১৬. ভিন্ন প্রদীপ : মুসলমান কবিরা

হুমায়ুন আজাদ

ভিন্ন প্রদীপ : মুসলমান কবিরা

বাঙলাদেশে মুসলমানদের আগমন এক হাজার বছরের প্রথম প্রধান ঘটনা; দ্বিতীয় প্রধান ঘটনা ইংরেজদের আগমন। এয়োদশ শতকের প্রথম দশকে ইখতিয়ারউদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি নবদ্বীপের বুড়ো রাজা লক্ষ্মণ সেনকে হঠাৎ আক্রমণ করে। রাজা পালিয়ে বাঁচে। শুরু হয় এদেশে নতুন যুগ। রাজা গেলো বদলে। শুধু রাজা বদলালো, তাই নয়; সে-কোন সুদূর থেকে এলো বিদেশি রাজা। তাদের ধর্ম ভিন্ন, সংস্কৃতি ভিন্ন, চরিত্র ভিন্ন। তার ফলে দেশে এলো বিরাট আলোড়ন। সমাজ, সংস্কৃতি, সাহিত্য, অর্থাৎ জীবনের সবদিকে পড়লো তার প্রচণ্ড প্রভাব। মুসলমান রাজারা রাজ্যে একটু আরাম করে বসার পর এদেশের কবিদের দিতে লাগলো উৎসাহ। কিন্তু বাঙলা সাহিত্যে মুসলমানেরা প্রবেশ করে কখন? চতুর্দশ শতকের শেষ দিকে বা পঞ্চদশ শতকের প্রথম পাদে দেখি বাঙলা ভাষায় কবিতা রচনায় হাত দিয়েছেন মুসলমান কবিরা। বেশ কয়েক শশা বছর লেগেছিলো। অবশ্য একথা ভাবার কারণ নেই যে বিদেশ থেকে আসা মুসলমানেরা শুরু করেছিলো বাঙলা কবিতা লেখা। কবিতা যারা লিখেছেন, তাঁরা এদেশেরই বাঙালি; শুধু তারা ধর্ম বদলে হয়েছিলেন মুসলমান। বাঙলা ভাষায় প্রথম মুসলমান কবি শাহ মুহম্মদ সগীর। তিনি সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের রাজত্বকালে কাব্য রচনা করেন। তাঁর কাব্যের নাম ইউসুফ-জুলেখা।

মুসলমান কবিরা কবিতা লেখা শুরু করলেন বাঙলা ভাষায়। তাঁদের কবিতা নানা দিক দিয়ে নতুন। তাঁরা সৃষ্টি করেন বাঙলা কাব্যজগতে এক নতুন ধারা। মধ্যযুগের হিন্দু কবিদের সব কবিতা ধর্মকেন্দ্রিক। দেবতাদের নিয়ে তাঁরা রচনা করেছেন তাঁদের কাব্যাবলি। মঙ্গলকাব্যে দেখি দেবতাদের লীলাখেলা। বৈষ্ণব পদাবলিতে পাই দেবতার চেয়ে বড়ো রাধা আর কৃষ্ণকে। আরো আগে লেখা চর্যাপদ তো ধর্মের নিয়মকানুনের কাব্য। তাই মধ্যযুগে ধর্ম ছাড়া কবিতা ছিলো না। সেখানে মানুষ ছিলো গৌণ, দেবতাই প্রধান। সাধারণ মানুষের জীবনের কথা কবিরা ভাবতে পারেন নি। মুসলমান কবিরা নিয়ে আসেন নতুন বিষয়বস্তু। মুসলমানদের দেবতা নেই। তাই তারা লেখেন মানুষের গল্প। এগল্প কখনো ইউসুফ-জুলেখার, কখনো লাইলি-মজনুর। এরা দেবতা নয়, মানুষ, যদিও অবাস্তব। আধুনিক কালে মানুষই সাহিত্যের মূল বিষয়।

মুসলমান কবিরা যে শুধু মানুষের কথা বলছেন, তা নয়। ধর্ম তাঁদের কবিতারও একটি বড়ো অংশ অধিকার করে আছে। এ-ধর্ম অবশ্য পুরোপুরি কোরানহাদিসের ধর্ম নয়। ইসলামের অনেক গল্প তারা নানা লৌকিক কাহিনীর সাথে মিশিয়ে পরিবেশন করেছেন। হিন্দুদের একটি বড়ো ঐতিহ্য রয়েছে, সে-ঐতিহ্য রামায়ণের, মহাভারতের। মুসলমানদের ঠিক এমন কোনো কাহিনীভরা ঐতিহ্য নেই। তাই অনেক মুসলমান কবি হিন্দুদের অনুসরণে নতুন নতুন মুসলমান ঐতিহ্যের জন্ম দিয়েছেন। যেমন, ধরা যাক ইউসুফ-জুলেখার গল্প। এ-গল্প কোরানে আছে, বাইবেলে আছে। কিন্তু তা আছে সামান্য হয়ে, অত্যন্ত খসড়া আকারে। কবিরা সেই খসড়া গল্পের গায়ে নিজেদের কল্পনা মিশিয়ে নতুন কাহিনী গড়ে তুলেছেন তারা।

মুসলমান কবিদের কবিতা সম্বন্ধে একটি কথা মনে রাখতে পারি। তা হচ্ছে তাদের কোনো রচনাই মৌলিক নয়, তাঁরা নিজেরা কোনো গল্পের কাহিনী তৈরি করেন নি। তাঁদের সব রচনাই অনুবাদ। তাঁরা অনুবাদ করেছেন হিন্দি থেকে, ফারসি থেকে, আরবি থেকে। এ-অনুবাদ আজকের দিনের অনুবাদের মতো নয়। আজকের দিনে আমরা যে-বই অনুবাদ করি, তাকে অবিকৃত রাখতে চাই। মূল রচনার কোনো অংশ বাদ দিই না, বা নিজেদের কোনো রচনাংশ ওই বইয়ের মধ্যে জুড়ে দিই না। কিন্তু আমাদের কবিরা অন্য রকম করেছেন। তাঁরা মূল রচনার কোনো অংশ হয়তো পরিত্যাগ করেছেন, আবার কোথাও নিজের রচনাকে গেঁথে দিয়েছেন। হয়তো তিনি আরবদেশের বই অনুবাদ করছেন। মূল বইতে আছে মরুভূমির কথা। কিন্তু আমাদের কবিরা সেখানে বলেছেন স্নিগ্ধ সজল সবুজ বাঙলার মাঠের কথা। এর ফলে ওই বই অনুবাদ হয়েও আর অনুবাদ থাকে নি, হয়ে উঠেছে নতুন বই। মৌলিক বই। এজন্যে আমাদের কবিদের হাতে মরু অঞ্চলের লাইলি-মজনু হয়ে উঠেছে বাঙলার তরুণতরুণী।

নানা রকমের কবিতা লিখেছেন মুসলমান কবিরা। তাঁরা লিখেছেন কাহিনীকাব্য, লিখেছেন ধর্মীয় কাব্য। তাঁরা লিখেছেন ইতিহাস ও কল্পনা মিলিয়েমিশিয়ে বড়োবড়ো কাব্য। লিখেছেন শোককবিতা, লিখেছেন সঙ্গীতশাস্ত্র, জ্যোতিষশাস্ত্র সম্বন্ধীয় বই। সবই কবিতায় বা পদ্যে। ইউসুফ-জুলেখার কাহিনী লিখেছেন শাহ মুহম্মদ সগীর। হানিফা ও কয়রা পরীর গল্প লিখেছেন সাবিরিদ খান। লাইলি-মজনুর প্রণয়ের কথা বলেছেন বাহরাম খান। এগুলো বিদেশের কাহিনীর অনুবাদ। ইউসুফ-জুলেখার গল্প নিয়ে ফারসি ভাষায় বেশ কয়েকজন বড়ো কবি কাব্য লিখেছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন ফেরদৌসি ও জামি। তাঁদের কারো বইয়ের অনুবাদ করেছিলেন কবি সগীর। লাইলি-মজনুর গল্প অবলম্বনে ফারসি কবি জামি কাব্য লিখেছিলেন। এ-বইয়ের অনুবাদ হচ্ছে বাহরাম খানের লাইলি-মজনু। মুসলমান কবিরা যে কেবল বিদেশের গল্পেরই অনুবাদ করেছেন, তা নয়। ভারতববেস বিখ্যাত অনেক গল্প তাঁদের আকর্ষণ করেছে, এবং তাঁরা সেগুলো নিয়ে কাব্য লিখেছেন। মনোহর-মধুমালতীর কাহিনী লিখেছেন কবি মুহম্মদ কবির। বিদ্যাসুন্দরের কাহিনী নিয়ে চমৎকার বই লিখেছেন সাবিরিদ খান। মুহম্মদ কবির ছিলেন ষোড়শ শতকের শেষাংশের কবি। তিনি তাঁর কাব্য মধুমালতী লেখা শুরু করেছিলেন ১৫৮৩ অব্দে। সাবিরিদ খানও সম্ভবত ষোড়শ শতকেরই কবি। তাঁর কাব্য আছে বেশ কয়েকটি। বিদ্যাসুন্দর ছাড়াও তিনি লিখেছেন রসুলবিজয় ও হানিফা ও কয়রা পরী নামক আরো দুটি কাব্য। কবি হিশেবে খুব ভালো কবি ছিলেন বাহরাম খান। তাঁর কাব্যের নাম লাইলি-মজনু। তিনিও ছিলেন ষোড়শ শতাব্দীর কবি। বাহরাম খান তাঁর কাব্যের শুরুতে একটি বড়ো আত্মকাহিনী বলেছেন। সে থেকে জানা যায় তাঁর পিতার নাম ছিলো মুবারক খান। তিনি ছিলেন নিজাম শাহের দৌলত উজির’ অর্থাৎ অর্থমন্ত্রী। মুবারক খান মারা গেলে নিজাম শাহ কবি বাহরাম খানকে অর্থমন্ত্রী পদটি দান করেন। কবি নগর চট্টগ্রামের চমৎকার বর্ণনা দিয়েছেন :

নগর ফতেয়াবাদ           দেখিতে পুরএ সাধ,
চাটিগ্রামে সুনাম প্রকাশ।
।মনোহর মনোরম           অমর নগর সম,
শতে শতে অনেক নিবাস।
লবণাম্বু সন্নিকট           কর্ণফুলি নদীতট
শুভপুরী অতি দীপ্যমান।
চৌদিক বিশাল গড়           উজল বিস্তর সর
তাহে শাহ বদর পয়ান।

আরেকজন কবি ছিলেন আফজল আলী। তিনি একটি কাব্য লিখেছিলেন, কাব্যটির নাম নসিহত্যামা। ইতিহাস ও কল্পনা মিলিয়ে কয়েকজন কবি কাব্য লিখেছিলেন। এসব কাব্যে ইতিহাস প্রায় রূপকথায় পরিণত হয়েছে। এসব কাব্যে কবিদের উদ্দাম কল্পনা দেখে অবাক হতে হয়। এ-রকম কাব্য লিখেছিলেন জৈনুদ্দিন, সাবিরিদ খান, শেখ ফয়জুল্লাহ। কবি জৈনুদ্দিনের কাব্যের নাম রসুলবিজয়, শেখ ফয়জুল্লাহর কাব্যের নাম গাজিবিজয়। ফয়জুল্লাহ গোরক্ষবিজয় নামে আরো একটি কাব্য লিখেছিলেন। এ-সময়ে আরো বেশ কয়েকজন কবি ছিলেন। তাঁদের নাম চাদ কাজি, শেখ কবির, মোজাম্মিল। যাদের কথা বললাম তাঁরা সবাই প্রায় সোড়শ শতাব্দীর কবি। এ-সময়ে মুসলমান কবিরা একে একে কাব্যরাজ্যে আসছেন আর আসন অধিকার করছেন। তাঁদের কবিতা কাব্যমূল্যে বেশ মূল্যবান, যদিও বড়ো কবি নন তাঁরা। এরপরে আসেন সপ্তদশ শতাব্দীর কবিরা।

আসেন অনেক কবি। তাঁদের মধ্যে আছেন সৈয়দ সুলতান, শেখ পরাণ, হাজি মুহম্মদ, মুহম্মদ খান, সৈয়দ মর্তুজা, আবদুল হাকিম, কাজি দৌলত, আলাওল, মাগন ঠাকুর, এবং আরো অনেকে। সৈয়দ সুলতান, আবদুল হাকিম, কাজি দৌলত এবং আলাওল বিখ্যাত কবি। তাঁরা সবাই মিলে বাঙলা কবিতাকে এমন সৌন্দর্য দান করেছিলেন, যা তাদের সহগামী হিন্দু কবিদের পক্ষে সম্ভব ছিলো না। এর ফলে বাঙলা সাহিত্য মধ্যযুগ থেকে হয়ে ওঠে হিন্দু ও মুসলমান উভয়ের সম্পত্তি। তারা উভয়ে মিলে বুনে যেতে থাকে কাব্যলক্ষ্মীর শাড়ির পাড়।

কবি সৈয়দ সুলতানের জীবন মোড়শ এবং সপ্তদশ দু-শতকে বিস্তৃত ছিলো। তিনি বেঁচেছিলেন অনেকদিল, আর লিখেছিলেন অনেক কাব্য। তার কয়েকটি কাব্য আকারে বিশাল। তাঁর কাব্যশক্তিও ছিলো গৌরবজনক। কবি সৈয়দ সুলতান তাঁর শবেমিরাজ কাব্যে নিজের বিশদ পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর কাব্যগুলো হচ্ছে নবীবংশ, শবেমিরাজ, রসুলবিজয়, ওফাতে রসুল, জয়কুম রাজার লড়াই, ইবলিশনামা, জ্ঞানচৌতিশা, জ্ঞানপ্রদীপ। এছাড়া তিনি লিখেছেন মারফতি গান এবং পদাবলি। কবির নবীবংশ বিশাল বই। এ-কাব্যে কবির ইসলামপ্রচারক মনটি স্পষ্ট দেখা যায়। কবি এ-কাব্য সম্বন্ধে বলেছেন :

কহে ছৈয়দ সুলতানে শুন নরগণ।
এহি হিন্দি নবীবংশ শুন দিয়া মন।।
আছিল আরবী ভাষে হিন্দি করিলুঁ।
বঙ্গদেশী বুঝে মত প্রচারিয়া দিলুঁ।
ন বুঝি আরবী শাস্ত্র জ্ঞান ন পাইলা।
হিন্দিয়ানি ভাষা পাই আচার জানিলা।।

কবি হাজি মুহম্মদের একটি কাব্য পাওয়া গেছে, কাব্যটির নাম নূরজামাল। কবি মুহম্মদ খানের কাব্যও আছে বেশ কয়েকটি। তাঁর কাব্যের নাম সত্যকলি-বিবাদসংবাদ, হানিফার লড়াই, মুকতাল হোসেন।

মধ্যযুগের একজন ভালো কবি কবি আবদুল হাকিম। তাঁর আটটি কাব্যের খবর পাওয়া গেছে। তার কয়েকটি কাব্যের নাম হচ্ছে ইউসুফ-জুলেখা, নূরনামা, কারবালা, শহরনামা। কবি আবদুল হাকিম নিজেকে বাঙালি বলতে গর্ববোধ করতেন। সেই মধ্যযুগেই একদল মুসলমান দেখা দিয়েছিলো যারা নিজেদের বাঙালি বলতে চাইতো না। তারা নিজেদের আরবইরানের মানুষ ভাবতে চাইতো। বাঙলা ভাষাকে তারা অবজ্ঞা করতো। আবদুল হাকিম এদের ওপর ভয়ানক ক্ষেপেছিলেন। এসব পরগাছাদের নিন্দা করে তিনি লিখেছিলেন অমর কতিপয় পংক্তি; সে-পংক্তিগুলো আছে তাঁর নূরনামা কাব্যে। পংক্তিগুলো তুলে দিচ্ছি :

যে সব বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী।
সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।।
দেশী ভাষা বিদ্যা যার মনে ন জুয়ায়।
নিজ দেশ ত্যাগি কেন বিদেশ ন যায়।।
মাতাপিতামহক্রমে বঙ্গেত বসতি।
দেশী ভাষা উপদেশ মান হিত অতি।।

এ-অংশ পড়লে বোঝা যায় কবি কী গভীরভাবে বাঙালি ছিলেন। বর্তমানের বাঙালিদের তিনি যথার্থ পূর্বপুরুষ; তবে তিনি যাদের নিন্দা করছেন, তারা এখনো আছে বাঙলায়।

মধ্যযুগে আরাকানেও রচিত হয়েছিলো বাঙলা সাহিত্য। এই আরাকানের প্রাচীন নাম ছিলো রোসাঙ্গ। আরাকানের রাজদরবারে স্থান পেয়েছিলেন বাঙলা ভাষার কয়েকজন ভালো কবি। তাঁদের মধ্যে আছেন আলাওল, কাজি দৌলত, মাগন ঠাকুর। এ-কবি তিনজনের সবাই সপ্তদশ শতকের মানুষ। কাজি দৌলত লিখেছিলেন একটি কাব্য; নাম সতীময়না বা লোরচন্দ্রানী। কাব্যটি তিনি নিজে সমাপ্ত করে যেতে পারেন নি। কিছু অংশ লেখার পরে তিনি পরলোকগমন করেন। পরে কাব্যটি সমাপ্ত করেন আলাওল। কাজি দৌলত জন্মগ্রহণ করেছিলেন চট্টগ্রামের রাউজান থানার সুলতানপুর গ্রামে। বয়স হবার পরে তিনি আরাকানের রাজসভায় যান, এবং আরাকানের রাজা সুধর্মের সেনাপতি আশরাফ খানের প্রীতি লাভ করেন। আশরাফ খানের উৎসাহে তিনি রচনা করেন সতীময়না নামক কাব্যটি।

আলাওল ছিলেন আরাকানের রাজসভার আশীর্বাদপ্রাপ্ত কবিদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। শুধু তাই নয়, তিনি মধ্যযুগের মুসলমান কবিদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। তিনি সমগ্র বাঙলা সাহিত্যের বড়ো কবিদের একজন। তাঁর কথা পরে পৃথকভাবে বলবো। কবি আলাওলকে আশ্রয় দিয়েছিলেন মাগণ ঠাকুর। তার নামটি অদ্ভুত; তবে তিনি ছিলেন মুসলমান। তিনি ছিলেন আরাকানের অধিবাসী। মাগন ঠাকুরও একটি ভালো কাব্য লিখেছিলেন চন্দ্রাবতী নামে। তিনিও বেশ ভালো কবি ছিলেন।

মুসলমান কবিদের সংবাদ আমরা সব জানি না। কেননা বাঙলা সাহিত্যের ইতিহাস রচনার জন্যে যখন তথ্য সংগ্রহ করা শুরু হয়, তখন মুসলমান কবিদের কাব্য বিশেষ সংগ্রহ করা হয় নি। কে করবে? মুসলমানেরা চিরদিনই এসব বিষয়ে উদাসীন। তবু কিছু সংবাদ পাওয়া গেছে। পাওয়া গেছে একজন মহাপুরুষের চেষ্টায়। তার নাম আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ [১৮৭১-১৯৫৩)। তিনি ছিলেন চট্টগ্রামের অধিবাসী। তিনি গ্রামেগ্রামে ঘুরে সংগ্রহ করেছেন মুসলমান কবিদের পুথি। যদি আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ না জন্মাতেন, তাহলে হয়তো মুসলমান কবিদের সাধনার কথা জানতে পেতাম না। তাই তিনি চিরস্মরণীয়।

সকল অধ্যায়

১. ০১. লাল নীল দীপাবলি
২. ০২. বাঙালি বাঙলা বাঙলাদেশ
৩. ০৩. বাঙলা সাহিত্যের তিন যুগ
৪. ০৪. প্রথম প্রদীপ : চর্যাপদ
৫. ০৫. অন্ধকারে দেড়শো বছর
৬. ০৬. প্রদীপ জ্বললো আবার : মঙ্গলকাব্য
৭. ০৭. চণ্ডীমঙ্গলের সোনালি গল্প
৮. ০৮. মনসামঙ্গলের নীল দুঃখ
৯. ০৯. কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম চক্রবর্তী
১০. ১০. রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র
১১. ১১. উজ্জ্বলতম আলো : বৈষ্ণব পদাবলি
১২. ১২. বিদ্যাপতি
১৩. ১৩. চণ্ডীদাস
১৪. ১৪. চৈতন্য ও বৈষ্ণবজীবনী
১৫. ১৫. দেবতার মতো দুজন এবং কয়েকজন অনুবাদক
১৬. ১৬. ভিন্ন প্রদীপ : মুসলমান কবিরা
১৭. ১৭. আলাওল
১৮. ১৮. লোকসাহিত্য : বুকের বাঁশরি
১৯. ১৯. দ্বিতীয় অন্ধকার
২০. ২০. অভিনব আলোর ঝলক
২১. ২১. গদ্য : নতুন সম্রাট
২২. ২২. গদ্যের জনক ও প্রধান পুরুষেরা
২৩. ২৩. কবিতা : অন্তর হতে আহরি বচন
২৪. ২৪. উপন্যাস : মানুষের মহাকাব্য
২৫. ২৫. নাটক : জীবনের দ্বন্দ্ব
২৬. ২৬. রবীন্দ্রনাথ : প্রতিদিনের সূর্য
২৭. ২৭. বিশশতকের আলো : আধুনিকতা

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন