ফেব্রুয়ারী মাসে ভাই, কলকাতা শহরে
    ঘটল ঘটনা এক, লম্বা সে বহরে!
    লড়াই লড়াই খেলা শুরু হল আমাদের,
    কেউ রইল না ঘরে রামাদের শ্যামাদের;
    রাস্তার কোণে কোণে জড়ো হল সকলে,
    তফাৎ রইল নাকো আসলে ও নকলে,
    শুধু শুনি ‘ধর’ ‘ধর’ ‘মার’ ‘মার’ শব্দ
    যেন খাঁটি যুদ্ধ এ মিলিটারী জব্দ।
    বড়রা কাঁদুনে গ্যাসে কাঁদে, চোখ ছল ছল
    হাসে ছিঁচকাঁদুনেরা বলে, ‘সব ঢাল জল’।
    ঐ বুঝি ওরা সব সঙ্গীন উঁচোলো,
    ভয় নেই, যত হোক বেয়নেট ছুঁচোলো,
    ইট-পাটকেল দেখি রাখে এরা তৈরি,
    এইবার যাবে কোথা বাছাধন বৈরী!
    ভাবো বুঝি ছোট ছেলে, একেবারে বাচ্চা!
    এদের হাতেই পাবে শিক্ষাটা আচ্ছা;
    ঢিল খাও, তাড়া খাও, পেট ভরে কলা খাও,
    গালাগালি খাও আর খাও কানমলা খাও।
    জালে ঢাকা গাড়ি চড়ে বীরত্ব কি যে এর
    বুঝবে কে, হরদম সামলায় নিজেদের।
    বার্মা-পালানো সব বীর এরা বঙ্গে
    যুদ্ধ করছে ছোট ছেলেদের সঙ্গে;
    ঢিলের ভয়েতে ওরা চালায় মেশিনগান,
    “বিশ্ববিজয়ী” তাই রাখে জান, বাঁচে মান।
    খালি হাত ছেলেদের তেড়ে গিয়ে করে খুন;
    সাবাস! সাবাস! ওরা খেয়েছে রাজার নুন।

    ডাংগুলি খেলা নয়, গুলির সঙ্গে খেলা,
    রক্ত-রাঙানো পথে দু’পাশে ছেলের মেলা;
    দুর্দম খেলা চলে, নিষেধে কে কান দেয়?
    ও-বাড়ি ও ও-পাড়ার কালো, ছোটু প্রাণ দেয়।
    স্বচে দেখলাম বস্তির আলী জান,
    ‘আংরেজ চলা যাও’ বলে ভাই দিল প্রাণ।

    এমন বিরাট খেলা শেষ হল চটপট
    বড়দের বোকামিতে আজো প্রাণ ছটফট;
    এইবারে আমি ভাই হেরে গেছি খেলাতে,
    ফিরে গেছি দাদাদের বকুনির ঠেলাতে;
    পরের বারেতে ভাই শুনব না কারো মানা,
    দেবই, দেবই আমি নিজের জীবনখানা ।

    টীকা