Chapter Index

    অনেকদিন আগে এক রাজ্যে এক বুড়ি রানী ছিলেন। একটি ভারী সুন্দরী রাজকন্যাকে রেখে রাজা মারা গিয়েছিলেন অনেককাল আগেই। রাজকন্যা যখন বড় হলেন তাঁর বিয়ে ঠিক হল দূর দেশের এক রাজপুত্রের সঙ্গে। যখন রাজকন্যার শ্বশুরবাড়িতে যাবার সময় এল, রানী তাঁর জন্যে প্যাঁটরায় কাপড় আর হিরেজহরত গোছালেন, সোনা আর রুপো ভরলেন, গয়না ভরলেন। রাজার মেয়ের জন্যে যা লাগে সবই দিলেন। মেয়েকে তিনি ভালোবাসতেন প্রাণের চেয়েও বেশি।

    আর দিলেন তার সঙ্গে এক দাসী যে তার সঙ্গে যাবে আর শ্বশুরবাড়ি পৌঁছে মেয়ের হাত জামাইয়ের হাতে সঁপে দেবে। রাজকন্যা এক ঘোড়ায় চড়লেন, তার নাম ফালাডা, সে মানুষের মত কথা কইতে পারত। আর দাসী চড়ল আর-একটি ঘোড়ায়।

    বিদায়ের সময় যখন এল রানী তাঁর শোবার ঘরে গিয়ে একটি ধারালো ছুরি বার করে নিজের আঙুল খানিকটা কেটে ফেললেন। তারপর সাদা একটুকরো কাপড় বার করে তাতে তিন ফোঁটা রক্ত ফেলে কাপড় মুড়ে মেয়েকে দিয়ে বললেন— এটি যত্ন করে রেখো মা; পথে বিপদ-আপদ থেকে তোমায় রক্ষা করবে।

    তারপর দুজনে দুজনের কাছ থেকে চোখের জল ফেলে বিদায় নিলেন। রাজকন্যা কাপড়ের টুকরোটা নিজের বুকের মধ্যে ভরে, ঘোড়ায় চড়ে বেরিয়ে পড়লেন দূরের পাড়িতে তাঁর বরের দেশে।

    ঘোড়ায় চড়ে কিছু দূর যাবার পর রাজকন্যার বড় জলতেষ্টা পেল। তিনি তাঁর দাসীকে বললেন— যাও তো দাসী, ঐ ঝর্না থেকে আমার এই পেয়ালায় করে এক পেয়ালা জল নিয়ে এস। আমার বড় তেষ্টা পেয়েছে।

    দাসী বললে— অত যদি জলতেষ্টা পেয়ে থাকে ঘোড়া থেকে নেমে নিজেই যাও না ঝর্নার ধারে— মাটিতে শুয়ে ঝর্নার জলে মুখ দিয়ে খাও গে না। আমায় বলছ কেন? আমি কি তোমার বাঁদী?

    কাজেই ঘোড়া থেকে নেমে রাজকন্যা ঝর্নার ধারে চললেন। দাসী তাঁর সোনার পেয়ালাটা কেড়ে রেখে দিলে। বেচারি রাজকন্যা জলে মুখ ডুবিয়ে জল খেতে খেতে বললে— হায় রে! আর অমনি সেই রক্তের ফোঁটাগুলি বলে উঠল— যদি তোমার মা জানতেন এ কথা, তাহলে তাঁর বুক ভেঙে যেত!

    রাজকন্যাটি ছিলেন ভারি নম্র, ভারি ভালমানুষ। কাজেই তিনি কোনো কথা না বলে ঘোড়ায় চড়ে বসলেন। তারপর তাঁরা চললেন পথ ধরে ক্রোশের পর ক্রোশ।

    দিনটা ছিল গরম, রোদ ছিল চড়চড়ে। কিছু দূরে গিয়ে রাজকন্যার আবার তেষ্টা পেল।

    যখন তাঁরা এক নদীর ধারে এসে পৌঁছলেন রাজকন্যা তাঁর দাসীকে ডেকে বললেন— যাও তো দাসী, আমার সোনার পেয়ালায় করে এক পেয়ালা জল এনে দাও তো। রাজকন্যা ভুলেই গিয়েছিলেন একটু আগে তাঁর দাসী তাঁকে কত কড়া কথা শুনিয়েছে।

    দাসী জবাব দিলে— জল খেতে হয় নিজে গিয়ে খাওগে, আমি তোমার কেনা বাঁদী নই।

    রাজকন্যার বড় তেষ্টা পেয়েছে। তিনি ঘোড়া থেকে নামলেন। নেমে হাঁটু গেড়ে বসলেন জলের ধারে। বসে বললেন— আহারে! বলতেই রক্তের ফোঁটারা জবাব দিল— তোমার মা যদি জানতেন তাঁর বুক ভেঙে যেত!

    রাজকন্যা যখন গলা বাড়িয়ে জল খাচ্ছিলেন সেই সময় তাঁর বুক থেকে সেই তিন ফোঁটা রক্তমাখা কাপড়ের টুকরোটা কখন যে পড়ে জলে ভেসে গেল তিনি টেরই পেলেন না।

    দাসী কিন্তু লক্ষ করল সব। সে খুব খুশি হল। সে বুঝল, ঐ কাপড়ের টুকরোর সঙ্গে রাজকন্যার যতটুকু শক্তি ছিল তাও চলে গেল। এবারে আর জারিজুরি চলবে না।

    রাজকন্যা ফিরে এসে যখন তাঁর ঘোড়া ফালাডার পিঠে চড়তে যাচ্ছেন, দাসী বললে— ফালাডা আমার, আমি ওতে চড়ে যাব। আমার ঘোড়া তুমি নাও।

    রাজকন্যা আর কি করেন, ভয়ে-ভয়ে তাতেই রাজি হলেন। তখন দাসী আরো কর্কশভাবে বললে— তোমার রাজপোশাক খুলে আমায় দাও, আমি পরব। এই নাও আমার পোশাক তুমি পর। তারপর দাসী বললে— ভগবানের নামে শপথ কর, এখানে যা ঘটেছে কাউকে তুমি বলবে না। শপথ যদি না কর এখানেই তোমায় কেটে রেখে যাব। রাজকন্যা ভয়ে-ভয়ে শপথ করলেন।

    তখন দাসী ফালাডায় চড়ে আর রাজকন্যা দাসীর ঘোড়ায় চড়ে তাঁদের পথে চললেন।

    প্রাসাদে এসে যখন তাঁরা পৌঁছলেন চারিদিকে সাড়া পড়ে গেল। রাজপুত্র দৌড়ে এগিয়ে গেলেন তাদের দিকে, গিয়ে দাসীকে নামালেন ঘোড়া থেকে। তিনি বুঝলেন এই হচ্ছে রাজকন্যা। দাসী প্রাসাদের উপরের তলায় চলে গেল, রাজকন্যা রইলেন নীচে।

    বুড়ো রাজা উপরের জানলা থেকে দেখলেন ভারি সুন্দর নরম নরম চেহারার একটি মেয়ে উঠোনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তিনি বৌমার ঘরে গিয়ে বৌমাকে জিজ্ঞেস করলেন— তোমার সঙ্গে যে মেয়েটি এসেছে ওটি কে বাছা?

    —রাস্তায় আসতে আসতে মেয়েটিকে দেখে আমি সঙ্গে করে নিয়ে এসেছি। ওকে কিছু কাজ দিন, নইলে কুঁড়ে মেরে যাবে।

    কিন্তু মেয়েটিকে দেবার মত কোনো কাজই বুড়ো রাজার হাতে ছিল না। তিনি কিছু ভেবেও পেলেন না। অবশেষে তিন বললেন— যে ছেলেটা হাঁস চরাতে যায়, মেয়েটাকে বরং তার সঙ্গে পাঠিয়ে দাও, দু-জনে মিলে হাঁস চরাক।

    বাচ্চা কনরাডের সঙ্গে সেই থেকে রাজকন্যা হাঁস চরানোর কাজে নিযুক্ত হলেন।

    নকল রাজকন্যা তখন রাজপুত্রকে বললে— দেখুন স্বামী, আমার একটি ভিক্ষে আছে।

    রাজপুত্র বললেন— বল কী তা, আমি তা নিশ্চয়ই দেব।

    —বেশ, তাহলে কসাইকে ডেকে বলুন আমি যে ঘোড়ায় চড়ে এসেছি তার গলাটা কেটে ফেলতে। ঘোড়াটা পথে আসতে আমায় বড় জ্বালাতন করেছে।

    আসলে দাসীর মনে ভয় ছিল, ফালাডা সব কিছুই যখন দেখেছে সে না আবার বলে দেয়! কাজেই রাজপুত্রের হুকুমে বিশ্বাসী ফালাডার গলা কাটা গেল।

    সত্যিকারের রাজকন্যা যখন খবরটা পেলেন, তিনি যে কসাই ফালাডার গলা কেটেছিল তার কাছে গিয়ে চুপি চুপি বললেন— ভাই, তুমি যদি এক কাজ কর তোমায় এই সোনার মোহরটা দিই।

    কসাই বললে—কী কাজ?

    রাজকন্যা বললেন— শহর থেকে বাইরে যাবার পথে একটা অন্ধকার ছাদ-ঢাকা গলি আছে। এই গলি দিয়ে রোজ সকালে আমায় শহরের বাইরে যেতে হয়, রাত্রে ফিরতে হয়। ঐখানে যে ফটক তার গায়ে যদি ফালাডার মাথাটা ঝুলিয়ে দাও তাহলে আমি রোজ তাকে দেখতে পাব।

    কসাই রাজি হল। ফালাডার কাটা গলা সেই অন্ধকার গলির শেষে ফটকের মাথায় টাঙিয়ে দিলে। ভোরবেলা কনরাড আর রাজকন্যা যখন সেই ফটক পার হয়ে বাইরে যাচ্ছেন, রাজকন্যা বললেন—

    হায় মোর ফালাডা, ঝুলে তুমি রও?

    মুণ্ডু তখনই জবাব দিলে—

    রাজার কুমারী হায় কোথা তুমি যাও?
    এ দশা তোমার যদি দেখিতেন রানী,
    অন্ধ করিত চোখ নয়নের পানি!

    তারপর তারা হাঁস নিয়ে শহরের বাইরে মাঠে চলে গেল। মাঠে পৌঁছে রাজকন্যা ঘাসের উপর বসে তাঁর চুল খুলে দিলেন। দিতেই খাঁটি সোনার মত তা ঝলমল করে উঠল। কনরাডের দেখে এত ভাল লাগল যে সে বললে— আমি কয়েকটা চুল ছিঁড়ে নেব।

    কিন্তু রাজকন্যা বললেন—

    বাতাস আমার ভাই,
    কনরাডের ঐ টুপিখানা উড়িয়ে দেওয়া চাই।
    টুপির পিছে ছুটুক ততক্ষণ,
    বেণী বাঁধা সারা আমার না হয় যতক্ষণ!

    বলতেই একটা ঝট্‌কা বাতাস এসে কনরাডের টুপিখানা উড়িয়ে নিয়ে গেল। মাঠের উপর দিয়ে ছুটল টুপি। কনরাড তার পিছু পিছু। কনরাড যখন টুপি উদ্ধার করে ফিরল, ততক্ষণে রাজকন্যার বেণী বাঁধা হয়ে গেছে— একটি চুলও আর আলগা নেই। কনরাডের মুখ গোমড়া হয়ে গেল; সে আর একটি কথাও বললে না। সারা দিন হাঁস চরিয়ে সন্ধের সময় তারা বাড়ি ফিরে গেল।

    পরদিন সকালে যখন তারা ফটকের নিচে দিয়ে যাচ্ছে, রাজকন্যা বললেন—

    হায় মোর ফালাডা, ঝুলে তুমি রও?

    ফালাডা জবাব দিলে—

    রাজার কুমারী হায় কোথা তুমি যাও?
    এ দশা তোমার যদি দেখিতেন রানী,
    অন্ধ করিত চোখ নয়নের পানি।

    আবার তারা যখন মাঠে পৌঁছল রাজকন্যা তাঁর চুল খুলে আঁচড়াতে লাগলেন আর কনরাড চুল নিতে ছুটে এল। কিন্তু রাজকন্যা গাইলেন—

    বাতাস আমার ভাই,
    কনরাডের ঐ টুপিখানি উড়িয়ে নেওয়া চাই।
    টুপির পিছে ছুটুক ততক্ষণ,
    বেণী বাঁধা সারা আমার না হয় যতক্ষণ।

    আবার বাতাস উঠল কনরাডের টুপি উড়িয়ে নিয়ে। মাঠের উপর দিয়ে ছুটল কনরাড টুপির পিছনে পিছনে। যখন সে ফিরে এল ততক্ষণে রাজকন্যার চুল বাঁধা হয়ে গেছে। একটি কুন্তলও আর এদিক ওদিক নেই। সন্ধে অবধি তারা হাঁস চরিয়ে বাড়ি ফিরল।

    সেদিন বাড়ি ফিরে কনরাড রাজার কাছে গিয়ে নালিশ করলে— মহারাজ, আমি ঐ মেয়ের সঙ্গে আর কোনোদিন হাঁস চরাতে যাব না।

    রাজা বললেন— কেন?

    —রোজ আমার পিছনে লাগে।

    —কী রকম শুনি?

    কনরাড বললে— সকাল বেলা যখন আমরা অন্ধকার গলির মধ্য দিয়ে হাঁস নিয়ে যাই, ফটকের উপর যে ঘোড়ার মাথা টাঙানো আছে, মেয়েটি তার সঙ্গে কথা কয়। বলে—

    হায় মোর ফালাডা, ঝুলে তুমি রও?

    মুণ্ডু তখন জবাব দেয়—

    রাজার কুমারী হায় কোথা তুমি যাও?
    এ দশা তোমার যদি দেখিতেন রানী
    অন্ধ করিত চোখ নয়নের পানি।

    তারপর মাঠে আর যা-যা হয়েছিল, কেমন করে তাকে টুপির পিছু-পিছু ছুটতে হয়েছিল সব বললে।

    রাজা কনরাড়কে সে রোজ যেমন যায় তেমনি যেতে বললেন আর নিজে লুকিয়ে রইলেন সেই অন্ধকার গলিতে ফটকের পিছনে। সেখানে লুকিয়ে থেকে তিনি সমস্তই শুনলেন, তারপর তাদের পিছনে পিছনে চললেন মাঠে। একটা ঝোপের আড়ালে গা-ঢাকা দিয়ে তিনি দেখলেন মেয়েটি তার চুল খুলে দিল আর রোদ পড়ে তা সোনার মত ঝলমল করে উঠল। কনরাডের সেদিকে চোখ পড়তেই মেয়েটি গাইল—

    বাতাস আমার ভাই,
    কনরাডের ঐ টুপিখানা উড়িয়ে দেওয়া চাই।
    টুপির পিছে ছুটুক ততক্ষণ,
    বেণী বাঁধা সারা আমার না হয় যতক্ষণ।

    বলতেই একটা দমকা বাতাস এসে কনরাডের টুপি উড়িয়ে দিয়ে চলে গেল, আর কনরাড ছুটল তার পিছু-পিছু। সেই ফাঁকে মেয়েটি চুল বাঁধার কাজ সারা করে ফেললে। রাজা সবই দেখলেন। তিনি চুপি-চুপি গা-ঢাকা দিয়ে প্রাসাদে ফিরে গেলেন আর সন্ধেবেলায় যখন হাঁস-চরুনি বাড়ি ফিরল তখন রাজা সব বলে তাকে জিজ্ঞেস করলেন— এ সবের মানে কী?

    —মানে কী, আমার বলতে মানা মহারাজ। কারণ খোলা আকাশের তলায় দাঁড়িয়ে আমি শপথ করেছি কোনো মানুষকে আমি তা বলব না। শপথ না করলে আমার প্রাণ যেত।

    রাজা অনেক অনুরোধ করলেন, কিন্তু মেয়েটি অটল। শেষে রাজা বললেন— বেশ, তুমি যদি কোন মানুষকে তোমার দুঃখের কথা না বলতে চাও তাহলে এই যে লোহার উনুন, একে বল। আমি চললুম। এই বলে রাজা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন।

    রাজকন্যা তখন উনুনের কাছে এগিয়ে গিয়ে কাঁদতে শুরু করলেন। তারপর চোখের জলের সঙ্গে মিশিয়ে তাঁর দুঃখের কথা একে-একে সব বলে গেলেন উনুনের কাছে।

    এদিকে রাজা বাইরে গিয়ে উনুনের যে নলের ভিতর দিয়ে ধোঁয়া বার হয় তাতে কান দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি সব শুনলেন। তারপর ঘরে এসে রাজকন্যাকে বললেন— তুমি উনুনের কাছ থেকে সরে এস মা। বলে তার হাঁস-চরুনি পোশাক খুলে তাকে রাজকন্যার মত সাজালেন। অপরূপ রূপ ফুটে বেরোলো। রাজা তাঁর ছেলেকে ডেকে পাঠিয়ে বললেন, সে যাকে বিয়ে করেছে সে হল ঝুটো বৌ—রাজকন্যার বাঁদী। আর এই হচ্ছে সত্যিকার রাজকন্যা, যে ছিল হাঁস-চরুনি।

    রাজপুত্র রাজকন্যাকে দেখে মুগ্ধ হলেন। এক মস্ত ভোজের আয়োজন হল। যত সভাসদ পারিষদ বন্ধু আমন্ত্রিত হলেন। তারপর রাজকুমার খানার টেবিলের মাঝখানে বসে তাঁর এক পাশে বসালেন সত্যিকারের রাজকন্যাকে, অন্য পাশে বসালেন ঝুটো রাজকন্যাকে। চারপাশের জাঁকজমক দেখে ঝুটো রাজকন্যার চোখে এমনই ধাঁধা লেগে গিয়েছিল যে সে আসল রাজকন্যাকে চিনতেই পারলে না।

    যখন সবার পান-ভোজন সারা হল, সবাই যখন আমোদে উৎসবে মেতে উঠেছে, সেই সময় রাজা উঠে দাঁড়িয়ে ঝুটো রাজকন্যাকে এক হেঁয়ালি ভাঙতে বললেন। তিনি বললেন— বল তো রাজকন্যে, যে লোক তার প্রভুকে ঠকায় তার কী শাস্তি পাওয়া উচিত? মনে কর চাকর নিজে প্রভু সেজে প্রভুকে চাকর সাজিয়ে প্রভুর যা কিছু পাওনা সব কেড়ে নিল! এ ক্ষেত্রে চাকরের কী শাস্তি প্রাপ্য?

    ঝুটো রাজকন্যা বললেন— এই শাস্তি: বঞ্চককে একটা ধারালো-গজাল-পোঁতা পিপের মধ্যে পুরে খোলা রাস্তা দিয়ে গড়াতে গড়াতে নিয়ে যেতে হবে। দুই সাদা ঘোড়ায় টেনে চলবে পিপে যতক্ষণ না বঞ্চকের মৃত্যু হয়।

    সভাসুদ্ধ সবাই শুনল রাজার হেঁয়ালি আর তার জবাব। তখন রাজা বললেন— আপনারা সবাই শুনলেন। এখন যার শাস্তি সে নিজেই গ্রহণ করুক। কী শাস্তি হবে তা সে নিজের মুখেই বলেছে। এই বলে রাজা সব ঘটনা খুলে বললেন।

    ঝুটো রাজকন্যার পাপের শাস্তি যখন পূরণ হল তখন রাজপুত্র মহা সমারোহে সত্যিকার রাজকন্যাকে বিয়ে করলেন আর বাপের মৃত্যুর পর তাঁর সিংহাসনে বসে সুখে রাজত্ব করতে লাগলেন।

    টীকা