আধবুড়ো হিন্দুস্থানি,               রোগা লম্বা মানুষ–পাকা গোঁফ, দাড়ি-কামানো মুখ               শুকিয়ে-আসা ফলের মতো।ছিটের মের্‌জাই গায়ে, মালকোঁচা ধুতি,    বাঁ কাঁধে ছাতি, ডান হাতে খাটো লাঠি,পায়ে নাগরা– চলেছে শহরের দিকে।           ভাদ্রমাসের সকালবেলা,    পাতলা মেঘের ঝাপসা রোদ্‌দুর;কাল গিয়েছে কম্বল-চাপা হাঁপিয়ে-ওঠা রাত,           আজ সকালে কুয়াশা-ভিজে হাওয়া    দোমনা ক’রে বইছে আমলকীর কচি ডালে।         পথিকটিকে দেখা গেল    আমার বিশ্বের শেষরেখাতেযেখানে বস্তুহারা ছায়াছবির চলাচল।        ওকে শুধু জানলুম একজন লোক।    ওর নাম নেই, সংজ্ঞা নেই, বেদনা নেই,        কিছুতে নেই কোনো দরকার–           কেবল হাটে-চলার পথে        ভাদ্রমাসের সকালবেলায়           একজন লোক।         সেও আমায় গেছে দেখেতার জগতের পোড়ো জমির শেষ সীমানায়,           যেখানকার নীল কুয়াশার মাঝে        কারো সঙ্গে সম্বন্ধ নেই কারো,           যেখানে আমি– একজন লোক।     তার ঘরে তার বাছুর আছে,        ময়না আছে খাঁচায়;স্ত্রী আছে তার, জাঁতায় আটা ভাঙে,        পিতলের মোটা কাঁকন হাতে;আছে তার ধোবা প্রতিবেশী,           আছে মুদি দোকানদার        দেনা আছে কাবুলিদের কাছে;               কোনোখানেই নেই                   আমি– একজন লোক।

    টীকা