দরদালানের ভিড়–পৃথিবীর শেষে
    যেইখানে পড়ে আছে–শব্দহীন–ভাঙ্গা–
    সেইখানে উঁচু উঁচু হরীতকী গাছের পিছনে
    হেমন্তের বিকেলের সূর্য গোল–রাঙা–
    চুপে-চুপে ডুবে যায়–জ্যোৎস্নায়।
    পিপুলের গাছে ব’সে পেঁচা শুধু একা
    চেয়ে দ্যাখে; সোনার বলের মতো সূর্য আর
    রূপার ডিবের মতো চাঁদের বিখ্যাত মুখ দেখা।
    হরীতকী শাখাদের নিচে যেন হীরের স্ফুলিঙ্গ
    আর স্ফটিকের মতো শাদা জলের উল্লাস;
    নৃমুণ্ডের আবছায়া–নিস্তব্ধতা–
    বাদামী পাতার ঘ্রাণ–মধুকুপী ঘাস।
    কয়েকটি নারী যেন ঈশ্বরীর মতো;
    পুরুষ তাদের : কৃতকর্ম নবীন;
    খোঁপার ভিতরে চুলে : নরকের নবজাত মেঘ,
    পায়ের ভঙ্গির নিচে হঙ্‌কঙের তৃণ।
    সেখানে গোপন জল ম্লান হয়ে হীরে হয় ফের,
    পাতাদের উৎসরণে কোন শব্দ নাই;
    তবু তারা টের পায় কামানের স্থবির গর্জনে
    বিনষ্ট হতেছে সাংহাই।
    সেইখানে যুথচারী কয়েকটি নারী
    ঘনিষ্ঠ চাঁদের নিচে চোখ আর চুলের সংকেতে
    মেধাবিনী–দেশ আর বিদেশের পুরুষেরা
    যুদ্ধ আর বাণিজ্যের রক্তে আর উঠিবে না মেতে।
    প্রগাঢ় চুম্বন ক্রমে টানিতেছে তাহাদের
    তুলোর বালিশে মাথা রেখে আর মানবীয় ঘুমে
    স্বাদ নেই–এই নিচু পৃথিবীর মাঠের তরঙ্গ দিয়ে
    ওই চূর্ণ ভূখণ্ডের বাতাসে–বরুণে
    ক্রুর পথ নিয়ে যায় হরীতকী বনে–জ্যোৎস্নায়।
    যুদ্ধ আর বাণিজ্যের বেলোয়ারি রৌদ্রের দিন
    শেষ হয়ে গেছে সব–বিনুনিতে নরকের নির্বাচন মেঘ,
    পায়ের ভঙ্গির নিচে বৃশ্চিক কর্কট–তুলা–মীন।

    টীকা