বুড়ো আর তার নাতি
ব্রাদার্স গ্রিম দ্বারাবুড়ো আর তার নাতি
এক ছিল থুত্থুড়ে বুড়ো, সে চোখে ভালো দেখতে পেত না, কানে ভালো শুনতে পেত না। তার হাঁটু কাঁপত, খাবার টেবিলে যখন বসত সে ভালো করে চামচই ধরতে পারত না, তাই টেবিলের কাপড়ের উপর সূপ গড়িয়ে পড়ত। তার ছেলে আর ছেলের বৌ এই দেখে বিরক্ত হয়ে গেল। তারা বুড়ো ঠাকুর্দাকে শেষে উনুনের পিছনে বসিয়ে মাটির সরায় করে খাবার দেবার ব্যবস্থা করলে। সেই থেকে বুড়ো পেট ভরে খেতেও পেত না। সে জল-ভরা চোখে উদগ্রীব হয়ে খাবার টেবিলের দিকে তাকিয়ে থাকত। একবার তার কাঁপা হাত থেকে মাটির সরা পড়ে গেল। ছেলের বৌ এসে তাকে খুব বকুনি দিলে। কিন্তু সে কোন জবাব না দিয়ে শুধু একটু দীর্ঘনিশ্বাস ফেললে। তারপর তারা দু-পয়সা দিয়ে তার জন্যে একটি কাঠের বাটি কিনে আনলে। তাই থেকে সে খেত।
এমনিভাবে একদিন তারা সবাই বসে আছে, সেই সময় চার বছরের নাতি মাটির উপর থেকে ছোট-ছোট ভাঙা কাঠের টুকরো কুড়োতে লাগল। বাবা জিজ্ঞেস করলেন—কী করছিস তুই ওখানে? সে জবাব দিলে—আমি একটা কাঠের গামলা তৈরি করছি। আমি যখন বড় হব মাকে আর বাবাকে তাই থেকে খেতে দেবার জন্যে।
ছেলে আর বৌ দু-জনে দু-জনের মুখের দিকে তাকালো। তারপর তাদের চোখে জল এল। তখন তারা বুড়ো ঠাকুর্দাকে খাবার টেবিলে নিয়ে গেল। আর সেই থেকে তাদের সঙ্গে বসিয়ে খাওয়াতো। বুড়ো খাবার বা সূপ ছড়ালে কিছু বলত না।