বেণীমাধব, বেণীমাধব, তোমার বাড়ি যাবো
    বেণীমাধব, তুমি কি আর আমার কথা ভাবো?
    বেণীমাধব, মোহনবাঁশি তমাল তরুমূলে
    বাজিয়েছিলে, আমি তখন মালতী ইস্কুলে
    ডেস্কে বসে অঙ্ক করি, ছোট্ট ক্লাসঘর
    বাইরে দিদিমণির পাশে দিদিমণির বর
    আমি তখন নবম শ্রেণী, আমি তখন শাড়ি
    আলাপ হলো, বেণীমাধব, সুলেখাদের বাড়ি
    বেণীমাধব, বেণীমাধব, লেখাপড়ায় ভালো
    শহর থেকে বেড়াতে এলে, আমার রঙ কালো
    তোমায় দেখে এক দৌড়ে পালিয়ে গেছি ঘরে
    বেণীমাধব, আমার বাবা দোকানে কাজ করে
    কুঞ্জে অলি গুঞ্জে তবু, ফুটেছে মঞ্জরী
    সন্ধেবেলা পড়তে বসে অঙ্কে ভুল করি
    আমি তখন নবম শ্রেণী, আমি তখন ষোল
    ব্রীজের ধারে, বেণীমাধব, লুকিয়ে দেখা হলো
    বেণীমাধব, বেণীমাধব, এতদিনের পরে
    সত্যি বলো, সে সব কথা এখনো মনে পড়ে?
    সে সব কথা বলেছো তুমি তোমার প্রেমিকাকে?
    আমি কেবল একটি দিন তোমার পাশে তাকে
    দেখেছিলাম আলোর নীচে; অপূর্ব সে আলো!
    স্বীকার করি, দুজনকেই মানিয়েছিল ভালো
    জুড়িয়ে দিলো চোখ আমার, পুড়িয়ে দিলো চেখ
    বাড়িতে এসে বলেছিলাম, ওদের ভালো হোক।
    রাতে এখন ঘুমাতে যাই একতলার ঘরে
    মেঝের উপর বিছানা পাতা, জ্যো‍‍‌ৎস্না এসে পড়ে
    আমার পরে যে বোন ছিলো চোরাপথের বাঁকে
    মিলিয়ে গেছে, জানি না আজ কার সঙ্গে থাকে
    আজ জুটেছে, কাল কী হবে? – কালের ঘরে শনি
    আমি এখন এই পাড়ায় সেলাই দিদিমণি
    তবু আগুন, বেণীমাধব, আগুন জ্বলে কই?
    কেমন হবে, আমিও যদি নষ্ট মেয়ে হই?

    টীকা