কান্তারের পথ ছেড়ে সন্ধ্যার আঁধারে
    সে কে এক নারী এসে ডাকিল আমারে,
    বলিল, তোমারে চাই:
    বেতের ফলের মতো নীলাভ ব্যথিত তোমার দুই চোখ
    খুজেছি নক্ষত্রে আমি কুয়াশার পাখনায়-
    সন্ধ্যার নদীর জলে নামে যে আলোক
    জোনাকির দেহ হতে-খুজেছি তোমারে সেইখানে-
    ধূসর পেচার মতো ডানা মেলে অঘ্রাণের অন্ধকারে
    ধানসিড়ি বেয়ে-বেয়ে
    সোনার সিড়ির মতো ধানে আর ধানে
    তোমারে খুঁজছি আমি নির্জন পেঁচার মতো প্রাণে।
    দেখিলাম দেহ তার বিমর্ষ পাখির রঙে ভরা;
    সন্ধ্যার আঁধারে ভিজে শিরীষের ডালে যেই পাখি দেয় ধরা-
    বাঁকা চাঁদ থাকে যার মাথার উপর,
    শিঙের মতন বাঁকা নীল চাঁদ শোনে যার স্বর।
    কড়ির মতন শাদা মুখ তার;
    দুইখানা হাত তার হিম;
    চোখে তার হিজল কাঠের রক্তিম
    চিতা জ্বলে: দক্ষিণ শিয়রে মাথা শঙ্খমালা যেন পুড়ে যায়
    সে আগুনে হায়।
    চোখে তার
    যেন শত শতাব্দীর নীল অন্ধকার!
    স্তন তার
    করুণ শঙ্খের মতো – দুধে আর্দ্র-কবেকার শঙ্খিনীমালার!
    এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর।

    টীকা