Chapter Index

    এক ছিল মা, তার ছিল সাত বছরের একটি ছোট্ট ছেলে। ছেলেটি এত সুন্দর, যে তাকে দেখত সেই ভালবাসত। আর মা তাকে ভালবাসত পৃথিবীর সব কিছুর চেয়ে বেশি। এখন হল কি, ছেলেটি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ল। ভগবান এসে তাকে নিয়ে গেলেন। মায়ের বুক ভেঙে গেল। কোনোমতেই তাঁকে শান্ত করা গেল না। তিনি সারাদিন সারা রাত কাঁদতে লাগলেন।

    এদিকে ছেলেটিকে কবর দেবার কয়েকদিন পর থেকেই তাকে রাত্রিবেলা দেখা যেতে লাগল। বেঁচে থাকতে যেখানে সে বসত, খেলা করত, সেইখানে সে আসত আর তার মা কাঁদলে সে-ও কাঁদত। সকাল হলে আর তাকে দেখা যেত না। মায়ের কান্না থামল না। একদিন রাত্রে ছেলেটি এল গায়ে তার সাদা শবাচ্ছাদনী জড়িয়ে। যে আচ্ছাদনী দিয়ে ঢেকে তাকে কফিনের মধ্যে শুইয়ে দেওয়া হয়েছিল, মাথায় যে ফুলের মুকুট পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল সেই সব পরে মায়ের বিছানায় তাঁর পায়ের কাছে এসে দাঁড়াল। দাঁড়িয়ে বলল— মা, তোমার কান্না থামাও, নইলে কফিনের মধ্যে আমি ঘুমিয়ে পড়তে পারছি না। তোমার চোখের সমস্ত জল আমার আচ্ছাদনীর উপর এসে পড়ছে।

    শুনে মায়ের ভয় হল। সেই থেকে সে আর কাঁদল না। তার পরের রাত্রে ছেলেটি আবার এল। হাতে তার ছোট্ট একটি আলো। সেই আলো তুলে ধরে সে বললে— দেখ মা, আমার আচ্ছাদনী প্রায় শুকিয়ে এসেছে। এবার আমি আমার কবরে ঘুমোতে পারব।

    সেই থেকে মা তার দুঃখ ভগবানের পায়ে নিবেদন করলো। সহ্য করলো তার মনের কষ্ট। ছেলেটিও তার পর থেকে আসা বন্ধ করে তার ছোট্ট বিছানায় ঘুমিয়ে রইল।

    টীকা