কোথাও তরণী আজ চলে গেছে আকাশ রেখায়–তবে–এই কথা ভেবে
    নিদ্রায় আসক্ত হতে গিয়ে তবু বেদনায় জেগে ওঠে পরাস্ত নাবিক;
    সূর্য যেন পরস্পরাক্রম আরো–অইদিকে–সৈকতের পিছে
    বন্দরের কোলাহল–পাম সারি–তবু তার পরে স্বাভাবিক
    স্বর্গীয় পাখির ডিম সূর্য যেন সোনালি চুলের ধর্মযাজিকার চোখে;
    গোধুম-ক্ষেতের ভিড়ে সাধারণ কৃষকের খেলার বিষয়;
    তবু তারপরে কোনো অন্ধকার ঘর থেকে অভিভূত নৃমুন্ডের ভিড়
    বল্লমের মতো দীর্ঘ রশ্মির ভিতরে নিরাশ্রয়–
    আশ্চর্য সোনার দিকে চেয়ে থাকে; নিরন্তর দ্রুত উন্মীলনে
    জীবণুরা উড়ে যায়–চেয়ে দেখে–কোনো এক বিস্ময়ের দেশে।
    হে নাবিক, হে নাবিক, কোথায় তোমার যাত্রা সূর্যকে লক্ষ্য ক’রে শুধু?
    বেবিলন, নিনেভে, মিশর, চীন, উরের আরসী থেকে ফেঁসে
    অন্য এক সমুদ্রের দিকে তুমি চলে যাও–দুপুরবেলায়;
    বেশালীর থেকে বায়ু–গেৎসিমানি–আলেকজান্দ্রিয়ার
    মোমের আলোকগুলো রয়েছে পিছনে পড়ে অমায়িক সংকেতের মতো;
    তারাও সৈকত। তবু তৃপ্তি নেই। আরো দূর চক্রবাল হৃদয়ে পাবার
    প্রয়োজন রয়ে গেছে–যতদিন স্ফটিক পাখনা মেলে বোলতার ভিড়
    উড়ে যায় রাঙা রৌদ্রে; এয়ারোপ্লেনের চেয়ে প্রমিতিতে নিটোল সারস
    নীলিমাকে খুলে ফেলে যতদিন; ভুলো বনুনি থেকে আপনাকে মানবহৃদয়;
    উজ্জ্বল সময়-ঘড়ি–নাবিক–অনন্ত নীর অগ্রসর হয়।

    টীকা