পৃথিবী প্রবীণ আরো হয়ে যায় মিরুজিন নদীটির তীরে;
    বিবর্ণ প্রাসাদ তার ছায়া ফেলে জলে।
    ও প্রাসাদে কারা থাকে? — কেউ নেই — সোনালি আগুন চুপে জলের শরীরে
    নড়িতেছে — জ্বলিতেছে — মায়াবীর মতো জাদুবলে।
    সে আগুন জ্বলে যায় — দহেনাকো কিছু।
    সে আগুন জ্বলে যায়
    সে আগুন জ্বলে যায়
    সে আগুন জ্বলে যায় — দহে নাকো কিছু।
    নিমীল আগুনে অই আমার হৃদয়
    মৃত এক সারসের মতো।
    পৃথিবীর রাজহাঁস নয় —
    নিবিড় নক্ষত্র থেকে যেন সমাগত
    সন্ধ্যার নদীর জলে একভিড় হাঁস অই — একা;
    এখানে পেল না কিছু; করুণ পাখায়
    তাই তারা চলে যায় শাদা, নিঃসহায়।
    মূল সারসের সাথে হল মুখ দেখা।

    রাত্রির সংকেতে নদী যতদূর ভেসে যায় — আপনার অভিজ্ঞান নিয়ে
    আমারো নৌকার বাতি জ্বলে;
    মনে হয় এইখানে লোকশ্রুত আমলকী পেয়ে গেছি
    আমার নিবিষ্ট করতলে,
    সব কেরোসিন-অগ্নি মরে গেছে; জলের ভিতরে আভা দ’হে যায়
    মায়াবীর মতো জাদুবলে।
    পৃথিবীর সৈনিকেরা ঘুমায়েছে বিম্বিসার রাজার ইঙ্গিতে
    ঢের দূর ভূমিকার পর;
    সত্য সারাৎসার মূর্তি সোনার বৃষের ‘পরে ছুটে সারাদিন
    হয়ে গেছে এখন পাথর;
    যে সব যাবারা সিংহীগর্ভ জ’ন্মে পেয়েছিলো কৌটিল্যের সংযম
    তারাও মরেছে — আপামর।
    যেন সব নিশিডাকে চলে গেছে নগরীতে শূন্য করে দিয়ে —
    সব ক্কাথ বাথরুমে ফেলে;
    গভীর নিসর্গ সাড়া দিয়ে শ্রুতি বিস্মৃতির নিস্তব্ধতা ভেঙে দিতো তবু
    একটি মানুষ কাছে পেলে;
    যে-মুকুর পারদের ব্যবহার জানে শুধু, যে দীপ প্যারাফিন,
    বাটা মাছ ভাজে যেই তেলে,
    সম্রাটের সৈনিকেরা যে-সব লাবণি লবণরাশি খাবে জেগে উঠে,
    অমায়িক কুটুম্বিনী জানে —
    তবুও মানুষ তার বিছানায় মাঝরাতে নৃমুণ্ডেরহেঁইয়ালিকে
    আঘাত করিবে কোন্‌খানে?
    হয়তো নিসর্গ এসে একদিন বলে দেবে কোনো এক সম্রাজ্ঞীকে
    জলের ভিতর এই অগ্নির মানে।

    টীকা