পিশাচ

হুমায়ূন আহমেদ

পিশাচ

স্যার, আমি পিশাচ-সাধনা করি।

আমি কৌতূহল নিয়ে পিশাচ সাধকের দিকে তাকালাম। মামুলি চেহারা। মুখভর্তি খোঁচা খোঁচা দাড়ি। মাথায় চুল নেই। শরীরের তুলনায় মাথা বেশ ছোট। সেই মাথা শারীরিক কোনো অসুবিধার কারণেই হয়তো সারাক্ষণ বামদিকে ঝুঁকে আছে। তার হাতে কালো কাপড়ে ঢাকা একটা পাখির খাঁচা। খাঁচায় যে পাখিটা আছে সেটা খুব সম্ভব কাক। পা ছাড়া পাখিটার আর কিছু দেখা যাচ্ছে না। কাকের পা বলেই মনে হচ্ছে।

লোকটার বয়স আন্দাজ করার চেষ্টা করলাম। গ্রামের অভাবী মানুষের বয়স চট করে ধরা যায় না। দুঃখ ধান্দায় ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ বছরেই তাদের মধ্যে বুড়োটে ভাব চলে আসে। আমার কাছে মনে হলো, লোকটার বয়স চল্লিশের বেশি হবে না। মাথার চুল অবিশ্যি বেশির ভাগই পাকা। মুখের চামড়াও ঝুলে পড়েছে।

লোকটার পরনে টকটকে লাল রঙের নতুন লুঙ্গি। গলায় একই রঙের লাল চাদর উড়নির মতো ঝোলানো। এটাই সম্ভবত পিশাচ-সাধকদের পোশাক। সব ধরনের সাধকদের জন্যে পোশাক আছে— ড্যানসিং দরবেশরা আলখাল্লা পরেন, সন্ন্যাসীরা গেরুয়া পরেন, নাগা সন্ন্যাসীরা নগ্ন থাকেন। পিশাচ-সাধকরা লাল লুঙ্গি এবং লাল চাদর কেন পরবে না? আমি পিশাচ-সাধকের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বললাম, তুমি তাহলে পিশাচের সাধনা করো?

পিশাচ-সাধক সব কটা দাঁত বের করে হাসল। আনন্দিত গলায় বলল, কথা সত্য।

লোকটার দাঁত ঝকঝকে সাদা। গ্রামের মানুষরা পান-সিগারেট খেয়ে দাঁত কুৎসিতভাবে নোংরা করে রাখে, এর বেলায় তা হয়নি।

নাম কী তোমার?

মকবুল। স্যার, আমি পিশাচ-সাধক মকবুল। যদি অনুমতি দেন আপনেরে কদমবুসি করি।

আমি হাসতে হাসতে বললাম, অনুমতি দিলাম।

সে অভয় দেয়ার ভঙ্গিতে বলল, পায়ে হাত দিবো না স্যার। ভয়ের কিছু নাই।

আমি বিস্মিত হয়ে বললাম, পায়ে হাত দিলে ভয়ের কী?

পিশাচ-সাধনা যারা করে তারা কারোর শইল্যে হাত দিলে বিরাট ক্ষতি হয়।

ক্ষতিটা কার হয়— তোমার, তুমি যার গায়ে হাত দিবে তার?

আমি যার শইল্যে হাত দিবো তার। আপনের শইল্যে হাত দিলে আপনার বিরাট ক্ষতি হইবো। যেখানে হাত দিবো সেখানে ঘা হইবো।

পায়ে হাত দাও। দেখি ক্ষতি কী হয়। ঘা হয় কি-না।

ছি-ছি! কন কী আপনে? আপনের ক্ষতি হবে এমন কাজ পিশাচ-সাধক মকবুল করব না।

সে আমার পা থেকে এক-দেড় হাত দূরে মাটিতে হাত দিয়ে ভক্তিভরে কদমবুসি করল। কদমবুসির পর দুহাত জোড় করে চোখবন্ধ অবস্থায় আকাশের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ বিড়বিড় করল। কে জানে পিশাচ-সাধকদের কদমবুসি করার এটাই হয়তো নিয়ম। বিপুল বিশ্বের কতই বা আমি জানি।

তোমার খাঁচায় কী? কাক না-কি?

জি স্যার কাক। আমরা বলি কাউয়া।

তোমার কাকের ব্যাপারটা কী বলো তো?

সাধনার জন্যে লাগে স্যার।

ও আচ্ছা।

গ্রাম বেড়াতে এলে এ-জাতীয় যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে আমাকে যেতে হয়। দুতিন দিনের জন্যে যাই। নানান ধরনের মানুষ এর মধ্যে আসে। মূল উদ্দেশ্য অর্থভিক্ষা। সরাসরি ভিক্ষা চাইতে সংকোচ হয় বরেই নানান কিচ্ছা-কাহিনীর ভেতর দিয়ে তারা যায়। একবার এক মওলানা সাহেব এসেছিলেন। তাকে নাকি আমাদের নবী-এ করিম স্বপ্নে দেখা দিয়ে বলেছেন–তোর ছেলেকে আমার রওজা মোবারকে এসে দোয়া করে যেতে বল। সে যে দোয়া করবে ইনশাল্লাহ তা-ই কবুল হবে। মওলানা সাহেব এসেছেন ছেলের মদিনা-ভ্রমণের টাকা সংগ্রহ করতে।

এইসব ক্ষেত্রে আমি কোনো তর্কে যাই না। টাকা দিয়ে দেই। তেমন বেশি কিছু না, সামান্যই। তাতেই তারা খুশি হয়। তাদের প্রত্যাশাও হয়তো অল্পই থাকে।

আমি ঠিক করেছি পিশাচ-সাধককে পঞ্চাশ টাকা দেবো। পিশাচ-সাধক যে এই টাকা পেয়েই মহাখুশি হবে সে-বিষয়ে আমি নিশ্চিত। তার আনন্দ আরো বাড়বে যদি কিছুক্ষণ তার সঙ্গে গল্প করি। আমাদের অঞ্চলের গ্রামের মানুষ অলস প্রকৃতির। অলস মানুষের আনন্দ-বিলাস গল্পগুজব। হাসিমুখে কিছুক্ষণ গল্প করলেই তারা খুশি। আমি গল্প শুরু করলাম।

তুমি তাহলে পিশাচ-সাধক?

জি স্যার।

জিন-সাধনার কথা গুনেছি, পিশাচ-সাধনার কথা শুনি নি।

পিশাচ-সাধনা আরো জটিল। পিশাচ নিয়া কারবার। এরা ভয়ঙ্কর। সাধনাও কঠিন।

এমন ভয়ঙ্কর সাধনার দিকে গেলে কী জন্যে

মন ওইদিকে টানছে। মনের উপরে তো হাত নাই। কপালগুণে ভালো ওস্তাদও পেয়েছিলাম।

ওস্তাদের নাম কী?

উনার নাম কলিমুল্লাহ দেওয়ানি।

নাম তো জবরদস্ত।

উনি মানুষও জবরদস্ত ছিলেন। আলিশান শরীর। কথা যখন বলতেন মনে হইতো মেঘ ডাকর্তেছে এক বৈঠকে দুইটা কাঁঠাল খাইতে পারতেন।

মারা গেছেন না-কি?

জি, উনার ইন্তেকাল হয়েছে। বড়ই দুঃখের মৃত্যু। ঘটনাটা বলব?

বলো।

এক মঙ্গলবার সন্ধ্যাকালে তিনি ঘর থাইক্যা বাইর হইছেন। মনের বেখেয়ালে শরীর বন্ধন দেন নাই। পিশাচ আইসা ধরল। মট কইরা একট শব্দ হইল। মাথায় মোচড় দিয়া দিল ঘাড় ভাইঙ্গা।

পিশাচ-সাধনা দেখি খুবই বিপদজনক ব্যাপার।

বিপদ বলে বিপদ! চিন্তায় চিন্তায় অস্থির থাকি। ভুলভ্রান্তি হইলে বাচনের উপায় নেই।

পিশাচ-সাধককে দেখে অবিশ্যি আমার মনে হলো না সে কোনোরকম চিন্তায় আছে। তাকে বরং আনন্দিতই মনে হলো।

খাওয়া-দাওয়া হয়েছে?

জি-না, খাওয়া হয় নাই।

খাওয়া-দাওয়াতে কোনো বাছ বিচার আছে?

জি-না, আমরা সবই খাইতে পারি। তবে টক খাওয়া নিষেধ। টক ছাড়া সবই চলে। মাছ-মাংস ডিম-দুধ … অসুবিধা কিছু নাই।

আমি মানিব্যাগ খুলে একটা পঞ্চাশ টাকার নোট তার দিকে বাড়িয়ে দিলাম। সে খুবই আগ্রহের সঙ্গে নোটটা নিল। আবারো কদমবুসি। আবারো হাত জোড় করে চোখবন্ধ অবস্থায় আকাশের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড়ানি। খাচায় বন্ধি কাকও এইসময় ডানা ঝাঁপটাতে শুরু করল। কফ লাগা গলায় কয়েবার বলল, কা-কা। মোটামুটি রহস্যময় দৃশ্য।

মকবুল বলল, স্যারের সঙ্গে কথা বইল্যা আরাম পাইছি। জমানা খারাপ, মানুষের সাথে কথা বইল্যা এই জামানায় কোনো আরাম নাই। এই জামানা হইল অবশ্বিাসের জমানা। কেউ কারো কথা বিশ্বাস করে না। আমারে নিয়া হাসাহাসি করে। স্যার, আমারে চাইরটা ভাত দেওনের হুকুম দিয়া দেন। আপনে হুকুম না দিলে এরা ভাত দিবো না। একবাটি মুড়ি খাওয়াইয়া বিদায় কইরা দিবো।

ভালোমতো যাতে খাওয়া-দাওয়া করতে পারো সে ব্যবস্থা করছি।

খাওয়া-খাদ্য না পাইলেও আমরার চলে। পিশাচের সাধনা করি, আমরার স্বভাব-চরিত্রও পিশাচের মতো। তিন-চাইর দিন না খাইলেও আমরার কিছু হয় না। আবার ধরেন, মরা লাশ পইড়া আছে, প্রয়োজনে লাশের মাংসও খাইতে পারব, অসুবিধা নাই।

খেয়েছ কখনো?

জি-না।

খাওনি কেন?

প্রয়োজন পড়ে নাই। তা ছাড়া লাশ পাওয়াও যায় না। হিন্দুরা লাশ পুড়ায়ে ফেলে। মুসলমানরা দেয় কবর। কবর থাইক্যা লাশ বাইর কইরা খাওয়া বিরাট দিকদারি। ঠিক না স্যার?

ঠিক তো বটেই। তোমার সাধনার ফলাফল কী? পিশাচ বশ মানবে?

অবশ্যই। আমি নিজেও পিশাচের মতো হয়ে যাব। দিলে মায়া-মুহব্বত কিছু থাকব না। ইচ্ছা হইল খুন করলাম, থানা-পুলিশ কিছু করতে পারব না।

খুন করতে ইচ্ছা করে?

জে-না। করে না।

তাহলে এত কষ্ট করে এই সাধনা করছ কেন? সাধনা করে পিশাচ হবার দরকারইবা কী! আমাদের সমাজে পিশাচের তো অভাবও নেই। সাধনা ছাড়াই অনেক পিশাচ আছে?

কথা সত্য বলেছেন। তবে স্যার ঘটনা হইল পিশাচ-সাধনা থাকলে লোকজন ভয় পায়। সমীহ করে। একজন পিশাচ-সাধকরে কেউ তুই-তুকারি করবে না। আপনে আপনে করবে। কারোর বাড়িতে গেলে মাটিতে বসতে হবে না। চিয়ার দিবে। যার চিয়ার নাই সে জলচৌকি দিবে। মুড়ি খাওয়াইয়া বিদায় দিবে না, গরম ভাত দিবে। সালুন দিবে। দিবে কি-না বলেন?

দেওয়া তো উচিত।

বিপদে-আপদে সবেই ছুইটা আসবে আমার কাছে। এরে বান মারতে হবে। তারে বশীকরণ মন্ত্র দিতে হবে। বান ছুটাইতে হবে। পিশাচ-সাধকের কাজের কী শেষ আছে? ঠিক বলেছি না স্যার?

ঠিকই বলেছ।

টাকাপয়সা ধনদৌলতেরও তখন সমস্যা নেই। জমি-জিরাত করব। ঘরবাড়ি করব। শাদি করব। আমি স্যার অখনো শাদি করি নাই। ঘর নাই, দুয়ার নাই। খাওয়া-খাদ্য নাই। আমার কাছে মেয়ে কে দিবো কন।

পিশাচ-সাধকের কাছেও কি আর মেয়ে দিবে? মেয়ের বাবা-মার কাছে পিশাচ পাত্র হিসাবে ভালো হবার কথা না।

মকবুল দাঁত বের করে হাসতে হাসতে বলল, সেইটা কোনো বিষয় না স্যার। সাধনার শেষে যারে ইচ্ছা তারে আমি বিবাহ করতে পারব। পিশাচই ব্যবস্থা কইরা দিবে। আমার কিছু করতে হবে না।

তাই না-কি?

অত কষ্ট কইরা সাধনা যে করতেছি বিনা কারণে তো করতেছি না। আমি তো বেকুব না। এই যে আপনার সঙ্গে এত গল্প করলাম, আপনার কি মনে হয়েছে আমি বেকুব?

তা মনে হয় নাই।

পিশাচ-সাধনায় যারা পাশ করে, তারা ইচ্ছা করলে অন্যের বিবাহিত ইসতিরিরেও বিবাহ করতে পারে। যেমন মনে করেন, এক লোক তার পরিবার নিয়া সুখে আছে। তার দুইটা ছেলেমেয়েও আছে। আমি পিশাচ-সাধনায় পাশ করা মকবুল যদি সেই লোকের পরিবাররে বিবাহ করতে চাই, তাইলে সঙ্গে সঙ্গে তারার সুখের সংসারে আগুন লাঘব। ছাড়াছাড়ি হইয়া যাইব। আমি আপসে সেই মেয়েরে বিবাহ করব। সেই মেয়েও আমার জন্যে থাকবে দিওয়ানা।

এ-রকম কোনো পরিকল্পনা কি আছে? পিশাচ-সাধক মকবুল মাথা নিচু করে মেঝের দিকে তাকিয়ে রইল। তার ভাবভঙ্গি দেখে মনে হলো, এটাই তার পিশাচ-সাধনার মূল প্রেরণা। ঠোঁটের কোণে হাসি দেখা যাচ্ছে।

কাকে বিয়ে করতে চাও। মেয়েটা কে?

আমার মামতো বোন নাম কইতরি। তার বিবাহ হয়ে গেছে। নবীনগরের কাঠমিস্ত্রি ইসমাইলের সঙ্গে বিবাহ হয়েছে। তারার দুইটা পুত্রসন্তানও আছে। সুখের সংসার। অন্যের সুখের সংসার ভাঙলে বিরাট পাপ হয়। আমি পিশাচ, আমার আবার পাপপুণ্য কী? ঠিক বলেছি না স্যার?

আমি জবাব দিলাম না। মানুষটার দিকে আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে রইলাম। কাকের খাচা নিয়ে আমার সামনে যে উবু হয়ে বসে আছে, সে কোনো সাধারণ মানুষ না। পিশাচ-সাধনা করুক বা না করুক, সে বিরাট প্রেমিকপুরুষ।

মকবুল গলা নামিয়ে বলল, কইতরির চেহারা এমন কিছু না। গায়ের রং শ্যামলা। মাথার চুল অল্প। সন্তান হওনের পরে বেজায় মোটা হয়েছে। কিন্ত স্যার তার জন্যে সব সময় কইলজা পুড়ে। বুক ধড়ফড় করে। রাইতে ঘুম হয় না। আমি থাকি নবীনগরে। একদিনের জন্যেও নবীনগর ছাইড়া যাইতে পারি। এই যে আপনের কাছে আসছি, একটা দিন থাকলে আপনের ভালোমন্দ দুইটা কথা শুনতে পারি–সেই উপায় নাই। আমার নবীনগর যাইতেই হবে।

কইতরির সঙ্গে তোমার কথাবর্তা হয়?

জে-না। তার বাড়ির সামনে দিয়ে হাঁটাহাঁটি করি। ক্বচিৎ তারে দেখি। একদিন দেখেছি তার ছেলেটারে নিয়া পুসকুনির দিকে যাইতেছে। সে আমারে দেখে নাই। ছেলে দুইটাও সুন্দর হয়েছে মাশাল্লাহ। বড়টার নাম গোলাপ, ছোটটার নাম সুরুজ।

সব খবরই দেখি রাখ।

কী বলেন স্যার, রাখব না! আপনে একটু দোয়া কইরেন, পিশাচ-সাধনা যেন তাড়াতাড়ি শেষ করতে পারি।

তুমি সাধনার কোন পর্যায়ে আছ?

মাত্র শুরু করেছি, সময় লাগব। পানিতে চুবাইয়া দশটা কাউয়া মারণ লাগব। এইটা এখনো পারি নাই। এই কাউয়াটা সাথে নিয়া ঘুরতেছি ছয় মাসের উপরে হইছে। দুইবাৰ্ব প্ৰসকুনিতে নামছি এরে চুবাইয়া মারার জন্যে, দুইবারই উইঠা আসছি। জীবন্ত একটা প্রাণী পানিতে চুবাইয়া মারা তো সহজ কথা না। একবার পানিতে ডুবাইয়াই টান দিয় তুললাম। কাউয়া কিছু বুঝে নাই। হে ভাবছে আমি তারে গোসল দিছি। পশুপাখির বুদ্ধি তো আমরার মতো না। তারার বুদ্ধি কম।

কাকটা ছেড়ে দিচ্ছ না কেন? সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে ঘুরার দরকার কী?

কাউয়ার উপরে মুহব্বত জন্মাইছে। ছাইড়া দিতে মন চায় না। ছাড়লেও হে যায় না। মুহব্বতের মর্ম পশুপাখিও বুঝে। এই দেখেন ছাড়তাছি। সে যাবে না।

মকবুল খাঁচার দরজা খুলে দিল। কাকটা বের হয়ে এসে মকবুলের চারপাশে গম্ভীর ভঙ্গিতে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে আবারো খাঁচায় ঢুকে গেল।

স্যার, আমার জন্যে খাস দিলে দোয়া কইরেন, যেন পিশাচ-সাধনা শেষ করতে পারি।

কাক মারতে পারবে?

উপায় কী! মারতে হবে। যে সাধনার যে নিয়ম। দিল শক্ত করার চেষ্টা নিতাছি। হবে, দিল শক্ত হবে। সময় লাগবে। লাগুক। তাড়াহুড়ার তো কিছু নাই। কী বলেন স্যার?

খাঁচার ভেতর থেকে কাক আবারো কা-কা করে দুবার ডাকল। মকবুল বিরক্ত গলায় বলল, খাওন তো দিবোরে বাপ। তরে খাওন না দিয়া আমি খাব? তুই আমারে ভাবস কি! চুপ কইরা থাক, স্যারের সাথে মূলবান আলাপ করতেছি।

কাক চুপ করে গেল।

আমি তাকিয়ে আছি। অবাক হয়ে এমন একজনকে দেখছি যে হৃদয়ে ভালোবাসার সমুদ্র ধারণ করে পিশাচ হবার সাধনা করে যাচ্ছে।

সকল অধ্যায়

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন