হাড়ের মালা গলায় গেঁথে – অট্টহাসি হেসে
    উল্লাসেতে টলছে তারা,—জ্বলছে তারা খালি !
    ঘুরছে তারা লাল মশানে কপাল—কবর ঘেঁসে ,
    বুকের বোমাবারুদ দিয়ে আকাশটারে জ্বালি
    পাঁয়জোরে কাল মহাকালের পাঁজর ফেড়ে ফেড়ে
    মড়ার বুকে চাবুক মেরে ফিরছে মরুর বালি !
    সর্বনাশের সঙ্গে তোরা দম্ভে খেলিস পাশা
    হেথায় কোন এক সৃষ্টিপাতের সূত্রপাতের ভূমি ,
    —শিশু মানব গড়েছিল ঐ সাহারায় বাসা ;
    —সে সব গেছে কবে ঘুমের চুমার ধোঁয়ায় ধূমি !
    অটল আকাশ যাচ্ছে জরির ফিতার মতো ফেড়ে ,
    জবান তোদের জ্বলছে যমের চিতার গেলাস চুমি !
    তোদের সনে ‘ডাইনোসুরে’র লড়াই হলো কত,-
    আলুথালু লুটিয়ে বালুর ডাইনী ছায়ার তলে
    আজকে তারা ঘুমিয়া আছে ,—চুল্লি শত শত
    উঠলো জ্বলে তাদের হাড়ে ,—তাদের নাড়ের বলে ;
    কাঁদছে খাঁ খাঁ কাফন-ঢাকা বালুর চাকার নিচে ,
    মুণ্ড তাদের ,—মড়ার কপাল ভৈরবেরি গলে!
    তোদের বুকে জাগছে মৃগতৃষ্ণা ,—জাগে ঝর!
    নিস উড়িয়ে শিকার—সোয়ার ধোঁয়ার পিছে পিছে ,-
    মেঘে মেঘে চড়াও ,—বাজের বুক চিরে চক্কর !
    নাচতে আছিস আকাশখানার গোখরাফণার নিচে,
    আরব মিশর চীন ভারতের হাওয়ায় ঘুরে ঘুরে !
    সত্য ত্রেতা দ্বাপর কলি হাপর খিঁচে খিঁচে !
    তোদের ভাষা আস্ফালিছে শেখ সেনানীর বুকে!
    -লাল সাহারার শেরের সোয়ার ,—বালুর ঘায়ে ঘেয়ো ,
    ধমক মেরে আঁধির বুকে ছুটছে রুখে রুখে!
    -তোদের মতো নেইকো তাদের সোদর—সাথী কেহ ,
    নেইকো তাদের মোদের মতন পিছুডাকের মায়া,
    নেইকো তাদের মোদের মতন আর্ত মোহ-স্নেহ !
    দানোয়-পাওয়া আগুনদানা ,—দারুণ পথের মুখে !
    ঘায়েল করি মেঘের বুরুজ বল্লমেরি ঘর,
    উড়িয়া হাজার ‘ক্যারাভেন’ ও তাম্বুশিবির বুকে ,
    উজিয়ে মরীচিকার শিখা – কালফণা জর্জর ,
    —টলতে আছিস ,—দলতে আছিস ,—জ্বলতে আছিস ধূ ধূ !
    সঙ্গে স্যাঙাত-মসুদ ডাকাত ,—তাতার যাযাবর !
    গাড়তে যাবো যারা তোদের বুকের মাঝে বাসা
    হাড্ডি তাদের ফোফরা হ’য়ে ঝুরবে বালুর মাঝে ,
    এইখানেতে নেইকো দরদ,-নেইকো ভালোবাসা ,
    বর্শা লাফায় ,—উটের গলায় ঘণ্টি শুধু বাজে !
    ফুরিয়ে গেছে আশা যাদের,—জুড়িয়ে গেছে জ্বালা ,
    আয় রে বালুর ‘কারবালা’তে, অন্ধকারের ঝাঁঝে !

    টীকা