Chapter Index

    ছোট্ট একটি মেয়ে ছিল, সে ছিল যেমন একগুঁয়ে তেমনি ছিল তার সব কিছুতে কৌতূহল। তা ছাড়া তার বাপ-মা যখন তাকে কিছু করতে বলতেন, সে তাতে কানই দিত না। এমন মেয়ের কপালে যে দুঃখ থাকবে এ আর আশ্চর্য কি?

    একদিন সে তার বাপ-মাকে বলল— বাবা, মা, ট্রুডে গিন্নী কে?

    তাঁরা বললেন— সে জেনে তোর কি দরকার?

    মেয়ে বলল— আমি ট্রুডে গিন্নীর কথা এত শুনেছি যে আমার খুব কৌতূহল হচ্ছে তাকে দেখতে। যাবো একদিন। লোকে বলে সে এমন সব অদ্ভুত জিনিস নিয়ে ঘর করে, সে নিজেও এমন অদ্ভুত যে আমি আর থাকতে পারছি না। একদিন তাকে দেখবই।

    বাবা-মা বললেন— খবরদার, আমরা একদম মানা করছি তোমায় সেখানে যেতে। ট্রুডে গিন্নী খুব খারাপ লোক। সে অনেক কুকাজ করে। তুমি যদি সেখানে যাও তাহলে তুমি আর আমাদের মেয়ে নও।

    কিন্তু সেই একগুঁয়ে মেয়ে বাবা-মার বারণ শুনল না। সে একদিন গিয়ে হাজির হল ট্রুডে গিন্নীর কাছে।

    ট্রুডে গিন্নী তাকে দেখে বললেন— তোমার মুখ অমন সাদা হয়ে গেছে কেন?

    মেয়েটি কাঁপতে কাঁপতে বলল— মা গো! যা দেখলুম তাতেই আমার হাত-পা পেটের মধ্যে সেঁধিয়ে গেছে।

    —কি দেখেছ?

    —দেখলুম তোমার সিঁড়ির উপর বসে মিশকালো একজন লোক।

    —সে তো কয়লা-ওয়ালা।

    —তারপর দেখলুম একজন সবুজ লোক।

    —সে তো বনের রক্ষী।

    —তারপর দেখলুম রক্তের মতো রাঙা একজন লোক।

    —সে তো কসাই।

    —ট্রুডে গিন্নী, আমি বড় ভয় পেয়েছি। জানলা দিয়ে উঁকি মেরে দেখলুম— দেখি সেখানে তুমি নেই। বললে না পেত্যয় যাবে দেখি স্বয়ং শয়তান বসে—মাথা দিয়ে তার আগুন বেরুচ্ছে।

    গিন্নী বললেন— ও হো! তবে তো তুমি ডাইনি বুড়িকে তার আসল রূপেই দেখেছ। তোমার জন্যে আমি অপেক্ষা করছিলুম; অনেক দিন ধরেই করছিলুম। তোমাকে দিয়ে আমি খানিকটা আলো পাবো।

    বলে ট্রুডে গিন্নী মেয়েটিকে এক কুঁদো কাঠে পরিণত করে ফেলল। তারপর কাঠটাকে তুলে আগুনের মধ্যে গুঁজে দিল। দেখতে দেখতে কাঠ পুড়ে আলো আর উত্তাপ বেরোতে লাগল। বুড়ি তখন বসল আগুনের ধারে আরাম করে আগুন পোয়াতে।

    টীকা