থমথমে রাত, আমার পাশে বসল অতিথি-
    বললে আমি অতীত ক্ষুধা-তোমার অতীত স্মৃতি!
    -যে দিনগুলো সাঙ্গ হল ঝড়বাদলের জলে,
    শুষে গেল মেরুর হিমে, মরুর অনলে
    ছায়ার মতো মিশেছিলাম আমি তাদের সনে;
    তারা কোথায়?-বন্দি স্মৃতিই কাঁদছে তোমার মনে!
    কাঁদছে তোমার মনের খাকে, চাপা ছাইয়ের তলে,
    কাঁদছে তোমার স্যাঁতসেঁতে শ্বাস-ভিজা চোখের জলে,
    কাঁদছে তোমার মূক মমতার রিক্ত পাথার ব্যেপে,
    তোমার বুকের খাড়ার কোপে, খুনের বিষে ক্ষেপে!
    আজকে রাতে কোন্‌ সে সুদূর ডাক দিয়েছে তারে-
    থাকবে না সে ত্রিশূলমূলে, শিবের দেউলদ্বারে!
    মুক্তি আমি দিলেম তারে- উল্লাসেতে দুলে
    স্মৃতি আমার পালিয়ে গেল বুকের কপাট খুলে
    নবালোকে-নবীন উষার নহবতের মাঝে।
    ঘুমিয়েছিলাম, দোরে আমার কার করাঘাত বাজে!
    -আবার আমায় ডাকলে কেন স্বপনঘোরের থেকে!
    অই লোকালোক-শৈলচূড়ায় চরণখানা রেখে
    রয়েছিলাম মেঘের রাঙা মুখের পানে চেয়ে,
    কোথায় থেকে এলে তুমি হিম সরণি বেয়ে!
    ঝিমঝিমে চোখ, জটা তোমার ভাসছে হাওয়ার ঝড়ে,
    শ্মশানশিঙা বাজল তোমার প্রেতের গলার স্বরে!
    আমার চোখের তারার সনে তোমার আঁখির তারা
    মিলে গেল, তোমার মাঝে আবার হলেম হারা!
    হারিয়ে গেলাম ত্রিশূলমূলে, শিবের দেউলদ্বারে;
    কাঁদছে স্মৃতি-কে দেবে গো-মুক্তি দেবে তারে!

    টীকা