পলাতক
    কারা অশ্বারোহী কবে ঊষাকালে এসে
    হারায়ে গিয়েছে দূর সাঁঝে–নিরুদ্দেশে
    না জানি কিসের খোঁজে কতকাল ধরি!
    যৌবনের রক্ত মোর উঠিছে শিহরি
    তাহাদেরই মতো আজ—তাই পলাতক
    আসিয়াছি চুপে চুপে—আলোর পলক
    নিভে যায় যেইখানে পশ্চিমের মেঘে,
    যেইখানে মায়াবীর ইশারার বেগে
    এলোমেলো ঢেউগুলো হয়ে গেছে। রাঙা
    নারিকেল ছায়া ছুঁয়ে আধো ভাঙা ভাঙা
    বাতাসের ব্যথা যায় বহি–
    দক্ষিণ সমুদ্রপারে। আমি অশ্বারোহী
    আসিয়াছি আর-এক–এই পথ কবে
    স্বপন-বাউল যুবা-নবীনের রবে
    ভরেছিল কত বার!—তাহাদের পক্ষিরাজ আসি
    দিনশেষে এই পথে দাঁড়াত উদাসী!
    সে কোন বন্দিনী যেন–শোনে আজও সিন্ধুর ধীবর
    আচম্বিত কান্না তার দূর মধ্যসমুদ্রের ’পর—
    তাহাদের নিয়েছিল ডাকি!
    কোন একাকিনী যেন,–তারই পানে নির্জন একাকী
    ছুটে গিয়েছিল তারা, পৃথিবীর পরাজয়-জয়
    পিছে ফেলে–পথে পথে হারায়ে সঞ্চয়!
    আজ তারা কোথা সব জানি না তো কিছু!
    আলোয় চিনিয়া পথ—তাহাদের পিছু
    আমিও এসেছি এই বালুকার ’পর
    আর-এক কবি-যুবা! কাঁকর, পাথর–
    এ মাটির রুক্ষ পথ–লাগে নাই ভালো,
    যাহা-কিছু পাই নাই, যা-কিছু হারালো
    সবই খুঁজে পাব আমি সন্ধ্যার আঁধারে,
    নট্‌কান্‌-রাঙা মেঘে সমুদ্রের পারে!

    টীকা