কখনো বা মৃত জনমানবের দেশে
    দেখা যাবে বসেছে কৃষাণঃ
    মৃত্তিকা-ধূসর মাথা
    আপ্ত বিশ্বাসে চক্ষুষ্মান।
    কখনো ফুরুনো ক্ষেতে দাঁড়ায়েছে
    সজারুর গর্তের কাছে;
    সেও যেন বাবলার কান্ড এক
    অঘ্রাণের পৃথিবীর কাছে।
    সহসা দেখেছি তারে দিনশেষেঃ
    মুখে তার সব প্রশ্ন সম্পূর্ণ নিহত;
    চাঁদের ও-পিঠ থেকে নেমেছে এ পৃথিবীর
    অন্ধকার ন্যুব্জতার মতো।
    সে যেন প্রস্তরখন্ড…স্থির-
    নড়িতেছে পৃথিবীর আহ্নিক আবর্তের সাথে;
    পুরাতন ছাতকুড়ো ঘ্রাণ দিয়ে
    নবীন মাটির ঢেউ মাড়াতে-মাড়াতে।
    তুমি কি প্রভাতে জাগ?
    সন্ধ্যায় ফিরে যাও ঘরে?
    আস্তীর্ণ শতাব্দী ব’হে যায়নি কি
    তোমার মৃত্তিকাঘন মাথার উপরে?
    কী তারা গিয়েছে দিয়ে-
    নষ্ট ধান? উজ্জীবিত ধান?
    সুষুম্না নাড়ীর গতি-অজ্ঞাত;
    তবু আমি আরো অজ্ঞান
    যখন দেখেছি চেয়ে কৃষাণকে
    বিশীর্ণ পাগড়ী বেঁধে অস্তাক্ত আলোকে
    গঙ্গাফড়িঙের মতো উদ্বাহু
    মুকুর উঠেছে জেগে চোখে;-
    যেন এই মৃত্তিকার গর্ভ থেকে
    অবিরাম চিন্তারাশি- নব-নব নগরীর আবাসের থাম
    জেগে অঠে একবার;
    আর একবার ঐ হৃদয়ের হিম প্রাণায়াম।
    সময়ঘড়ির কাছে রয়েছে অক্লান্তি শুধুঃ
    অবিরল গ্যাসে আলো, জোনাকীতে আলো;
    কর্কট, মিথুন, মীন, কন্যা, তুলা ঘুরিতেছে;-
    আমাদের অমায়িক ক্ষুধা তবে কোথায় দাঁড়ালো

    টীকা