তাকে ধরে ফেলার পর। যাহোক, এটি একটি বাজে ধারণা যে গ্রিনডেলভান্ডের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার পেছনে ডাম্বলডোরের বুদ্ধি কাজ করেছে। কিন্তু অন্যদিকে রিটা একথা বলতে পারেন না যে, তারা অল্প বয়সে মাত্র কয়েক মাসের বেশি একজন আরেকজনকে জানতেন। তাদের বয়স তখন সত্যিই কম ছিল।

আমি ভেবেছিলাম যে তুমি একথাই বলবে, হ্যারি চায়না যে তার রাগ হার মিয়নের উপর গিয়ে পড়ক। কিন্তু নিজের কণ্ঠ স্থির রাখা তার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। আমি ভেবেছিলাম তুমি বলবে, তাদের বয়স খুব কম ছিল। আমাদের এখন যে বয়স তাদেরও তখন তাই ছিল। আমরা এখন ডার্ক আর্টের বিরুদ্ধে নিজেদের জীবন বাজি রেখে নেমেছি। তখন তিনি তার নতুন বেস্ট ফ্রেন্ডের সঙ্গে একেবারে ঘনিষ্ঠ ছিলেন মাগলদের উপর ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করার পরিকল্পনার জন্য।

সে বেশিক্ষণ তার মেজাজ ধরে রাখতে পারছে না। হ্যারি উঠে দাঁড়ালো এবং হাঁটতে শুরু করল। সে বিষয়টি নিয়ে আরো খতিয়ে দেখতে চাচ্ছে।

ডাম্বলডোর যা লিখেছেন আমি তার পক্ষে যুক্তি দিতে চেষ্টা করছি না, হার মিয়ন বলল। শাসনের অধিকার একটি বাজে ব্যাপার। বিষয়টি ছিল, ম্যাজিই শক্তি। কিন্তু হ্যারি, তখন সবেমাত্র তার মা মারা গেছেন। তিনি বাড়িতে ছিলেন একেবারে একা- একা? তিনি একা ছিলেন না! সঙ্গ দেয়ার জন্য তার ভাই এবং বোন ছিল। তার স্কুইব বোনকে তিনি তালা দিয়ে রেখেছিলেন

আমি এটা বিশ্বাস করি না, হারমিয়ন বলল। সেও বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেল। মেয়েটির যাই হয়ে থাকুক না কেন, আমি বিশ্বাস করি না যে মেয়েটি স্কুইব ছিল।

যে ডাম্বলডোরকে আমরা জানি তিনি কখনোই তা মেনে নিতেন না।

যে ডাম্বলডোরকে আমরা চিনতাম তিনি কখনোই মাগলদের উপর ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করতে চাইতেন না! হ্যারি চিৎকার করে বলল। তার কণ্ঠের শব্দ ফাঁকা পাহাড়ে গিয়ে প্রতিধ্বনি তুলল এবং বেশ কয়েকটি কালো পাখি সঙ্গে সঙ্গে গাছ। থেকে উড়ে আকাশে চক্কর দিল এবং তারঃস্বরে ডাকতে থাকল।

পরে তিনি বদলে গিয়েছিলেন হ্যারি, তার চিন্তার পরিবর্তন এসেছিল! হয়তো তিনি এসব বিশ্বাস করতেন যখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৭ বছর। কিন্তু পরবর্তী পুরো জীবন তিনি ডার্ক আর্টের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। একমাত্র ডাম্বলডোরই গ্রিনডেলভাল্ডকে প্রতিহত করেছেন, তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি মাগলদের নিরাপত্তার পক্ষে সবসময় ছিলেন। শুরু থেকেই তিনি ইউ-নো-হুর বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন এবং তাকে দমন করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন!

রিটার বইটি দুজনের মাঝখানে মাটিতে পড়ে আছে। বইয়ের উপর থেকে অ্যালবাস ডাম্বলডোরের মুখটি তাদের দুজনের দিকে তাকিয়েই হাসছে।

হ্যারি, আমি দুঃখিত। আমার ধারণা, তোমার এমন রেগে যাওয়ার কারণ, যেহেতু ডাম্বলডোর নিজে থেকে তোমাকে এসব বিষয়ে কিছুই বলেননি তাই।

হয়তো বা তাই, হ্যারি চিৎকার করে বলল। সে হাত দুটো রাগে মাথার উপর তুলে ফেলল। রাগে অথবা নিজের কোনটা ভুল তা ধরার জন্য সময় চাচ্ছে। দেখ, তিনি আমাদেরকে কী বলেছেন হারমিয়ন! হ্যারি তোমার জীবন ঝুঁকিপূর্ণ! আবার বলেছেন, আমার কাছ থেকে সব ব্যাখ্যা আশা করো না। আমার প্রতি অন্ধভাবে বিশ্বাস করো! বিশ্বাস রাখো যে আমি যা করছি তা আমি জানি! আমি যদি

তোমাদেরকে বিশ্বাস নাও করি তাহলেও তোমরা আমার উপর আস্থা রাখো! কখনোই সবটুকু সত্যি নয়! কখনোই নয়!

এমন চিৎকার করে কথাগুলো বললো যে তার গলার স্বর ভেঙে গেল। ওরা দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকল নির্লিপ্ত চোখে। হ্যারির মনে হল ওরা অনেকটা আকাশে উড়ে বেড়ানো ছোট পোকামাকড়ের মত গুরুত্বহীন।

তিনি তোমাকে ভালবাসতেন, হারমিয়ন ফিসফিস করে বলল, আমি জানি তিনি তোমাকে ভালবাসতেন।

হ্যারি হাত দুটো নিচে নামালো।

আমি জানিনা কাকে তিনি ভালবাসতেন, হারমিয়ন। কিন্তু সেটা কখনোই আমি নই। যে ঝামেলা তিনি আমার জন্য রেখে গেছেন তাকে ভালবাসা বলে না। গেলার্ট গ্রিনডেলভান্ডের সঙ্গে তিনি তার চিন্তা-ভাবনা নিয়ে এতসব বিষয় শেয়ার করেছেন তার কণামাত্র আমার সঙ্গে করেননি।

হ্যারি হারমিয়নের যাদুদণ্ডটি তুলে নিল। দণ্ডটি হাত থেকে সে বরফের উপর ফেলে দিয়েছিল। সে তাবুর প্রবেশ পথে বসল পাহারা দেয়ার জন্য।

চায়ের জন্য ধন্যবাদ। আমি এখন পাহারা দেয়ার কাজটি করছি। তুমি একটু উষ্ণ হয়ে নাও। হারমিয়ন একটু দ্বিধা করল। কিন্তু তাকে ক্ষান্ত করার বিষয়টি বুঝতে পারল। সে বইটি তুলে নিল এবং হ্যারিকে অতিক্রম করে তাবুর ভেতর ঢোকার সময় তার মাথার উপর হাত দিয়ে হালকা করে ঝাঁকিয়ে দিল। হারমিয়নের স্পর্শে হ্যারি চোখ বন্ধ করল। সে নিজেকে ধিক্কার দিল, ইচ্ছা হল হারমিয়নের কথাগুলো সত্যি বলে মেনে নিতে যে, ডাম্বলডোর সত্যিই তাকে বিশেষ নজরে দেখতেন, অন্য সকল থেকে পৃথকভাবে ভাবতেন।

সকল অধ্যায়

১. ০১. ডার্ক লর্ডের উত্থান
২. ০২. মেমোরিয়ামে
৩. ০৩. ডারসলে পরিবারের বিদায়
৪. ০৪. সাতটি পটার
৫. ০৫. যোদ্ধার পতন
৬. ০৬. পায়জামায় পিশাচ
৭. ০৭. অ্যালবাস ডাম্বলডোরের দলিল
৮. ০৮. বিয়ের অনুষ্ঠান
৯. ০৯. লুকানোর জায়গা
১০. ১০. ক্রেচারের কাহিনী
১১. ১১. ঘুষ
১২. ১২. ম্যাজিকই শক্তি
১৩. ১৩. দ্য মাগল বর্ন রেজিস্ট্রেশন কমিশন
১৪. ১৪. চোর
১৫. ১৫. গবলিনদের প্রতিশোধ
১৬. ১৬. গোড্রিচ হলো
১৭. ১৭. বাথিলডার গোপনীয়তা
১৮. ১৮. দ্য লাইফ এন্ড লাইস অব অ্যালবাস ডাম্বলডোর
১৯. ১৯. দ্য সিলভার ডো
২০. ২০. জেনোফিলিয়াস লাভগুড
২১. ২১. তিন ভাইয়ের কাহিনী
২২. ২২. দ্য ডেথলি হ্যালোস
২৩. ২৩. ম্যালফয় ম্যানর
২৪. ২৪. যাদুদণ্ড প্রস্তুতকারী
২৫. ২৫. শেল কটেজ
২৬. ২৬. গ্রিনগোটস
২৭. ২৭. সর্বশেষ পালানোর জায়গা
২৮. ২৮. হারানো আয়না
২৯. ২৯. হারানো মুকুট
৩০. ৩০. দ্য স্যাকিং অব সেভেরাস স্নেইপ
৩১. ৩১. হোগার্টের যুদ্ধ
৩২. ৩২. দ্য এলডার ওয়্যান্ড
৩৩. ৩৩. প্রিন্সের কাহিনী
৩৪. ৩৪. আবারো জঙ্গল
৩৫. ৩৫. কিং’স ক্রস
৩৬. ৩৬. দ্য ফ্ল ইন দ্য প্ল্যান
৩৭. ৩৭. শেষ অধ্যায় – উনিশ বছর পর

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন