ইহাদের করো আশীর্বাদ।
    ধরায় উঠেছে ফুটি শুভ্র প্রাণগুলি,
    নন্দনের এনেছে সম্বাদ,
    ইহাদের করো আশীর্বাদ।
    ছোটো ছোটো হাসিমুখ জানে না ধরার দুখ,
    হেসে আসে তোমাদের দ্বারে।
    নবীন নয়ন তুলিকৌতুকেতে দুলি দুলি

    চেয়ে চেয়ে দেখে চারি ধারে।
    সোনার রবির আলো কত তার লাগে ভালো,
    ভালো লাগে মায়ের বদন।
    হেথায় এসেছে ভুলি, ধুলিরে জানে না ধূলি,
    সবই তার আপনার ধন।
    কোলে তুলে লও এরে— এ যেন কেঁদে না ফেরে,
    হরষেতে না ঘটে বিষাদ।
    বুকের মাঝারে নিয়ে পরিপূর্ণ প্রাণ দিয়ে
    ইহাদের করো আশীর্বাদ।
    নূতন প্রবাসে এসে সহস্র পথের দেশে
    নীরবে চাহিছে চারি ভিতে।
    এত শত লোক আছে, এসেছে তোমারি কাছে
    সংসারের পথ শুধাইতে।
    যেথা তুমি লয়ে যাবে কথাটি না কয়ে যাবে,
    সাথে যাবে ছায়ার মতন,
    তাই বলি, দেখো দেখো, এ বিশ্বাস রেখো রেখো,
    পাথারে দিয়ো না বিসর্জন।
    ক্ষুদ্র এ মাথার ‘পর রাখো গো করুণ কর,
    ইহারে কোরো না অবহেলা।
    এ ঘোর সংসার-মাঝে এসেছে কঠিন কাজে,
    আসে নি করিতে শুধু খেলা।
    দেখে মুখশতদল চোখে মোর আসে জল,
    মনে হয় বাঁচিবে না বুঝি—

    পাছে সুকুমার প্রাণ ছিঁড়ে হয় খান্‌-খান্‌
    জীবনের পারাবারে বুঝি।
    এই হাসিমুখগুলি হাসি পাছে যায় ভুলি,
    পাছে ঘেরে আঁধার প্রমাদ!
    উহাদের কাছে ডেকে বুকে রেখে কোলে রেখে
    তোমরা করো গো আশীর্বাদ।
    বলো, ‘সুখে যাও চ ‘ লে ভবের তরঙ্গ দ’লে,
    স্বর্গ হতে আসুক বাতাস।
    সুখদুঃখ কোরো হেলা, সে কেবল ঢেউ-খেলা
    নাচিবে তোদের চারি পাশ। ‘

    টীকা