রজনী একাদশী
    পোহায় ধীরে ধীরে,
    রঙিন মেঘমালা
    উষারে বাঁধে ঘিরে।
    আকাশে ক্ষীণ শশী
    আড়ালে যেতে চায়,
    দাঁড়ায়ে মাঝখানে
    কিনারা নাহি পায়।
    এ-হেন কালে যেন
    মায়ের পানে মেয়ে
    রয়েছে শুকতারা
    চাঁদের মুখে চেয়ে।
    কে তুমি মরি মরি
    একটুখানি প্রাণ।
    এনেছ কী না জানি
    করিতে ওরে দান।

    মহিমা যত ছিল
    উদয়-বেলাকার
    যতেক সুখসাথি
    এখনি যাবে যার,
    পুরানো সব গেল—
    নূতন তুমি একা
    বিদায়-কালে তারে
    হাসিয়া দিলে দেখা।

    ও চাঁদ যামিনীর
    হাসির অবশেষ,
    ও শুধু অতীতের
    সুখের স্মৃতিলেশ।
    তারারা দ্রুতপদে
    কোথায় গেছে সরে—
    পারে নি সাথে যেতে,
    পিছিয়ে আছে পড়ে।

    তাদেরই পানে ও যে
    নয়ন ছিল মেলি,
    তাদেরই পথে ও যে
    চরণ ছিল ফেলি,
    এমন সময়ে কে
    ডাকিলে পিছু-পানে
    একটি আলোকেরই
    একটু মৃদু গানে।

    গভীর রজনীর
    রিক্ত ভিখারিকে
    ভোরের বেলাকার
    কী লিপি দিলে লিখে।
    সোনার-আভা-মাখা
    কী নব আশাখানি
    শিশির-জলে ধুয়ে
    তাহারে দিলে আনি।
    অস্ত-উদয়ের
    মাঝেতে তুমি এসে
    প্রাচীন নবীনেরে
    টানিছ ভালোবেসে—
    বধূ ও বর-রূপে
    করিলে এক-হিয়া
    করুণ কিরণের
    গ্রন্থি বাঁধি দিয়া।

    টীকা